somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত শাহজাদপুর কাচারি বাড়ির ফটোব্লগ। সামনে আসছে বিশাল মেলা। আপনি আমন্ত্রিত। আসছেন তো??

০৪ ঠা মে, ২০১২ দুপুর ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসছে পঁচিশে বৈশাখ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে কবির স্মৃতি বিজড়িত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে থাকে উৎসবমুখর পরিবেশ। জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শাহজাদপুরে ২৫ বৈশাখ থেকে তিনদিনব্যাপী নাটক, গীতিআলেখ্য, সঙ্গীতানুষ্ঠান, আবৃত্তি, আলোচনা, প্রবন্ধ পাঠ ও বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অঢেল মানুষ এই মেলায় অংশ নেয়। আপনিও আমন্ত্রিত। আমি নিশ্চিত আপনার ভ্রমনের ক্কস্ট বৃথা যাবেনা। শাহজাদপুরে কবি সৃষ্টি করেছেন দুর্লভ কিছু সাহিত্য। পোস্ট মাস্টার গল্পের 'রতন' চরিত্র তার শাহজাদপুরে বসেই লেখা। এখানে বসেই তিনি লিখেছেন সোনারতরী, বৈষ্ণব কবিতা, দুইপাখি, আকাশের চাঁদ, পুরস্কার, হৃদয়, যমুনা, ভরাভাদুরে, প্রত্যাখ্যান ও লজ্জা, পোস্ট মাস্টারের মতো অসংখ্য বিখ্যাত রচনা। চিত্রা, শীতে ও বসন্তে, নগর সঙ্গীতে এবং চৈত্রালীর ২৮টি কবিতা, ছিন্ন পত্রাবলীর ৩৮টি, পঞ্চভূতের অংশবিশেষ এবং বিসর্জনের মতো অমর নাটক তিনি শাহজাদপুরে বসেই রচনা করেছেন।

আসুন আমরা কবিগুরুর কাচারিবাড়ির কিছু ছবি দেখি এবং সেইসাথে এর ইতিহাস জানার চেস্টা করি-

এটি কাচারি বাড়ির প্রবেশপথ। এখানে টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হয়। টিকিটের দাম মাত্র ৫-১০ টাকার মধ্যে।


কাচারিবাড়ির মূল বিল্ডিং। ১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারি নিলামে উঠলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দারকানাথ ঠাকুর ১৩ টাকা ১০ আনায় এ জমিদারি কিনে নেন। জমিদারির সঙ্গে এখানকার কাচারি বাড়িও ঠাকুর পরিবারের হস্তগত হয়। এর আগে কাচারি বাড়ির মালিক ছিল নীলকর সাহেবরা।


মূল বিল্ডিং-এর প্রবেশ পথ। এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে কাচারিবাড়ির ইতিহাস দেখতে পাবেন। ১৮৯০-১৮৯৬ পর্যন্ত কবি কয়েকবার জমিদারি দেখাশোনার জন্য শাহজাদপুরে এসেছেন। ১৮৯০ সালে প্রথম কবিগুরু শাহজাদপুরে আসেন জমিদারি দেখাশোনা করতে। তখনো সিরাজগঞ্জ-ঈশ্বরদী রেলপথ স্থাপিত হয়নি। তিনি আসতেন কোলকাতা থেকে ট্রেনে সাড়াঘাট অর্থাৎ পাকশী স্টেশনে। সেখান থেকে শাহজাদপুর আসতেন তার বোট 'পদ্মা' কিংবা 'চিত্রায়' চড়ে। অবশ্য ঈশ্বরদী-সিরাজগঞ্জ রেলপথ স্থাপনের পর উল্লাপাড়া স্টেশন থেকে পালকিতে চড়ে যাতায়াত করতেন। তার সেই পালকিটি এখনো এখানে সংরক্ষিত আছে। আপনারা আসলে দেখতে পাবেন।




কাচারিবাড়ির মূল বিল্ডিঙ্গে প্রবেশ করার পর দেখতে পাবেন- কবগুরুর একদম শিশুকাল থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন দুর্লভ ছবি। এছাড়া আরও পাবেন আলবার্ট আইনস্টাইন, মহাত্মাগান্ধী সহ বিভিন্ন গুনী ব্যক্তিত্তের সাথে তোলা তার কিছু দুর্লভ ছবি।



তার নিজের হাতে লেখা অনেক চিঠি/কবিতার খসড়া তো থাকছেই-


আরও দেখতে পাবেন কবিগুরুর নিজের হাতে আঁকা দুর্লভ অনেক ছবি-




দোতলায় উঠলে দেখতে পাবেন কবিগুরুর ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র। এর মধ্যে থাকছে কবিগুরুর ব্যবহৃত সোফা-



কবিগুরুর শোবার জন্য ব্যবহৃত খাট-



কবিগুরুর খাবার জন্য ব্যবহৃত থালাবাসন-



কবিগুরুর ব্যবহৃত অন্যান্য জিনিসপত্র-







কাচারিবাড়ির বারান্দা-



কাচারিবাড়ির পাশে অবস্থিত নীলকুঠিবাড়ি-



কাচারিবাড়ির পাশে অবস্থিত অডিটোরিয়াম। এখানেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়-



কাচারিবাড়ির মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য-





আমি কাচারিবাড়ির অসংখ্য নিদর্শনের অতি সামান্য কিছু আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপনারা আসলে এর চাইতে অনেক বেশিকিছু দেখতে পারবেন। ঢাকা থেকে বাসে করে কাচারিবাড়িতে পৌছতে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা লাগতে পারে। যাতায়াত ব্যবস্থা অত্যন্ত ভাল। কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। আপনারা সবাই আমন্ত্রিত।

তথ্যসূত্র-

(ছবিগুলো আমার নিজের সংগ্রহ করা।)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১২ দুপুর ১:২৩
১৭টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×