আপডেট - ক ( ব্যক্তিগত কাঁদুনি ) ( ১১ মে, ২০১২ রাত ৮:১৪ মি. )
যদি কেউ বিরক্ত বোধ করেন, আমি বিনয়ের সঙ্গে তাঁকে এই অংশটি উপেক্ষা করতে বলব। অনেকেই ব্লগে আমার দীর্ঘ অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি,
১. বুধবার অসহ্য হয়ে অফিস থেকেই দাঁতের ডাক্তারের কাছে চলে যাই। স্কুল জীবনের পর, মধ্য তিরিশে এসে দাঁত তুলে ফেলায় রক্তক্ষরণ কিঞ্চিৎ বেশী হচ্ছিল। ডাক্তার সাহেব ভয় দেখান গলায় বললেন, আমার যা অবস্থা তাতে দুই দিন পূর্ণ বিশ্রাম নিতেই হবে। অফিস থেকে দুই দিনের ছুটি নিয়ে বাসায় চলে আসি।
২. দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার কিছুটা ভাল বোধ করায়, ব্যক্তিগত কাজে সন্ধ্যায় বের হই। সেই দিনই কিছু সময় পরে ছেলেগুলো আমাকে এলোপাথারি মারধর করে। বয়সের হিসেবে নিদেনপক্ষে ছেলেগুলো আমার থেকে বছর দশেকের ছোট হবে হয়ত। উত্তেজনার বশে তখন ও পরবর্তী কয়েক ঘন্টা টের পাইনি, কিন্তু সকালেই বুঝতে পারি, শরীর বেঁকে বসছে। এমনিতেই অসুস্থ ছিলাম, তার ওপর চোয়াল, ঘাড়, কান ও পিঠে বেশ কিছু ঘুষির আঘাত হজম করতে হয়েছে। কানের পেছনটা ফুলে এখনও টনটন করছে, পিঠে ও কোমরের ওপরের অংশে থেকে থেকে ব্যথা বোধ হচ্ছে। ভাগ্যিস কোন fracture হয়নি, বা কোথাও ফেটে যায়নি। এসব নিয়ে ব্লগিং করাটা আমার জন্য কিছুটা কষ্টকরই। এই কথাগুলো বলবার কোন ইচ্ছে ছিলনা, তবু বলছি কারণ কেউ কেউ আমার অনুপস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছিলেন, কেউ বা সন্দিহান। স্বাভাবিক। তাঁদেরকে বিনীতভাবে জানাচ্ছি .. আমি ছিলাম, আমি আছি, আমি থাকব।
আপডেট - খ ( বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ) ( ১২ মে ২০১২, রাত ০০:০৯ মি. )
সাধারণ ব্লগারদের প্রতিবাদকে সঠিক পথে ধাবিত করতে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ ..
১. এই পোস্টটি যেন কোন পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈরথ-এ পরিণত না হয়। কখনই, কোনভাবেই যেন না হয় .. যাদের এই পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে দ্বিমত আছে, করজোড়ে বলছি .. এই প্রসঙ্গটি এই পোস্টে দয়া করে এড়িয়ে যান, আমরা একটি বৃহত্তর বিষয়ে একতাবদ্ধ হতে চাই।
২. ইউ ল্যাব, অক্সফোর্ড, হার্ভাড .. বা জাবি, ঢাবি কোন দেশী বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানই আমার পোস্টের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য বা বিধেয় নয়। ঐ ছাত্রনামধারী জানোয়ারগুলো ইউ ল্যাবের হলেও ঐ পবিত্র প্রতিষ্ঠানটির ওপর আমার কোন আক্রোশ নেই, আর তারা তা না হলেও ইউ ল্যাবকে আমি একই শ্রদ্ধার চোখে দেখব, যেমন এখন, এই মূহুর্তে দেখছি। তবে ইউ ল্যাবের অথবা তাঁদের পক্ষাবলম্বন করে অনেকের কর্মকান্ড দেখে ঐ পুরনো প্রবাদটি মনে পড়ছে -- "ঠাকুর ঘরে কে রে ?" "আমি কলা খাই না।"
৩. দয়া করে কেউ এতে কোন রাজনৈতিক রং চড়াবেন না। এমনকি পশুগুলো যদি কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়, তবুও না। কেননা আমাদের কাছে, সাধারণ ব্লগারদের কাছে, সাধারণ নাগরিকদের কাছে ওরা শুধুই ইতর ইভ টীজার, নারী উত্যক্তকারী ; আমার-আপনার মা-বোন-প্রিয়জনের সম্মানে হাত দেবার স্পর্ধা দেখানো অসভ্য অপরাধী !! ওরা না আওয়ামী লীগ, না বি এন পি, না জাতীয় পার্টি, না শিবির। ওরা শুধুই নরকের কীট !!!
