বাবার অসম্ভব চাপের মুখে এক গাদা পড়া মুখস্হ করে ফেললাম।প্রস্তুতি হল প্রথম শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষার জন্য।শহরের নামি দামি স্কুলে ভর্তির জন্য কি পরিমান ঘাম, বাবা মায়ের ঝরে তা শহরে থাকা প্রতিটি মানুষের ভালো বোঝার কথা।তার উপর সেই স্কুল যদি হয় গভ: ল্যাবরেটরি হাই স্কুল তবে তার বর্ণনা আর দেয়ার প্রয়োজন হয় বলে মনে করছি না।
অত:পর লাল রংয়ের একটি সুয়েটার পরে ভীত চোখে হাজার ছাত্রের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেললাম।মোটা কাঁচের চশমা পরা একজন টেনে নিয়ে প্রথম টেবিলটিতেই বসালেন।
আবিষ্কার করলাম আমার ঠিক পিছনে চাইনিজ দের মত দেখতে একটি ছেলে বিরস বদনে বসে আছে।একটু পর প্রশ্ন চলে আসল।আমি প্রশ্ন দেখে কনফিডেন্ট লেবেল ২০০ এর কাছাকাছি নিয়ে গেলাম।আর তখনই খেয়াল হলো আমার পিছনের সেই চাইনিজ ছোঁকড়া কাঁদছে।বাবার হাজার বারণ মুহূর্তে ভুলে গিয়ে তার প্রতি জীবনের সব মনজোগ দিয়ে দিলাম।
আবিষ্কার করলাম সে কিছুই পারে না।মর্মাহত হয়ে বললাম ,আমি সব পারি এবং পিছন ফিরে তাকে এক এক করে সব বলে দিতে লাগলাম।১ঘন্টা ৪৫ মিনিট পর ছেলেটির সব লেখা শেষ হয়ে গেলো।আর তখনই আমার জ্বাগতিক হুশ ফিরে আসল।নিজ খাতায় লেখা হয়েছে মাত্র ১২ লাইন।সময় আছে ১৫ মিনিট । বুঝতে পারলাম অধিক মস্তিষ্ক চাঁপে প্রকৃতি ও নীচের দিকে চাঁপ দিচ্ছে।
এদিকে চাইনিজ ছোঁকরা টা-ও চুক চুক করে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।এবার হয়তো কাদাঁর পালা ছিলো আমার।পরোপকার ই কি ছিলো আমার দ্বিতীয় ভূল???
অবশিষ্ট: সৃষ্টিকর্তা প্রসন্ন হয়ে-ই হয়তো সেই বছর আমাদের স্কুলটিতে প্রথম বারের মত প্রভাতি শাখা খোলার ব্যবস্হা করেছিলেন এবং ৮০০০ ছাত্রের মধ্যে ১২০ জনের ছোট তালিকায় আমার নাম খুঁজে পেয়েছিলেন বাবা। ভর্তির পর দিবা শাখায় আবিষ্কার করলাম সেই চাইনিজ ছেলেটিকে।হতভাগ্য(!!??) ছেলেটি-ই হল আমার সব চেয়ে ভাল বন্ধু।যে আজ ন্যাশনাল ব্যাংকে(মহাখালি) চাকরিরত।এবং তার সকল কলিগদের কাছে আমার এই ভুল খুব রসিয়ে বলে বেড়ায়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ১০:৪২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




