somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গন্ধ

০১ লা মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





নির্বাক হয়ে বসে আছে নুপুর এক মাথা ঘোমটা নিয়ে। বিভিন্ন ফুলের গন্ধে ভয়ানক মাথা ব্যাথা করছে, এদের কেউ বলে নাই মনে হয় নুপুরের যে ফুলের গন্ধে এলার্জি আছে, সারা দিনের পরিশ্রম শেষে ক্লান্ত শরির চাচ্ছে বিশ্রাম, কিন্তু কি আর করা পতি দেবতার অপেক্ষায় সময় পার করছে। বাহিরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে, ফাগুন মাসে বৃষ্টি, অদ্ভুত ব্যাপার, হঠাত দমকা হাওয়ায় বিছানার পাশের জানালাটা শব্দ করে খুলে গেলো। এক পশলা বৃষ্টি ঠান্ডা বাতাসের সাথে এসে ভিজিয়ে দিয়ে গেলো, উঠে জানালাটা বন্ধ করবে এমন ইচ্ছাই করছে না, মাথা নিচু করে নুপুর ভাবছে কি হল সারাদিন তিন কবুল নামক হাস্যকর অনুষ্ঠানটাই যা ওকে বিনোদন দিয়েছে। ভাবছে আর হাসছে, কেউ কে বলা যাবে না যে ও কবুল বলে নাই। আচমকা সারা ঘর অচেনা একটা ফুলের গন্ধে ভরে গেলো ঘরে আর ফুল আছে কিন্তু এই ফুলের গন্ধ যেন অনেক তিব্র, গন্ধটা চেনা চেনা লাগছে কিন্তু চিনতে পারছে না নুপুর। ঘোমটা টা সরিয়ে মাথা উঁচু করে গন্ধ টা বোঝার চেস্টা করলো। মাথার ভেতরটা কেমন জানি করছে চেনা চেনা গন্ধ, কদম ফুলের গন্ধ। ঘর ভর্তি কদম ফুলের গন্ধ। নুপুরের দম বন্ধ হয়ে আসছে তারপর ও বুক ভরে গন্ধটা নিচ্ছে বড্ড আপন লাগছে গন্ধ খানি। এ যেন চেনা কারো গন্ধ। কি ব্যাপার নুপুর এখন জেগে আছো ? আর ওমন তন্ময় হয়ে কি ভাবছ? চমকে দেখে সামনে সবুর দাড়িয়ে আছে। সবুর, যার সাথে আজ নুপুরের বিয়ে হল। জানালা খোলা কেন? সারা ঘর তো বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেলো, বাসর হবে কোথায় পানিতে? বলে একটা হাসি দিল। কেমন জানি বিচ্ছিরী লাগলো লোকটার হাসি। গভির একটা স্বপ্ন থেকে নিজেকে টেনে বের করে কিছুটা ধাতস্ত হয়ে নিজেকে সামলিয়ে বসলো। সবুর নুপুরের পাশে একটু ঘনিষ্ট হয়ে বসলো, কি হল শরির খারাপ লাগছে নাকি? নুপুর কিছুটা নিজিকে সরিয়ে নিয়ে আর গুছিয়ে বসলো, গন্ধটা আর তিব্র আকার নিলে। মনে হচ্ছে নুপুর কে ঘিরে ধরেছে। কেমন মাতাল মাতাল লাগছে। সবুর মনে হয় কিছু একটা বলছে কোন কথাই কানে ঢুকছে না। সবুর নুপুরের হাত ধরে কিছু একটা বলল, আচমকা হাত ঝারা দিয়ে নুপুর নিজেকে আর গুটিয়ে নিলো। সবুর খানিকটা অবাক হয়ে কাছে আগিয়ে আসতেই নুপুর নিজেকে আর গুটিয়ে নিলো। মনে হল কদম ফুলের সেই তিব্র ঘ্রান টা তাকে