এটা আমার কথা নয়,অসহায়দের দলের একজন,যার কথা শোনার কেউ নেই,তেমনি একজনের কথা আপনাদের কে জানাচ্ছি:
আমি এমন পরিবার,জায়গা,অবস্থা থেকে লেখাপড়া করে এসিছি,গ্রজুয়েশন শেষ করেছি পাবলিক১টা ইউনি হতে। এই এখন কার ছেলেমেয়েরাই বিশ্বাস করতে পারবেনা।আমার সাথে যারা পড়েছে তারাও জানতো না এমন পারিবার থেকে এমন স্কুল/কলেজ/ইউনি তে পড়তে আসার সুযোগ কেউ পেতে পারে।[সাঈফ শেরিফ] View this link আপনার এই পোস্টের মর্ম মেধাবী,গরিব,খেতে পারে না ঠিকমতো এমন কেউ/কোনো পরিবারের ছেলেমেয়ে না হলে কেউই বুঝবেনা।
ভর্তি পরীক্ষায় পর পর ২ বার টিকেও শুধুমাত্র সামান্য কিছু টাকার জন্য এডমিশন নিতে পারেনি বুয়েটে/ঢাবি/তখনকার বিআইটি গুলো তে আমি বা আমার মতো কিছু ছেলে কে আমি দেখেছি।ঢাকায়,খুলনায়,চট্টগ্রামে মাত্র ২/৩মাস থাকার জায়গা পাইনি বা পায়নি, থাকবার, এ ২ বা ৩মাসের খাবার খরচের টাকা টা হয়নি বলে চলে আসতে হয়েছে মেধাতালিকার স্থান পাওয়া কিছু ছেলের।আমি নিজে ভর্তির সময় ২ জন কে পাইছি যাদের ভর্তি হবার পরেও টাকা নেই।ভাই কেঁদে দিছিলাম আমি ওদের দেখে।আমি ও এদের দলেরই।যখন ই টাকার জন্য মেধাবী কারো পড়ালেখা আটকে যায়,সুযোগ পেয়ে ও যেসব ছেলেমেয়ে ভর্তি হতে পারেনি আমি সেই সব ছেলে মেয়েদের কাছে ক্ষমা চাইছি।এ জাতি অনেক কিছু করছে কি করে নাই আমি হিসেব করবো না,কতো দিবস, কতো বাহানায়,কতো উছিলায় কতো মানুয কতো টাকা নস্ট,হেলা ফেলায় খরচ করছে।বাংলাদেশের মানুষ জানলোই না,কোন ছেলেটাকে,মানুষ টাকে সে তার জায়গায় আনতেই পারলোনা।যে মেধাবী ছেলে টা নিজ গুনে ,নিজে পড়ে,অন্য কে পড়িয়ে,স্কুল পেরিয়ে কলেজে এসে ঠেকে গেলো,আর পড়তে পারলো না।সে যা হতে চেয়েছিলো,মেধা থাকর পরেও সে পড়তে পারলো না,টাকার অভাবে। আপনি যে ই হোন,যেমন ই হোন,বুকে হাত দিয়ে বলেন তো,এই ছেলেটার সামনে দাড়ালে,ছেলেটা আপনার সামনে আসলে আপনার কি বিবেকে একটু ও নাড়া দিবে না?বুকের গহিন থেকে আহ!! এর মতো কিছুই কি আসবেনা?
