somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তারেক_মাহমুদ
আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

নব্বইয়ের দশকের বিটিভি

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





বিটিভির নাম শুনলেই এখনকার ছেলেমেয়েরা নাক সিটকায়। এখন বিটিভি মানেই সরকারের গুণগান বিটিভি মানেই বাতাবীলেবুর বাম্পার ফলনের খবর ও নিন্মমানের অনুষ্ঠান। অথচ আমাদের ছেলেবেলায় এই বিটিভিই ছিল আমাদের সকল আনন্দের উৎস। বিটিভির সংবাদ মানেই সরকারের গুণকীর্তন, এই কথাটি সবসময়ের জন্যই প্রযোজ্য। সূর্য পূর্বদিকে উঠে এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যায় যেমন সত্য বিটিভি সরকারের গুনকীর্তন করবে এটাও আজীবন স্বীকৃত।

বিটিভির সংবাদের ধরণ সবসময় একই রকম, তবে সে সময় আসমা আহমেদ মাসুদ, সিরাজুল মজিদ মামুন,রামেন্দু মজুমদার সংবাদ পাঠক হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন। তবে নব্বইয়ের দশকে বিটিভির নাটকগুলো ছিল অসাধারণ। সপ্তাহে একটা ধারাবাহিক একটা সাপ্তাহিক নাটক প্রচার হতো,যা পরিবারের সবাই মিলে একসাথে বসে দেখা হতো।সপ্তাহে দুইটি কার্টুন ছবি ,মাসে একবার ইত্যাদি,প্রতি মাসে একটা বাংলা সিনেমা এইছিল বিটিভির অনুষ্ঠান। ম্যাকগাইভার নামের সিরিয়ালটি ছিল ব্যাপক জনপ্রিয়, যা দেখে আমরা সবাই ম্যাকগাইভার হতে চাইতাম,পরবর্তীতে দ্যা ফল গাই,এ টিম নামের বিদেশি সিরিজ গুলি দারুণ জনপ্রিয় ছিল। ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি ও বাংলা সিনেমা দেখার জন্য সারামাস আমরা তীর্থের কাকের মত বসে থাকতাম। সবমিলিয়ে সারা সপ্তাহ ৪থেকে ৫ ঘন্টা টিভি দেখতাম, এতেই আমাদের ইলেকট্রনিক বিনোদনের চাহিদা পূরণ হয়ে যেতো। এখনকার ছেলেমেয়েদের মত সারাদিন টিভি কিংবা ইউটিউব ভিডিও দেখার দরকার ছিল না। বিজ্ঞাপনের অত্যাচার এখনো যেমন আছে তখন আরও একটু বেশিই ছিল। বাকী সময়গুলোতে পড়াশুনার পাশাপাশি বন্ধুদের সাথে ফুটবল,ক্রিকেট, দাড়িয়াবান্ধা ছাড়াও নানারকম খেলায় মত্ত থাকতাম।

বিটিভি ধারাবাহিক নাটকগুলি আমার মত অনেকেরই মনে এখনো দাগ কেটে আছে। হুমায়ুন আহম্মেদের সেই অয়োময় নাটকের মির্জা সাহেব, হানিফ,মির্জাসাহের পাখাল(পাখির রাখাল) যে চরিত্রগুলি ছিল আমাদের বন্ধুদের সাথে আলোচনার বিষয়। এছাড়া কোন কাননের ফুল,কোথাও কেউ নেই, রূপনগর,বহুব্রীহি, সংশপ্তক নাটকগুলো কথা এখনো মানুষ ভুলে যায়নি। কোথাও কেউ নেই নাটকের সেই বাকের ভাইয়ের কথা কোনদিন বাঙালী ভুলতে পারবে?এক বই মেলায় হুমায়ুন আহম্মেদের নিজস্ব বইয়ের স্টলের নাম ছিল, কোথাও কেউ নেই। তাছাড়া শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে রচিত সংশপ্তক নাটকের কানকাটা রমজান, হুরমতি,লেকু কথাও ভোলা সম্ভব নয়।

কোথাও কেউ নেই নাটক কিংবা ইত্যাদি প্রচারের সময় ঢাকার রাস্তাঘাট একদম ফাকা হয়ে যেতো। মানুষ আগেই নিজেদের সব কাজ সেরে বাসায় ফিরে যেতো শুধুমাত্র নাটক দেখার জন্য। বাকের ভাইকে ফাসি থেকে বাচানোর জন্য সারাদেশে মিছিল হওয়ার খবরতো সবারই জানা।

সেসময় হুময়ুন আহম্মেদের পাশাপাশি ইমদাদুল হক মিলনের লেখা নাটকও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। রূপনগর নাটকে ইমদাদুল হক মিলন, হুমায়ুন আহম্মেদের বাকের ভাইয়ের অনুকরনে খালেদ খানকে দিয়ে একটি মাস্তান চরিত্র তৈরি করেছিলেন। হুমায়ুন আহম্মেদের মত অতোটা জনপ্রিয়তা না পেলেও রূপনগরের জনপ্রিয়তাও কম ছিল না। সে সময় এই দুজনের বইয়েরই ব্যাপক চাহিদা ছিল বইমেলায়। আর এখন? হুমায়ুন আহম্মেদ আকাশের তারা, আর মিলনের জনপ্রিয়তা একেবারেই নিন্মমুখী।

এখন এত চ্যানেল কিন্তু দেখার মত অনুষ্ঠানই খুজে পাওয়া যায় না। সব চ্যানেল সারাদিন একই খবর ট্যাবলেট বানিয়ে গুলিয়ে খাওয়াচ্ছে। মানহীন অনুষ্ঠান, আর বিজ্ঞাপনের যন্ত্রনায় মানুষ বিদেশী চ্যানেলে আশক্ত। জানিনা এত চ্যানেলের লাইসেন্স দেওয়ায় উদ্দেশ্য কি?এমন অনেক চ্যানেল আছে যেগুলির নামও মানুষ জানে না দেখাতো দুরের কথা। সব চ্যানেল মালিকরাই বলছেন প্রতিদিনই তাদের লস গুনতে হচ্ছে কিন্তু তবুও কেন কিছুদিন পরপরই নতুন টিভি চ্যানেলের আগমন ঘটছে সেটাই আমার বোধগম্য নয়। সময় বদলেছে টিভি চ্যানেলগুলোরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তবে চ্যানেলগুলির অনুষ্ঠানের মান বাড়ানোও জরুরি।

(রিপোষ্ট)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:২২
২৫টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×