চারিদিক থেকে জরিয়ে রেখেছে যেন সবুরকে বাধা দিচ্ছে। সবুর হেসে হেসে কি যেন বলছে নুপুর কিছুই শুনছে না,অদ্ভুত গন্ধটা নুপুরে কে আচ্ছন্য করে রেখেছে। সবুর নুপুরের দিকে তাকিয়ে দেখল নুপুর ঘামছে, এই নুপুর , নুপুর সবুর ডাকল, কেমন ঘোর লাগা চোখে ফেলফেল করে তাকিয়ে আছে নুপুর মনে হল সবুর কে চিন্তেই পারছে না অথচ প্রথম যেদিন নুপুর কে দেখতে যায় বেশ চঞ্চল ছিল সাধারণত কনে দেখতে গেলে মেয়েরা একটু লাজুক থাকে। হয়ত নতুন পরিবেশে ঘাবড়ে গেছে, নুপুরের হাত ধরে বলল যাও ঘুমিয়ে পরো অনেক রাত হল। নুপুর বসে আছে ঘোর লাগা মানুষের মতো। কদম ফুলের গন্ধটা আর তিব্র হল। নুপুর চেস্টা করছে যেভাবে হক গন্ধটা থেকে বের হয়ে আসতে কিন্তু গন্ধটা তাকে তিব্র ভাবে বাধা দিচ্ছে। নুপুর অবাক হয়ে ভাবছে ফুলের গন্ধে ওর এলার্জি আছে কিন্তু এখন ওর কিছুই হচ্ছে না।
সকালের আলো এসে সবুরের চোখে পড়লো, ঘুমটা ভেঙ্গে যেতে বিরক্ত হয়ে জেগে উঠল, পরক্ষনে মনে পড়লো গতকাল থেকে ও বিবাহিত, মৃদু হেসে নিজেকে চোখ রাঙ্গিয়ে পাশ ফিরে দেখল রাতে নুপুর কে যে ভাবে দেখেছে ঠিক সেই ভাবে বসে আছে। মুখে স্পষ্ট ক্লান্তির ছাপ। কি ব্যাপার, তোমার শরীর ঠিক আছে তো? কোন উত্তর দিল না নূপুর। জোরে ধাক্কা দিয়ে বলল এই নূপুর শুনছো না, খানিক চমকে গিয়ে উত্তর দিল সকাল হয়ে গেছে? হা সকাল হয়ে গেছে , তুমি ঘুমাও নি? নূপুর কোন উত্তর দিল না, কপালে হাত দিয়ে দেখল জ্বর আছে কি না, কোই না তো জ্বর তো না বলল সবুর। না না জ্বর না, আমি আসি এখন বলে খাট থেকে নিমে যাচ্ছিলো নূপুর, খপ করে হাত চেপে ধরেল সবুর, কোই যাবা? অবাক দৃষ্টিতে বলল নূপুর কেন বাসায় যাব। ও আসবে আমার জন্য অপেক্ষা করবে, কে আসবে, কে অপেক্ষা করবে, তাজ্জব সবুর। আর তুমি বাসায় কেন যাবা এটাই তো আমাদের বাসা। নূপুর সবুরের কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেল, সে চারিদিকে চোখ বুলাতে লাগলো। কাল আমাদের বিয়ে হোল তো, তুমি কি ভুলে গেছ নাকি হালকা রসিকতা করে বলল সবুর। থপ করে একটা আওয়াজ হতে তাকিয়ে দেখল নূপুর মেঝেতে কাপর ছড়িয়ে বসে আছে, তারাতারি বিছানা থেকে নেমে নূপুর কে ধরতে যেতেই হাত ঝাড়া দিয়ে গুটিয়ে নিয়ে তিব্র চিৎকারে বলল আপনি কি চান, কেন আমাকে আটকিয়ে রেখেছেন। ও আসবে আমাকে বাসায় না দেখলে ও অনেক কষ্ট পাবে। ও আমাকে নিতে আসবে দয়া করে আমাকে যেতে দিন। সবুর অবাক বিস্ময় তাকিয়ে আছে নুপুরের দিকে। হটাত করে গলার ভেতরে অনেক গুল কষ্ট যেন