somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিন্দু vs মুসলিম

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সাম্প্রদায়িক সংকীর্ণ রাজনীতিচর্চা প্রাধান্য পাচ্ছে আমাদের দেশে। ধর্ম মানুষের ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও চর্চার জায়গা থেকে ক্রমশ রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলে থাবা প্রসারিত করেছে। ধর্মকে রাজনীতির বাহন বানানো হচ্ছে। এখন আমাদের 'বাঙালি' পরিচয় দিতে লজ্জা করে তাই আমরা সাম্প্রদায়িকতা মুখ্য বিষয় হিসেবে গ্রহন করছি। ‘কতটা’ হিন্দু বা মুসলমান– সেটাই আমরা মূখ্য করে তুলছি।


ইসলাম হচ্ছে একটা শান্তির ধর্ম। মুসলিমের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা থাকতে পারে না কারণ ইসলাম হলো অসাম্প্রদায়িক ধর্ম।
যেখানে আমরা অসাম্প্রদায়িক ধর্মরক্ষক সেখানে কিভাবে হিন্দুদের ধর্মোৎসবে আমরা আঘাত করি? ধর্মপালন শুধু মসজিদে গিয়ে নামাজ-কোরআন পড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ এবং তাদের ধর্মকে আঘাত না করার মধ্যে ও ধর্মপালন নিহিত। কেন অমুসলমানরা নির্যাতিত হবে? তাদের কি আপন ধর্মপালনের স্বাধীনতা নেই?

যদি স্বাধীনতা থাকে তাহলে কেনো আমরা তাদের ধর্মে হস্তক্ষেপ করবো? আমরা যাদের অনুসরণ করি তারা তো কোন ধর্মে আঘাত করে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেনি বরং তারা তাদের উপযুক্ত সম্মান করেছে। "বদরের যুদ্ধে যখন একজন কাফের সাহাবীর হাতে বন্ধী হয় তখন অনেকই বললো তাকে হত্যা করতে কিন্তু অপর একজন সাহাবী বললো সে কোন ধর্মের সেটা আমাদের মুখ্য বিষয় নয়,সে আমাদের অতিথি সেটাই আমাদের মুখ্য বিষয়।

যুদ্ধের ময়দান থেকে সাহাবীর বাড়ি ৫০ মাইলের অধিক। যখন সাহাবী উট বের করলো তখন কাফের টি ভাবতে লাগলো 'এই মুসলিমটি মনে হয় আজ আমায় সারা পথ উষ্ট্রের রশি টানাবে আর সে উষ্ট্রে আরোহন করে এই ময়দান পার হবে'। হঠাৎ সাহাবি বললো 'তুমি আমার নবীর মেহমান, তুমি উষ্ট্রের উপরে উঠো' এই বলে উষ্ট্রের রশি টানতে টানতে সাহাবীর প্রকোষ্ঠ পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে থামলো। এবং প্রকোষ্ঠে পদার্পণ করতে না করতেই সহধর্মিণী কে জিজ্ঞেস করলো 'হে আমার প্রিয় স্ত্রী , আমার বাসায় আল্লাহর নবীর মেহমান আসছে, বাসায় কি আছে খেতে দেওয়ার মত? তখন জবাবে স্ত্রী বললো দুইটা মাত্র রুটি আছে কিন্তু আমিও খাইনি তোমার সন্তানরা ও খাইনি, এ কথা শুনার পর সাহাবী বললো, তুমি আর আমি গল্প করে সময় পার করি এবং সন্তানদের কে তুমি ঘুমপাড়িয়ে দাও যাতে তারা ঘুমিয়ে যায় আর রুটি দুইটি আল্লাহর নবীর মেহমান কে খেতে দাও। সাহাবীর এই আচরণ দেখে কাফের বলে উঠলো হে সাহাবী তুমি আমাকে সে ব্যক্তির কাছে নিয়ে যাও যার কাছ থেকে তুমি এ আদর্শ শিখেছ""।

এই উদাহারণ থেকে আপনি কি বুঝতে পারলেন,পৃথিবীতে এমন কোন মহান ব্যক্তি নেই, যে বিধর্মীদের ধর্ম পালন করতে দিত না। সামনে হিন্দুদের ধর্মোৎসব, তাদের ধর্মোৎসবে যাতে মুসলিমদের দ্বারা কোন আঘাত না হয় সে দিকে লক্ষ রাখা ও মুসলমানদের জন্য একটা 'জিহাদ'।

যদি কোন বিধর্মী আশ্রয় প্রার্থনা করে তাহলে তাকে আশ্রয় দেওয়া এবং নিরাপদ স্হানে তাকে পৌঁছে দেওয়া ও মুসলমানের কর্তব্য (প্রমাণ স্বরূপ সুরা তওবার ৬নং আয়াত দেখে নিতে পারেন)।

আসলে আমাদের কাছে কোন মানবতা ই নেই। যদি মানবতা থাকত তাহলে আমরা একে অপরের ধর্মে আঘাত করতাম না।
একটা সুন্দর উদাহারণ দিলে বুঝতে পারবেন
"একদিন নবী(সঃ) এবং কিছু সাহাবী রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন পথিমধ্যে একটা অমুসলিম নারীর লাশ দেখে নবী সঃ থমকে দাড়ালেন, সাহাবীরা বলে উঠলো হে আল্লাহর নবী ঐটা একজন অমুসলিমের লাশ, কেনো দাড়ালেন? চলেন..। নবীজি জবাবে বললো হে আমার সাহাবী লাশ যার হোক না কেন আমি মানবতার খাতিরে দাড়াইছি ধর্মীয় খাতিরে নয়"।

কার ধর্ম কি সেটা আমাদের কাছে মুখ্য বিষয় হতে পারবে না, আমাদের মধ্যে থাকতে হবে অসাম্প্রদায়িকতা।

তাই তো নজরুল বলেছিলেন " মোরা একই বৃন্তের দুইটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান"।
১১টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×