সুউচ্চ পাহাড়ের এক কোনায় দাড়িয়ে আছি! মাথার উপরে বিশাল আকাশ! আকাশে রোদ্র মেঘের ছড়াছড়ি! হাজার ফুট নিচে বিশাল সমুদ্র একটি গিরিখাত তৈরি করেছে!
আপনারা ভেবে বসবেন না যে আমি আত্মহত্যা করব! আসলে তা নয়! আমার পূর্বে অনেক এডভেঞ্চারাস পারসন ই এখান থেকে লাফ দিয়েছে! সেফ লি ফিরে ও এসেছে!
আমি ভীতু মানুষ! দুঃসাহসী হওয়ার চেষ্টা করছি! কিন্ত শরীর এর জিন এর কোড গুলো ঠিক সায় দিচ্ছে না! তারা চিৎকার করে ভেতর থেকে বলছে যদি কিছু হয়ে যায়! এত সাধের জীবন তোমার! একবার চিন্তা কর সেই বিলাশবহুল বাড়ির ড্রইংরুমেএসির বাতাসে সোফায় বসে বসে কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া আর টিভি তে ফেভারিট প্রোগ্রাম দেখা!! আহ কত শান্তি! কিংবা তোমার পরিবার! মা, বাবা, ভাই, বোন! তারা কত দুঃখ পাবে! প্রিয় ভালবাসার মানুষটির পাশে বসে থেকে শান্তির পরশ!
কি দরকার শুধু শুধু জীবনের ঝুকি নেওয়ার!
দরকার আছে! আমার ভেতরের সত্বাটিকে আমি বোঝানোর চেষ্টা করি! এ জীবন এক ঝড়! এ মৃত্যুর মত নির্জীবের নয়। মাতাল এই ঝড় যুগে যুগে এই পৃথিবী , এই সভ্যতাকে দিয়েছে নতুন দিনের আলো। সাইরাস থেকে আলেকজান্ডার হয়ে নেপোলিয়নের মত যোদ্ধারা এই জীবনের সুধা পান করার জন্য ছুটে বেড়িয়েছে পুরো পৃথিবী! কিংবা সহস্র বছর আগে অজপাড়াগাঁয়ের কোন জীর্ণশীর্ণ যুবক তার সমাজের এক অসহায় মানুষ কে অত্যাচারীর অত্যাচার থেকে বাচানোর তাগিদে জীবন দিয়েছে, তার হাত ধরেই আজকের এই সভ্যতা এগিয়েছে!
এ জীবন স্বাধীনতার, এ জীবন নরপিশাচের চোখে চোখ রেখে তাকানোর! আমরা ভুলে যাই আমরা মানুষই আজকের এই সভ্যতার শিল্পী! আমাদের তুলির আঁচরে এই সভ্যতা যুগে যুগে নতুন রুপ পেয়েছে! আমাদের সৃজনশীলতা, আমাদের পরীশ্রম, আমাদের ভাবনা দিয়ে এই পৃথিবী ঘেরা! রকেট মহাকাশ ফুরে যখন রওনা দেয় তখন তা জানান দেয় যুগে যুগে মানুষের জয় করার ইচ্ছাকে! মানুষ পরাজিত হতে চায় না! তাই তাকে আজকের এই অবস্থানে এনে দাড় করিয়েছে !
না! আমাকে পারতেই হবে। সভ্যতার যে জীবনের ঐশ্বর্য যে জীবন সে দাবী করে সেই জীবনের দিকে সে আমাকে ডাকছে! যে জীবন স্বাধীন ভাবে নিশ্বাস নেওয়ার, মৃত্যুর কাছে হার না মানবার! সে জীবন ইতিহাসে শত সহস্রাধিক বছর বেঁচে থাকে।সকল মানবীয়তাকে অতিক্রম করে অতি মানবীয় হয়ে উঠার! সেই জীবনেরপানে ছুটলাম ঘোড়ায় চড়ে পথ কাঁপিয়ে!
দু হাত প্রসারিত করে নিজেকে মুক্ত করলাম! হাজার ফুট নিচে আমার জীবন ভোমরার খোজে!আকাশে তখন ও রোদ্র মেঘের খেলা!!!