“আব্বা, তুমি এবার ক্ষেমা দেও। তোমার শইলের দিকে চাইয়া দেহো একবার।” মিলন ভাত খেতে খেতে সবুর আলীকে বললো।
সবুর আলী কিছু বললেন না। মিলন এ কথা গত তিনবছর তাঁকে বলছে। বয়স আশি পেরিয়েছে বছর পাঁচ-ছয় হলো। ইংরেজ গিয়ে যখন পাকিস্তান আসে তখন তিনি সেয়ান ব্যাটা ছেলে। দাঁতের অস্তিত্ব তাঁর মুখ থেকে লোপ পেয়েছে বেশ ক’বছর হলো। রিক্সা টানার জোড়টাও খুব একটা নেই। তবু তিনি রিক্সা চালান।
মিলন তাঁর দ্বিতীয় ঘরের ছেলে। প্রথম বউকে সংগ্রামের সময় পাকিস্তানিরা তুলে নিয়ে যাবার পর আর হদিস পাননি। ছেলে একটাই ছিল সেও সংগ্রাম করতে গিয়ে মারা যায়। এরপর প্রায় পনেরো বছর হবে সবুর আলী পথে পথে ঘুরেছেন। এর মাঝে আবার গানও শিখেছিলেন এক সাধকের কাছে। এরপর গান গাইতে গাইতেই একদিন বাড়ি ফিরলে গাঁয়ের লোকজন প্রায় ধরে বেঁধেই তাঁর বিয়ে দেয় মোছলেখা বেগমের সাথে। সবুর আলীর মনে তখনও প্রথম স্ত্রী রাবেয়ার ছবি ভাসে। বাসর ঘরে দ্বিতীয়বারের মতো তাই আর ঢোকা হয়নি সবুর আলীর। ষোড়শী বধুর বাসর রাত একা কাঁটে, একা কাঁটে আরো অনেকগুলো রাত।
হঠাৎ একদিন স্বপ্নে তাঁর ওস্তাদ তাঁকে তিনবার “শয়তান” ডাকলে এক পাপবোধ জন্মে তাঁর মনে। যখন তিনি মোছলেখা বেগমের সাথে বাস্তবিক সংসার পাতেন। তদ্দিনে পাঁচ বৎসর গত হয়েছে। এক যুগ পূর্বে অর্ধশতক পার হওয়া পুরুষের সাথে সাথে শুরু হয় সদ্য বিংশতি রমণীর এক অসম সংসার। বড় আজব এক সংসার। প্রেম ছিল, অথচ তার কোনো অবয়ব ছিলনা। দুটি মানুষই দুটি মানুষকে ভালবাসতো, অথচ কেবল কাজের কথাই হতো।
সংসারী হবার এক মহাঝামেলা হলো নিজের খাবারের চিন্তা না করলেও আরেকজনের খাবার নিয়ে ভাবতে হয়। তাঁর গ্রামে তখন সিলেটের লন্ডনি টাকার গন্ধ মম করছে। সিলেট এসে রিকসা চালানোর সেই থেকে শুরু। আজ তাঁর মুখভর্তি সাদা দাড়ি আর দন্তহীন ভাঙ্গা চোয়াল। বয়সের ঘর্ষণে কণ্ঠ অনেকটাই খসখসে হয়ে গেছে। তবু প্রায়ই সিটের নিচে রাখা দোতারাটা চৌহাট্টা মোড়ে বসে বাজান।
বছর তিনেক হলো মিলন এম,সি, কলেজ থেকে বি,এ, পাস করে সরকারি চাকরি পেয়েছে। সেই থেকে তার এই এক আরজি। বয়সের হিসেবে সবুর আলীর এ কথা মেনে নেয়া উচিত। কিন্তু ছেলেরও তো একটা সংসার হয়েছে, বাচ্চা হয়েছে। এসব সাত-পাঁচ ভেবেই সবুর আলীর সঙ্কোচ হয়।
“আব্বা হুনতাছো?” মিলন সবুর আলীর ভাবলেশহীনতা দেখে আবার বললো।
“বউমা বড় মজা কইরা শুঁটকির ছালন রাঁনছে, খা কথা না কইয়া।” কি বলেছেন সেটা এখন সবুর আলীর নিজেরই বুঝতে কষ্ট হয়। দাঁত পড়ে যাওয়ার পর বেশিরভাগ কথাই বাতাস হয়ে বেরিয়ে যায়। মিলন তবু ঠারে-ঠুরে বুঝে নেয়।
“আব্বা...”
