somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তারেক_মাহমুদ
আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

চকলেট

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কারওয়ান বাজার সার্ক ফোয়ারার ট্রাফিক সিগন্যাল থেকে বাংলামোটরের দিকে যাওয়ার রাস্তাটা সবসময় একটু বেশিই ব্যস্ত। সন্ধ্যার পরেতো ফুটপাতে পা ফেলার যায়গা পর্যন্ত থাকে না। মেট্রোরেলের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে এসব রাস্তায় গাড়ির চাপ ভয়াবহ হারে বেড়েছে। তার উপর ঢাকা শহর এখন মোটর সাইকেলে শহরে পরিনত হয়েছে। ফুটপাত দিয়ে হাটতে গেলে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়, না জানি কখন কোন অদক্ষ মোটর সাইকেল চালক ঘাড়ের উপর দিয়ে চালিয়ে দেয়। একসময় গ্রামের চেয়ারম্যানের ছেলেরা মোটর সাইকেল চালিয়ে সারা গ্রাম দাপিয়ে বেড়াতো আর গ্রামবাসীকে জানান দিতো
'দেখো আমার বাবা চেয়ারম্যান'।
গত ৪/৫ বছর আগেও ঢাকায় খুববেশি মোটরসাইকেল দেখা যেতো না। অসহ্য যানজটের হাত থেকে সময় বাচাতে কেউ কেউ মোটর সাইকেল চালান আবার কেউ কেউ দুটো টাকা রোজগারের আশায় মোবাইল এপসসের মাধ্যমে ভাড়ায় চালান। শিক্ষিত বেকার যুবক, রিকশাওয়ালা,হকার, মাদকসেবী থেকে শুরু করে কিছু চাকুরীজীবী ভদ্রলোকও ভাড়ায় বাইক চালনাকে পেশা হিসাবে নিয়েছেন।

কারওয়ান বাজারের ব্যস্ত রাস্তায় যেখানে পথচারীদের পা ফেলার যায়গা নেই সেখানে কিছু হকার ব্যস্ত ফুটপাতের একটা বড় অংশ দখল করে চিৎকার করে ৪টি টি-শার্ট ১০০ টাকায় বিক্রি করছে। মাঝে মাঝে অবাক হই কি করে এত সস্তায় ওরা এসব টি-শার্ট বিক্রি করে?

ফুটপাতের এক কোনে ময়লা জীর্ন শাড়ি পরা একজন রোগা মধ্যবয়সী মহিলা ভিক্ষা করছেন। পাশে বসে আছে তার হাড়জিরজিরে অপুষ্ট শিশু। শিশুটির গায়ে নোংরা স্যান্ডুগেঞ্জি তবে নিচের অংশটি উলঙ্গ। ব্যস্ত শহরের ব্যস্ত মানুষদের কাছে মহিলাটি চিৎকার করে ভিক্ষা চাইছেন।
'গরিবেরে ভিক্ষা দ্যান বাবা, আল্লাহ আপনার ভাল করবো বাবা'

পথিকদের বেশিরভাগই দ্রুতপায়ে পাশ ঘেসে চলে যাচ্ছেন শতকরা এক থেকে দুইজন মহিলাটির সামনে রাখা টিনের প্লেটে একটাকা দু'টাকার কয়েন ফেলে আবার জনস্রোতে মিশে যাচ্ছেন। ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে থাকা এক তরুনের মোটর সাইকেলে পিছনে বসে থাকা এক তরুণী খুব মনোযোগ দিয়ে সেই শিশুটিকে দেখছেন। হঠাৎ তরুণী বাইকের পিছন থেকে হেলমেট পরা অবস্থায় নেমে শিশুটির দিকে এগিয়ে গেল এবং নিজের হ্যান্ডব্যাগ খুলে একটা ডেইরি মিল্ক চকলেট শিশুটির দিকে বাড়িয়ে দিল। চকলেটটি পেয়ে শিশুটি রীতিমতো খুশিতে লাফাতে লাগলো,বাচ্চার খুশি দেখে তার ভিখারি মায়ের মুখেও অদ্ভুত এক প্রশান্তির হাসি ফুটে উঠলো। শিক্ষিত মায়েদের মত খুশির হাসি চেপে রাখা এই ভিখারি মায়ের পক্ষে সম্ভব নয় তাই সেও তার বাচ্চার খুশিতে দাত বের করেই হাসছে। চকলেট দেওয়া তরুণী ইতিমধ্যে বাইকে ফিরে গেছেন এবং ওদের হাসি দেখে সেও হাসছে সঙ্গে তরুণীর বাইক ড্রাইভার বন্ধুটিও।
এ এক অপূর্ব দৃশ্য!!!

আমার ধারণা কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কারের পর যতটা না খুশি হয়েছিলেন এই শিশুটি চকলেট পেয়ে তার চেয়েও বেশি খুশি হয়েছিল। চলমান হাজার হাজার পথিকদের মধ্যে আমিসহ দু'একজন ভাগ্যবান পথিকের চোখেই এই অভুতপূর্ব দৃশ্যটি ধরা পড়েছিল। তরুণীটি সামান্য দশ টাকার একটা চকলেট দিয়ে শিশুটি এবং তার মায়ের মুখে যে হাসি ফোটাতে পেরেছিল আমার ধারণা কোটি টাকা দিয়েও এমন হাসি কেনা সম্ভব নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:১১
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×