somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তামিমীয় তামিমের অপেক্ষায় রইলাম

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি তামিমের দলে থাকার একজন সমালোচক । এভাবে এতদিন পারফর্ম না করে দলে থাকার ইতিহাস শুধু আশরাফুলের ছিল এই দলটার । আমি আশরাফুলের সব থেকে বড় ফ্যান ছিলাম, তারপর যা হল ওতে খেলাটার উপর আগ্রহ চলে গিয়েছিল । আমি বিশ্বকাপে আসলেই কোন খেলা পুরোটা দেখি নাই, দেখতে ইচ্ছে করে নি সত্যি বলতে । আমার মতে এই দলটার সেরা ব্যাটসম্যান এখন মুশফিক এবং তারপর রিয়াদ । তবে আমি আজ তামিমের কথা বলতে বসেছি । মানুষের পছন্দ ও, যাকে পপুলার চয়েস বলা যায় । মাশরাফি আর সাকিবের পর ওর ফ্যান বেইজ সব থেকে বেশি, সন্দেহ নাই । তবে সাম্প্রতিক সময়ে ওকে নিয়ে একটু মজা করা বেশি হয়েছে । এতে ওর অবদানই বেশি । পারফর্ম করতে না পারা তো আছেই, ব্যবহারটাও একটু নিম্নদিকে যাচ্ছিল । হতাশা থেকে এসব করাটা নতুন কিছু নয়, ওর স্বভাবের লোকের তো নয়ই । সে সব কথা থাক আমি এসব কিছু নিয়েই আজ লিখতে বসিনি ।

তামিম ইকবাল খান । এই নাম বললেই মানুষের ইংল্যান্ডের ঐ দুইটা টেস্ট সেঞ্চুরির কথা মনে করে । তাদের দোষ দিয়ে লাভ নাই । ঐ দুইটা শতক তাকে উইজডেন সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব এনে দিয়েছিল । লর্ডসের অনার বোর্ডের মত চির আকাঙ্ক্ষিত সম্মান এনে দিয়েছিল, টেন্ডুল্কার বা পন্টিং এর এটা নেই কিন্তু । আমি আসলে এগুলাও বলতে আজ আসিনি । আজকে আমার সব কথা হবে তামিমের সম্ভাবনা নিয়ে ।

লর্ডসের শতক আমাকে দোলা দেয় নি, ওর পরের শতকটা দেয়। কেননা ওর পরের শতকটা তামিমের ছিল । তামিমীয় ছিল, তামিমীয় বলতে একটা আগ্রাসন ছিল । সব কিছু ছিড়ে ফেলার একটা পাশবিক স্পৃহা ছিল । একটা অহংবোধ ছিল, একটা দানবীয় ভাব ছিল । একটা তামিমীও ভাব ছিল । আমার ঐ তামিম ভাল লাগত । আমার এই 'শ্রমিক' তামিম ভাল লাগে না । তাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি আমায় একদম নাচায় নি । ভাবিয়ে তুলেছিল । তামিমকেও কি আমরা নষ্ট করে ফেললাম । যে যাই বলুক মানুষ শেভাগের খেলা পছন্দ করত । একটা কারণেই এখনো মানুষের মুখে আজও স্যার ভিভের কথা আছে, মানুষের মুখে আজো একটা কারণেই মিয়াদাদের কথা আছে । ওরা শুধু খেলত না, অপরকে ধ্বংস করে দিত । ওরা টিকে গেলে অপর দলের মনোবল বলে কিছু থাকত না । তামিম আমাদের সেরকম একজন হওয়ার কথা ছিল । সেরকম হওয়ার পথেই ছিল ও । মাঝে কি হল, মানুষের কথা শুনতে গিয়ে নিজের খেলা নষ্ট করল । তামিমদের কোচ লাগে না, লাগে শুধু উৎসাহ । তার চেয়ে বেশি লাগে নিজের মতও খেলার অপার স্বাধীনতা । এটা পেলে বাকিটা ওরা 'ম্যানেজ' করে নিতে পারে । আজকেও প্রথম দিকের খেলা আমার ভাল লাগে নি । তবে ঐ দুই ছক্কা আর আজমলের ওভারে ওর পুরনো ঝলক দেখে স্বস্তি পেয়েছি । আমাদের দলে নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় অনেক আছে । রিয়াদ, মুশফিকের সাথে সাকিব তো আছেই । আর নতুন কেতন নিয়ে আছে সাব্বির, নাসির বা সৌম্য । তামিমের অমন দেখে খেলার দরকার নেই । ওকে ওর মত খেলতে দিলে ও একাই ভারতকে বিশ্বকাপ থেকে বের করে দিবে । ওকে ওর মতও খেলতে দিলে ইংল্যান্ডের মাটিতেও আমাদের খেলোয়াড়রা শতক পাবে । ওকে ওর মতও খেলতে দিলে আমাদের আর স্যার ভিভের রুপকথা শুনে বড় হতে হবে না । আমরা আমাদের নিজেদের রুপকথা পাব । নিজেকে নিয়ে ডাউট হলে ও প্রথমে আশরাফুলের মত ফর্ম হারাবে । তারপর অমন কাজ করে আমাদের মত ভক্তদের কাদাবে ।

তামিমকে নিজের অহংবোধ নিয়ে থাকতে দিন । তামিমকে ওর এই 'রেইজ' টা নিয়ে থাকতে দিন । তামিমকে ওর কোন কিছু পরোয়া না করার বেপরোয়া ভাবটা রাখতে দিন । তাহলে আর রানের চাকার জন্য মুশফিকের নামার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না । তামিমকে ওর মত থাকতে দিন । তামিমকে ওর মত খেলতে দিন । তাহলে আমাদের আর বেশিদিন শেভাগের কথা শুনতে হবে না । তামিম্ আগে রান করবে ওর থেকে ভাল স্টাইলে, তারপর ওকে কথা দিয়ে থামাবে । তামিমকে তামিম থাকতে দিন, তাহলে আর রামিজের মত দুই টাকার খেলোয়াড়দের কথা শুনতে হবে না । তামিমকে তামিম করে আগলে রাখুন । তাহলে তামিমীয় ইনিংসের জন্য অন্য দেশের ইতিহাস ঘাঁটতে হবে না । আমাদের নিজেদের একটা তামিম থাকলে শেভাগদের আর গুনতে হবে না । আমাদের একটা তামিম থাকলে তিনশ রান আমাদের কাছে কিছুই না । আর এক ইনিংসে দুইশ খুব বেশি দিন দূরে থাকবে না ।

আমি ঐ তামিমের অপেক্ষায় যে জহিরকে মারার সময় ভয় পায় নি । আমি ঐ তামিমের অপেক্ষায় যে আজমলকে মারতে গিয়ে ওর ইতিহাস নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবে নি । আমি ঐ তামিমের অপেক্ষায় যে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কথা বলার উপাদান যোগাবে ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×