আবেগ ও বাস্তবের মধ্যে অনেক পার্থক্য । ইসলাম কোন আবেগতারিত বা কাল্পনিক ধর্ম নয় বরং ইসলাম হচ্ছে সত্য ও বাস্তবমূখী ধর্ম । আবেগে আপনি যা ইচ্ছা তাই বলতে পারেন কিন্তু শরীয়ত হল সত্যনির্ভর, এখানে আপনার আমার আবেগের কোন স্থান নেই । যেমন ফাযায়েলে আমালে বর্ণিত কিচ্ছা কাহিনীগুলো ওয়াজ মাহফিলে মানুষকে অনেক বিনোদন দিতে পারে কিন্তু সত্য এর চেয়ে অনেক দূরে ।
আবেগে, কাসফে, স্বপ্নে, জাকারিয়া সাহেবরা রাসূলের নির্দেশ পান, ক্ষুদার্ত হলে রাসূলের কবরের পাশে গিয়ে রুটি পান, পিপাসা লাগলে দরূদ পরে খালি কূয়াতে থুতু ফেলেন তাতেই কূয়া পানিতে পূর্ণ হয়ে যায় । রাসূলের প্রেমে দু লাইন কবিতা পড়লে রাসূল ছাঃ কবর থেকে হাত বের করে দেন ইত্যাদি কিচ্ছা রূপকথার গল্পে ভাল মানায়, ইসলাম ধর্মে না ।
বাস্তব এর চেয়ে অনেক কঠিন । হিজরতের পরে পানির কষ্টে রাসূল ছাঃ ও সাহাবীগণ মদীনায় দিশেহারা হয়ে পরেছিলেন তারপর ওছমান রাঃ এক ইহুদীর কাছ থেকে একটি কূয়া খরিদ করে মুসলিমদের দান করেন । ইয়ারমুকের যুদ্ধে একটু পানির জন্য আহত তিনজন সাহাবী শাহাদাত বরণ করেন, এদিকে ফাযায়েলে আমালে একটি বালিকা (বানোয়াট) দরূদ পড়ে খালি কূয়াতে থুতু ফেললে কূয়া পানিতে ভরে গেল? আফসোস এই দরূদটা জানলে সাহাবীরা আর পানির কষ্টে শহীদ হতেন না ।
হযরত আলী ও ফাতেমা রাঃ অনেকদিন না খেয়ে পর্যন্ত থেকেছেন কোনদিন রাসূলের কবর থেকে খাদ্য (রুটি) আসলনা, হয়ত উনারা আমাদের বুজুর্গদের মত রাসূলকে ভালবাসত না । তাই খাদ্য আসেনি...
হযরত ওমর উসমান আলী (রাঃ) গন শহীদ হয়ে গেলেন, মুসলিম উম্মাহ চরম ফেতনায় লিপ্ত হয়ে গেল, উষ্ট্রের যুদ্ধ সিফফীনের যুদ্ধ সংঘটিত হল, জান মালের ব্যাপক ক্ষয়খতি হল, কোনদিন রাসূলের কবর থেকে একটাও নির্দেশ এলোনা, হে ওমর অমুককে খলিফা বানাও তাহলে ফেতনা হবেনা, হে আলী উসমান হত্যার বিচার করো, অশান্তি আর হবেনা,
হযরত হোসেন রাঃ কারবালায় শহীদ হয়ে গেলেন তাও রাসূল ছাঃ বললেন না, হে নাতী ইরাকের দিকে যেওনা, গেলে তুমি শহীদ হয়ে যাবে, অথচ আমাদের বুজুর্গরা এখনো রাসূলের নিয়মিত নির্দেশ পান । এমনকি রাসুল ছাঃ তাদের কাছ থেকে নাকি উর্দু ভাষাও শিখে ফেলেছেন । রাশীদ আহমাদ গাঙ্গোহী বলেন "আপনি আরবদেশীয় লোক হয়ে কিভাবে এই ভাষা জানলেন? জবাবে রাসুল ছাঃ বলেন, যখন থেকে আমি দেওবন্দ মাদ্রাশার আলেমদের সাথে যোগাযোগ রাখি, তখন থেকে এই ভাষা জানি" । এরপর গাঙ্গোহী মন্তব্য করেন, এথেকেই আমরা এই মাদ্রাশার গুরুত্ব বুঝতে পারি" (আল বারাহী আল কাতিয়া, ৩০পৃঃ) ।।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




