somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ও পুটির মা

২১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পুটির মা, আরে ও পুটির মা ! আরে গেলে কই...কি সর্বনাশ ,আরে লোকটা কি উড়ে গেল নাাকি....তাও বা কিভাবে সম্ভব , তার তো পাখনা গজায়নি ! তবে হলটা কি !

আরে পুটির মা....গেল কই । ওগো মনুর মা, পুটির মাকে দেখেছো নাকি ?

: পুটির মা আবার কে ? তোমার মাথা গেছে দেখছি..

: আচ্ছা ঠিক আছে,আমি দেখছি লোকটা গেল কোথায়....কিন্তু হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেল কেন তা তো বুঝলাম না..

আহা রাতেও ছিল,সকালেও ছিল...বলে গেলাম দুজনে আজ বিকেলে যাব নদীর ধারে ঘুরতে। কি সুন্দর কাশফুল ফুটেছে। হাজান মাঝিকে বলে রাখলাম নৌকাটা যেন ঠিক রাখে। নিজে নৌকা চালাবো। ওপারে সবুজ ঘাসে ঢাকা মাঠে খানিক বসে কাশ বনের দিকে পাশাপাশি হাটব....আকাবাকা পথে চলে যাব বহুদূর...আর পুটির মা গেল কোথায়...আরে ও পুটির মা...

: এই বাবু দেখেছিস নাকি পুটির মাকে ?

: পুটি মাছ ?

: দূর হ এখান থেকে...খাওয়া ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না,,হতচ্ছাড়া...

কিন্তু এক ঘন্টা হতে চলল-পুটির মা আসেনা ক্যান ? মানুষটা গেল কোথায় ? আমার উপর আবার রাগ করল নাতো ? তার তো আবার মাঝে মাঝে বিনা কারনে রাগ হয়। কিন্তু এমন কিছু করেছি বলে তো মনে হচ্ছে না...নাকি আমি নিজেই ভুলে গেলাম !! নাহ ...কিছুই তো ঘটেনি,তাহলে সে গেল কই ?

আরে ও পুটির মা গেলে কোথায় ?

: ও চাচা,পুটির মা কি এদিকে এসেছিল ?

: তুমি বাপু যত বড় হচ্ছ,তোমার তোমার পুলাপাইনের স্বভাবটা ততই বাড়ছে...এদিকে কোনো পুটির মা টা নেই...

: কিন্তু লোকটা গেল কোথায় ? নাকি আবার বাপের বাড়ি গেল ? কিন্তু সেখানে সে তো একা যায় না। আমাকেই দিয়ে আসতে হয়। আর ৭ দিনের কথা বলে ৩/৪দিন পরেই ফেরত আসে। সেবার সে যাবার পরের দিন ফোন করে বললাম,তা এতদিন হয়ে গেল ,তোমার তো ফেরার নাম নেই! সে বলল-মিনষে ঢং করো ? মাত্র ২ দিন হল আসলাম। লোকে কি বলবে এমন করলে ? আমি বললাম লোকের গুলি মারি, আমি কি লোকেদের বিয়ে করেছি নাকি ? সে বলল-তা বিয়ে করেছো বলেই তুমি পুলাপাইনের মত করবে ? আচ্ছা তুমি এক কাজ করো। তুমিই চলে এসো। মা আজ মজার মজার জিনিস রান্না করেছে। আমার আবার জিহবায় একটু সমস্যা আছে। নাহ,মানে সেরকম সমস্যা না,,, খাবারের কথা উচ্চারিত হলে সবার আগে আমার জিহবা শুনতে পায়...। সেদিন অফিস কামাই করলাম আর চলে গেলাম শ্বসুর বাড়ি। ধুমধাম খাবারের পর রাতেও থাকতে হল। পরের দিন বললাম-আচ্ছা আমি যে এখন তোমাকে রেখে বাড়িতে যাব,কিন্তু করবটা কি ? আর এত যে দারুন সব খাবার খেলাম-বাড়ি গিয়ে তো আমাকে যা তা খেতে হবে। শেষে বৌ বলল-বুঝছি..চলো যাই।

এই হলো সেই বৌ,কিন্তু মানুষটা হঠাৎ গেল কই ? হাজান মাঝির নৌকা তৈরী। বেশ দারুন নৌকা,,,কিন্তু সময় যে বয়ে যায়...লোকটা গেল কই ? ও পুটির মা,বলি গেলে কই ?...

