somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জ্ঞান-বিজ্ঞানের রাজ্যে মুসলমানঃ উত্থান ও পতন পর্ব-১১

০৮ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলামে নানান উপ-সম্প্রদায়ের উদ্ভব ও বিকাশ
পূর্ববর্তী পর্বগুলোর আলোচনা হতে সন্দেহাতীতভাবেই বলা চলে যে, ইতিহাসের একটি সুনির্দিষ্ট সময়কালে মুসলমানদের মধ্য হতে কাতারে কাতারে বিজ্ঞানীর আবির্ভাব ঘটেছে এবং তাঁরা বিজ্ঞানের জগতে সে সময়ে মৌলিক এবং অনন্য অবদান রেখেছেন। উক্ত সময়কালে তাঁদের মাঝে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দার্শনিকেরও আবির্ভাব ঘটেছে, যাঁদের অবদান এখনো বর্তমান। ফলে, দর্শনে মুসলমানদের অনেক বড় অবদান ছিল এটা বিস্তারিত ব্যাখ্যা ছাড়াই বলা চলে। কিন্তু, দর্শনে রাজ্যে মুসলমানদের বিচরনকে অন্যান্য ক্ষেত্রের মত এতটা সরলভাবে চিহ্নিত করা হলে নিশ্চিতরূপেই ভুল হবে। প্রকৃতপক্ষে, মুসলমানদের প্রাথমিক উত্থান থেকে শুরু করে রাজ্য বিস্তার, বিজ্ঞানে অবদান, সভ্যতা বিনির্মাণ, অন্তর্কলহ এবং পতন সহ তাঁদের ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকেই দর্শনের একটি দৃশ্যমান অবদান রয়েছে। মুসলমানদের জীবনযাত্রা এবং জীবনদর্শন একে অপরকে সমানভাবে প্রভাবিত করেছে।

ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি দিলে, বড়মাপের দার্শনিক বলতে যা বোঝায়, মুসলমানদের মাঝে তার প্রথম দেখা মেলে আল-কিন্দির(৮১৩-৮৭৩) মাঝে এবং ইবন রুশদ্‌(১১২৬-১১৯৮) হচ্ছেন এক্ষেত্রে শেষ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। রুশদের পরেও ক’জন বড়মাপের দার্শনিক আবির্ভূত হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা তাঁদের পূর্বসূরীদের মত ততটা প্রভাব ফেলতে পারেন নি। ফলে, স্পষ্টতঃই নবম শতকের মাঝামাঝি(আব্বাসীয় শাসনামল) থেকে প্রথম বড় মাপের দার্শনিককে পাওয়া যাচ্ছে এবং দ্বাদশ শতকেই মোটামুটি দার্শনিকেরা তিরোহিত হয়ে গিয়েছেন। অথচ, মুসলমানদের বিজ্ঞানে অবদানের শুরু হিসেবে অস্টম শতকের প্রথমার্ধকেই চিহ্নিত করা যায় এবং তা চতুর্দশ শতক পর্যন্ত কম-বেশী চলতে থাকে!

এই পরিসংখ্যান থেকে যে কেউই চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারেন যে, দর্শনের জগতে মুসলমানরা অনেক দেরীতে আবির্ভূত হয়ে অনেক তাড়াতাড়িই আড়ালে চলে গিয়েছেন এবং দৃশ্যতঃই মুসলমানদের বিজ্ঞানে অবদানের সাথে দর্শনের পদচারনা খুব বেশী সম্পর্কিত নয়। অথচ, এ কথা সত্যের অপলাপ মাত্র। সত্যি কথা হচ্ছে, ইসলামের আবির্ভাবের প্রথম দিন থেকেই মুসলমানদের মাঝে দর্শনের চর্চা শুরু হয়। এই লেখার শুরু দিকে দর্শনের প্রাথমিক আলোচনায় আমরা বলেছিলাম, দর্শনের সাথে মূল সম্পর্ক হচ্ছে প্রজ্ঞার, আরও নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, প্রজ্ঞার প্রতি ভালোবাসার এবং এ শাস্ত্র তার বিচার বিশ্লেষণের পদ্ধতির সাহায্যে জীবন ও জগতের বিভিন্ন মৌলিক সমস্যাগুলি (যেগুলো যে কোন বিষয় থেকে উদ্ভূত হতে পারে) সমাধানের চেষ্টা করে। এ কথা সর্বজনস্বীকৃত যে, ইসলাম মানুষ এবং তার চারপাশের জগত সম্পর্কে একটি স্বতন্ত্র জীবনদর্শন(সে দর্শন সঠিক না ভুল- সেটি ভিন্ন আলোচনা) নিয়ে উপস্থিত হয় এবং মুসলমানদের জীবনে তার বাস্তবিক চর্চায় উদ্বুদ্ধ করে তোলে। পরবর্তীতে, সম্রাজ্যের বিশাল বিস্তৃতি, আধুনিকতার প্রসার, এবং জাতিগত নানান ঘাত-প্রতিঘাতে এ দর্শনের বহুমুখী এবং বহুমাত্রার বিস্তার ঘটে। ফলশ্রুতিতে, নবম শতকে আল-কিন্দির আবির্ভাবের পূর্বেই আমরা মুসলমানদের মাঝে অন্ততঃ আধা ডজন স্বতন্ত্র দার্শনিক দল(Group) বা স্কুলের(School) দেখা পাই এবং এই দলগুলোই পরবর্তী দার্শনিকদের মননে প্রভাব বিস্তার করেছে। সাথে সাথে বিজিত দেশসমূহের দর্শনের প্রভাব তো ছিলই।