আপডেট - গ ( কাজের কথা : কর্মপন্থা ) ( ১২ মে, ২০১২ দপুর ১:৫৫ মি. )
সরাসরি প্রসঙ্গে চলে যেয়ে বলছি, আমার কাছে সম্মানিত সহব্লগারদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব আর আলোচনার মাঝে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলোই বাস্তবতার নিরীক্ষে বেশী কার্যকরী মনে হচ্ছে ..
১. বসতে হবে একসাথে : এ ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণে আগ্রহী সম্মানিত ব্লগারদের/অথবা আগ্রহী যেকোন ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গদের দ্রুতই একত্রে বসতে হবে। এক্ষেত্রে যাঁরা অংশগ্রহণ করতে চান, দয়া করে তাঁদের 'মেইল আইডি' অথবা কন্ট্যাক্ট নম্বর মন্তব্যের ঘরে উল্লেখ করুন। এখানে আমি তথ্যগুলো আপডেট করব।
২. কেন বসব ? : কারণ সকলের আলোচনা ও সম্মতিতে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া ও সেটা সম্ভবপর হলে তা বাস্তবায়নের জন্য সমন্বয়ের কার্যকরী পদ্ধতি নির্ধারণ করা।
৩. প্রথম কাজ : আমার পোস্টের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, অপরাধীদের সনাক্ত করতে সকলের সাহায্য চাওয়া। সনাক্ত করা সম্ভব হলে তাদেরকে শাস্তির/জবাবদিহিতার আওতায় আনা, বিভিন্নভাবেই সম্ভব হতে পারে। কিন্তু এই মূল জায়গাটিতেই আমরা সবচেয়ে বেশী পিছিয়ে আছি।
৪. সনাক্তকরণ কিভাবে সম্ভব ? : সম্মানিত ব্লগার অিপ্রয় সত্য, অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে এবং আরো কেউ হয়তো সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে বর্বরগুলোকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন পজিটিভ আউটপুট পাওয়া যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে অনেকের প্রস্তাব মতে, ব্লগররা একত্রিত হয়ে দলবদ্ধভাবে অনুসন্ধান চালানোর পথটি খুব কার্যকরী বলে মনে হয়। তবে এক্ষেত্রে সমস্যা দু'টি :
(i) এতে করে অপরাধী ও তাদেরকে সহয়তাকারী দোসররা আগে থেকেই সতর্ক হয়ে গা ঢাকা দিতে পারে। তবে অিপ্রয় সত্য তাঁর পোস্টে যে 'পুরি-পেঁয়াজু' -এর দোকানদারের কথা বলছিলেন, এবং যে বর্ণনা দিলেন (মাঝখানে সিঁথি, নেশখোরদের মত চেহারা), তার চেহারাটা আমি স্পষ্টই মনে করতে পারি। পরিস্থিতির শেষ দিকে সে-ই বেশী হম্বি-তম্বি করছিল, আমাকে হুমকিও দিচ্ছিল। ওর কারণেই পরিস্থিতির মোড় অনেকটা ঘুরে যায়। আমি নিশ্চিত, ওর পর্যন্ত পৌঁছতে পারলেই বাকি বদমাসগুলোর খোঁজ বের করা যাবে।
(ii) দ্বিতীয়ত, দলবদ্ধভাবে অনুসন্ধান করতে গেলে ইউ ল্যাবের শিক্ষার্থীরা
(অথবা তাদের নাম ভাঙিয়ে অপরাধের প্রশ্রয়দাতারা), আক্রমণ চালিয়ে বসতে পারে। এক্ষেত্রে অপরাধীর দোসররা ইউ ল্যাবের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের উস্কে দিয়ে পরস্থিতি ঘোলাটে করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালাবে। কয়েকজন তথাকথিত ব্লগার ইউ ল্যাবিয়ানদের পক্ষ নেবার ছুতোয় ফেসবুক ও ব্লগে এই প্রক্রিয়া অলরেডী শুরু করেছে। যদিও আমি আমার পোস্টের কোথাও, ইউ ল্যাব ইউভার্সিটিকে বা এর কর্তৃপক্ষকে অথবা এর সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীকে কখনই দায়ী করিনি, তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগও করিনি। শুধু দু'টি তথ্য শেয়ার করেছি -- (ক) তারা নিজেদের ইউ ল্যাবের স্টুডেন্ট বলে পরিচয় দেয় এবং (খ) ঐ ইউনিভার্সিটির সামনে আমাকে টেনে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে, ও তার সামনে যাবার পরপরই তাদের হম্বি-তম্বি, গলার সুর পরিবর্তিত হয়ে যায়। এতে করে আপাত দৃষ্টিতে যদিও মনে হতে পারে যে, তারা ইউ ল্যাবেরই ছাত্র, তবে এটা কোন সুনিশ্চিত প্রমাণ নয়। তারা ইউ ল্যাবের ছাত্র হলেও কিছু এসে যায় না, না হলেও তেমনি। ইউ ল্যাব একটি পবিত্র বিদ্যাপীঠ, একে আমি এখনও যে শ্রদ্ধার চোখে দেখছি, জানোয়ারগুলো তাদের ছাত্র হলে বা না হলেও একইভাবে দেখব। অিপ্রয় সত্য ভাইও বলেছেন যে, পশুটা নিজেকে ইউ ল্যাবের ছাত্র বলেই পরিচয় দিয়েছে। এব্যাপারে ভুল বোঝা-বুঝির কোন অবকাশ দেখি না।