দেখী আবার বাড়ি ঢুকে দেখী....ভাত তরকারী তো আমার জন্যে ঢেকে রেখেছে দেখছি...কিন্তু তাকে ছাড়া আমি কি খেয়েছি কখনও। তবে রাগ করল নাকি ? কিন্তু সে গেল কোথায় ? ঘরে নেই,বাইরে নেই...কেউ জানেনা তার খবর....

ঠিক আছে আমিও রাগ করলাম, খাব না ভাত। সারা বিকেল আমি একাই নৌকা চালাবো। রাতেও খাব না। ট্রাউজার পরে রেডী হয়ে নেই......তবে তার জন্যে যে চকলেটটা কিনে এনেছি এটাই আগে সবাড় করি তবেই হবে তার উচিৎ.....

না......ওইটা আমার চকলেট....খবরদার..ওটা আমার ,আমারটা আগে আমাকে দাও....

হায় আল্লাহ !!!!!.....তুমি এখানে.....!!! সে আমি দিচ্ছি কিন্তু তুমি ছিলে কোথায় ??

: ওই পর্দার আড়ালে ছিলাম ।

:কি জঘন্ন তুমি...তুমি ওই পর্দার আড়ালে ছিলে ? আমি যে এলাকা মাথায় তুলে তোমাকে খুজলাম...

: আমি জানি..

: তুমি জানো ? তাহলে চুপ ছিলে ক্যানো ?

: তুমি আমাকে পুটির মা বললে কেন ?

: ওহোহোহো......এই ব্যাপার !!!! হাহাহাহাহাহাহা..দেখো দেখি কি কান্ড.....আহা তাই তো...আমি ..ওহ একারনেই বাইরের লোকরা পুটির মাকে চিনতে পারল না..হাহাহাহা...

: হুহাহাহাহা রাখো..আগে খাবে চলো.....তোমার জন্যে শিং মাছের ঝোল রেধেছি....

: আহ এ জিনিসের উপর কোনো জিনিস নেই....

: তুমি একটা যেন কি..সেদিন লাউ আর কৈ মাছ খেয়ে বললে এটার উপর কোনো জিনিস নেই,আর আজ বলছো শিং মাছ..

: হাহাহা...কথা ঠিক, আসলে তোমার হাত ভাল..

: আর পা ?

: ওই দ্যাখো, কোথাকার পানি কোথায় নিয়ে গেল...তোমার রান্না ভাল,এবার হয়েছে ? আসলে তোমার রান্নায় আমার কিছু এসে যায় না, তুমিই আসলে ভাল,এজন্যে তোমার সবকিছু ভাল..

: হয়েছে,,হয়েছে,,, আজ কিন্তু অনেকক্ষন নৌকায় ঘুরব..

: তা তো হবার নয় পুটির মা।

: আবার পুটির মা....শরবতে লবন মিশিয়ে দেব বললাম...

: না না না...তার দরকার নেই, পুটির মা বাদ..

:পুটির মা বাদ মানে ?

: না না..মানে এই নামটা বাদ.....

: কি ? এই নামটা বাদ মানে ?

: মানে তুমি পুটির মা ডাকা পছন্দ করনা,তাই বললাম...

: হ, তরে কইছে,তুই বেশি জানোস...

:হাহাহাহাহা..পুলাপাইন তুমিও কম না..

: আচ্ছা তাড়াতাড়ি চলো,সময় নষ্ট হচ্ছে...আজ অনেকক্ষন ঘুরব...

:ওহ দু:খিত....জনাবা....তুমি অনেক সময় নষ্ট করেছো,আর মাগরিবের আযানের আগেই ফিরতে হবে...
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×