গত ৪/৫ দিন ধইরা ব্যাপক যন্ত্রণা হইতাছে। এই যন্ত্রণার নাম হইতে পারে প্রেম। কারণ প্রেম হইলো এমন বস্তু যার আকাঙ্খা যন্ত্রণার জানলা খুইলা দেয়। আর এই শীত কালের ঠান্ডা বাতাসের মত হুহু কইরা ঢুইকা পইরা তা যন্ত্রণা খালি বাড়ায়।
এই প্রেম, কি যন্ত্রণার উৎস- আর কিছুই না, দুইটা বই। কয়দিন আগে হাটতে হাটতে পল্টনের ফুটপাতে গিয়া বেশ কিছু বই দেইখা আইছিলাম। পকেটে টাকা নাই। ফলে দেইখা আসাই সম্বল। কিন্তু দুইটা বইয়ের কথা ভুলতে পারতাছি না। ২/৩ তারিখের মধ্যে টাকা-পয়সা কিছু হাতে আসবো, এই ভাইবা মনরে শান্তনা দিছি, কিন্তু টাকা হাতে আসে নাই। এখন তো মনে হইতাছে বইয়ের জন্য যে যন্ত্রণা বরাদ্দ ছিল, হাতে না আসা টাকা সেই যন্ত্রণায় ভাগ বসাইতাছে।
আইজকা ইচ্ছা আছিলো, টাকা হাতে পাই কি না পাই, অফিসের এক ফাকে পল্টনের ফুটপাতে যাইয়া দেইখা আসুম বই দুইটা আছে কি না। কিন্তু সকালে অফিসে ঢুকার আগে পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি দেইখা দুপুরে চিন্তা করলাম, আমিও বাইর হুম, জামায়েতের লোকজনও বাইর হইবো, লাঠি চার্জ-টিয়ার সেল-ইটপাটকেল শুরু হইবো, আমি মাঝে সাইজ হমু! এই ভাইবা আর বাইর হইলাম না। এও আর এক যন্ত্রণা।
এখন চোক্খু বন্ধ করলেই বই দুইটা ভাইসা উঠে। বুকে টান লাগে। আর মনে মনে এক বড় ভাইয়ের কবিতার কয়টা লাইন বারবার আউড়াইয়া মনেরে শান্তনা দেই:
বইয়ের দোকানে
ভালোলাগা কোন বই
হলো না যে কেনা
হাতে টাকা নেই বলে
বইটার গায়ে হাত
বুলিয়ে মায়ায়
বেরিয়ে আসতে থাকো
খুব ধীর পায়
যখন বুকটা ভরে ওঠে
একরাশ চাপা বেদনায়
জেনো—
আমি তোমার প্রতীক্ষায়।