“জীবনে কিচ্ছুত না করছি নি তোরে? যহন করতাছি তহন হুন।” সবুর আলী ছেলেকে থামিয়ে বললেন।
শীত আজকাল খুব বেশীদিন থাকেনা। মাঘ মাস তার শেষ দু’দিনে পড়েছে। মাথায় রোদ ফেটে পড়তে শুরু করেছে বেশ কদিন হলো। মৃদুমন্দ বাতাস যেন বসন্তের আগমনেরই সাঁনাই বাজাচ্ছে। আম্বরখানা পয়েন্টের খানিকটা আগে রিকশা জ্যামে আটকেছে। কপালের ঘাম একটু পরপর চোখ ঝাপসা করে দিচ্ছে সবুর আলীর। আজ যেন আর দিনের চাইতে বেশি ঘাম হচ্ছে। মাঝে মাঝে দিন এমন হয়। এসব দিনে বড় কষ্ট হয় রিকশা চালাতে। একটুতেই দিল তড়পায়।
প্যাসেঞ্জার সিটে এক স্কুল পড়ুয়া মেয়ে বসে আছে। হঠাৎ করেই সে সবুর আলীর হাতে ভাড়া ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলো। এমন হয় অনেকসময়। গরমে-জ্যামে প্যাসেঞ্জার বিরক্ত হয়ে চলে যায়। কতোকিছু করে পুলিশ এই জ্যাম থামানোর জন্য! কোনো কিছুতেই কিছু হয়না। কয়দিন ভাল থাকে তারপর যেই-কে-সেই। কপাল ভাল থাকলে প্যাসেঞ্জার ডিভাইডারের আগে নামে, খারাপ থাকলে পরে। সবুর আলীর আজ কপাল ভাল। রিকশা তাঁর ডিভাইডারের পাশে আবার প্যাসেঞ্জারও ডিভাইডারের আগে নেমেছে। সবুর আলী উল্টা রাস্তা খালি দেখে ঘুরাতে লাগলেন হঠাৎ করেই ভুল রাস্তায় আসা একটা মোটর সাইকেল তাঁর রিকশাকে ধাক্কা দিলো।
“হারামজাদা বুড়া দেইক্কা চালাস না নি?” মোটর সাইকেলে বসা ছেলেটা সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে উঠলো। কতই বা বয়স? প্রথম ঘরের ছেলে বেঁচে থাকলে সবুর আলীর নিজেরই হয়ত এ বয়েসী নাতী থাকতো! তিনি ঘার ঘুরিয়ে দেখলেন মাডগার্ডটা বাঁকা হয়েছে। কিছু বললেন না তিনি। লন্ডনী টাকার লাল চুল আর লাল মোটর সাইকেলে কৃত্রিম সৌন্দর্য্য লাভের প্রত্যাশায় যে নিজের চেহারাকে রুক্ষতা দিয়েছে তার কাছে বিবেকের কথা বলতে ভরসা মিলে না।
রিকশা চালাতে গিয়ে এমন অনেক হয়। মনে দাগ কেটে ফের মিলিয়ে যায়। প্রথম দিকেই তো গালে পাঁচ আঙুলের দাগ পড়েছিলো একটা গাড়িতে এক ইঞ্চি দাগ পড়ায়। ড্রাইভারও হয়ত মারতো সেদিন যদিনা পেছনের রিকশা-গাড়িগুলো চেঁচামেচি শুরু না করতো। এসবই সবুর আলী শিক্ষা হিসেবে নেন। এ তাঁর ওস্তাদের এক বড় শিক্ষা। সেদিন সবুর আলী বুঝেছিলেন গরীবের গালের দাম ঐ গাড়ি নামক জড় পদার্থ থেকেও কম। হবে নাই বা কেনো? গরীবই তো গরীবকে সবার সামনে কুত্তার বাচ্চা বলে। নিজের ছেলেকে কুত্তা বলতে গিয়ে নিজেকে কুত্তা বানাতেও তো কুণ্ঠা নেই! হায়রে ভুবন দরিয়ার যাত্রী! স্পিডবোট হোক আর ডিঙি নৌকা, যেতে তো হবে একই তীরে! ভাবেন আর হাসেন সবুর আলী। নিজের ভাবনায় নিজেই হাসেন আর রিকশা চালান, বেশ চালিয়ে যান!
