মানুষ কর্মক্ষেত্রে যায় বিভিন্ন দিনে কিন্তু উৎসবে মানুষ বাড়ী ফেরে প্রায় একই সাথে কারণ নাড়ীর টান।আত্মীয়-স্বজনের সাথে সাক্ষাতের মাধ্যম হল একটি উৎসব যেটি হল পবিত্র ঈদ।প্রায়শঃই লক্ষ্য করা যায় ঈদে বাড়ী ফেরার সময় কোন না কোনভাবে দূর্ঘটনা ঘটে মানুষের প্রাণহানী হয় যার মাধ্যমে নির্জলা একটি আনন্দ হয় ভুলু্ন্ঠিত আর আত্মীয় হারায় তার প্রিয় মানুষটিকে যে ছিল তার সংসারের একমাত্র অবলম্বন। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট একটি পরিবারে বিষাদের ছায়ায় পরিপূর্ণ হয়।
প্রতিটি উৎসবে বাড়ী আসার প্রাক্কালে বিভিন্ন কর্ণার থেকে বিভিন্নভাবে সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয় কিন্তু তা উচ্চারিত হলে কি হবে মানুষের বাড়ী আসার স্বপ্নে তার সে বিষয়গুলো ভাবার বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। পথে যেতে কোন যানবাহনে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে আরোহণ করা যাবেনা,পথিমধ্যে অপরের দেওয়া কিছু খাবার খাওয়া যাবেনা,পথেঘাটে আগে-পিছে দেখেশুনে চলতে হবে যাতে দস্যুরা দুস্যুবৃত্তি করে সর্বস্ব লুটে নেয়ার সুযোগ না পায় বা অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়া না যায়।
বাস্তবতা এই যে, একসাথে লক্ষ মানুষের অবাধ বিচরণ একসাথে সৃষ্টি হওয়ায় সে তূলনায় যানবাহনের সংখ্যা সীমিত হওয়ায় এমনটি ঘটে। কেননা আগামীকাল বা একদিন বাদে ঈদ,সেক্ষেত্রে আমাকে তো প্রয়োজনের তাগিদেই বাড়ীতে ছুটতে হবে। সেক্ষেত্রে বাসষ্টেশনে গিয়ে দেখা গেল বাসের টিকেট নেই,ট্রেনষ্টেশনে ট্রেনের টিকেট নেই। ফলে কোন আইন বা বিধি-নিষেধের তোয়াক্কা না করে আইন,শৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে না তাকিয়ে বাসের ছাদে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে আবার ট্রেনের ছাদে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বা ট্রেনে সংরক্ষিত আসন না থাকা সত্ত্বেও দাঁড়িয়ে এমনকি ট্রেনের হ্যান্ডেলে বাদুড়ঝোলা ঝুলে আমরা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে থাকি। অন্যদিকে লঞ্চ ষ্টেশনের কথা তো ভাবাই যায়না। সেখানেও পানিতে ডোবার ভয়টিও হারিয়ে যায়। এমন অকুতোভয় অবস্থায় যাত্রা করলে বেশ কিছু অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি তো হবেই। ট্রেনে যেতে রাত্রিবেলা বা দিনের বেলা রেলসেতুতে দেহটি আঘাত লেগে যাবে কিনা বা কোন দস্যু তস্কর ট্রেন থেকে ফেলে দিবে কিনা ইত্যাদি পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। অপরদিকে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে চলার সাবধান বাণী উচ্চারণ করা হলেও সেদিকে বিন্দুমাত্র খেয়াল না করে যাত্রী হওয়ায় সেখানেও বৈরী আবহাওয়ায় দেখা দেয় বিপত্তি লঞ্চ দূর্ঘটনা ঘটে রাতে বা দিনের বেলায় বহু যাত্রী তলিয়ে যায় জলের অতলে। আবার অনেকে বাস না পেয়ে ট্রাকে করে যাত্রা শুরু করে যেটি ওভার স্পীড করে দূর্ঘটনা ঘটিয়ে নির্মম পরিণতি সৃষ্টি করে দেয় ঈদের মত পবিত্র আনন্দ মাটি করে।
তাই পরিশেষে বলা যেতে পারে যে,আপনারা সাধারণতঃ জীবনের মায়া করে কোন যানবাহনে অতিরিক্ত যাত্রী হবেন না কেননা একটি আত্মার মৃত্যু মানে একটি পরিবারকে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪১