পাড়ার চা এর দোকানে,
১ম ব্যাক্তিঃ “জানেন নরেন্দ্র মুদি সামান্য চাওয়ালা থেকে আজ মহান ইন্ডিয়ার প্রাঈম মিনিস্টার হইতাছে”।
২য় ব্যাক্তিঃ “কথা সত্য, আসলেই মুদি একটা মহান রাজনৈতিক, আমাদের দেশের প্রাঈম মিনিস্টার গুলার কথা বাদই দিলাম, কুনু মিনিস্টার ই এমন ভাবে আসে নাই । আমাদের দেশে এমন রাজনৈতিক দরকার। “

শুনে মুচকি হাসলাম। ভাবলাম এই ব্যাক্তি গুলাই হইত কিছুদিন আগে নরেন্দ্র মোদির চোদ্দ গুষ্টি ঊদ্ধার করতেছিল এই বলে যে “ষালার মুদি ভারত থেকে অবৈধ বাংলাদেশীদের বের করে দিবে, মুদি হারামজাদা, মুদি দাংগাবাজ, মুদির ঊচিত মুদিগিরী করা। ”

মোদি প্রাঈম মিনিষ্টার হইতেছে এবং বলছিল ভারত থেকে অবৈধ বাংলাদেশীদের বের করে দিবে, কথা দুটাই সত্য। আজ আমাদের সবার মুখে মুখে মোদির চাওয়ালা কাহিনি, অথচ কিছুদিন আগে আমরাই মোদি বিরোধী কথা বলে মুখে ফেনা তুলেছি। তাইলে আমাদের প্রব্লেমের সমস্যাটা কি। আমরা কেন এসব বলতেছি, কেন এসব নিয়া কালখেপন করে আমাদের মুল্যবান সময় নষ্ট করেতেছি। কারন প্রতিদিনই আমাদেরকে কেউ এসব খাওইয়া দিচ্ছে আর আমরা মজা করে খেয়ে দেয়ে ত্রিপ্তির ঢেকুর তুলতেছি, তারপর খাবার এর প্রশংসা করে বেরাচ্ছি। প্রশ্ন হঈল কে আমাদের এসব খাওয়াচ্ছে।

আমাদের মিডিয়া । এই মিডিয়াই আমাদের এসব পচা খবর সকালে ঊঠার সাথে সাথে খবরের কাগজে এক ডোজ, অফিসে দুপুরে লাঞ্চের পরে ফেসবুকে এক ডোজ, রাতে ঘুমানোর আগে টিভিতে এক ডোজ করে গিলাচ্ছে। এঈ মিডিয়াই আইপিএল নামক কিট লাঈভ খাওয়াচ্ছে, এই মিডিয়াই স্টার জলসাতে কখন বউ শাশুড়ি এর ঝগড়ার জলসা হবে তা বড় করে লিখে জানান দিচ্ছে আজকের পর্বের হাইলাইট সহ। প্রচার করতেছে ফাকিস্তানি পর্ণ মডেল ভিনা মালিকের ইসলাম গ্রহনের খবর। এই মিডিয়াই আমার A.U.S.T. এর ছোট ভাইরা যখন সেন্টমারটিন এর পানিতে ডুবে মারা গেল তখন বেচে যাওয়া এক ভাইয়ের কাছে গিয়া জানতে চাইছিল “এখন আপনার অনুভুতি কি ?”

কোন একটা ঘটনা ঘটলে আমাদের মিডিয়া প্রথম কয়েকদিন খুব প্রচার করে। ঘটনা বিশেষে লাইভ প্রচারও করে (২০০৮ সালে বসুন্ধরা সিটিতে আগুনএর লাঈভ প্রচারের কথাই ধরুন) । তারপর "এখন আপনার অনুভুতি কি” এই মার্কা প্রশ্ন দিয়ে ঘটনা শেষ করে । তারপর নতুন কোন ঘটনা নিয়ে প্রচার শুরু করে । আগের ঘটা ঘটনা গুলোর কি হল তা নিয়ে মিডিয়ার মাথা ব্যথা থাকেনা । আমি এখনো কোন টিভিতে বা খবরের কাগজে সেন্টমারটিনে প্রযটকদের জন্য নিরাপত্তা বাবস্থা উন্নতি হল কিনা তা নিয়ে কোন খবর দেখিনাই। রানা প্লাজার মত ঝুঁকিপূর্ণ গার্মেন্টস খুজলে আর একটিও পাওয়া যাবেনা এইটা আমি মরে গেলেও বিশ্বাস করবনা । কিন্তু আমাদের মিডিয়ার এসব অনুসন্ধান নিয়ে কোন মাথাব্যথা নাই। কিন্তু যখনই কোন বিল্ডিং ধসে পড়ে শত শত নিরীহ মানুষ মরবে তখনই মিডিয়ার ঘুম-খাওয়া হারাম হয়ে যাবে। আমাদের খবর বানায়ে খাওয়াবে আর আমরা কিছুদিন খাব, আফসোস করবো, তারপর ভুলে যাব, তারপর আবার নতুন কিছু খাব। মিডিয়া আমাদের একটা পচা ইনফিনিটি লুপে ফেলে দিয়েছে.... Need to set a break at that loop. ¬