somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি জোরদার করতে বাংলা ব্লগ প্ল্যাটফর্ম থেকে বুকলেট, পোস্টার এবং বই প্রকাশের উদ্যোগ

০৬ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। এই দাবি আমাদের প্রাণের দাবি। ১৯৭১ সালে ইতিহাসের জঘন্যতম যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত হয়েছিল। পৃথিবীতে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যে দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানে যুদ্ধাপরাধের বিচার বিষয়ে অনুচ্ছেদ আছে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে আজতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। যুদ্ধাপরাধ মানবতার বিরোদ্ধে অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ শান্তির বিরোদ্ধে অপরাধ। সুতরাং আইনগতভাবে এই অপরাধের বিচারের সময়কাল পেরিয়ে যায় না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই, তা যতোবছর পরেই হোক।

সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিটি অনেক আলোচিত একটি বিষয়। বর্তমানে ক্ষমতায় আসা সরকার তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সময়ে বাংলা ব্লগ প্ল্যাটফর্ম থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি করা হচ্ছে জোরদারভাবে। এজন্য ব্লগাররা সম্মিলিতভাবে গণস্বাক্ষর সংগ্রহসহ অন্যান্য কার্য্যক্রম গ্রহণ করেছেন। প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ করা যায়, বাংলাব্লগগুলোতে যুদ্ধাপরাধীদের ইস্যুটি নিয়ে অনেক আগে থেকেই নিয়মিত আলোচনা হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়া হচ্ছে যুথবদ্ধভাবে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণভাবে জড়িয়ে আছে আইনের বিষয়টি। কোন আইনের মাধ্যমে কিংবা কি ধরনের আইনী প্রক্রিয়ায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে সে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সত্যি বিষয়টি হচ্ছে অনেকেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে কোন আইন দিয়ে তাই জানেন না। কেউ কেউ আবার আইনী প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দিহান। তাছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে স্বাক্ষ্যপ্রমাণ কি হাজির করা হবে সেটিও অনেকেই জানেন না। এই বিষয়গুলো সমন্ধে লোকজনকে সচেতন করা সম্ভব হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিটি যৌক্তিকভাবে নতুন মাত্রা পাবে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি সরকারের সদিচ্ছার উপর অনেকটা নির্ভর করে। কারণ সরকারকেই উদ্যোগী হয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। আমরা কেবল পারি সরকারের উপর ক্রমাগত চাপ বজায় রাখতে। পাশাপাশি সর্বসাধারণকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে অধিক সচেতন করে তুলতে। যুদ্ধপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহের কথা বলা হচ্ছে। পাশাপাশি সহযোগী কার্যক্রম হিসেবে আমরা বুকলেট, বই এবং পোস্টার প্রকাশ করতে চাই। এর মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে যে আন্দোলন তৈরি হচ্ছে তা আরো জোরদার হবে।


বুকলেট, বই এবং পোস্টার প্রকাশের বিস্তারিত বিষয়গুলো ব্লগারদের সাথে শেয়ার করছি। এ বিষয়ে আপনাদের মতামত বিনীতভাবে প্রত্যাশা করছি।

১.
বুকলেট

বুকলেটটি ৩-৪ পৃষ্ঠার হবে। এতে আইনগত বিষয়ের কী পয়েন্ট, কোটেশন, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায়ে বলা বক্তব্য, জোনোসাইড কনভেনশনের ঘোষণা, প্রতিশ্রুতি সহ আরো কিছু বিষয় সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হবে। তবে বুকলেট এর মুল উদ্দেশ্য থাকবে- এটিকে এমনভাবে প্রস্তুত করা, যা পড়ে লোকজন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ে সাধারণ ধারণা লাভ করতে পারে।
মোট কতো কপি বুকলেট ছাপানো সম্ভব হবে তা নির্ভর করছে ফান্ডিংয়ের উপর । তবে ৫০০০ এর মতো বুকলেট ছাপাতে পারলে ভালো হয়।

২.
বই

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আইনগত বিষয়, বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের রায়, কিছু ভাষণ নিয়ে একটি বই প্রকাশ করা হবে। এতে সুপরিচিত লেখক, আইনবিশেষজ্ঞদের লেখা ছাপানোর প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ক ব্লগারদের লেখা ছাপানো হবে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট আইনগুলো এবং ফ্যাক্টগুলো থাকবে।
এই বইটি এমনভাবে সাজানোর চেষ্টা করা হবে যাতে তা পড়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়টি সমন্ধে বিস্তারিতভাবে জানা সম্ভব হয়।

এখানেও বলা যায়- ফান্ডিংয়ের উপর নির্ভর করছে মোট কতো কপি বই ছাপানো হবে। বইটি ৯৬ পৃষ্টার মধ্যে করতে পারলে ভালো হয়। সেক্ষেত্রে ৫০০ কপির মতো ছাপাতে পারলে ভালো হয়।

বইয়ের ব্যাপারে আপনাদের পরামর্শ প্রত্যাশা করছি।

৩.
পোস্টার

ব্লগার হট্টগোল এর পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদে দেওয়া শেখ হাসিনার ভাষণটিকে পোস্টার হিসেবে প্রকাশ করার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার ভাষণটির পরিসর বেশ বড়। পোস্টার প্রকাশের ক্ষেত্রে অন্য পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট ১৯৭৩ থেকে কিছু অংশ, জেনোসাইড কনভেনশন এর গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ, শেখ হাসিনার ভাষণের কিছু অংশ পোস্টারে স্থান পেতে পারে।

পোস্টারের সংখ্যাও ফান্ডিংয়ের উপর নির্ভর করছে।

ফান্ডিং প্রসঙ্গ :

বুকলেট, বই এবং পোস্টার প্রকাশ কাজে প্রয়োজনীয় টাকার ফান্ডিং দরকার। মনে করা হচ্ছে - বুকলেট এর জন্য আনুমানিক ১০ হাজার, বইয়ের জন্য আনুমানিক ৩০ হাজার এবং পোস্টার এর জন্য ১০ হাজার টাকার ফান্ডিং দরকার পড়তে পারে। তবে ফান্ডিং আরো বেশি হলে বুকলেট, বই এবং পোস্টারের সংখ্যা বাড়বে।

এরইমধ্যে ব্লগার মাহবুব সুমন ভাই ৫০০০ টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন। ব্লগার হট্টগোল বেশ কিছু পোস্টারের টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। ব্লগার ক-খ-ঘ বেশ কিছু পোস্টারের টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন।


ফান্ডিংয়ের ব্যাপারে ব্লগারদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করছি। আশা করছি ব্লগাররা এ বিষয়টিতে আরো একবার যুথবদ্ধতার পরিচয় দিবেন। ফান্ডিং হয়ে গেলে আমরা কাজ শুরু করে দিতে চাই। ১৫ জানুয়ারি'র মধ্যে বুকলেট প্রকাশ করতে পারলে ভালো হয়। বই প্রকাশের ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির শুরুতেই প্রকাশকের হাতে পান্ডুলিপি তুলে দিতে হবে।

উল্লেখ সব বিষয়ই প্রাথমিক প্রস্তাবনা। আশা করছি সকল বিষয়ে ব্লগাররা পরামর্শ জানাবেন। কোন ধরনের পরিকল্পনা থাকলেও জানাতে পারেন।

"যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই"
"যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতেই হবে"
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১১:১৮
৪৩টি মন্তব্য ৪২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×