বেশ কিছুদিন ধরে Neil Tyson, Richard Dawkins, Sam Harris, Lawrance Krauss এর কিছু বিতর্ক দেখছিলাম। তাদের লেকচারগুলো অনেকটা বিজ্ঞান কেন্দ্রিক আর বিজ্ঞান নিয়ে আমার কোন আপোষ নেই। সেটা তার নিজস্ব গুনে চলছে আর আধুনিক বিশ্বের অগ্রগতির পিছনে বিজ্ঞানের ভুমিকা অনেক বেশি । তবে বিজ্ঞানের মাধ্যমে যখন তারা নাস্তিকতাকে প্রমোট করে তখন আমার কাছে কেন জানি অযৌক্তিক মনে হয়। জানি নাস্তিক ভাইদের অবশই এর পিছনে কোন যুক্তি থাকবে। সেই আশায় কমেন্ট করেছিলাম তাদের বেশ কিছু ভিডিওতে। তবে আশানুরূপ কোন উত্তর পাইনি। Quora এখানে ভাল সাহায্য করেছে সেখানে অনেক জ্ঞানি লোক আছে তবে তাদের উত্তরে বেশ প্রখর কঠিন ইংরেজির প্রয়োগ দেখেছি। অখানে অনেক টার্মই আমার কাছে অচেনা ছিল। সেই সুযোগে অনেক নতুন টার্ম জানলেও সোজাসাপটা উত্তর আমি পেলাম না। আমি জানি হয়তো এখানেও ভিন্ন কিছু হবে না তবে জটিল টার্মে না গিয়ে এখানে সোজা সরল ভাষায় জানতে পারবো দেখে প্রশ্ন তুললাম।
কোন রকম ঈশ্বরের সংজ্ঞা
আমার কাছে ঈশ্বরের সংজ্ঞা হচ্ছে সে সব কিছু সৃষ্টি করেছে। যেহেতু সে সময় ও স্থান সৃষ্টি করেছে তাই সে এই দুইয়ের ঊর্ধ্বে। জগতের যা কিছু আছে সে নিয়ন্ত্রণ করছে। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎের যেকোন কিছুর জ্ঞান আছে তার কাছে। তার ক্ষমতাও অতুলনীয়। তবে উত্তরের সময় প্রয়োজনের স্বার্থে আপনি ইসলাম,খ্রিষ্ট, হিন্দু ধর্মের ঈশ্বরের কথা যোগ করতে পারেন , সমস্যা নাই।
ক । ঈশ্বর অনেক সময় এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে আসে যাতে নিরীহ মানুষ, শিশু মারা যায়, গরিব মানুষের ধনসম্পদ নষ্ট হয়। কিন্তু ঈশ্বর যেহেতু অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ সব জানে। এর পিছনে হয়তো ঈশ্বরের এমন কোন ইচ্ছা আছে, আরও মহৎ যেটা এই ঘতনার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু মানুষের যুক্তির সীমাবদ্ধতার কারনে আমরা সেটা বুঝতে পারছি না। যেমন ধরুন, ৬৪ মিলিয়ন বছর আগে যখন গ্রহাণু পৃথিবীর বুকে পড়েছিল তখন ঈশ্বর হয়ত পৃথিবীকে বসবাস উপযোগই করার জন্য বৃহৎ সরীসৃপদের ( যারা মানুষের অস্তিত্বকে টিকতে দিবে না এমন ক্ষমতা রাখে) নিধনের জন্য করেছিল। যেটা আমরা ক্ষুদ্র সময় ধরে অনুধাবন করছি বলে বুঝতে পারছি না, এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঈশ্বরের সুদূরপ্রসারি চিন্তার একটা সাময়িক অংশ নয়কি ?
খ । কোয়ান্টাম ফিজিক্স বিজ্ঞানীদেরও অজানা জগত। এই জগত সম্পর্কে ধারনা করতে পারা বা অনুমান করতে পারা অসম্ভব যেটা ক্লাসিক্যাল ফিজিক্সে করা সম্ভব। আর কোয়ান্টাম ফিজিক্স বিরাজ করে প্রতিটি ম্যাটারে। এটা কি ঈশ্বরের জগতের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার প্রমান নয়? যেটা বিজ্ঞানিরা ঈশ্বরের লীলা হিসেবে মেনে নিতে পারছে না সৃষ্টিতে উপস্তিত থাকার কারনে ( আর নাস্তিক বিজ্ঞানীদের একগুয়েপনার কারনে)।
গ । "বাস্তব" বা রিয়ালিটি কেন ঈশ্বরের প্রমান নয়? বাস্তব অস্তিত্বময়, তাহলে ঈশ্বর (যে বাস্তবকে সৃষ্টি করেছে) সে অস্তিত্বময় না ?
ঘ । অনেকে মিলিটেন্ট নাস্তিকরা আস্তিকদের দ্বিধান্বিত করে একটা ছোট্ট প্রশ্নের মাধ্যমে। তা হল "স্রষ্টা যদি সৃষ্টি করে থাকে তাহলে স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করলো?" ব্যাপারটা নিয়ে আমার কথা হচ্ছে, স্রষ্টা চাইলেই নিজের কপি বানাতে পারবে না। কারন সে সময় ও স্থানের ঊর্ধ্বে এক সত্ত্বা। যদি সে তার পর আরেক স্রষ্টা বানাতে চায় তাহলে তাকেও হতে হবে সময় ও স্থানের ঊর্ধ্বে। কিন্তু স্রষ্টা যদি তাকে বানাতে যায় তাকে অবশই একটা স্থানে বানাতে হবে বা সময়ে বানাতে হবে। কিন্তু সেটা তো সম্ভব না। কেননা সময় আর স্থানের বাইরে সৃষ্টি তো সম্ভব না। তার মানে স্রষ্টারও আরেক স্রষ্টা বানানো সম্ভব না। তাই স্রষ্টার স্রষ্টা বলতে কিছু নাই।
তাছাড়া আরেকটি কারন হতে পারে, স্রষ্টা যদি স্রষ্টা সৃষ্টি করে তাহলে নতুন স্রষ্টা আসলে "সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা" হল না। তার মানে সে আসলে স্রষ্টাই না। বিজ্ঞানিরা বিগব্যাঙ এর আগে কি হয়েছিল সেটাকে ইনভেলিড প্রশ্ন মনে করে স্রষ্টার স্রষ্টা বা স্রষ্টার আরেক স্রষ্টা বানানোও ইনভেলিড। এটার কি কোন জবাব আছে ?
এখানে আমি কোন দিক দিয়ে ভুল , কমেন্ট করুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৫৮