somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডাচ-বাংলা ব্যাংক এর গ্রাহকদের গলাকাটা সিদ্ধান্ত এবং কিছু কথা..................

০৭ ই জুন, ২০১২ দুপুর ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যাদের ডাচ-বাংলা ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে তারা এর জ্বালা-যন্ত্রনা সম্পর্কে কম-বেশি অবগত আছেন। কারণে-অকারণে কার্ড আটকে যাওয়া, ১০০ টাকার নোট এটিএম এ না পাওয়া, সর্বোপরি বার্ষিক ৬০০-৮০০ টাকা ফি কেটে নেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। এ স্বত্বেও আমরা সাথে আছি এর সহজ ট্রানজাকসন এবং এটিএম বুথের সহজলভ্যতার জন্য। বৃহত্তর সুবিধার স্বার্থে আমরা এই অসুবিধাগুলো প্রায়ই মানিয়ে নিয়েছি।
যাহোক গত পরশু টিএসসি তে টাকা তুলতে গিয়ে প্রথমেই মনিটরে টাকা-পয়সা নিয়ে কিছু একটা দেখলাম। প্রথমে তেমন কিছু মনে করি নাই। কিন্তু টাকা উঠানো শেষে আবার চোখ পরতেই মাথা গরম......
সেখানে লেখা—আগামী ১ জুলাই হতে যাদের সঞ্চয়ি হিসাব তাদের অ্যাকাউন্টে সবসময় ৫০০ টাকার পরিবর্তে ২০০০ টাকা এবং চলতি হিসাবধারীদের ২০০০ টাকার পরিবর্তে ৫০০০ টাকা সবসময় জমা থাকতে হবে। মানে এই ২০০০ বা ৫০০০ টাকা অ্যাকাউন্টে ফিক্সড জমা রেখে তারপরের উপরিভাগ লেনদেন করা যাবে। উল্লেখ্য যে আগে সঞ্চয়ি হিসাবের জন্য ৫০০ টাকা এবং চলতি হিসাবের জন্য ২০০০ টাকা ফিক্সড রাখতে হত।
এখন কথায় আসি, টাকা কি এতই সহজ যে চাইলেই পাইলাম আর ইচ্ছামত জমা রাখলাম? আর আমরা যারা ছাত্র-ছাত্রী তাদের অবস্থা তো বলারই অপেক্ষা রাখে না। আমার মতো ছাত্র-ছাত্রী যারা দূর-দূরান্ত থেকে ঢাকা শহরে শুধুমাত্র পড়ালেখার জন্য এসেছেন তাদের কাছে দু’হাজার টাকা তো পাহাড় সমান। আর আমরা যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি এবং হলে বা মেসে থাকি তাদের বেশিরভাগের পুরো মাসের খরচই প্রায় ২০০০ টাকা!! এখন ২০০০ টাকা যদি ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই রেখে দেয় তাহলে আমরা তুলবো কী আর খাবোই বা কী এবং মাসই বা চলবে কী করে?? অনেকে হয়তো না জেনে নিশ্চিতভাবেই এ ভয়াবহ সমস্যার মুখোমুখি হবে। আর বাড়ি থেকে এই বাড়তি টাকাটা চাইবোই বা কী করে? কম বেতনের চাকুরিজীবীদেরও একই অবস্থা।
এখন আমরা দেখি যে কী জন্য আমরা (ছাত্র-ছাত্রীরা) বাড়ি থেকে পাঠানো ২০০০/৩০০০ টাকা ব্যাংকে রাখি? এই জন্য রাখি যে হলের বা মেসের রুম থেকে টাকা চুরি হয়ে যাবে (এরকম ভুরি ভুরি ঘটছে) এবং পকেটে থাকলে ছিনতাই বা পকেটমারিং হবে এই ভয়ে। আরও একটা কারণ এই ব্যাংকে টাকা রাখার যে সহজেই যখন-তখন ২০০-৫০০ টাকা এটিএম থেকে আমরা উঠাতে পারি।
আমি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কথা বলতে পারি না কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়েন তারা নিশ্চই দেখেছেন যে কিভাবে ডাচ-বাংলা ব্যাংক গ্রাহক (ছাত্র-ছাত্রী) ভিক্ষা করেছে। কার্জন হল, টিএসসি, ডাস চত্তর, সেন্ট্রাল লাইব্রেরী, কলা ভবন এমনকি ঢাবির প্রত্যেকটি হলে গিয়ে গিয়ে ভিক্ষুকের মতো ডেকে ডেকে ছাত্র-ছাত্রীদের অ্যাকাউন্ট ওপেন করিয়েছে একমাত্র ৫০০ টাকা অ্যাকাউন্টে জমা রাখা এবং এটিএম ব্যবহারের সুবিধা দেওয়ার কথা বলে। তাতে সাড়া দিয়ে হাজার হাজার ছেলেমেয়ে অ্যাকাউন্ট খুলেছে। ডেকে ডেকে আদর করে অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে এখন তাদের টুটি চেপে ধরেছে। এখন এই ছেলেমেয়ে গুলো কী করবে?
ব্যাপারটি নিয়ে গত পরশু ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম সেখানে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সবাইকে অনুরোধ করেছিলাম যার যার ব্রাঞ্চ এ গিয়ে কতৃপক্ষকে অভিযোগ জানাতে। আমি গতকাল গিয়েছিলাম মতিঝিল ফরেন এক্সচেইঞ্জ ব্রাঞ্চে। কথা বললাম এক কর্মকর্তার সাথে, তিনি বললেন এই সিদ্ধান্ত সবার জন্য করা হয়েছে। অনেকেই ক্ষেপে গেছেন এবং অভিযোগ করছেন। আমরা ম্যানেজমেন্টকে বলেছি কিছু হয়নি। এখন আপনারা গ্রাহকরা সবাই মিলে একটা পদক্ষেপ নিলে হয়তো কিছু ফল পেতে পারেন।
আমি বুঝতে পারছি না ব্যাংক এত টাকা জমা রেখে কী করবে? তাহলেও ছাত্রছাত্রী হিসাবধারীদের কথাটা কী একবারও ভাবা উচিত ছিল না? ভাববেই বা কী করে? এরা যে কর্পোরেট ব্যবসায়ী মুনাফা বা প্রফিটই তাদের কাছে সব কিছু। যাহোক, তারপরেও সবাই একটু চেষ্টা করুন প্রতিবাদ জানাতে তাতে যদি কিছু হয়!!! না হলে আর কী, শেষ অস্র তো আছেই... গনহারে ক্লোজ।
৯৫টি মন্তব্য ১১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×