৫. আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা : পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাওয়ার ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ। তবে পুলিশের ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা খুবই তিক্ত। সেক্ষেত্রে, নাহিয়ান বিন হোসেন ভাইয়ের পরামর্শটি আমার খুবই উপযুক্ত মনে হয়েছে -- র্যাবের কাছে সরাসরি অভিযোগ জানানো। ব্যক্তিগত সূত্রে যতটুকু জানতে পেরেছি, র্যাব এরকম ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপই নেয়। তবে তাদেরকে হয়তো অপরাধীদের সনাক্ত করে দিতে হবে।
৬. মিডিয়া কাভারেজ : সুপরিচিত ব্লগার পারভেজ আলম এ ব্যাপারে যা বলেছেন সেটার সাথে আমি একমত। প্রচলিত অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি আসলে আরও বেশী সমর্থন পাওয়া যেতে পারে, এবং এতে করে পরিস্থিতি মোকাবেলা সহজতর হতে পারে। কিন্তু ব্লগের কোন সাংবাদিক ভাই কি অনুগ্রহ করে এগিয়ে আসবেন ? অথবা, যথাযথ যোগাযোগ আছে এমন কেউ ?
৭. প্রশাসনিক সহায়তা : কেউ, কেউ কি আছেন ? ডাক দিয়ে যাই .. এগিয়ে আসুন, প্লীজ ( প্রয়োজনে পরিচয় গোপন রেখে যোগাযোগ করুন ) ? জনতার এই দুঃসময়ে .. আসবেন কি আপনারা ?
৮. ইউ ল্যাব কর্তৃপক্ষের সহায়তা : যেহেতু ঘটনাটির সূত্রে ইউ ল্যাবের ছাত্রদের নাম এসেছে .. সত্যও হতে পারে, মিথ্যাও হতে পারে .. সেই বিষয়টিতে কার্যকরী ও যথাপোযুক্ত পদক্ষেপ নিয়ে একটি নিরপেক্ষ পক্ষপাতহীন তদন্ত করা -- তা যেন তথাকথিত ঐসব সরকারী "উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি"-র মত না হয়, যেগুলোর তদন্ত রিপোর্ট কোনদিনই আলোর মুখ দেখে না, বা যেগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন তদন্ত শুরুর আগেই লেখা হয়ে যায়। আর ইউ ল্যাব কর্তৃপক্ষকে কথা বলতে হবে (যদি তাঁরা বলতে চান) এই 'সামহোয়্যার ইন ব্লগে'-র সকল প্রতিবাদী ব্লগারের প্রতিনিধিদের সাথে, শুধু মাত্র ভিকটিম, বা সংশ্লিষ্ট ব্লগের ব্লগারের সঙ্গে নয়। যাতে করে ভীতি প্রদর্শন বা ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার সকল সম্ভাবনা নিশ্চিতভাবে নাকচ করা যায়। তদন্ত কমিটিতে ব্লগারদের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে। অনুগ্রহ করে উল্লেখিত বিষয়ে ইউ ল্যাব কর্তৃপক্ষের আন্তরিক ও সহানুভূতিশীল পদক্ষেপ আশা করছি।
৯. মানববন্ধন, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন, মিছিল : এই কর্মসূচীসমূহ সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রশাসনকে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে যথাক্রমে উৎসাহ যোগাবে ও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এই উদ্দেশ্যে কর্মসূচীগুলো পালন করা যায়। তবে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিতে নিকট অতীতে এজাতীয় কর্মসূচীর সরাসরি বা প্রত্যক্ষ ফলাফল কম।
১০. এবার আমি স্বয়ং : সকল ব্লগার ভাই, আপুদের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ, আপনারা যদি কোনভাবে প্রত্যক্ষ করেন যে, এই পুরো ঘটনাটি থেকে আমি ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবার চেষ্টা করছি, 'নেতা' হিসেবে আবির্ভূত হতে চাইছি, 'হিরো' হবার চেষ্টা করছি, 'হিট' ব্লগার হবার খায়েশ হচ্ছে, প্লীজ ... আমার পশ্চাৎ দেশে, প্রকাশ্যে, উন্মুক্ত দিবালোকে কষে কিছু লাথি দেবেন, আপুরা ছেঁড়া জুতো আনতে ভুলবেন না। আদর্শচ্যুত হবার পরিণতি যেন আমাদের সকলের মনে থাকে।
আমার 'মেইল আইডি' : sharbanasha[at]gmail.com
এবার বলুন, কবে বসতে চান ? আগামীকাল ?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১২ রাত ১২:৫২