আপনার উত্তর যদি না হয়,আপনাকে কিছুই বলার নেই।যদি হ্যা হ্য় তাহলে আপনি সেই ছেলেগুলো কে একটু সুযোগ করে দিয়েন,সব সময় মনে রাখবেন,আপনি ১ টি মেধাবী ছেলে কে সাহায্য ই করছেন না,দেশের জন্য ১জন মেধানী কর্মী ও তৈরি করছেন।ছেলে টা দাড়িয়ে যাবে,১টা পরিবার ভালো জীবন যাপন করবে,তার কাজে ও আশা করা যায় মেধার ছাপ থাকবে।দেশ,সমাজ,পরিবার এর কাছে আমারা অনেক কমিটমেন্ট করি।এত কমিটমেন্ট না করে,১টা গরীব,অসহায়,মেধাবী ছেলেকে একটু সহযোগিতা করবেন।আপনি ও জানেন,আমি ও জানি।অনেক কে অনেক জটিল,নির্মম পরিস্থিতিতে পরতে হয়,লজ্জায়-সংকোচে থাকে এই মেধাবী ছেলেমেয়ে গুলো।আপনি সামনে গেলেও ওরা হয়তো মুখ ফুটে বলতে পারবে না।আপনি সাহায্য হিসেবে নয়,নিজের ভালো লাগা থেকে দিচ্ছেন বলে কিছু দেন,দেখবেন কি খুশি, কি যে আলো ওদের মুখে ঝিলিক দিয়ে উঠে।আমি নিশ্চিত ওদের সেই সময়ের খুশিটা,মুখ টা দেখে আপনার চোখে পানি আসবে,মনে অন্যরকম ১টা অনুভুতি পাবেন।
প্রইভেট-পাবলিক বিতর্কে না,ভাইয়ারা ,আপুরা।সব গরিব,অসহায় মেধাবী ছেলেরা ও যেনো পড়ালেখা টা শেষ করতে পারে,চান্স পেয়ে ও যেনো কোন গ্রামের ছেলেমেয়ে কে ফিরে যেতে না হসেটা দেখবেন।আপনি যেখেনেই থাকেন,যেভাবেই থাকেন,যে ইউনিতেই পড়েন আপনার বাবার টাকা,সামর্থ্য আছে তাই তার টাকায় আপনি পড়তে পারছেন।সেটা যেখানেই হোক।এটাই কঠিন সত্য।গ্রামের ঐ চাষীর ছেলে টা চাষীর টাকা নাই তাই চান্স পেয়ে ও পড়তে পারছে না।সে টিকছে ইউনিতে। এটাও চরম এবং কঠিন সত্য।এবার আপনি যদি ঐ চাষীর ঘরে জন্ম নিতেন আর চাষীর ঐ ছেলে টা আপনার বাবার ঘরে।তাইলে কি হতো।আপনি নিজেই জানেন,তাইলে সেই ছেলে স্কলারশিপ নিয়ে বাইরে পড়তে যেতো।অনেক অনেক ভালো রেজাল্ট করতো দেশে-বিদেশে ঐ ছেলে।
কারো গরীব ঘরে জন্ম নেওয়া কি পাপ ভাইয়া?আপনার বাবা-মা যদি আপনার বাবা-মা না হতো,ঐ চাষীর ছেলের জায়গায় নিজেকে নিয়ে যান,ঐ ছেলে যা খাইছে,যেমন সুযোগ পাইছে,আপনাকে ঠিক তাই দেওয়া হলে আপনি কি করতেন?
বুকে হাত দিয়ে বলেন ভাই?পারতেন আজকের এই চাষীর ছেলের মতো সব জায়গার চান্স পেতে?
