কুয়েট। মানে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি অন্যতম সেরা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা বিভাগের খুলনা জেলায় অবস্থিত। পূর্বে এর নাম ছিল বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি, খুলনা ও তারও আগে, খুলনা প্রকৌশল মহাবিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্যতম।
হতে পারে পূর্বে অন্যতম ছিল। বর্তমানে গাধা-গরু-বলদে ভরপুর। গত শুক্রবার (১ নভেম্বর) তারই প্রমান পেলাম কুয়াকাটা ভ্রমণে গিয়ে। হতাশ হলাম-মুটে-মুচি-কুলি-রিকশাওয়ালার ট্যাক্সের টাকায় খরচ বহনকরা দেশের শীর্ষ একটি বিদ্যাপিঠের শিক্ষার্থীদের বাস্টার্ড মাইন্ড দেখে।
কুয়াকাটা সী-বিচে এই প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে দেড়শ' শিক্ষার্থী শিক্ষা সফরে এসেছিলেন। মুখে শিক্ষা সফর বললেও নিরেট এইসব মূর্খ-অভদ্রদের ওই সফরটি কোন অংশেই শিক্ষা সফর ছিল না।
সেই দেড়শতাধিক শিক্ষার্থীর গায়ে উপরের গেঞ্জিটি ছিল। আমি একটা বিষয় বুঝলাম না-কোপ হবে কুয়াকাটায়-লাইনটার মানে কি বুঝাতে চাইলো এই তথাকথিত শিক্ষিতরা?
এরা কি আসলে বাঙালী-বাংলাদেশী বা সামাজিকতার কোন শিক্ষি নিয়ে বড় হয়েছে? এদের অভিভাবকরা কেমন? কুয়েটের বর্তসমান প্রশাসনই বা কেমন? শিক্ষা সফরে নিয়ে আসার সময়ে যেসব শিক্ষকরা গাইড হয়ে এসেছেন তারা কতটা অভদ্র-অশালীন ও নগ্ন মানসিকতার ছোটলোক হলে-কোপ হবে কুয়াকাটায়-শিরোনামের গেঞ্জি গায়ে দেওয়ার অনুমতি দিতে পারে?
আসলে বাংলাদেশে একসময়ে ভালো ছেলে মেয়ে জন্ম নিত। এখন যা নিচ্ছে, যারা উচ্চ শিক্ষিত হচ্ছেন বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট থেকে তারা আর ভালো ছেলে মেয়ে নন। এসব প্রতিষ্ঠানে পড়ে তারা অসভ্য-খুনি হয়ে বড় হচ্ছেন। আগে শিক্ষার্থীরা সম্পদ হলেও এখন আতংক হয়ে উঠেছে।
কোপ হবে কুয়াকাটায় শব্দটির দুটি অর্থ হতে পারে। প্রথমত ধর্ষণ বা বিধি বর্হিভূত সেক্স রিলেশন। দ্বিতীয়টি সন্ত্রাসীদের কোপাকুপির ইঙ্গিত। যেহেতু বাংলা একাডেমীর অভিধানে কোপ শব্দটি বিশেষ্য পদ। এর অর্থ রোষ, ক্রোধ, রাগ; অসন্তোষ; বিরাগ।
কিন্তু এই অসভ্য মানসিকতার শিক্ষার্থীরা উল্লেখিত রোষ, ক্রোধ, রাগ; অসন্তোষ; বিরাগ অর্থ কিছুই বোঝান নি।
সচারচার লোকাল ভাষায় ধর্ষণ শব্দটিকে কোপের সমার্থক বলতে শোনা যায়। স্থানীয়ভাবে ধর্ষণের সংবাদ দিতে গিয়ে এভাবে বলা হয়-অমুকের মেয়ে/বউকে অমুকে কোপাইছে-হুনছ?
যেহেতু এখানে কুয়েটের ছাত্র-ছাত্রী এসেছে তারাও কি আঞ্চলিকভাবে সেই ধর্ষণকে ইঙ্গিত করেছেন?
কথা হলে-কুয়েটের শিক্ষার্থীরা এই গেঞ্জিতে ব্যবহৃত বাণী দিয়ে আমাদের মনন, সুবোধ, ভাষা, ভ্রমণ ও বাঙালীর চেতনাকে ধর্ষণ করেছে। এই সব শিক্ষার্থীর বিচার হওয়া উচিত।
তাদের শিক্ষা দেওয়া উচিত। কাগজ কলমের আর সার্টিফিকেটের শিক্ষা নয়; মনন-বোধ আর সুশিক্ষার দরকার।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১৯