এসে জমা হোল ঢোঁক গিলে বলল কে আসবে নূপুর। ও। ও টা কে, তিব্র ভাবে জিজ্ঞাসা করল সবুর, ও , ও কে আপনি চিনবেন না। আস্তে এসে নূপুর কে ধরে উঠাতে গেলে ভয়ানক চিৎকারে নিজেকে গুটিয়ে নিল নূপুর খবরদার আপনি কাছে আসবেন না। সবুর ভাবছে বাড়ির সবাই এখন জাগে নাই জেগে গিয়ে এই দৃশ্য দেখলে সর্বনশ হয়ে যাবে। তার আগেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। সবুর নুপুরের সামনে বসলো হাত ধরতে গিয়েও ধরল না। নূপুর শোনো, ও আসার আগেই আমরা বাসায় যাব, না আমরা না আমি একা যাব জেদি গলায় বলল নূপুর। আচ্ছা আচ্ছা একা যাবে এখন খাটে উঠে এসে বস তোমার কাপর নষ্ট হচ্ছে। কাপর নষ্ট হলে বাসায় যাবে কি ভাবে? মাথা নেড়ে নূপুর উঠে দারাল খাটের এক কোনে গিয়ে বসলো। সবুর মাথা নিচু করে জিজ্ঞাসা করলো এই ও কে তুমি কত দিন ধরে চেন? মেলা দিন ধরে, কত দিন ? এক বছর দুই বছর কতদিন? অনেক দিন উত্তর দিল নূপুর। নূপুর শোনো তোমাকে এই বাসাতেই থাকতে হবে, তোমার ও কে বল এখানে আসতে। এটাই তোমার বাসা। আর শোনো বাসার কাউকে এই ও এর কথা বলো না আমরা দুজন মিলে ও কে দাওয়াত দিব তারপর ও আসলে তুমি ও এর সাথে চল যেও। সত্যি , লাজুক হাসি দিল নূপুর, কবে দাওয়াত দিবন ওকে? আজ না কাল। ঠিক আছে ??

সবুরের ইচ্ছা করছে নিজে লাফ দিয়ে মরে যেতে, একবার ভাবছে নুপুরের কি ভুতে পাওয়া রোগ আছে আর একবার ভাবছে এই ও টা কে, এই ও এর কথা তো আগে বলে নাই। আগেই বা কি ভাবে বলবে পরিচয়তো শুধু মাত্র সতের দিনের। সকালে অফিসে যাওার সময় একবার ভাবছে যে নুপুরের মামার সাথে দেখা করে জানতে চাইবে পরে কি মনে করে বাদ দিল। সারাটা দিন কোন কাজই করতে পারল না। অফিসের অনেকেই এসে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেল কেউ কেউ একটু তামাশাও করলো, কোন কিছুই সবুরকে ছুতে পারছে না, সব কথাই এক কান কদিয়ে ঢুঁকে অন্য কান দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। নুপুর কে বাসায় একা রেখে আসাটা মনে হয় ঠিক হয় নাই, নিচে বাড়ির দারওয়ান কে বলে এসেছে কেউ এশে নূপুরের খোঁজ করলে যেনে ঢুকতে না দেয়। আচ্ছা একটা ফোন করবে নুপুরকে , হাতের কাছে মোবাইলটা নিয়ে ফোন করলো অনেকখন রিং বেজে থেমে গেল আবার ফোন করলো বাজতে বাজতে থেমে গেল। সবুরের ইচ্ছা করছে বাসায় ছুটে যেতে ভাবল একবার উঠে বস কে গিয়ে বলে যে আজ ওর ছুটি দরকার। সাত দিনের টানা ছুটি কাটিয়ে এসে এখন ছুটি চাইলে দিবে না এটাও ভাবছে। আবার ফোন করলো নুপুর কে ফোন