এই আবহ নিয়ে সারাদিন কাটল (২৯/১০/২০২০) দুগ্ধভবনে ৪০তম বার্ষিক সাধারন সভা - ২০২০ সভায় ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্হানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের
দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত মাননীয় মন্ত্রী জনাব মো: তাজুল ইসলাম, এমপি।
বিশেষ অতিথি : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্হানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব স্বপন ভট্টার্চায্য , এমপি।আরও উপস্হিত ছিলেন উক্ত মন্ত্রণালয়ের সচিববৃন্দ এবং সমবায়
অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক জনাব মো: আমিনুল ইসলাম ।
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন সম্মানিত চেয়ারম্যান,বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লি : ( মিল্ক ইউনিয়ন )।
৪০তম বার্ষিক সাধারন সভায় সমগ্র বাংলাদেশ থেকে স্বাস্হ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সকল অন্চলের দুগ্ধখামার থেকে ৩০০ প্রতিনিধিবৃন্দ যোগদান করেন ।
৪০তম বার্ষিক সাধারন সভা - ২০২০ সভায় উপ্হাপিত প্রতিবেদন অনুসারে মিল্ক ইউনিয়ন এর তথ্য চিত্র নিম্ন রুপ :-
১। বিগত ৩০শে জুন২০২০ পর্যন্ত ৬৫.৮১ কোটি টাকা বাণিজ্যিক বাংকে এফডিআর আকারে স্হিতি আছে ।
২। বিভিন্ন প্রকার অপচয়,মেরামত,ক্রয় ও পরিবহন খাতে আধুনিক নীতিমালা প্রয়োগের ফলে প্রতিমাসে আর্থিক সাশ্রয় হচ্ছে ।
৩। মিল্ক ইউনিয়ন পরিচালিত গো-খাদ্য উৎপাদন কারখানা থেকে সুষম দানাদার খাবার খামারীদের দ্বারে দ্বারে সরবরাহ করা হচ্ছে ।
৪। ফেসবুক ও অনলাইনের মাধ্যমে পাস্তরিত দুধ ও দুগ্ধজাত অন্যান্য পণ্যসামগ্রী ভোক্তা সাধারণের নিকট পৌছাঁনো হচ্ছে ।
৫। করোনায় ত্রান কাজে মিল্ক ইউনিয়ন এগি য়ে আসে এবং সরকারী সহায়তায় গুড়োদুধ ত্রানকাজে বিক্রয় করা হয় এবং
গ্রামেগন্জে মিল্কভিটা প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করে । মিল্ক ইউনিয়ন করোনা কালীন ১৫ কোটি টাকার গুড়োদুধ বিক্রি করে ফলে
প্রান্তিক পর্যায়ের খামারীরা আর্থিক লাভবান থাকায় ব্যাপক উৎসাহ দেখা যায় ।
৬। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মিল্কভিটা গুড়োদুধ নিয়মিত সরবরাহ শুরু হয়েছে যা প্রতিদিনই চাহিদা বাড়ছে ।
৭। কভিড-২০১৯ এর কারনে সরকার ঘোষিত প্রনোদনার আওতায় খামারীদের মাঝে ১০ কোটি টাকা বিতরনের ব্যবন্হা
নিয়েছে সেই লক্ষ্যে বিগত ২২শে অক্টােবর রুপালী ব্যাংক এর সাথে সমঝোতা স্মারক সম্পন্ হয়েছে ।
৮। পরপর তিনবার আর্ন্তজাতিক বানিজ্য মেলায় মিল্কভিটা প্রথম স্হান লাভ করে শুধুমাত্র গুনগত মান ও অধিক সেবা দানের জন্য ।
এবছর ৪০তম বার্ষিক সাধারন সভা - ২০২০ সভায় খামারীদের মূল দাবী ছিলো,
** তাদের সরবারহকৃত দুধের ন্যায্য দাম নির্ধারন করতে হবে, সেজন্য বাজারে নিম্ন মানের দুধ আমদানী বন্ধ করতে হবে,
৫বৎসর এর উপর থেকে ভোক্তা পর্যায়ে আমদানীকৃত গুড়োদুধ এর ট্যাক্স বাড়ায়ে ২৫% করতে হবে ।
** দুধের দাম সঠিক ও গুনগত মান বজায় স্বার্থে প্রয়োজনে একটি ডেইরী বোর্ড করে ফ্যাট ও লেক্টোর ভিত্তিতে সকলে
একই নীতিমালা মেনে চলবে ।