আপনারা জানেন,জন্মের উপর কারো হাত নেই,আমি ও বলতে পারতাম আমি আর ও ভালো জায়গায় থাকতে পারতাম আজকে।আর ও ভালো রেজাল্ট করতে পারতাম আমি যদি টাকার অভাব না থাকতো।
বিদ্যা,মেধাবী হওয়া ও অনেক সাধনার ব্যাপার আমার কাছে,আমি আর ঐ চাষীর ছেলেরা অনেক কিছুই পাইনি।অনেক কিছুই করতে পারিনি,তাও আমরা ছিলাম।আমরা থাকবো।দেশের জনগনের টাকায় ৪বছরের অনার্স ৬.৫ বছরে শেষ করেও আমরা কৃতগ্গ আল্লাহর কাছে,যিনি পৃথিবিতে আসার,পড়ালেখা করার সৌভাগ্য দিছেন,কৃতগ্গ দেশের মানুসের কাছে,যাদের টাকায় আমি পড়েছি,অনেক কষ্ট করেই পরেছি,সকল বন্চিত ছেলেমেয়েদের একজন হয়েই এ পর্যন্ত আমার আসা,লেখাপড়া শেষ হয়নি,মাস্টার্স করতে হবে, আমি জানিনা কিভাবে হবে,তবে জানি হবে,হতেই হবে,আমি হেরে গেলে ঐ সব চাষাভুষার ছেলেমেয়ে গুলো ও হেরে যাবে,ওরা আমাকে দেখে আর হয়তো সাহস,অনুপ্রেরনা পাবে না।ওরা ভাববে ওরা হ্য়তো আর পড়ালেখা করতে পারবে না,টাকার জন্য ভালো ইউনি তে চান্স পেয়েও পড়তে পারবেনা।ফিরে যাবে গ্রামে। সেই সব ফিরে যাওয়া,যারা সামনে পড়তে যাবে বিভিন্ন ইউনি তে তাদের কে বলছিঃ যেটা সত্য,যেটা ঠিক,সেটা হবেই।সময় লাগবে,অনেক আঘাত আসবে,মনোবল নিঃশেষ হয়ে আসবে,তাও হাল ছারা যাবে না।১ বছরের টা ৩/৪ বছর লাগবে,কিন্তু হবে।অসম্ভব না।কারন আল্লাহ তোমাদের মাথায়,মনে একটু বেশি কিছুই দিয়েছেন,পকেটে দেননাই,তাতে কি হয়েছে?!!মাথায় থাকলে তোমাকে আটকানো যাবেনা,কেউই আটকাতে পারবেনা।
আপনাদের সবার পরার জন্যই লেখা এটি।তবে আমি অনেক অনেক খুশি হবো আমার মতো,চাষাভুষার ছেলেমেয়ে কেউ যদি এটা পড়েন,এটা থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজে পান তাহলেই।
জাপন করতে হয় বলে যে জীবন সেই জীবন আমার নয়।।এটা আমার প্রোফাইলে লেখা আছে অনেক আগে থেকে।আপনার দেখেছেন কেউ কেউ।জীবনে কি পেলাম সেই হিসেব আমি কোনদিন ই করতে পারিনি,সে সুযোগ আল্লাহ আমাকে/আমাদের মতো কাউকে দেননি,তবে কিছু করার ইচ্ছে আমার আছে,ভালো কিছু।সবার জন্যই।আপনার,আপনাদের কাছেই আমার অনেক ঋন।
কাউকে হেয়/আঘাত করার জন্য এটা লেখা হয়নি।সাঈফ শেরিফ এর এই জ্বি ভাই, আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হতভাগা সন্তান জ্বি ভাই, আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হতভাগা সন্তান পোস্ট পড়ে এটা না লিখা পারলামনা।
সাঈফ শেরিফ ভাই,আপনার লেখার অনেক অনেক ভক্ত আমি।আপনি অনেক ভালো এবং গুনী ছাত্র, টিচার[আমি সিওর না],আপনার সব কমেন্ট,লেখা আমি পড়ার চেষ্টা করি। লেখা টা কিছুই হয়নাই,তাও সাইদ শেরিফ আপনাকে ই উৎসর্গ করলাম।
সবাই ভালো থাকুন
ভাই,আপনার তো বাবা-মা আছে।বোন আছে।বাড়ি গেলে পাবেন তাদের।আমার তো মা নেই।আমি গ্রামে যবো মা এর কবর জিয়ারত করতে।জীবনে যা কিছু এখন পর্যন্ত দেখছি,মায়ের মতো কেউ নাই।ঈদ টা খারাপ কাটলেও মায়ের কাছে গেলে সব ভুলে যাবেন।জব,টাকা,স্ট্যাটাসের জন্য কত কি করতে হয় আমাদের,আমার তো এগুলো করতে একেবারেই ইচ্ছা হয় না।অফিসেই থাকতাম আমি,ঈদে!শুধু কারতে হয় বলে কারছি।আসলে এবসোলুট হ্যাপিনেস বলে কিছুই নাই।ভালো করেই জানি আমি।অনেকের চেয়ে ভালো আছেন।আমার চেয়ে ভালো আছেন,এটা জেনে রাখুন। ঈদ মোবারক।