"পররাষ্ট্রনীতি"-- আধুনিক বিশ্বে প্রতিটি দেশের একটি অন্যতম নীতি নির্ধারনী কৌশল।।
কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক প্রসঙ্গে বিভিন্ন বিষয় উঠে আসছে।। তাই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কেমন হওয়া উচিত বর্তমানে তা নিয়ে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে ইচ্ছে হলো---
পররাষ্ট্রনীতি শুধুমাত্র বহি:বিশ্বের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের মাপকাঠি নয়,বরং দেশীয় অনেক নীতি নির্ধারনী কৌশলও পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।।।
প্রতিটি দেশের পররাষ্ট্রনীতি প্রনয়নে কিছু নির্ধারক কাজ করে।। যেমন-- দেশটির ভৌগলিক অবস্থান, জনসংখ্যা, অর্থনৈতিক ও সামরিক অবকাঠামো, ধর্ম ও সংস্কৃতি ইত্যাদি।।
বাংলাদেশের সংবিধানে পররাষ্ট্রনীতি মূল বক্তব্য হচ্ছে- "কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব"।। এটি ১৯৭২ সালের সংবিধানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং বিভিন্ন সামরিক সরকার সংবিধানের বিভিন্ন ধারা পরিবর্তন করলেও ঐ বিষয়টি অক্ষত রেখেছে।।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান থেকে শুরু পরবর্তী সরকারগুলোর পক্ষে এই নীতির বাইরে যাওয়া ছিল কষ্টকর।।
১৯৭২ সালের সংবিধানে আরেকটি বিষয় ছিল উল্লেখ করার মতো।। সংবিধানে একই সঙ্গে "সমাজতন্ত্র" ও "পূজীবাদকে" স্থান দেয়া হয়।।
এর পেছনে তৎকালিন বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট।। একদিকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পুজিবাদী ব্লক আর অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট ব্লক।। নব্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত একটি দেশের ভারসাম্যপূর্ন অবস্থান নিশ্চিত করতে স্নায়ু যুদ্ধের ঐ সময়ে সমাজতন্ত্র ও পুজীবাদকে সমর্থন করা আদর্শের চেয়ে ছিল অনেকটাই কূটনৈতিক চিন্তার ফসল।।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিরোধীতা সত্ত্বেও ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের লাহোরে 'ওআইসি' সম্মেলনে যোগদানের লক্ষ্য ছিল ঐ পররাষ্ট্রনীতি।।
ধ্বংসস্তুপের মাঝে দেশকে পুন:গঠনের জন্য তেলসহ অনেক অর্থসাহায্য,,যার জন্য ভারতের চোখ রাঙানী সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু দেশের স্বার্থে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।।
তবে হয়ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতির আন্তরিকতার ঘাটতি ছিল।।। এজন্যই দেখা যায়,, যে সময়ে বঙ্গবন্ধু নিহত হলেন,,,তার পরপরেই মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে থাকে।।
জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহন করে পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহন করেন।। তিনি বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত সংবিধানের "সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব,কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়" ধারাটির অপরিবর্তিত রেখে সঙ্গে সংযোজন করেন ২৫(খ) "মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক"।।
এছাড়া, জিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীকারী ও অনেকটাই বাংলাদেশ থেকে দূরে থাকা অন্যতম শক্তিশালী দেশ চীনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়েনর চেষ্টা করতে থাকে।।
একই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে একটা ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেন তিনি।। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্য ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ককে মেনে নিতে পারেনি ভারত।।
(চলবে)..

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





