৭১ এ আব্বার বয়স কম ছিল।ভারতের ট্রেনিং ক্যাম্পে যাওয়ার পরও তাকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়।হ্যাঁ তিনি তাহলে আর মুক্তিযোদ্ধা নন।অন্তরে মুক্তিযুদ্ধ থাকলেও তিনি কাগজে কলমে আর মুক্তিযোদ্ধা নন।দিনের পর দিন স্বাধীনতার চেতনা লালন করেও তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন।কারণ তার হাতে মুক্তিযুদ্ধার সার্টিফিকেটে নেই।
এ ব্যক্তিগত কথা বলার কারণ ক্ষোভ ও কষ্ট থেকে।তবে কি আমার বাবার মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট থাকলে আজ আমি চুপ থাকতাম? আমি কোটায় ঢুকে গেলে আমি চুপ থেকে যেতাম? আমি আজ বাড়তি সুবিধা পাচ্ছিনা বলে কি গলা বাড়াচ্ছি?
না আমি গলা বাড়াচ্ছি এই বৈষম্য দূরীকরণে।দিনের পর দিন কোটা প্রথা নামক সে জঞ্জাল আমাদের আঁকড়ে ধরেছে তা থেকে মুক্ত হতে আমি আওয়াজ তুলেছি।মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সন্তান।তাদের যোগ্য সম্মান আমরা নানা ভাবে দিতে পারি।কিন্তু এই কোটা সিস্টেমের কারনে অনেক লোভী মানুষ ভুয়া সার্টিফিকেট বানিয়ে নিজের ছেলেকে আজ বড় কর্মকর্তা বানিয়ে ফেলেছে।মফস্বলে রাস্তায় ভিক্ষা করবে আসল মুক্তিযুদ্ধা আর প্রথম শ্রেণীর নাগরিক হবে ভুয়া মুক্তিযুদ্ধা নামধারীরা।বাহ সোনার বাংলা....
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি কোন মুক্তিযুদ্ধা কোন লোভ,আশা আর তথাকথিত সার্টিফিকেটের আশায় যুদ্ধ করেনি।তারা যুদ্ধ করেছে দেশের জন্য।আরেকজনের সন্তানের চাকরী কেড়ে নিয়ে নিজের ছেলেকে সিংহাসনে বসাতে না।যদি তাই হয় তবে তার নামের পাশে মুক্তিযোদ্ধা মানায় না।পিএসসি দুর্নীতির জন্য প্রয়োজনে শতভাগ কোটা ঢুকাতেও রাজি আছে। আর রাজনৈতিক দল গুলি শো অফের জন্য কতো চেতনাই তো বিক্রি করে দিল।
দিনের পর দিন সাধারণ ছাত্রছাত্রী সব জায়গায় জিম্মি।মাঝে মাঝে উপলব্ধি হয় কেন প্রতিবন্ধী হলাম না।তবু তো একটু বাড়তি সুযোগ পেতাম।সবাই বাড়তি সুযোগের দিকেই হাত বাড়াতে চাই।পিএসসির একজন সদস্য বললেন মুক্তিযোদ্ধা,প্রতিবন্ধী,আদিবাসী; সর্বমোট মিলিয়ে ৪৫ ভাগ তাদের কোটা।আর মেধা কোটা হল ৫৫ ভাগ।হাস্যকর।ফুটবল খেলতে নামার আগে এক দলকে আগে থেকেই ৫-০ করে দিয়ে প্রতিপক্ষকে বলা হল তোমার ৬ টা গোল দাও তবেই তোমরা জিতবে।
কোটা প্রথা বাতিল করুন।মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরাও যেমন এ দেশের সন্তান আমরাও তেমনি এই দেশের সন্তান।আমাদের প্রতিটি রক্তবিন্দুতেই ৭১ অবস্থান করে।বাবা মুক্তিযুদ্ধে যায়নি বলে কিন্তু এই না যে তিনি রাজাকার।দিনের পর দিন এ ধরণের বৈষম্য চলতে দেয়া যায়না,মেনে নেয়া যায়না।এখনই সময় ঘর থেকে বের হওয়ার।
মেধার সঠিক মূল্যায়ন চাই
কোটা প্রথা বাতিল চাই
তানভীর মাহমুদুল হাসান