এংগেজ, টু টু টু করে লাইন টা কেঁদেই যাচ্ছে। কে ফোন করতে পারে, নুপুরের বাড়ির কেউ, নাকি সেই ও। একবার কাউকে কিছু না বলে বাসায় চলে যাবে নাকি। আবার ফোন দিল ফোন বাজচ্ছে টুক করে লাইনটা কেটে দিল। সবুর ঘামছে কুল কুল করে তার পিঠ বেয়ে ঘাম যরে পরছে, পাশের চেয়ার থেকে মামুন ভাই রসিকতা করে বলল কি রে ভাই এখনি ঘামছো কেন? সবুর নিষ্প্রাণ চোখে তাকাল তারপর আবার ফোন দিল টু টু টু টূ করে বেজেই চলছে কেউ ধরছে না। হঠাত করে মনে হল একবার নিচের গেটের দারয়ান কে ফোন দেই, দুই রিং বাজতেই সাদেক হ্যালো বলল, সাদেক আমি সবুর , স্যার সালামালাইকুম, ওলাইকুম, সবুর বাসায় কেউ আসছিলো, না স্যার, কেউ তো আসে নাই। শোন সাদেক তোমার ভাবী মনে হয় অসুস্থ ফোন দিচ্ছি ধরছে না, একটু তোমার ফোন টা নিয়ে আমার বাসায় যাবা, স্যার গেট খালি রাইখা যাওন যাইত না, বড় ম্যাডামে মারবো। আপনে ভাবিরে আবার ফুন দেন। গোমায় হয়তো। স্যার রাখি বড় স্যার আইছে। বলে ফোনে রেখে দিলো। আচ্ছা এমন কি হতে পারে ওই ও এসে সাদেক কে টাকা খাইয়ে হাত করে নিয়েছে। হরেক রকম ভাবনা মাথায় এসে ঘুরপাক খাচ্ছে।

সবুর অফিসে চলে যাওার পর থেকে অস্থির একটা সময় পার করছে নুপুর, জানালাটা তাকে খুব টানছে ইচ্ছে করছে জানালাটা থেকে ঝাপ দিয়ে পরে। সমস্ত ঘর খানি ফাঁকা, এত দিন অনেক লোক ছিল দু দিন ধরে সবাই চলে গেছে, কেউ নাই শুধু নুপুর আর এই বাসার আসবাবপত্র। হটাত করে মোবাইল টা বেজে উঠল , একদম ইচ্ছা করছে না ধরতে, বাজতে বাজতে কেটে গেল, আবার বাজচ্ছে বেজেই জাচ্ছে ইচ্ছা করছে না উঠে ফোনটা ধরে। এমন সময় কলিং বেল টা বেজে উঠলো। কে আসলো, কে আসতে পারে, সবুর কি ফিরে এলো? দরজার ফাঁকা গলে দেখল, আরে তুমি কতক্ষণ, এই তো মাত্র এলাম, এসো ভেতরে আসো আমি তোমার জন্য কতো কিছু রান্না করেছি জানো? বাহ বেশ মিস্টি গন্ধ তো এই অসময় কদম ফুল পেলে কোথায়, আমার প্রিয় ফুল তোমার জন্য নিয়ে এলাম, ধন্যবাদ, আস বসো, এত দেরি করলে কেন? ফোন টা আবার বেজে উঠলো,
ধুর অসময় কে ফোন দেয়।কি খাবে বল,
না না কিছুই খাব না, নুপুর,
হুম
তুমি ভাল আছো ?
না আমি ভাল নাই, আমি তোমার কাছে যেতে চাই
সত্যি নুপুর তুমি আসবে আমার কাছে
হ্যা আমি আসব কিন্তু কিভাবে, এরা আমাকে যেতে দিবে না।
তুমি ওই জানালাটার কাছে গেলেই আমার কাছে আসতে পারবে,
সত্যি
হা সত্যি, তুমি ওই জানালাটার কাছে গিয়ে আমাকে ডাকলেই দেখবে আমি তোমার সামনে চলে আসছি তুমি তখন চলে এসো।
এখন গেলে তোমার কাছে চলে যাওয়া যাবে?
