সকাল ৭ টা বেজে ১৩ মিনিট।
আমি ঘুম থেকে উঠলাম।মোবাইলে কু কু রুক্কু নামক মুরগীর রিংটোন শুনে আমার জেগে উঠা।এতদিন পড় এতো সকালে ঘুম থেকে উঠে একটু কেমন যেন লাগতেছে।নিজের রুমটাকে অচেনা মনে হচ্ছে।মনে হচ্ছে কোন হাসপাতালের আইসিইউতে বসে আছি।যদিও আইসিইউ তে কেউ বসে থাকেনা।তখনই মনে হল না ঠিক জায়গাতেই আছি।
কানে হেড ফোন লাগিয়ে গান শুনতেছি যাতে না ঘুমিয়ে পড়ি।কিন্তু মোবাইলে গান ছাড়তেই বেজে উঠলো .......
"গভির হয়েছে রাত...."
আশেপাশে তাকিয়ে একটু চেতন ফিরে পেতেই যাত্রা শুরু করলাম টিকাটুলির উদ্দ্যেশে।রাস্তায় শুধু বৃষ্টির ঝিরি ঝিরি পানি ছাড়া আর কিছুই নেই।একটা রিকশা পেলাম।
-মামা টিকাটুলি যাবেন?
কোন কথা না বলেই চলে গেল।হয়তো বলতো আমি জীবনে টিকাটুলি যাইনাই।আর এই নাম আপনার কাছ থেকে এই প্রথম শুনছি।
আসি আসি করে আর কেউ আসেনা।বেলা বোস তো কবেই গেলো।এখন বেলা বোসের যানবাহন গুলিও নেই।
কিন্তু দূর থেকে একটা সিএনজি দেখা হল।কাছে আসতেই সে বলল যাবে।কিন্তু ভাড়া ২৫০ টাকা।
-কেরে ২৫০ দিতাম কেরে?
-দেখছুইন কি মেঘ।দিতাইন না কেরে?
-মেঘ তো কি হইছে।তোমার এইটা কি ঘোড়ার গাড়ি নাকি?
অবশেষে সিএনজি বাদ।যেই লোক ব্যবহার খারাপ করে তার সাথে মেশা ঠিক না।আমি খারাপ হতে পারি,হতে পারে সেও।তাই সেও বেচে গেল আমিও গেলাম।
অতঃপর বাসে চড়িয়া ভ্রমণ শুরু হল।মাথা একদম ভেজা।বাস থেকে নেমে দোকানে গেলাম টিস্যু কিনতে।কিন্তু প্রথমেই জিগাইলাম গামছা আছে নাকি?
গামছা দিয়ে মাথা মুছার যে মজা সেটা "ইয়াং চুন" ব্র্যান্ডের টিস্যু দিয়েও হবেনা।
টিকাটুলি পৌছতেই আমাকে হাঁটু পানির এক রাস্তা স্বাগত জানাল।হাতে জুতা নিলাম,মোজা পকেটে ডুকালাম।এনিওয়ে মোজা কিন্তু জুতাতেই রাখতে পারতাম।
আগের গ্রামের মানুষের নদী পারাপারের কথা মনে পরে গেল।লুঙ্গি আর শার্ট খুলে এক হাতে সেগুলি (হাত উপরে থাকবে) নিয়ে সাঁতরে এই পার থেকে ঐ পারে চলে যেতো।শরীরের কোন কাপর চোপড়ে পানি লাগতনা।আহা কি দিন ছিল।আর এখন কি দুর্দিন না চলছে।
বিকেলে ময়নারটেক নামক এক গ্রাম পরিদর্শনে যাবো।সেই গ্রামে নাকি কচু পাতার উপর পানি জমে,টিয়া দোয়েল পাখীরাও বৃষ্টি উপভোগ করে।তবে আমি কেন বসে থাকবো?
তবে টাকা নিবো না সাথে।টাকা ভিজে যেতে পারে।
যাত্রা শুভ হোক।
সবাই বৃষ্টিকে গালি না দিয়ে বৃষ্টি উপভোগ করুন।এই বৃষ্টির সময়টাই হতে পারে আপনার জীবনের শেষ বৃষ্টির সময়।
ভাল থাকুন পবিত্র থাকুন
মোটকথা আনন্দে থাকুন।