somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ প্রেম -একবার এসেছিলো জীবনে

১৬ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মালটা বেশ ভালো বাগিয়েছ ভাইটু, পেছন থেকে কে যেন আঁধো আলোয় চুইংগাম চিবানোর মতো করে কচ কচিয়ে বললো। পেছন ফিরে দেখি সেই কমলা লেবুর করিওগ্রাফার। আজ যদিও হাতে কমলা লেবু নেই, কিন্তু চোখে কালো চশমা ঠিকই আছে। মেজাজটা তরতরিয়ে এক’শ দশে উঠে গেলো । ত্যারা করে একটা হাসি দিয়ে আমার দিকে চেয়ে বললো, "জায়গাটা খুব খারাপ, মাথা গরম করার দরকার নেই, যা আছে দিয়ে বিদায় হও। নতুবা অন্য পার্টি এলে জামা-প্যান্ট খুলে নেবে।" আমি চেনা মানুষ, তাই অল্পে ছেড়ে দিলাম।

ভেবে দেখলাম এটাই ভালো, কিন্তু পকেটে যে নোটগুলো আছে, তাতে মাস চালানোর টাকা রয়েছে। দিয়ে দিলে বেকায়দায় পড়ে যাবো। মাথা ঠান্ডা করে লোকটার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম। হাত বাড়ানো দেখে স্পষ্ট লোকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। আসুন, একটুখানি গল্প করি আপনার সাথে। বেঞ্চ দেখিয়ে বসতে বলে নিজে ও বসে গেলাম। টাকা হারানো কোনোভাবেই চলবে না।

খুক খুক করে দুই-তিনটা কাশির মতো শব্দ করে বসে গেল লোকটা। দেখুন, আপনি সেদিন বেশ কড়া কথা বলেছেন, আমি সহ্য করেছি কিন্তু আজ আর সহ্য করবো না। সাহসী একটা পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করলাম। আমার মামা, ইমতিয়াজ নাছের, আইজিপি—নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই? পুরাই ঢপ মেরে দিলাম। মামাকে এখন একটা মিস কল দেব, দু'মিনিটের মধ্যে থানা থেকে লোক এসে আপনাকে তুলে নিয়ে যাবে। ভালো হবে জিনিসটা?! ঢপের আলু চপের মতো ফুলে গেল।

আশেপাশে ভালো করে চেয়ে দেখে যেন নিশ্চিত হলো পুলিশ আছে কি নেই। সটান করে উঠে দাঁড়িয়ে প্যান্ট টেনে খানিক উপড়ে তুললো। নাছের আঙ্কেল আমারও ফুপা হন, ফুপার কথা বললেন তাই ছেড়ে দিলাম। পাখি টাখি সাথে আনলে রাত করবেন না। এলাকা ভালো না। এ ব্যাটাও ঢপের চপ মেরে দিলো। পেট ফেটে হাসি পাচ্ছে কিন্তু হাসতে পারছি না। মুখ গম্ভীর করে জোড় পায়ে দ্রুত পালিয়ে এলাম। ঢপ ঢপ মনে হলেও যদি সত্যি ফুপা হতেন তাহলে কেস খেয়ে যেতাম।

চিলেকোঠার জানালা দিয়ে আস্ত চাঁদ কে জেনো একটা রূপালী ফ্রেমের মতো লাগছে । মাঝে মাঝে তাতে কার জেনো চেনা মুখ ভেশে উঠছে । মাথার কাছে মোবাইল টা নিরব পরে আছে । বিশেষ নম্বরে ডায়েল করতে গিয়েও থেমে গেলাম ।অবস্থা এমন পেটে খিদে কিন্তু মুখে বলতে পারছি না । এপাশ ওপাশ করে বিছানা সমান করা ছাড়া আর কোন কাজ খুজে পেলাম না ।

আচমকা টিন টিন করে মোবাইল টা বেজে উঠলো । চমকে তাকিয়ে দেখি যাকে ফ্রেমে খুজছি সেই মোবাইলের রিং টোনে ডাকছে ।

কি ব্যাপার, মিস কল দিলেন কেন? ঝাঁঝালো কন্ঠে ওপাশ থেকে বলে উঠলো ।

আমি তো কল দেই নাই, খানিক টা অবাক হলাম । তবে আশা করছিলাম আপনি একটা কল দিবেন ।
কেনো আশা করছিলেন? যেন জবাব চাইলো ।

আরে বাহ আমাকে অমন একা ফেলে দৌড়ে পালিয়ে গেলেন। এরপর আমি বেঁচে আছি না মরে টরে গেলাম এই খোজ নিতে চাইতে পারেন ।

আপনি কি কচি শিশু? যে আপনি পথ হারিয়ে যাবেন । আর আপনার মতো হাড় বজ্জাত কখনো মরে না ।

আমি বজ্জাত হলে আপনি কি ? ডাইনি হবেন ।

হাঁসির ঝড়ে মোবাইলের অপর প্রান্ত ভেশে যাচ্ছে । হাঁসির ধরন ক্ষনে ক্ষনে পালটাচ্ছে । যেমন করে ঘুর্নীঝড়ের সংকেত পালটায় । তার পাড়া ভাংগা হাঁসির তোড়ে আমি ও ভেশে গেলাম ।নিরুপায় ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হওয়া ছাড়া আর কোন কাজ খুজে পেলাম না ।