সেই যে এসে বসেছেন তারপর থেকে সবুর আলী একটানা দোতারা বাজাচ্ছেন। এরমাঝে সূর্য মধ্য গগণ পেরিয়ে পশ্চিমে অনেকটাই ঢলে পড়েছে। রিকশাওয়ালারা টিপ নিয়ে আসছে, দোতারার সুরেলা টুংটাং শুনছে, প্যাসেঞ্জার নিয়ে চলে যাচ্ছে, ফের আসছে। সবুর আলীর চেহারার দিকে তাকিয়ে আজকাল কেউ খুব একটা তাঁর রিকশায় উঠেনা।
হঠাৎ একটা কোমল বাতাস সবুর আলীর সম্বিত ফেরালো। এখন মাঝেমধ্যেই বাসন্তী হাওয়া এভাবে বয়ে যায়। পাশে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে সবুর আলী সেদিকে ফিরে তাকালেন। রিকশা স্ট্যান্ডের নিয়ত পাঁচ টাকার ঝগড়া। এ ঝগড়াটা আজ তিরিশ বৎসর হলো সবুর আলীর মাথায় ঢুকলো না।
“কয়টা বাজে বাজান?” পাশে বসে থাকা কম বয়সী ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করলেন সবুর আলী।
“চাইট্টা চাচাজি।”
সময়টা সবুর আলী পশ্চিমে খানিকটা হেলে পড়া সূর্যের আলো দেখেই বুঝতে পারছিলেন। তবু জিজ্ঞেস করা এক অভ্যেস। এ আলোটা সবুর আলীর বড় পছন্দের। উচু-উচু দালানগুলোর দেয়ালে আলোগুলো যেন তাদের স্বর্ণমণ্ডিত করে তোলে। এ আলোয় আলস্য থাকে। আলস্যের মাদকতায় বিভোর শহুরে চোখগুলো আবার এ আলোতেই ব্যস্ততা খুঁজে ফিরে।
সবুর আলী উঠে দাঁড়ালেন। পেটের মাঝে খিদে বেশ জোড়ে-সোড়েই টান দিচ্ছে। অন্যদিন পাশের মিষ্টির দোকানে সিঙ্গারা-সমোচা খান। আজ কী মনে করে যেন রিকশা নিয়ে ছেলের বাসার দিকে রওনা দিলেন। মোছলেখা বেগম মারা যাওয়ার পর এ সাত বছরে গণার ক’দিনই দুপুরে ভাত খেয়েছেন, সেও ছেলের বিয়ের পর। গেলে সমস্যা নেই। তবু ভাবেন পাছে ছেলের বউয়ের কষ্ট হয়!
পেছনে বসা ছেলে-মেয়ে দুজনেই অনর্ঘল কী যেন বলছে আর হাসছে। তাদের কাণ্ড দেখে একটা মুঁচকি হাসি ফুটে ওঠলো সবুর আলীর ঠোঁটে। রিকশা চালানোর এই এক মজা। কত যে রঙ দেখা যায় এই দুনিয়ার! প্রায়ই তাঁদের গানের দলের মেলায় ডাক পড়তো। সেখানে সন্ধ্যায় একদল থাকতো যারা শুধুই ভেলকী দেখাতো। হায়রে কত রঙের কত ভেলকী! এই দুনিয়ার মানুষগুলাও ঐ ভেলকীবাজদের মতো। আল্লাহ আদম-হাওয়ারে ছাড়ার পর থেকে কেবল রঙই ছড়াচ্ছে এ দুনিয়ায়। এই ভালবাসারই তো কত যে রঙ! একদিনের কথা হঠাৎ করেই মনে পড়ে গেলো সবুর আলীর। একটা ছেলের কাছ থেকে রাগত চেহারায় চলে এসে একটি মেয়ে উঠে বসে তাঁর রিকশায়। রিকশাটা ছাড়তেই মেয়ের সে কি কান্না! সেদিনের গাওয়া গানটাও সবুর আলীর মনে পড়ে-
“দিলের সওদা করেছি আপনমনে তোর নামটি লয়ে
সেই সওদার দাম তো বন্ধু তুমি দিলায় না।
এক বিঘা মোর প্রাণের জমি
তোর নামে লিখায়েছি।
সেই জমিতে থাকতে বন্ধু তুমি আইলায় না।।”
সেদিনের কথা মনে পড়ায় সবুর আলীর ভাবনা জাগলো মনের মাঝে মেয়েটিকে নিয়ে। মেয়েটি এখন কোথায়! সে কি আজো ছেলেটার কথা ভাবে? কখনো কখনো কি লুকিয়ে কাঁদে? নাকি বালির নিচে ব্যর্থ আগুন চাপা দিয়ে আজ সে অন্যের ঘরে হাসে, আরেকজনকে হাসায়? সে আগুন কি সত্যই ব্যর্থ ছিল? হয়ত ঝড়ো হাওয়ায় বালির আস্তরণ সরে গেলে সে আবার দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠবে!
”চাচা, একটু দাঁড়ান।” পেছন থেকে মেয়েটি বলে উঠলো।
সবুর আলীর এতক্ষণে খেয়াল হলো তিনি আখালী পেট্রোল পাম্পের সামনে। হায়রে বয়স! বয়স যত বাড়ছে ততোই যেন ভাবনায় সময় কাঁটে। কোথা থেকে যে কোথায় চলে যান ভাবতে ভাবতে!