তাই, এ কথা বলাই বাহুল্য যে, এই দার্শনিক দল কিংবা স্কুলগুলো সম্পর্কে না জেনে পরবর্তী দার্শনিকদের কাজের আলোচনা করা যুক্তিযুক্ত নয়। কেননা, এদের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ প্রভাবেই পরবর্তী যুগের দার্শনিকদের আবির্ভাব ঘটেছিল। আবার, এই স্কুলগুলোর প্রতিষ্ঠার ইতিহাস না জানলে এদের লালিত দর্শন সম্পর্কেও ধারনা করা সম্ভব নয়। এমতাবস্থায়, আরবের বুকে ইসলামের আবির্ভাব(৬১০ খৃষ্টাব্দ) থেকে শুরু করে বাগদাদে আব্বাসীয় শাসন প্রতিষ্ঠার(৭৫০ খৃষ্টাব্দ) আগপর্যন্ত সময়কালের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরার কোন বিকল্প নেই।

তারও আগে, একটি কথা না বলে পারছি না। মুসলমানদের মাঝে বিভিন্ন দল-উপদল সৃষ্টির ক্ষেত্রে কোন কোন সাহাবীর(মুহাম্মাদের(স) সান্নিধ্যলাভকারী অনুসারী) ব্যক্তিগত ভুল ঐতিহাসিকভাবেই স্বীকৃত। এক্ষেত্রে, তাঁরা দোষে-গুনে ভরা মানুষই ছিলেন, এ সত্য যেমনি অস্বীকার করার কিছুই নেই, তেমনি এটিও অস্বীকার করার জো নেই যে, মুহাম্মাদের(স) বাণী পরবর্তী অনুসারীদের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা নূন্যতম কোন অনীহা বা গাফিলতি প্রদর্শন করেন নি। অতএব, তাঁদের এইসব ভুলের(ইচ্ছাকৃত-অনিচ্ছাকৃত) কারনে তাঁদের প্রতি খারাপ ধারনা পোষন করা অন্ততঃ কোন প্রায়োগিক(Practical) মুসলমানের পক্ষে উচিৎ নয়। কেননা, এঁদের সম্পর্কে খোদ কুরআনেই বলা হয়েছে, ....رَّضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ...’আল্লাহ তাঁদের উপর সন্তুষ্ট এবং তাঁরাও আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট’ (৯৮:৮)। অন্যদিকে, মুহাম্মাদ(স) তাঁর অবর্তমানে তাঁর সাহাবীদের উচ্চমর্যাদার ব্যাপারে বারেবারে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন। তাই, পরবর্তী অনুচ্ছেদসমূহ পড়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন আবশ্যক।