হয় নাই, বজ্জাতের সাথে ডাইনি ঠিক যায় না । আপনি বজ্জাতি বলতে পারেন , যদিও এমন শব্দ নাই । আপনি তৈরী করলেন বা আবিষ্কার করলেন । আপনাকে আমরা নতুন ভাষাবিদ হিসেবে ফুলের মালা দিয়ে বুড় ঘোড়ার পিঠে চরিয়ে রমনায় ঘুড়িয়ে আনবো ।

ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে কথার কোন প্রতি উত্তর দিতে পারলাম না বা সাহস করলাম না । কি বলতে কি বলি আবার এক গাদা কথা শুনতে হয় ।

কি ব্যাপার ভয় পেলেন নাকি ? ভাষাবিদ হতে চান না ?

কাল না আমার জন্মদিন, বলেই জিভ কাটলাম ।পুরাই ঢপের চপ । আজ সারা দিন কি ঢপ দিয়ে চলবে । অন্যপাশে শুনশান নিরাবতা । খুক করে একটু আওয়াজ হলো জেনো । লাইন টা বোধয় কেটেই দিলো । হ্যালো শুনতে পাচ্ছেন । যাহ জন্মদিন বলে কি মূহুর্তটাই কেচে দিলাম ?

শুভ জন্মদিন । আপনি কি আজ এই কথা বলার জন্যই আমার সাথে দেখা করতে চাইলেন ?

ওমা ! এ যেন মেঘ না চাইতেই ঝড় তুফান । আমি চট জলদি বলেই দিলাম জ্বী , কিন্তু আপনি তো বলতেই দিলেন না । অভিনয় টা ভালোই রপ্ত করতে পারছি মনে হয় । খানিক দুঃখ দুঃখ ভাব নিয়ে ফোঁস করে একটা বড়সড় নিঃশ্বাস ছেড়ে দিলাম জেনো শুনতে পায় এমন করে ।

দুঃখীত, আপনার জন্মদিন আনন্দময় ও সুন্দর হোক ।

শুধু এইটুকু? আর কিছুই না !!

জন্মদিনে এর থেকে বেশি কি বলে ? এমন নরম আইস্ক্রিমের মতো ঠান্ডা অথচ কোমল কন্ঠে কথা বলতে আজ অবদি শুনি নাই । আমিও সুজুগ ছাড়লাম না । বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান এইবার ঘুঘু তোমার বধিব পরান ।

কাল কি একটু আমার জন্য আপনার সময় হবে । মাখো মাখো গলায় জিজ্ঞাসা করলাম । হঠাত মাথায় একটা প্ল্যান এসে গেলো আর কি । পিন ড্রপ সাইলেন্ট । হ্যালো ! হ্যালো ! কোন আওয়াজ নাই । ফোণ টা রেখেই দিলো হয়ত । ঢপে কাজ হলো না । ফোন টা কাটবো কাটবো করছি অমন সময় ওপাশ থেকে বলে উঠলো ।

কখন, শ্রেফ তিন অক্ষরের একটা শব্দ । প্রচন্ড রকমের ভালো লাগা এসে আমায় জাপটে ধরলো । মৃগী রুগীর মতো থরথরিয়ে কাঁপতে লাগলাম ।বুকের ভেতরে ঢিপঢিপানি এক মুহুর্তের জন্য থেমে গেলো । অনেক কষ্টে শ্বাস টেনে তুলে বললাম বিকেলে, সরওয়ার্দি উদ্যানে ।

হু, আচ্ছা । এখন রাখি ! আখের গুড়ের মিহি দানা রেশমি সুত হয়ে যেমন করে জড়িয়ে ধরে অমনি করে আমাকেও জড়িয়ে নিল তার অমন মন্ত্র মুগ্ধ কন্ঠের জাদুতে। এ জেনো জোছনা রাতে কোন পাহাড়ি রূপসী নীল পাহাড়ে তার প্রেমিকের তরে যেমন করে রাগ বীণা বাজায় অমন করে গুনগুনিয়ে প্রজাপতির পাখায় ভাসিয়ে নিলো । আহা আহা আহা !!

হায় কপাল আজ কার মুখ দেখে উঠেছিলাম । ফোন রাখবে তাও আমাকে জিজ্ঞাসা করছে । আনন্দে গদগদ হয়ে বললাম জ্বী রাখুন । মিষ্টি একটা কুটুস শব্দে ফোন টা কেটে গেলো । নিজেকে বাদশা আকবর বলে মনে হচ্ছে ।হাজার খানেক দাস দাসী যার সেবায় ব্যাস্ত। দূরে কোন ছোট্ট বাচ্চা কাঁদছে , আকবরি চালে চেঁচিয়ে উঠলাম, সো যাও বাচ্চালোক, চিল্লাও মাত । বত্রিশ দাঁতের প্যারেড দেখিয়ে ঘুমাতে ব্যাস্ত হলাম । মনে হয় না আজ আর ঘুম টুম আসবে । আয় ঘুম আয় ! আমার কপালে দিয়ে চুম , আয় নিয়ে ঘুম , ধুর ছাই চুমুর কথা কেনো মনে করতে গেলাম । এইবার এক্কে বারেই পালালো ঘুম ।

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:২৯
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×