”চাচা, সামনে তো উচু জায়গা, আপনি পার হয়ে দাঁড়ান আমরা হেঁটে আসি। এতো দূরের রাস্তা আসছেন, আমাদের নিয়ে এখানটা পার হতে কষ্ট হবে।” মেয়েটি নেমে গিয়ে বললো। ছেলেটিও তার সাথে নামলো।
”মা গো, তুমি যে কইছো এইডায়ই পরাণডা জুড়াই গেছে। তোমরা উঠো। পরাণ জুড়াইলে আর কষ্ট হয়না।”
দুনিয়ার এ আরেক রঙ। এ রঙ অন্তরে ঘা ফেলে। কষ্টের ঘা আবার খুশির ঘা। এই যে আজ অন্তরে ঘা পড়লো, এটা খুশির ঘা। লাক্কাতুরায় এখন যে স্টেডিয়াম বর্তমান, সেটা তখন নিকট ভবিষ্যৎ। সেদিকের টিপ তখন থেকেই শরীরের জন্য নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবু সেদিন বিশাল বপুর লোকটার অসহায়ত্ব দেখে নিয়েছিলেন। টিলায় উঠার সময় দম ফুরিয়ে যাচ্ছিলো তাঁর, তাই একটু নামতে বললেন।
”পারতাম নায়। ইলা আপ হারা রাস্তাতই আছে।”
সেদিন আর রিকশা চালাতে পারেননি সবুর আলী। শ্বাসের টান পড়েছিলো। নবাবজাদাকে টেনে মূর্খের শ্বাসে টান পড়লে সেটা বড়লোকের বিবেচনায় আসেনা। বড় মানুষের বোধগম্যতা আদর্শে, নীতিতে, মূর্খের দম বন্ধ হওয়ায় নয়। এ ঘটনাও মনে দাগ ফেলেছিলো। সেটা কষ্টের দাগ।
হয়ত বারোটা বাজে কিংবা তারও বেশি। ভার্সিটি গেইটের ছাউনিতে বসে আছেন সবুর আলী। রিকশা সামনেই রাখা। একটু একটু ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। আকাশের তারাও মিলিয়ে গেছে বহুক্ষণ। দূর আকাশে বারবার জ্বলে ওঠছে সাদা আলোর ঝলকানি। একটু থেমে থেমে বয়ে আসছে গুড় গুড় শব্দ। হয়ত বৃষ্টি হবে। সিলেট রড় আজব এদিক দিয়ে। শীতকাল যাবো বললেই সে বৃষ্টি খুঁজে। রাজাকে ধন্য করার চেষ্টায় যেন তার বিরাম নেই!
সবুর আলীর মনে আজ হঠাৎ করেই আনন্দের শ্রাবণ ঢল নেমেছে। বড় ভাল লাগছে এই হিমেল হাওয়া, বিদ্যুতের ঝলকানি আর গুড় গুড় শব্দ। আধ ঘণ্টা ধরে তাই এখানেই বসে আছেন আর ভাবছেন রিকশা চালানো ছেড়ে দিবেন। সুখের দোলা ওঠে তাঁর মনে ভাবতে গিয়ে। কেবল ক্ষণেকের জন্য এ দোলা। পরক্ষণেই ভাবেন সুখ কি সত্যি আসে? তাঁর ওস্তাদ তাঁকে বলেছিলেন সুখ আরেক গাঁয়ের আসমান। হয়ত তাই, আবার হয়ত না। ওস্তাদও তো মানুষ। ভুল তো তিনিও ভাবতে পারেন।
খিদেয় পেট চোঁ চোঁ করছে তবু খাওয়ার ইচ্ছে নেই। রিকশা নিয়ে রওনা দিলেন সবুর আলী। আজ সারারাত রিকশা নিয়ে ঘুরবেন তিনি। ভোরে যেখানে থাকবেন সেখানে রেখে চলে যাবেন ছেলের বাসায়। শেষবারের মতো রিকশা চালাচ্ছেন ভাবতে গিয়ে যেন পায়ে আলগা জোড় পাচ্ছেন তিনি। টিপ টিপ করে বৃষ্টি এখন অঝোরে ঝরছে। ভিঁজে যাচ্ছে সবুর আলীর বৃদ্ধ দেহ সাথে পোড় খাওয়া মন। এ মন থেকে আজ যেন ধুয়ে যাচ্ছে গত পঁচাশি বৎসরের সব গ্লাণি। মনের মাঝে ছুটির অবগাহন। নেচে ওঠছে সে বারবার বৃষ্টির তালে। অবিশ্রান্ত বারিধারার সুরে হারিয়ে গিয়ে সবুর আলী যেন উড়ছেন, উপরে, আরো উপরে!
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৩