মুহাম্মাদের(স) আবির্ভাবকালে আরবের বিভিন্ন গোত্রের অবস্থান

৫৭০ খৃষ্টাব্দে মক্কায় সম্ভ্রান্ত কুরায়শ বংশের হাশিম গোত্রে জন্মগ্রহন করে প্রায় চার দশকের নিস্তরঙ্গ জীবনযাপনের পর আরবের ‘আল-আমীন’(সত্যবাদী) মুহাম্মাদ (محمد; ৫৭০-৬৩২)(স) হঠাৎ করেই একদিন এক নতুন ধর্মমত প্রচারে ব্রতী হলেন। তৎকালীন সমাজের বিচারে এটি ছিল একটি বৈপ্লবিক জীবনাদর্শ এবং স্বভাবতঃই ক্ষমতাসীন গোত্রপতিদের হাতে এর আদর্শ প্রচারের কারনে তিনি নিরবিচ্ছিন্নভাবে নিগ্রহের স্বীকার হলেন। প্রায় এক যুগের অক্লান্ত পরিশ্রমে বিরোধী পক্ষের সাথে সংখ্যানুপাতে কম হলেও তাঁর অনুসারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং তাঁরাও অত্যাচারিত হতে থাকেন। এদের মাঝে ছিলেন স্বীয় স্ত্রী খাদিজা(خديجة بنت خويلد‎; ৫৫৫-৬১৯)(রা), আবুবকর(أبو بكر الصديق; ৫৭৩-৬৩৪) (রা), উমর(عمر بن الخطاب; ৫৮৬-৬৪৪)(রা), উসমান(عثمان بن عفان; ৫৭৯-৬৫৬)(রা), আলী(علي بن أﺑﻲ طالب; ৫৯৮-৬৬১)(রা) সহ আরও অনেকেই। বিদ্রুপবান, শারিরীক নির্যাতন হতে শুরু করে হত্যা পর্যন্ত সবই সইতে হলো তাঁদের। সুদীর্ঘ এক যুগ সব অত্যাচার নিরবে সহ্য করে তিনি তাঁর আদর্শকে প্রচার করে চললেন। কিন্তু, অত্যাচারের মাত্রা এত বেশী হয়ে ওঠে যে, তিনি অবশেষে তাঁর অনুসারীদের সাথে নিয়ে মক্কা হতে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরের ইয়াসরিবে শহরে চলে আসতে বাধ্য হন। সময়ের হিসেবে সেটি ছিল ৬২২ খৃষ্টাব্দ এবং তখন থেকেই ইয়াসরিব পরিচিত হতে থাকে ‘মদীনা’ নামে। এখানেই তিনি তাঁর মতাদর্শ প্রচারের এক উর্বর ক্ষেত্রের সন্ধান পেয়ে যান। ছোট্ট কিন্তু সুগঠিত একটি নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে পূর্ণোদ্যমে কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। ফলে, একে অংকুরেই বিনষ্ট করবার হিংস্র প্রয়াসে চারিদিক হতে ছুটে এলো শত্রুতার উত্তাল তরঙ্গ। এমনকি, আভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের জাল ও তাঁর পথকে করে তুললো বিপদসংকুল। এবার, তিনি কিন্তু আর মুখ বুঝে সইলেন না, রুখে দাঁড়ালেন। সকল বাধা-বিঘ্নকে মোকাবেলা করলেন দক্ষ হাতে। প্রখ্যাত আরববিদ আলফ্রেড গিয়োমের(Alfred Guillaume; ১৮৮৮-১৯৬৬) ভাষায়, “এ সব লড়াইয়ে জড়িত প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা কখনোই কয়েক হাজারের বেশী যায় নি, কিন্তু গুরুত্বে তারা বিশ্বের সেরা নিস্পত্তিকারী যুদ্ধের সমান”। অবশেষে, যে জন্মভুমির মাটি হতে রিক্ত হস্তে তিনি বিতাড়িত হয়েছিলেন, আট বছরের মাথায় সেখানেই প্রবেশ করলেন বিজয়ীর বেশে- দশ সহস্র একনিষ্ঠ অনুসারী নিয়ে। হাতে গোনা কিছু চরম শত্রু ছাড়া মক্কার নেতা আবু সুফিয়ান(صخر بن حرب; ৫৬০-৬৫০)(রা) সহ সকল বিরোধীকেই তিনি ক্ষমা করে দিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেন। জীবন সায়াহ্নে তিনি ছিলেন বার লক্ষ বর্গমাইল বিস্তৃত এক সুবিশাল সম্রাজ্যের একচ্ছত্র অধিপতি। প্রায় লক্ষাধিক নিবেদিত অনুসারীর সামনে এক চিরস্মরণীয় বিদায়ী ভাষন দানের মাধ্যমে তার এই জাগতিক ও আধ্যাত্মিক সম্রাজ্যের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে তিনি এ ধরাধাম ত্যাগ করলেন।

