somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজধানীর জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচতে নতুন কিছু মহাপরিকল্পনা!

২৯ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সোমবারের বৃষ্টি আর মঙ্গলবারের মহা-জলাবদ্ধতার পর দেশের সব পত্র-পত্রিকায় বিশেষজ্ঞরা নানা মত ও পথ বাতলেছেন।

কিছু পড়লাম, কিছু শুধুই চোখ বুলালাম। সবই আগের কথা। প্রতি বছরই ঢাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিলেই এসব প্রস্তাবনা পত্রিকার পাতায় আসে।

কিন্তু এসব প্রস্তাবনা কখনই বাস্তবতার মুখ দেখেনা। অথচ প্রতিবারই এসব জলাবদ্ধতার কারণে প্রাণহানি ঘটে। এবার পানিতে ডুবে ও বিদুতস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ৮টি হতভাগ্য প্রাণ। ভোগান্তিতে পড়ে লাখ লাখ মানুষ।

আজ কয়েকটি পত্রিকায় দেখলাম প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টাকে জোর গুরুত্ব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন! আমি ভাবছি কী লাভ?

সরকার এখন পরিকল্পনা নেবে। তারপর এক বছর ধরে এটাকে নাড়াচাড়া করবে। এরপর ঠিক করবে দলীয় ক্যাডার কোনটারে কোনটারে এই কাজের দায়িত্ব দেয়া যায়। তারপর টেন্ডার ছিনতাই। অতঃপর কাজ ১০ ভাগ করেই পুরো বিল উত্তোলন এবং কাজ ঢিমেতালে চলা শুরু। এমন করতে করতেই পাঁচ বছর শেষ।

এরপর আবার নতুন সরকার... নতুন বৃষ্টি ... নতুন জলাবদ্ধতা.. এবং নতুন পরিকল্পনা.

এছাড়া যেসব খাল বেদখল হয়ে গেছে এরা নিশ্চয়ই ক্ষমতাবিহীন নয়। এরা জোর-জবরদস্তি করবে। মামলা করবে। স্থগিতাদেশ হবে। বছরের পর বছর মামলা ঝুলাঝুলি করবে। ঘুষ চলবে। তেলাদেশ চলবে... ইত্যাদি ইত্যাদি।

জ্ঞানগর্ভ পরিকল্পনাগুলো যখন বাস্তবায়িত হয় না তখন আগেভাগেই সেল্ফ ডিফেন্স নিয়া চিন্তা করা দরকার। কারণ যে দেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লুলা থাকে মাসের পর মাস, সে দেশে জলাবদ্ধতা ও বেদখল খাল-ডোবা উদ্ধারের মতো তৃতীয় প্রায়োরিটির সমস্যা সমাধানে কার্যকর কিছু ঘটবে তা' আমি ভাবতে পারছি না।

কী করতে পারি আমরা। আসেন একটু চিন্তা করি।

প্রথম কাজ হলো সবাই পোর্টেবল নৌকা নিয়ে ঘুরা। বিদেশে এসব নৌকা সবার ঘরে ঘরেই থাকে। প্রয়োজন বিধায় এখন ইমপোর্ট করতেই হবে! এসব নৌকা পকেটে নিয়ে ঘুরা যায়। যখন যে অবস্থায় জলাবদ্ধতায় পড়িনা কেন জান নিয়ে যাতে বাসায় ফিরতে পারি। এ ব্যাপারে বর্তমান সরকার এগিয়ে আসতে পারে। কারণ নৌকা যেহেতু বর্তমান সরকারের সিম্বল। সেহেতু কিছু ছাড় কিংবা বৈঠা ফ্রি দেয়া যেতে পারে। লগি-বৈঠার তাণ্ডব শেষে অনেক বৈঠা এখন অবশ পড়ে আছে। সেগুলো কিছু কাজে লাগুক!

অথবা স্পাইডারম্যানের কাছ থেকে দিক্ষা নেয়া যেতে পারে। কারণ সদর রাস্তা যদি গলাসমান পানিতে তলিয়ে যায়, আর সেই পানিতে যদি হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের ভয় থাকে তাহলে স্পাইডারম্যানের মতো এ বিল্ডিং থেকে ও বিল্ডিং-এ ঝুলাঝুলি করে নিরাপদ দুরুত্বে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় আছে?

বিদ্যুত কন্ট্রোল সেন্টারের কর্মীদের আচ্ছামতো কিছু ট্রেনিং দেয়া যায় (!^#(*ঁ^@)। কারণ, এরা কখনোই আন্দাজ করতে পারে না কতটুকু বৃষ্টি হলে তাদের ভুমিতে স্থাপিত সুইচবোর্ডগুলোতে পানি স্পর্শ করবে। কিংবা কোন কোন এলাকায় তাদের আর্থিং তারে সমস্যা রয়েছে। এরা বৃষ্টির সময় নাক ডেকে ঘুমুবে আর সাধারণ মানুষ পোকা-মাকড়ের মতো মরবে- এটা হতে পারে না। বৃষ্টিকালীন মুহুর্তে জলাবদ্ধতার শিকার এলাকাগুলোতে সঠিক সময়ে বিদ্যুত নিয়ন্ত্রণ করতে এদের ট্রেনিং এখন খুবই দরকার।

সাধারণ মানুষ নিজস্ব রেসকিউ টিম তৈরি করতে পারে। কারণ, দুর্যোগকালীণ মুহুর্তে এলাকাবাসীর চেয়ে বাংলাদেশে বড় আর কোন রেসকিউ টিম নেই। সরকারি ত্রাণবাহিনী আসতে আসতে নিম্ন অঞ্চলগুলোতে কী ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয় তা' চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।

সাঁতার প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা যেতে পারে। ঢাকার অনেক শুহুরে মানুষ সাঁতার জানেন না। তাঁদের এ বিদ্যা আয়ত্ত্ব করা দরকার। কখন কাজে লেগে যায় কে জানে?

সবশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটা শটকার্ট আবদার জানাচ্ছি- এতে হয়তোবা কয়েকমাসের মধ্যেই বেদখলকৃত খালগুলো স্ব অবস্থানে চলে আসবে। খাল উদ্ধারের দায়িত্ব বাংলাদেশে ভেজালবিরোধী অপারেশনের সফল অপারেটর একজন ম্যাজিষ্ট্রেট রয়েছেন, তাঁকে দেয়া হোক। সবাই তাঁকে চেনেন। তাকে এ দায়িত্ব অবশ্যই বিশেষ ক্ষমতা প্রদানের মাধ্যমে দিতে হবে। তিনি যাতে খাল-ডোবা সংশ্লিষ্ট (!) যে কাউকে গ্রেফতার, উচ্ছেদ করতে পারেন বিনা বাধায়। এবং খাল-ডোবা উদ্ধারকালীন সময়ে যে বা যারাই বাধা প্রদান করতে চাইবে কিংবা মামলা দায়ের করবে তাদের যে কোন মামলাই অগ্রাহ্য হবে এবং উদ্ধারকালীন পুরো সময় তাদের হাজতে বন্দী রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

ধন্যবাদ।

ছবির সৌজন্য: ত্রিভুজ-এর অদ্যকার পোস্ট।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:৪৫
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×