পেনড্রাইভ আঙ্গুলাকৃতির ক্ষুদ্র একটি ইউএসবি স্টোরেজ ডিভাইস । কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের প্রতিনিয়ত এর দরকার পরে । এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ফাইল , ছবিসহ
যাবতীয় তথ্য আদান-প্রদান করা যায় । এতে ইউএসবি (ইউনিভার্সাল সিরিয়াল বাস) সংযোগ রয়েছে । যার মাধ্যমে মূলত এত সুযোগ-সুবিধা এর ব্যবহারকারীরা পায়। আর এটি ক্ষুদ্র এবং সহজে বহনযোগ্য বলে প্রতিনিয়ত এর চাহিদা বাড়ছে । এক যুগ আগেও যেখানে মানুষ এইরকম ডিভাইসের স্পর্শ পায়নি আজ তা অতি সহজলভ্য একটি ডিভাইসে পরিণত হয়েছে ।
যেভাবে পেনড্রাইভের সৃষ্টিঃ
পেনড্রাইভ ডিভাইসটি সৃষ্টি করেন মালয়েশিয়ায় জন্মগ্রহণকারী পুয়া কেইন সেঙস । তিনি তাইওয়ানের চিয়ো টুয়াং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিকয়াল কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে তার স্নাতক সম্পন্ন করেন । এরপর স্নাতক সম্পন্ন করে করে ১৯৯৯ সালে তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন । সেখানকার কয়েকজন প্রকৌশলীকে নিয়েই পরবতীতে তিনি ‘ ফিজন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করান । ২০০০ সালে ‘ ফিজন ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন’ নামে এর আত্মপ্রকাশ ঘটে । আর এই প্রতিষ্ঠান শুরু থেকেই ইউএসবি টেকনোলজি নিয়ে কাজ করছে । মাএ ছয় মাসের প্রচেষ্টায় এই প্রতিষ্ঠান তাদের প্রথম আবিষ্কার ইউএসবি স্টোরেজ ডিভাইস-‘পেনড্রাইভ’ বাজারে আনতে সফল হয় । ২০০১ সালের জুন মাসে অবশেষে আঙ্গুলাকৃতির এই ক্ষুদ্র ডিভাইসটি ‘ ফিজন ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন ’ বিশ্ব বাজারে ছাড়তে সমথ হয় । আর এর মাধ্যমেই কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা অতি সহজে তাদের প্রয়োজনীয় ফাইল পএ,ছবিসহ যাবতীয় সকল তথ্য বহন করতে পারছে । বিশ্বে প্রথম পেনড্রাইভ তৈরি করে চমক দেওয়া ‘ ফিজন ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন ’ এর কল্যাণে তাইওয়ান ৩০ বিলিয়ন ডলারের উপর আয় করেছে । আর প্রতিনিয়ত এই প্রতিষ্ঠান তাদের ডিভাইসের গুণগত পরিবর্তন করে যাচ্ছে ।
পেনড্রাইভের মাধ্যমে বিভিন্ন ফাইল-পত্র অতি সহজে আনা-নেওয়া ও বহন করা যায় ।এর একটি বড় সুবিধা হচ্ছে যে এতে অনেক তথ্য সংরক্ষণ করা যায়, বাইরের ক্ষতি থেকে যা সহজে রক্ষা পায় ।এর উদ্দেশ্য ও প্রয়োজন নিয়েই এটি মূলত তৈরি করা হয়ে থাকে।
Pen-drive inventor
পরিচিতি
পুরোনাম- পুয়া কেইন সেঙস
জন্ম-১৫জুন,১৯৭৪
জন্মস্থান-মালয়েশিয়া
শিক্ষা জীবন -ইলেক্ট্রিক্যাল কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিং, চিয়ো টুয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বাস-তইওয়ান
নাগরিকত্ব-মালয়েশিয়া
সিইও-ফিজন ইলেক্ট্রনিক্স কর্পোরেশন
পেনড্রাইভ যখন RAM:
ইউএসবি স্টোরেজ ডিভাইস পেনড্রাইভকে ইচ্ছে করলেই আমরা র্যাম বা RAM( Random Access Memory) হিসেবে ব্যবহার করতে পারি । এতে করে কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা কিছুটা বাড়বে । মাইক্রোসফট উইন্ডোজে কাজের জন্য দুই ধরণের মেমোরি ব্যবহৃত হয় । একটি হল - ‘ফিজিক্যাল মেমোরি’, যা র্যাম হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত । আর অন্যটি হল ‘ ভার্চুয়াল মেমোরি ’, যা হার্ডডিস্কে সংরক্ষিত থাকে । ‘ফিজিক্যাল মেমোরি’ সম্পন্ন হয়ে গেলে ‘ভার্চুয়াল মেমোরি’কে ইচ্ছে করলে ‘ ফিজিক্যাল মেমোরি’ হিসেবে ব্যবহার করা যায় । এতে করে কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা অনেকটা বেড়ে যাবে । উইন্ডোজে-৭ এর ক্ষেত্রে পেনড্রাইভকে র্যাম হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে নূন্যতম ২-গিগাবাইট বা ৪-গিগাবাইট এর পেনড্রাইভ হলেই চলবে । এরপর পেনড্রাইভটিকে কম্পিউটারের সাথে সংযোগ দিতে হবে । এরপর মাই কম্পিউটারের ওপর মাউসের ডান বাটন ক্লিক করে ধরে রেখে Properties অপশনে যেতে হবে । এরপর Control Panel Home নামে একটি পেজ আসবে ।সেখান থেকে Advanced system settings এ যেতে হবে । এরপর System Properties এর Performance এর সেটিংসে (Settings) যেতে হবে ।সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে settings > Advanced >Change- অপশনে যেতে হবে । এখন ভার্চুয়াল মেমোরি ( Virtual memory) তে automatically থেকে ক্লিক তুলে নিতে হবে । এরপর Drive (Volume label)অপশনের মেনু থেকে পেনড্রাইভটি সিলেক্ট করতে হবে ।এরপর custom size অপশন সিলেক্ট করে Initial size এবং Maximum size বক্সে পেনড্রাইভের জন্য যতটুকু জায়গা রাখতে চান তার সংখ্যা লিখতে হবে । উইন্ডোজে ৫ মেগাবাইট খালি জায়গার প্রয়োজন হয় । তাই পেনড্রাইভে যত জায়গা আছে তার থেকে ১০-১৫ মেগাবাইট জায়গা কম ধরে সেখানে লেখতে হবে ।এরপর Apply বা ok দিয়ে কম্পিউটারটিকে রিস্টার্ট দিতে হবে । এবার পেনড্রাইভটি র্যাম হসেবে কাজ করবে । এভাবেই প্রয়োজনের সময় খুব সহজেই ‘ ইউএসবি স্টোরেজ ডিভাইস- পেনড্রাইভটি’কে র্যামে পরিণত করে সহজেই কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা বাড়ানো যাবে । এতে করে কম্পিউটারটি আগের থেকে অনেকটা দ্রুত কাজ করবে এবং আপনিও কম্পিউটারে কাজের জন্য আপনার কাংখিত গতি পাবেন ।