মুহাম্মাদ(স) আজীবন ছিলেন গনতন্ত্রমনা এবং এর উৎকৃষ্ট নিদর্শন হিসেবে জীবনসায়াহ্নে তিনি তাঁর উত্তরাধিকারী মনোনয়নের দায়িত্ব তাঁর অনুসারীদের হাতেই সোপর্দ করে যান। তাই, তাঁর অবর্তমানে উত্তরাধিকারী নির্বাচনে সামান্য মতদ্বৈততা দেখা দেয়, যা মনোমালিন্যে পৌঁছার পূর্বেই, সকলের নিকট সম্মানিত আবুবকর(রা) সর্বসম্মতিক্রমে নেতা নির্বাচিত হন। এ সময়ে তাঁর উপাধি হলো ‘খলিফাতুল মুস্‌লেমিন’(মুসলমানদের প্রতিনিধি- সংক্ষেপে খলিফা)। শুরু হলো সত্যাশ্রয়ী খলিফাদের যুগ- খোলাফায়ে রাশেদুন(الخلفاء الراشدون)। তাঁর দুই বছরের ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ শাসনামল এক রকম জাযিরাতুল আরবের বিদ্রোহীদলসমূহের দমনেই কেটে যায়। এর মাঝেও কুরআনের সকল পংক্তিকে তিনি গ্রন্থাকারে প্রকাশ করে যেতে সক্ষম হন। তাঁর পরে ৬৩৪ খৃষ্টাব্দে খলিফা নির্বাচিত হন উমর(রা)।

এখানে বলে রাখা ভাল, মুহাম্মাদের(স) জীবদ্দশায়ই পারস্য এবং রোম সম্রাজ্যের সাথে নবগঠিত ইসলামী রাষ্ট্রের ছোট-খাট সীমান্ত সংঘর্ষ চলছিল। এই উভয় সম্রাজ্যই ইসলামী রাষ্ট্রকে নিজেদের জন্য হুমকি বলে মনে করা শুরু করে দিয়েছিল। আবুবকরের(রা) সময়ের আভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারনে সেদিকে মনোযোগ দেবার ফুসরত মেলে নি। উমর(রা) দায়িত্ব গ্রহন করেই সেদিকে নজর দিলেন। সন্দেহ নেই, আগের দুই যুগের পারস্পরিক যুদ্ধ-বিগ্রহ রোম-পারস্য দুই সম্রাজ্যকেই দূর্বল করে দিয়েছিল। তবু, সেই পতনের যুগেও এরা এক এক ময়দানে লক্ষাধিক সৈন্য সমাবেশে সক্ষম ছিল এবং অন্ততঃ আধা ডজন যুদ্ধে তারা সেটা করে দেখিয়েছেও। কিন্তু, ফলাফল শুন্য। যে মরুচারী জাতি অন্য গোত্রকে রাতের আঁধারে আঘাত হানার চেয়ে বেশী বীরত্ব দেখাতে পারে নি, কী এক অদ্ভুত ক্ষমতাবলে তাঁদের মধ্য হতে খালিদ বিন ওয়ালিদ(خالد بن الوليد; ৫৯২-৬৪২)(রা), আমর ইবনুল আ’স(عمرو بن العاص‎; ৫৭৩-৬৬৪)(রা), সা’দ বিন আবি ওয়াক্কাস (سعد بن أبي وقاص; ?-৬৬৪)(রা) আর মুসান্না ইবন হারিসার মত দিগ্বিজয়ী বীর। তাঁদের সম্মিলিত আক্রমনের মুখে অর্ধযুগ অতিক্রমের আগেই হাজার বছর ধরে প্রতিষ্ঠিত পারস্য সম্রাজ্য ধূলায় মিশে গেল আর রোম সম্রাজ্য বস্‌ফোরাসের ঐপারে ইউরোপের কোনায় টিমটিমে হয়ে জ্বলতে লাগল। সভ্যতার দুই আদিভূমি মেসোপটেমিয়া আর মিসর মুসলমানদের অধিকারে আসে এ সময়েই। অবশ্য, উমরের(রা) সময়ে মুহাম্মাদের(সা) সাথে নৈকট্যের ভিত্তিতে ভাতার পরিমান নির্ধারন কিছুটা ধন-বৈষম্যের সৃষ্টি করে, যার সুদুরপ্রসারী কুফল তিনি অনুধাবন করে পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করলেও অপ্রত্যাশিত মৃত্যু তাঁকে সে অবসর দেয় নি। তবে, সেটি সহজেই দূর করা সম্ভব ছিল।