** ঢাকা শহরে অন্তত ২৫টি স্হানে বিল বোর্ড স্হাপনে সহযোগিতা প্রদান ।
** দুগ্ধ খামারীরা কৃষিজ উৎপাদন খাতে আওতায় পড়ে, সেক্ষেত্রে সরকারি ঘোষনা অনুসারে , বিদুৎ রেয়াত পাবার কথা
অথচ বিদুৎ কর্তৃপক্ষ বানিজ্যিক ভাবে বিল আদায় করে ফলে এই শিল্পে উৎড়াদন খরচ বেড়ে যায় এবং অনেক খামারী
বিভিন্ন খরচ বেড়ে যাওয়ায় উৎসাহ হারাচ্ছে । সে জন্য উক্ত রেয়াত সুবিধা চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহন ।
৪০তম বার্ষিক সাধারন সভায় ২০১৯-২০২০ আর্থিক বৎসরের শ্রেষ্ঠ সমবায়ী ও সমিতির মধ্যে পুরস্কার বিতরন :
** শ্রেষ্ঠ সমিতি : ১) দুগ্ধ এলাকা > সাতক্ষীরা, সমিতি > তালা , দুধ সরবরাহ : ১৪৬৬৬২২ লিটার , (প্রথম)
২) দুগ্ধ এলাকা > বাঘাবাড়ীঘাট, সমিতি > ধলাই , দুধ সরবরাহ : ১৩৩৩২৪৮ লিটার , (দ্বিতীয় )
৩) দুগ্ধ এলাকা > খুলনা, সমিতি > শাহাপুর , দুধ সরবরাহ : ৮০৮৫৪৩ লিটার , (তৃতীয়)
** শ্রেষ্ঠ সমবায়ী : ১) দুগ্ধ এলাকা > খুলনা,সমিতি >শাহাপুর,সমবায়ী: সুধীর কুমার ঘোষ,দুধ সরবরাহ :৬০৯৭৫৩২ লিটার,(প্রথম)
২) দুগ্ধ এলাকা > খুলনা, সমিতি >শাহাপুর, সমবায়ী: কৃষ্নপদ ঘোষ,দুধ সরবরাহ : ৯৮৩৬২ লিটার , (দ্বিতীয় )
৩) দুগ্ধ এলাকা > টুঙ্গীপাড়া,সমিতি > টুঙ্গীপাড়া,সমবায়ী:মুন্সি রফিকুল ইসলাম,দুধ সরবরাহ: ২১০১৯ লিটার,(তৃতীয়)
৪০তম বার্ষিক সাধারন সভায় প্রকাশিত তথ্য মতে মিল্ক ইউনিয়ন এখন ২১টি আইটেম উৎপাদন করছে ।
সকল স্হানীয় ও আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে ভোক্তা সাধারণ উৎসাহ আর আগ্রহ নিয়ে প্রতিদিনই নির্দিষ্ট সেন্টার
থেকে পণ্য ক্রয় করছে এবং সকল আইটেম যথাসময়ে পাচ্ছেনা বলেও অভিযোগ জানাচ্ছে ।
তার মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখ যোগ্যর নাম প্রদান করা হলো :-
১) তরল পাস্তরিত দুধ
২) ফুলক্রীম গুড়োদুধ
৩) ননীবিহীন গুড়োদুধ
৪) মাখন
৫) ঘি
৬) মিষ্টি দই
৭) টক দই
৮) রস মালাই
৯) মাঠা
১০) টোন্ড মিল্ক ইত্যাদি
চলতি অর্থ বৎসরে প্রতিটি পণ্যের বাজার সম্প্রসারন ও বিক্রয় উন্নয়ন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, সেই লক্ষ্যে
৪৫০ কোটি ২৮ লক্ষ টাকার বিক্রয় লক্ষ্য মাত্রা স্হির করা হয়েছে ।বিক্রয় লক্ষ্য মাত্রা টার্গেট হিসাবে সরকারী বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসছে । ইতিমধ্যে সকল কারাগার, বিমান বহরে, পুলিস লাইনে, স্কুল মাদ্রাসায় সরবরাহের কার্যক্রম এগিয়ে চলছে ।
বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ভবনে বিক্রয় সেন্টার বসানোর অনুরোধ জানাচ্ছে ।
বিগত ৪ বৎসর পূর্বে যে প্রতিষ্ঠানটি নানা বাহানা আর ষড়যন্ত্রর কারনে পাটকলে র মতো নিলামে তোলার প্রস্তুতি চলছিল
তা আজ দুর্দান্ত ভাবে ঘুরে দাড়াঁয়াছে, সমবায় খামারীদের একমাত্র লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে । বিভিন্ন
দূর্নীতির কারনে ১৫৭ জন চাকুরীচ্যুত হয়েছে ।
পরিকল্পনা মত সঠিক ভাবে চলতে পারলে আগামী ৩ বৎসরের মধ্যে সরকারী রাজস্ব আয় ও জনসাধারণের পুষ্টি
যোগানের অন্যতম সমবায় প্রতিষ্ঠান হিসাবে অবদান রাখবে ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:৩৬