তুমি চাইলে এখনি পারো।
আস তুমি আমার হাত ধরে এসো।
নুপুর হাত ধরে সামনে এগিয়ে গেল জানালা থেকে অদ্ভুত সুন্দর একটা মিষ্টি কদম ফুলের গন্ধ আসছে, নুপুর এগিয়ে গেল ব্যালকুনির দিকে ধিরে ধিরে ব্যালকুনি বেয়ে উঠে দাড়িয়ে গেল
নুপুর দেখ আমার হাত ছেঁড় দিয়না কিন্তু
না না আমি ছাড়বো না।

সবুর বিরক্ত হয়ে বাড়ির গেটে নক করছে, সাদেক গাধাটা গেল কই। এই সাদেক, চিৎকার করে ডাকল , সাদেক হেলতে দুলতে ঘুম জরান চোখে এসে গেটের সামনে দাঁড়ালো , কি কন ভাইজান, আপনে এই সময় ? দরজা খোল, সারা দিন ঘুমাও নাকি তুমি। এই সময় তো কেউ আসে না করবো টা কি কন, গেট খুলতে খুলতে বলল সাদেক। ভাবিজানের জন্য তারাতারি আইলেন নাকি , হলদে দাত বের করে বলল। সবুর বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করল কেউ এসেছিল, সাদেক কথার উত্তর না দিয়ে বলল কারো আসার কথা ছিল নাকি ভাইজান, ওই তোমাকে যা জিজ্ঞাসা করি ওটা বল , না স্যার আসে নাই। কেউ না? না স্যার কেউ না। ও আচ্ছে বলে সবুর হন হন করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো, ভাবলো সিঁড়ি থেকে একটা ফোন দেই। বেজেই চলছে ফোন কেউই ধরছে না। সারা শরির ঠান্ডা ঘামে ভিজে গেলো। বাসার দরজার সামনে এসে একটা ধাক্কা খেল সবুর, তিব্র কদম ফুলের গন্ধে ভরে আছে সিঁড়ি ঘর। হটাত মনে পড়লো কাল ঠিক এমনি একটা গন্ধ পেয়েছিল কিন্তু ঠিক কখন মনে করতে পারছে না। হাত পা ঠক ঠক করে কাঁপছে, প্রথমে কান পেতে শোনার চেস্টা করল দরজার ওপাশে কোন আওয়াজ পাওয়া যায় কি না। নাহ কোন আওয়াজ নাই। ভয়ে ভয়ে নক করল দরজা। কদম ফুলের গন্ধটা বেড়েই চলছে, মাথার ভেতরে যেয়ে যেন ধাক্কা মারছে। আবার নক করল কোন সারা শব্দ নাই। ইচ্ছা হল জোরে চিৎকার করে নুপুর বলে ডেকে ওঠে, ভয়ে ভয়ে ফ্যাস ফ্যাসে গলায় ডাকল নুপুর এই নুপুর শুনছো, দরজা খোলো। নিজের গলা নিজেই শুনল না। আবার ডাকল নুপুর এই নুপুর, এইবার একটু জোরে, হটাত শুনল কে জেন ডাকছে স্যার স্যার , ধুত নুপুর আমাকে স্যার ডাকছে কেন, এই নুপুর দরজা খোলো , আমাকে স্যার ডাকছ কেন? আমি সবুর দরজা খোলো। আবার কে যেন ডাকল স্যার স্যার, হন্তদন্ত হয়ে কে জেন ছুটে আসছে , স্যার স্যার, তাকিয়ে দেখে সাদেক হাপাতে হাপাতে সিঁড়ি বেয়ে উঠছে, বিরক্ত হয়ে বলল সবুর কি সাদেক ডাক কেন, স্যার ভাবি , চমকে উঠলো সবুর কি তোমার ভাবি বাসায় নাই? কই ঘরে তো তালা লাগান নাই, সাদেক সবুর কে টানতে লাগলো স্যার আসেন ভাবি নিচে আসেন, সবুর কে টেনে নিচে নামাতে লাগলো, সবুর হাত পা আর চলে না শুধু বলছে কি হয়েছে সাদেক আমাকে টানছো কেন? সাদেক সবুর কে টানতে নিচে নিয়ে গেলো। থমকে গেলো সবুর, সাদেক সবুর কে কিছু বলছে, কিছুই কানে ঢুকছে না। দেখল গতকালের সেই গোলাপি শাড়িটা পরা নুপুর পরে আছে, এক হাতে মুঠ করে ধরে একটা কদম ফুল, সবুরের মাথা কাজ করছে না। ও আচ্ছন্যের মতো চেয়ে আছে নুপুরের দিকে, সাদেক একবার ছুটে যাচ্ছে নুপুরের দিকে আর এক বার ছুটে আসছে সবুরের দিকে , কি যেন হাত নারিয়ে নারিয়ে বলছে, কিছুই কানে যাচ্ছে না, স্থির চোখে চেয়ে দেখল নুপুর যেন গোলাপি এক পদ্মের মতো ফুটে আছে ধুলার জমিনে। ধিরে ধিরে কাছে গিয়ে বসে পড়লো সবুর। চেয়ে দেখল নুপুরে চোখে প্রশান্তির এক মিশ্র ছায়া, ঠোটে হালকা হাসি লেগে আছে। শান্ত চোখে চেয়ে আছে বাসার ব্যালকুনি বরাবর। সবুরের পুর পৃথিবী দুলে উঠলো, বিকট চীৎকারে ভেঙ্গে পড়লো নুপুরের নিথর শরীরের উপর।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:১৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×