৬৪৪ খৃষ্টাব্দে উমরের(রা) মৃত্যুর পর খলিফা নির্বাচিত হন উসমান(রা)। স্বভাবগত দিক হতে অত্যধিক কোমল এই ব্যক্তিটি তাঁর দুই পূর্বসূরীর চাইতে কম দূরদর্শী ছিলেন(এই বাক্যটির জন্য উত্তর আফ্রিকা হতে পাক-ভারত উপমহাদেশের অনেক ব্যক্তিই মুরতাদ ফতোয়া প্রাপ্ত হয়েছেন! অথচ, এটি একান্তই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়, ধর্মতত্ত্বের নয়!)। যাই হোক, তাঁর শাসনামলের প্রথম ছয় বছর ছিল শান্তিপূর্ণ। রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশে কুরআনের ভিন্ন ভিন্ন পঠনরীতিকে নিষিদ্ধ করে তিনি এসময়েই কুরায়শদের পঠনরীতিকে কুরআন পাঠের জন্য নির্ধারিত করে দেন। ইসলামী সম্রাজ্য ততদিনে আজারবাইজানের সীমানা পর্যন্ত পৌঁছায়। কিন্তু, তাঁর স্বভাবগত নরম স্বভাবের সুযোগ নিতে থাকেন তাঁর নিকটাত্মীয়রা(যেমনঃ মারওয়ান ইবন্‌ হাকাম(مروان بن الحكم‎; ৬২৩-৬৮৫))। এছাড়া, সান্নিধ্যলাভের দিক থেকে মুহাম্মাদের(স) দূরবর্তী লোকজন যারা আবার দূর্ভাগ্যক্রমে খলিফার আত্মীয়স্বজন, রাষ্ট্রের বড় বড় দায়িত্ব লাভ করতে থাকেন যা জনগণ সুদৃষ্টিতে দেখে নি। তিনি এসব উপলব্ধি করেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। কিন্তু, সে সময় তাঁকে দেয়া হলো না। জনগণের এই অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা হজ্জের মওসুমে অপ্রস্তুত অবস্থায় রাজধানী মদীনা আক্রমন করে খলিফাকে হত্যা করে। কুরআনের এই মহান সংকলক(জামিউল কুরআন) কুরআন পাঠরত অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করেন।

উসমান(রা) কর্তৃক সংকলিত কুরআনের কপিসমূহের মাঝে একমাত্র টিকে থাকা কপিঃ সংরক্ষিত আছে তুরস্কে

জাতির এই দূর্যোগপূর্ণ অবস্থায় ৬৫৬ খৃষ্টাব্দে হাল ধরেন আলী(রা)। তিনিও জনগণের রায়ে নির্বাচিত হন। কিন্তু, ইসলামের মহান ভ্রাতৃত্ববোধের নিচে চাপা পড়ে যাওয়া আরবীয় গোত্রবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আবু সুফিয়ানের(রা) পুত্র সিরিয়ার শাসনকর্তা মুয়াবিয়া(معاوية بن أبي سفيان; ৬০২-৬৮০)(রা) বিদ্রোহ করে বসেন। আত্মীয়তার দাবীতে তিনি সবার আগে উসমানের(রা) হত্যাকারীদের তাঁর হাতে তুলে দিতে বলেন, যা ছিল ন্যায়বিচার পরিপন্থী। মিসর হতে আমর ইবনুল আ’স(রা)ও তাঁর সাথে যোগদান করেন। খলিফা আলী(রা) বিদ্রোহ দমনে এগিয়ে যান। কিন্তু, সফলতার মুখ দেখার আগেই উম্মুল মু’মেনিন আয়েশার(عائشة; ?-৬৭৮)(রা) সাথে তাঁর ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয় এবং আয়েশা(রা) অস্ত্রধারণ করেন। উষ্ট্রের যুদ্ধে(৬৫৬) তাঁরা মুখোমুখি হলেও আলীর(রা) প্রত্যুৎপন্নমতিত্বে স্বল্পসময়েই সংঘর্ষ থেমে যায়। কিন্তু, ততদিনে দেরী হয়ে গিয়েছিল। মুয়াবিয়া(রা) যথেষ্ট শক্তি সঞ্চয় করে ফেলেছেন। তারপরেও, সিফ্‌ফিনের যুদ্ধে(৬৫৭) খলিফা তাঁকে প্রায় পরাজিতই করে ফেলেছিলেন। নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে মুয়াবিয়া(রা) শান্তির প্রস্তাব দেন। শান্তিকামী খলিফাও সে প্রস্তাব মেনে নেন এবং সালিসের মাধ্যমে বিরোধ নিস্পত্তির ব্যাপারে সম্মত হন।

