somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসরাইল এখন মরেছে রে......ঠিক কর ব্যাটা কি করবি

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর জন্য স্থলযুদ্ধ
যে কতটা বিপর্যয়কর হতে পারে তার আলামত এখন
সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে দুই
ইসরাইলি সৈন্য আটকের পর যুদ্ধের ভারসাম্য
অনেকখানি বদলে গেছে।
এখন ইসরাইল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে হামাসের
ওপর চাপ সৃষ্টি করে সর্বশেষ আটক
হওয়া সৈনিককে ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছে। মার্কিন
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা অভাবনীয় এক সাংবাদিক
সম্মেলনে যুদ্ধবিরতি লংঘনের দায় হামাসের ওপর
চাপিয়ে এই সৈনিকের নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেছেন।
সবচেয়ে হাস্যকর বিবৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। মহাসচিব
বান কি মুন তার বিবৃতিতে যুদ্ধ
বিরতি লংঘনে হামাসকে দায়ি করার
পাশাপাশি বলেছে জাতিসংঘ ঘটনস্থলের বিবরন
না পাওয়ায় নিশ্চিত নয় যে কে যুদ্ধবিরতি লংঘন করেছে।
ইসরাইল তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে মিশরে যুদ্ধ বিরতির
আলোচনায় যোগ না দেয়ার ঘোষনা দিয়েছে। যদিও এ
আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার কোনো সম্ভবনা ছিলো না।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট হাদার
গোলদিন রাফাহ বর্ডারের কাছে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের
একটি টানেল বা সুড়ংগ ধ্বংসের চেষ্টার সময় আটক হন।
এ সময় আরো দুজন সৈন্য নিহত হয়। ইসরাইল
সেনাবাহিনীর ভাষ্য অনুযায়ী সৈন্যরা যখন
একটি টানেলের ভেতর প্রবেশ করে তখন একজন
আত্নঘাতী যোদ্ধাসহ একাধিক যোদ্ধা তাদের ঘেরাও
করে। এরপর হাদার গোলদিনকে ধরে নিয়ে যায় একই
সাথে আত্নঘাতী যোদ্ধার বিস্ফোরনে অপর দুই সৈন্য
মারা যায়।
এই ঘটনার পর গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ পরিকল্পনা এখন
হুমকির মুখে পড়েছে। কারন ইসরাইলের
প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতনিয়াহু ঘোষনা দিয়েছেন
গাজায় টেরর টানেল ধ্বংস করা তাদের যুদ্ধের প্রধান
লক্ষ। কিন্তু এসব টানেল ধ্বংস করতে গেলে যে তাদের
কতটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে এই ঘটনা তার প্রমান।
এছাড়া টানেলে আত্নঘাতী যোদ্ধারা থাকতে পারে এমন
আশংকায় টানেলের ভেতের প্রবেশ তাদের জন্য
আরো কঠিন হয়ে পড়বে।
আটক ইসরাইলি সৈন্য নিয়ে নেতানিয়াহু সরকার
যে প্রবল চাপের মুখে পড়েছেন তা ইসরাইলের
গনমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। এই সৈন্য ফেরত
নেয়া নিয়ে কী ধরনের শর্তে হামাসের
সাথে আলোচনা হতে পারে তা নিয়ে এখন
ইসরাইলি গনমাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে। আটক হাদার
গোলদিন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোশে ইয়ালুনের
কাজিন। এই সৈনিক ব্রিটিশ ইসরাইলি।
কেম্ব্রিজে বসবাস করতেন। প্রভাবশালী পরিবারের
সদস্য হিসাবে তাকে উদ্ধারে ইসরাইল সব ধরনের
চেষ্টা চালাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আর্ন্তজাতিক
চাপ তার প্রমান। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়াও হামাস
দেখিয়েছে। তারা জানিয়েছে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আটক
হওয়া এই সৈন্য সর্ম্পকে কোনো তথ্য তাদের
কাছে নেই। আল কাসাম ব্রিগেড এক
বিবৃতিতে জানিয়েছে যে গ্রুপটি রাফাহ ক্রসিং যুদ্ধ
করছিল তাদের সাথের যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না।
ইসরাইলি হামলায় আটক সৈন্যসহ যোদ্ধারা সবাই
মারা যেতে পারে।
লক্ষনীয় দিক হচ্ছে এর আগে ২০ জুলাই হামাস
যোদ্ধারা আউল শ্যারন নামে আরেক
ইসরাইলি সৈন্যকে আটক করে। এই সৈন্য
বেচে আছে না মারা গেছে তা কোনো পক্ষই নিশ্চিত
করেনি। তবে তার আটক হওয়ার বিষয়টি ইসরাইল
সেনাবাহিনী প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার
করে। কিন্তু এই সৈনিকের ব্যাপারে ইসরাইল এত তীব্র
প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে আটক ইসরাইলি সৈন্য এখন
হামাসের জন্য দরকষাকষির সবচেয়ে বড় মাধ্যম। ২০০৬
সালে আটক ইসরাইলি সৈন্য গিলাত শালিতের মুক্তির
বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে আটক ১০২৭ জন হামাস
নেতাকর্মীকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলো ইসরাইল।
এখন ইসরাইলের গনমাধ্যম বলা হচ্ছে গিলাত শালিতের
