এখানে একজন মানুষ ঘুমিয়ে আছে
তাঁকে শান্তিতে ঘুমোতে দাও।
- একটি ইতালিয়ান সমাধিলিপি।
"এক সময় থেমে যাবে সমস্ত কোলাহল,
ঘুমিয়ে পড়বে ধরণী।
আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাটা মিটমিট করলে
বুঝবে আমি তোমায় ডাকছি।
সে-রাতে তুমি জেগে থেকো, বন্ধু, ঘুমিয়ে পড়ো না।
আর, হ্যাঁ, ফুলের গন্ধ পেলে,
বুঝে নিয়ো আমি আসছি।
আর যদি কোকিল ডাকে,
ভেব আমি আর বেশী দূরে নেই।
তারপর হঠাৎ ফুরফুরে বাতাস এসে তোমার গায়ে লুটিয়ে পড়লে,
বুঝবে আমি এসেছি।
সে রাতে তুমি জেগে থেকো, বন্ধু, ঘুমিয়ে পড়ো না।”
- বাংলাদেশী দুঃসাহসী এক যুবককে ইতালিয়ান এক বালিকার উপহার দেওয়া একটি গান।
১৯৮০ সনে প্রকাশিত বৃটিশ থ্রিলার সাহিত্যিক এ জে কুইন্যালের লেখা “ম্যান অন ফায়ার” উপন্যাসের কাঠামো থেকে ১৯৮৩ সনে একটি গল্প লিখেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেন সাহেবের অনুরোধ ও সহযোগিতায় হুমায়ূন আহমেদ সাহেব “অমানুষ” নামক থ্রিলার গল্পটি লিখেন। অমানুষ প্রথমে কাজী আনোয়ার হোসেন সাহেব সম্পাদিত রহস্য পত্রিকায় ধারাবাহিক থ্রিলার হিসেবে প্রথম প্রকাশিত হয়, পরবর্তীতে ধারাবাহিক লেখাটি একটি সম্পূর্ণ গল্প বই আকারে প্রকাশিত হয়। গল্পের মূল চরিত্র বাংলাদেশের একজন যুবক, যার নাম জামশেদ।
এছাড়া ১৯৮৫ সনে একই প্লটে আরোও একটি গল্প দুই পর্বে প্রকাশিত হয়। গল্পটি লিখেন - বাংলাদেশের জনপ্রিয় গল্প চরিত্র মাসুদ রানার স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন। অগ্নিপুরুষ -১ ও ২। মাসুদ রানা সিরিজের দুই পর্বে সমাপ্ত অগ্নিপুরুষ ১ ও ২ গল্পের মূল চরিত্র মাসুদ রানা। যারা গল্প উপন্যাস পড়তে পছন্দ করেন তারা নিঃসন্দেহে “অমানুষ ও অগ্নিপুরুষ দুইটি বই পড়তে পারেন।
আমি বই পড়তে ও ছবি দেখতে পছন্দ করি, অবসরে বই পড়ি ছবি দেখি। এ জে কুইন্যালের লেখা ম্যান অন ফায়ার গল্পের প্লটে তৈরি তিনটি সিনেমা যথাক্রমে “ম্যান অন ফায়ার ১৯৮৭, ম্যান অন ফায়ার ২০০৪” আমি দেখেছি এবং অমিতাভ বচ্চনের অভিনীত ভারতের তৈরি “এক আজনবী” ও দেখেছি। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে হুমায়ূন আহমেদের গল্প অমানুষ বা কাজী আনোয়ার হোসেনের লেখা অগ্নিপুরুষ গল্পের ধারে কাছে এই তিনটি সিনেমার একটিও পৌছাতে পারেনি।
পৃথিবীতে বিনিময় ছাড়া কিছুই নেই। ভালোবাসারও বিনিময় আছে। ভালোবাসার বিনিময় ভালোবাসা। ভালোবাসার ঋণ শোধ করতে হয় ভালোবাসা দিয়েই। গল্প অমানুষ ও অগ্নিপুরুষে বাংলাদেশের সন্তান জামশেদ ও মাসুদ রানা ভালোবাসার বিনিময়ে ভালোবাসা দিয়েই ঋণ শোধ করেন। দীর্ঘদিন অথবা আমার ধারনা হয়তোবা আজীবন মনে রাখার মতোই গল্প অমানুষ ও অগ্নিপুরুষ।
শেষ কথা: ব্যক্তিগতভাবে আমি কাজী আনোয়ার হোসেন সাহেব ও হুমায়ূন আহমেদ সাহেবের কাছে চিরঋণী ও চিরকৃতজ্ঞ। সেই গল্প অন্য একদিন হবে কখনো। আসছে বই মেলা ভিত্তি করে অনেকেই অনেক বই পড়ার আগ্রহ করতে পারেন বই পড়তে পারেন। নতুন নতুন লেখা বই পড়ুন। তবে পুরাতন গল্প হুমায়ূন আহমেদের লেখা অমানুষ ও কাজী আনোয়ার হোসেনের লেখা অগ্নিপুরুষ পড়ে দেখতে পারেন। একটি লেখা একটি গল্প একটি বই কতোটা শক্তিশালী হতে পারে আশা করি বই দুইটি পড়ে নিজেই অনুধাবন করতে পারবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: সামহোয়্যারইন ব্লগ। নির্বাচিত পোষ্টে “উক্ত লেখাটি” স্থান দেওয়াতে সামহোয়্যারইন ব্লগ কর্তৃপক্ষকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৪৮