লক্ষ্য করুন, এ সময় পর্যন্ত মুসলমানদের মাঝে মতবিরোধ এমনকি ভ্রাতৃঘাতী সংঘর্ষ হলেও কোন নতুন মতবাদ কিংবা দর্শনের উদ্ভব হয় নি। কুরআন এবং সুন্নাহ তখনো পর্যন্ত মুসলমানদের জীবনদর্শনের একমাত্র কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিগণিত হচ্ছিল। মুহাম্মাদের(স) লক্ষাধিক অনুসারী তখনো সমগ্র রাষ্ট্রের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর মতাদর্শ প্রচারে নিমগ্ন। ফলে, জাগতিক ও পারলৌকিক সকল প্রকার দার্শনিক সমস্যার সমাধানে সকলে তাঁদের দিকেই ফিরেছিল। কিন্তু, আলী(রা) এবং মুয়াবিয়ার(রা) মধ্যবর্তী ঐ শান্তি আলোচনা চলাকালেই আলীর(রা) পক্ষের কতিপয় কট্টরপন্থী লোক বিগড়ে যায়। তারা এই সালিস আলোচনাকে আল্লাহর সাথে বিদ্রোহের শামিল করে ফেলে এবং আলীকে(রা) কাফের ঘোষনা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করে। ঘর সামলাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন আলী(রা)। এই কট্টরপন্থী দলটিই ‘খারেজী’(خوارج) নামে পরিচিত এবং ইসলামের ইতিহাসে এরাই প্রথম মূলধারার বাইরে ভিন্ন দর্শনের জন্মদাতা। এদের মতবাদ নিয়ে আলোচনা পরের দিকের জন্য রেখে দেয়া হলো।

ওদিকে, ঐ সালিসে মুয়াবিয়ার(রা) প্রতিনিধি আমর ইবনুল আ’স(রা) কূটচালে অন্যায়ভাবে হারিয়ে দেন আলীর(রা) প্রতিনিধি আবু মুসা আশয়ারীকে(أبو موسى الأشعري; ?-৬৭২)(রা)। ফলে, সবদিক দিক দিয়েই শত্রুবেষ্টিত হয়ে ওঠেন তিনি এবং ৬৬১ খৃষ্টাব্দে এক খারেজী গুপ্তঘাতকের হাতেই তিনি নিহত হন। খারেজীরা মুয়াবিয়া(রা) এবং আমর ইবনুল আ’সকেও(রা) হত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে ব্যর্থ হয়। এতে মুয়াবিয়ার(রা) ক্ষমতা লাভের পথ সুগম হয়ে ওঠে। ছয়মাসের মাথায় মুহাম্মাদের(স) দৌহিত্র এবং আলীর(র) পুত্র ইমাম হাসান(الحسن بن علي بن أﺑﻲ طالب; ৬২৫-৬৭২)(রা) খেলাফতের দাবী পরিত্যাগ করলে মুয়াবিয়া(রা) হয়ে ওঠেন মুসলিম সম্রাজ্যের একমাত্র অধিকর্তা এবং তাঁর হাত দিয়েই মুসলমানদের মাঝে প্রথম বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর পূর্বপুরুষ উমাইয়ার নামানুসারে এ রাজবংশের নামকরন করা হয়। আলী(রা) বিদ্রোহীদের দমনে সুবিধার জন্য রাজধানী মদীনা থেকে কুফায় স্থানান্তর করেন আর মুয়াবিয়া একে নিয়ে যান তাঁর ক্ষমতার উৎসভূমি দামেস্কে। এখানে বলে রাখা ভাল, মুহাম্মাদের(স) গোত্র বনু হাশিম এবং বনু উমাইয়ার মাঝে ইসলাম পূর্ববর্তী যুগে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ ব্যাপক আকার ধারন করে যা ইসলমের মহান আদর্শের নীচে চাপা পড়ে যায়। আলী(রা) এবং মুয়াবিয়ার(রা) এই দ্বন্দ্বকে অনেকে ঐ বিদ্বেষের ফলশ্রুতি বলে মনে করলেও তা আংশিক সত্য, যা উপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয়েছে।

