somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দৈন্যদশায় বিএনপি!

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সাংগঠনিক, রাজনৈতিক ও নেতৃত্ব- সামগ্রিক দৈন্যতা প্রকট হয়ে উঠেছে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির। কয়েক দফা সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ এ দলটি এখন এতটাই বিপর্যস্ত, সরকার কিংবা পুলিশের করুণা ছাড়া মাঠেই নামতে পারছে না। সর্বশেষ গতকাল শনিবার (৭ জানুয়ারি) বিএনপির এ দৈন্যতা আবারো দৃশমান হলো।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল রাজধানীতে একটি সমাবেশ করার উদ্যোগ নেয় বিএনপি। ৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ ঘোষণা দিয়ে দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সেখানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন বলে বিএনপির তরফ থেকে বলা হয়। এ জন্য সোহরাওয়াদী উদ্যান বরাদ্দ চেয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন দলটির নেতারা। অনুমতি চাওয়া হয় পুলিশের। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। এরপর দলের নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। সে অনুমতিও পায় না দলটি।
বাধ্য হয়ে ঘোষিত (৭ জানুয়ারির) সমাবেশের কর্মসূচি বাতিল করে দলটি। প্রতিবাদে আজ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। দলের কোনো নেতাকর্মীকে এদিন রাজপথে নেমে আসতে দেখা যায়নি। এমনকি দলীয় কার্যালয়মুখীও হননি তারা। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ ও সহদপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমেদসহ কয়েকজন অফিস কর্মী ছাড়া আর কেউই ছিলেন না। হদিসও মেলেনি দলটির বাঘা বাঘা
নেতাদের। পরিস্থিতির বাস্তবতায় সবাই ছিলেন আত্মগোপনে। দলটির মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদের কেউই জনসম্মুখে আসেননি।
আর যেখানে সমাবেশ করতে চেয়েছে বিএনপি, সেই সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয় পুরোটাই ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে এসব স্থান ঘিরে রাখে পুলিশ।
কাউকেই ঢুকতে দেয়া হয়নি নির্দিষ্টস্থানে। বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দুই সারিতে পোশাক পরিহিত পুলিশ দাঁড়িয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে কার্যালয়টি। সাদা পোশাকেও ছিল বাহিনীর সদস্যরা। কার্যালয়ের পূবদিকে জলকামান, আর্মার্ড কার, প্রিজন ভ্যানসহ পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ছিল সারাক্ষণ। বিএনপির কার্যালয়ের পাশে দিয়ে পথচারীদেরও যেতে দেয়নি পুলিশ। কার্যালয়টি কার্যত অবরুদ্ধ করে যুদ্ধংদেহী পরিবেশ সৃষ্টি করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে।
এমন কঠিন বাস্তবতায় দলটির নেতারা কর্মসূচি বাস্তবায়নের কোনো চেষ্টাও করেননি। পুলিশের সঙ্গে কথা বলতেও আসেননি কেউ। একসঙ্গে একাধিক নেতাও জড়ো হননি। কর্মীদেরও দেখা যায়নি সমাবেশস্থলের আশপাশে। কি হচ্ছে, তা দেখারও প্রয়োজনবোধ করেনি দলটির নেতৃস্থানীয়রা। অনেকটা যেন দায়সাড়াগোছের কর্মসূচি। দলের কাজ যেন কর্মসূচি ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবায়নের দায়িত্ব তাদের নয়।
তবে সমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে আজ রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, আমি বিএনপির পক্ষ থেকে সরকার কর্তৃক আজকের কর্মসূচিতে বর্বরোচিতভাবে বাধা দেয়ার তীব্র নিন্দা, ঘৃণা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, আজকে কর্মসূচি করতে না দেয়ায় আবারো প্রমাণিত হলো, তারা (সরকার) গণতন্ত্রের সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়েছে। নাগরিক স্বাধীনতার গলায় ফাঁসির দড়ি লটকে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করতে না পেরে লাগাতার অবরোধ ডেকেছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তিন মাসের ওই কর্মসূচিতে নাশকতায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এরপর থেকে বিএনপিকে রাজধানীতে প্রকাশ্য সমাবেশ করতে অনুমতি দিচ্ছে না পুলিশ। তবে গত বছর দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয় এবং খালেদা জিয়া সেখানে বক্তব্য রাখেন।
দলের কর্মসূচি ঘোষণা ও বাস্তবায়নে নেতাদের মাঠে না থাকা নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন রাজধানীর মোহম্মদপুর থানা বিএনপি নেতা হানিফ সরদার। ভোরের কাগজকে তিনি বলেন, নেতাদের উদাসিনতার কারণে আজকে দলের এমন করুণদশা। সরকার কর্মসূচিতে অনুমতি দেয় না। পুলিশ বাধা দেয়, আর আমাদের নেতারা চুপ করে থাকেন। ঘরের বাইরে বের হন না। সামান্য প্রতিবাদ পর্যন্ত করেন না। রাজপথে নিজেরা নামেন না, নেতাকর্মীদের সঙ্গ দেন না। এমন হলে বিএনপির ভবিষ্যৎ কি হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
নাখালপাড়ার যুবদল নেতা এস এম মনিরুজ্জামান মনির বলেন, এক সময় সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি নেতাকর্মীরা জীবন বাজি রেখে মাঠে নেমেছে। পুলিশের সঙ্গে যুদ্ধ করে রাজপথ দখলে রেখেছে। কর্মসূচির সময় প্রতিটি এলাকা থাকতো রণক্ষেত্র। কিন্তু আজ নেতাদের তৎপরতা দেখলে মনে হয় তারা কি বিরোধী দল করে, না সরকারি দলের দালালী করে ঠিক বোঝা যায় না। নৈতিক অবক্ষয় হওয়া নেতারা দলের দায়িত্বে থাকায় দলের আজকে এমন পরিস্থিতি বলে মন্তব্য করেন মাঠ পর্যায়ের এ নেতা।

সূত্র
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:৪১
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×