মুক্তির মতো শর্তসাপেক্ষে বন্দী যোদ্ধাদের মুক্ত
করতে হলে নেতানিয়াহু সরকারকে আভ্যন্তরিন
রাজনীতিতে চরম মূল্য দিতে হবে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী হামাস যোদ্ধাদের
সাথে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৬৩ জন সৈন্য নিহত
হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। অপরদিকে হামাস
বলেছে তাদের হাতে গত ২৫ দিনে ১৫০ জন
ইসরাইলি সৈন্য মারা গেছে। হামাসের সামরিক শাখা আল
কাসাম ব্রিগেডের কমান্ডার মোহাম্মদ দেইফ বলেছেন
তাদের প্রতিরোধ যুদ্ধের টার্গেট ইসরাইলি সেনাবাহিনী।
বেসামরিক নাগরিক তাদের লক্ষ নয়। তিনি আরো বলেন
গাজায় স্থল অভিযানে ইসরাইলের লজ্ঝাজনক পরাজয়
ঘটবে। যুদ্ধ বিমান দিয়ে হামলা চালিয়ে ইসরাইল সফল
হয়নি। স্থল অভিযানে তারা কখনো সফলতা পাবে না।
বিবৃতিতে তিনি বলেন হামাসের টার্গেট শুধু
ইসরাইলি সৈন্য। বেসামরিক লোকদের ক্ষতিকরা তাদের
লক্ষ নয়। এখন হামাসহ অপরাপর যোদ্ধাদের
প্রতিরোধের ধরন দেখে ইসরাইলি বিশ্লেষকরাও বলছেন
এভাবে স্থল যুদ্ধ চলতে থাকলে আরো বেশি সৈন্য
হারাতে হবে ইসরাইলকে। আর হামাসের
টানেলগুলো হয়তো ধ্বংস করা সম্ভব হবে না।
২০০৬ সালের পর থেকে হামাস নীরবে যেমন সদস্য
সঙখ্যা বাড়িয়েছে তেমনি নিজস্ব যুদ্ধ পদ্ধতি গ্রহন
করেছে। অস্ত্রসম্ভার তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে।
ইরানের প্রযুক্তিগত সহায়তায় তৈরি করছে রকেট।হামাস
যে টানেল তৈরি করছে তার তথ্য
জানতে ইসরাইলি গোয়েন্দারা ব্যর্থ হয়েছে। হামাসের
সামরিক শাখা আল কাসাম বিগ্রেডের সদস্য সংখ্যা ১০
হাজার থেকে ২০ হাজার হতে পারে বলে অনুমান
করা হয়।
২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপের গবেষণায়
বলা হয়, হামাসের সার্বক্ষণিক যোদ্ধার সংখ্যা ৭ হাজার
থেকে ১০ হাজার ।রিজার্ভ সদস্য সংখ্যা ২০ হাজার।
বৃটেনের খ্যাতনামা সামরিক ম্যাগাজিন জেনস ডিফেন্স -
এর তথ্য মতে, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত
হামাসের উন্নত প্রশিক্ষিত এবং আধুনিক সমরাস্ত্র
সজ্জিত যোদ্ধার সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ।
জেনসের কাছে একজন সিনিয়র ফিলিস্তিনি সামরিক
গোয়েন্দা কর্মকর্তা স্বীকার করেন যে, কাসসাম
ব্রিগেডে ১০০০- এর বেশি ম্যানপ্যাড (ম্যান পোর্টেবল
এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম) আছে। লিবিয়ায় গাদ্দাফির
পতনের সময় এস লুট করা হয়।
২৫ দিন ধরে হামাসের প্রতিরোধ যুদ্ধ থেকে অনুমান
করা হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদি যুদ্ধের প্রস্ততি হামাসের
রয়েছে।সে ক্ষেত্রে গাজায় বেসামরিক লোকজনের
হতাহতের সংখ্যা যেমন
বাড়বে তেমনি বাড়বে ইসরাইলি সৈন্যর নিহত হওয়ার।
এর ফলে ইসরাইলের ভেতরে নেতানিয়াহু সরকার প্রবল
চাপের মুখে পড়তে পারেন। আবার
যে কোনো যুদ্ধবিরতিতে গেলেও নেতানিয়াহুর সরকারের
টিকে থাকা কঠিন হবে। ফলে ইসরাইল অনেকটা উভয়
সংকটে পড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইল পুরানো পথে হাটছে।
গনহত্যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনসংখ্যা কমিয়ে আনা।
এ পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার
ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। বেসামরিক লোকদের
বাড়িঘড় গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। হাসপাতাল,
মিডিয়া স্থাপনা, জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলে হামলার
পর এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে বোমা হামলা চালানো হয়েছে।
এসব হামলার পরও ইসরাইল ও তার
পশ্চিমা মিত্ররা বুঝেত পারছে না গাজাবাসীর
আসলে হারানোর কিছু নেই। তারা এখন
আরো বেশি মরিয়া হয়ে যোদ্ধাদের পাশে দাড়াবে।
ফলে আগামি দিনে ইসরাইলকে আরো বেশি ক্ষতির
সম্মুখীন হতে হবে।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নেতানিয়াহুও গনহত্যার দায়ে ঘৃণিত নায়ক হিসাবেই ইতিহাসে স্থান করে নিবে

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩৮

গত উইকেন্ডে খোদ ইজরাইলে হাজার হাজার ইজরাইলি জনতা নেতানিয়াহুর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
দেখুন, https://www.youtube.com/shorts/HlFc6IxFeRA
ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে নেতানিয়াহুর এই হত্যাযজ্ঞ ইজরায়েলকে কতটা নিরাপদ করবে জনসাধারণ আজ সন্দিহান। বরং এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×