মুহাম্মাদ(স) এবং খোলাফায়ে রাশেদুনের হাতে ইসলামের বিস্তার

আলীর(রা) জীবদ্দশার শেষদিন পর্যন্ত যারা তাঁর সমর্থক ছিলেন, তাদের কেউ কেউ বিভিন্ন কারনে তাঁকে মুহাম্মাদের(স) পরেই খেলাফতের জন্য যোগ্যতম ব্যক্তি বলে ব্যক্তিগতভাবে মনে করতেন। তবে, সেটি কোন সম্প্রদায়গত বিশ্বাসে রূপ নেয় নি উসমানের(রা) খেলাফতের আগপর্যন্ত। কিন্তু, উসমানের(রা) দুঃখজনক মৃত্যু, আলীর(রা) খেলাফত পরবর্তী ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ ৫ বছর এবং পরবর্তীতে ৬৮০ খৃষ্টাব্দে মুয়াবিয়ার(রা) পুত্র ইয়াজিদের সেনাবাহিনীর হাতে কারবালার প্রান্তরে মুহাম্মাদের(স) স্নেহের দৌহিত্র এবং আলির(রা) দ্বিতীয় পুত্র ইমাম হুসাইনের(حسين بن علي بن أﺑﻲ طالب‎; ৬২৬-৬৮০)(রা) সঙ্গীসাথীসহ নির্মমভাবে নিহত হবার মাধ্যমে এটি একটি মতবাদের রূপ নেয়। এরপরে, উমাইয়া এবং আব্বাসীয় শাসনামলে আলীর(রা) বংশধর এবং সমর্থকদের উপর নিরবিচ্ছিন্ন অত্যাচার এই মতবাদকে সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তোলে। প্রাথমিকভাবে শীআ’নে আলী(شيعة علي; আলীর অনুসারী) নামে পরিচিত এই দলটিকে পরবর্তী সময় হতে পরিভাষাগতভাবে শীআ’(شيعة) বলা হয়। এদের, দর্শন নিয়েও পরে আলোচনা করা হবে।

শীআ’ আর খারেজী এই দুই চরমপন্থী দলের পারস্পরিক মারামারির অবশ্যম্ভাবী ফলস্বরূপ মুর্জিয়া(المرجئة) নামে আরেকটি দর্শনের জন্ম হয়। আবদুল্লাহ ইবন উমর(عبدالله بن عمر بن الخطاب; ৬১৪-৬৯৪)(রা) কে এই মতাদর্শের প্রবক্তা বলা হয়ে থাকে। এই নরমপন্থী দলের মতবাদ নিয়েও আলোচনা হবে পরের দিকে।

উমাইয়া শাসনের ৯০ বছর ছিল কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক ইসলামী সমাজের মূলনীতিসমূকে পদ্ধতিগতভাবে(Systemetically) একত্র করার যুগ। সন্দেহ নেই, জনগনের হাত হতে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে এসময়ের শাসকদল অত্যাচারের এক নতুন ধারা শুরু করেছিল। কিন্তু, সত্যনিষ্ঠ ইমাম ও আলেমগণ এর মাঝেও তাঁদের কাজ ঠিকই জারি রাখেন। সমস্যা দেখা দেয়, খৃষ্টীয় সপ্তম শতকের প্রথম দশকের মাঝেই মুহাম্মাদের(স) সাহাবীদের জীবন প্রদীপ একে একে নিভে যাওয়ায়। এতে তাঁর বাণী(হাদিস ও সুন্নাহ) সরাসরি শোনা লোকদের নিকট থেকে ইসলামী মতে সমস্যা সমাধানের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে, এই সুযোগে বিভিন্ন সম্প্রদায় তাঁদের মতাদর্শের সমর্থনে হাদিস বিকৃত ও জাল করতে থাকে। আলেমরা এ সমস্যার মোকাবেলায় সত্য হাদিসসমূহ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জড়ো করতে শুরু করেন। এমনি সময়ে, খলিফা নির্বাচিত হন উমর ইবন আবদুল আজীজ(عمر ابن عبد العزيز‎; ৬৮২-৭২০)। উমাইয়া সম্রাটদের মাঝে একমাত্র ব্যতিক্রম এই অনুপম ব্যক্তিটি(যাঁকে খোলাফায়ে রাশেদুনের পঞ্চমজন বলে অভিহিত করা হয়) তাঁর ৩৭ মাসের সংক্ষিপ্ততম শাসনামলে মুসলমানদের চলার পথকে পুনরায় ইসলামের দিকে ঘুরিয়ে দেন। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় মুহাম্মাদের(স) বাণী সংগ্রহ চলতে থাকে। তাঁর অকালমৃত্যুতে এ পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ হয়ে গেলেও যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল তা কয়েক শতক পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ফলে, ইমাম আবু হানিফা(أبو حنيفة‎; ৬৯৯-৭৬৫)(র), ইমাম মালিক ইবন আনাস(مالك بن أنس; ৭১১-৭৯৫)(র), ইমাম শাফেয়ী(ابو عبدالله محمد بن إدريس الشافعيّ; ৭৬৭-৮২০)(র) এবং ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল(احمد بن محمد بن حنبل ابو عبد الله الشيباني‎; ৭৮০-৮৫৫)(র) এর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ইসলামের চারটি ভিন্ন ভিন্ন মাজ্‌হাব্‌(School of Thoughts)। অন্যদিকে, ইমাম বোখারী(محمد بن اسماعيل بن ابراهيم بن المغيرة بن بردزبه البخاري; ৮১০-৮৭০)(র), ইমাম মুসলিম(أبو الحسين مسلم بن الحجاج القشيري النيشابوري‎; ৮২১-৮৭৫)(র), ইমাম তিরমিজী(الترمذي; ৮২৪-৮৯২)(র), ইমাম নাসায়ী(أحمد بن شعيب بن شو علي بن سنان بن أبي عبد الرحمن آل النسائي; ৮২৯-৯১৫)(র), ইমাম আবু দাউদ(أبو داود سليمان بن الرماد 'اته آل أزادي آل; ৮১৭-৮৮৮)(র) এবং ইমাম ইবন্‌ মাজাহ্‌(ابو عبد الله محمد بن يزيد بن ماجه الربعي القزويني; ৮২৪-৮৮৭)(র)- এর নেতৃত্ব হাদিস সংগ্রহ এবং বাছাইয়ের মাধ্যমে ইসলামের সত্যিকারের মূলনীতি জানার পথ পরিষ্কার হয়ে ওঠে। *এখানে, স্পষ্টভাবেই লক্ষ্যনীয় যে, ৭৫০ সালে উমাইয়া শাসনের অবসানের পর আব্বাসীয় শাসন প্রতিষ্ঠার অনেক পর পর্যন্ত এই কাজ পুরোদমে চলতে থাকে। সন্দেহ নেই, এঁদের অনেকেই বিভিন্ন দর্শনসম্প্রদায়ের পূর্বের, কেউ কেউ সমসাময়িককালের, আবার কেউ পরের যুগের।কিন্তু, হাদিস ও ফিকহ্‌‌ শাস্ত্রের বিকাশের ধারাবাহিকতাটি বোঝানোর জন্য এই পুরো সময় ধরে নেতৃত্বদানকারী প্রধান প্রধান ব্যক্তিদের তালিকা দেয়া হল।

**আরো লক্ষ্য করুন, ইতিহাসের এ পর্যায়ে মুসলমানদের বিজ্ঞান আর দর্শনের জগতে অবদান রেখেছে বলে কথিত ‘মুতাজিলা’(المعتزلة) সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটলেও, তাঁরা তখনো খুববেশী প্রভাব বিস্তার করার মত কোন অবস্থানে পৌঁছান নি। আব্বাসীয় শাসনামলের স্বর্ণযুগে(৭৮৬-৮৩৩; হারুন আল-রশীদ এবং মা'মুনের শাসনামল) কীভাবে এই সম্প্রদায় দৃশ্যপটে চলে এল এবং এত বেশী প্রভাব রাখতে সক্ষম হলো, তা থাকছে পরের পর্বে।

*সংযোজন।
**সংশোধনী।
চলবে.....
আগের পর্বগুলোঃ
১. ভূমিকা পর্ব
২. বিজ্ঞানের দর্শন
৩. প্রাচীন বিজ্ঞানের ইতিহাস
৪. মৌলিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবদান
৫. ব্যবহারিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবদান
৬. রসায়নবিজ্ঞানে অবদান
৭. আলোকবিজ্ঞানে অবদান
৮. জ্যোতির্বিজ্ঞানে অবদান- প্রথম পর্ব
৯. জ্যোতির্বিজ্ঞানে অবদান- দ্বিতীয় পর্ব
১০. গণিতে অবদান
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৫
৪৪টি মন্তব্য ৪৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×