somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেমন হবে করোনা ভাইরাস পরবর্তী বিশ্ব?

২৪ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গোটা মানবজাতি আজ এক চরম সঙ্কটের মুখোমুখি। আমাদের প্রজন্মের সব থেকে বড় সঙ্কটও বলা যায় একে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সাধারণ জনগণ আর সরকার যেসব সিদ্ধান্ত নেবে, সেসব সিদ্ধান্তই সামনের বছরগুলোতে পৃথিবীর গতিপথ নির্ধারণ করে দেবে। শুধু স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই না; আমাদের অর্থনীতি, রাজনীতি আর সংস্কৃতির গতিপ্রকৃতিও নির্ধারিত হয়ে যাবে এতে। আমাদের খুব দ্রুত কাজে নামতে হবে। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে আমাদের কাজের ফলে আশু ভবিষ্যতে কী কী ঘটতে পারে। শুধুমাত্র উদ্ভূত সমস্যাকে মোকাবেলা করলেই হবে না, নিজেদের প্রশ্ন করতে হবে- বিপদ পার হয়ে যাবার পর আমরা কেমন পৃথিবীতে টিকে থাকব? বিপদ একসময় কেটে যাবেই, মানবজাতি টিকে যাবে, আমাদের বেশিরভাগই বেঁচে থাকব- কিন্তু বেঁচে থাকব ভিন্ন এক পৃথিবীর বাসিন্দা হয়ে।
অনেক স্বল্পমেয়াদী ব্যবস্থাই জীবনে পাকা আসন গেড়ে নেবে। জরুরী অবস্থার একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য বলা যায় এটাকে। সবকিছু জরুরী অবস্থায় খুব দ্রুত ঘটে যায়। স্বাভাবিক অবস্থায় যেসব সিদ্ধান্ত নিতে বছরের পর বছর লেগে যায় সেসব সিদ্ধান্ত ঘণ্টাখানেকের মাঝেই নিয়ে নেয়া হয়। অপরিণত আর বিপদজনক প্রযুক্তিও নিয়োগ করা হয়, কারণ সঙ্কটের সময় কিছু না করে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকাটা আরও বিপদজনক। গোটা দেশ পরিণত হয় বড় আকারের সামাজিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার গিনিপিগে। সবাই বাসা থেকে কাজ করলে কেমন হয়? নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে যোগাযোগ করলে কী ঘটবে? যদি স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ের বদলে পুরোদস্তুর অনলাইনে পড়াশোনা চালু করে ফেলা হয়, তাহলে? সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা শিক্ষা বোর্ড- কেউই কোনোদিন এই পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা মেনে নেবে না স্বাভাবিক অবস্থায়। কিন্তু এখন স্বাভাবিক অবস্থা আর নেই। এই বিপদকালে আমাদের দুটো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সামনে এসে দাঁড়াতে হয়েছে। প্রথমটা হছে- সামগ্রিকভাবে নজরদারি বনাম নাগরিকের ক্ষমতায়ন। দ্বিতীয়টি- জাতীয়ভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়া বনাম বৈশ্বিক সংহতি।

চামড়ার-নিচ পর্যন্ত নজরদারি
মহামারী ঠেকাতে হলে দেশবাসীকে নির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে চলতে হবে। এটা নিশ্চিত করার দুটো উপায় আছে। একটা হচ্ছে- হয় সরকার সাধারণ মানুষকে মনিটর করবে, যে-ই আইন ভাঙবে তাকেই শাস্তি পেতে হবে। মানবজাতির ইতিহাসে এই প্রথম, প্রযুক্তির কল্যাণে সবার উপর নজরদারি করাটা সম্ভব হয়েছে। পঞ্চাশ বছর আগেও কেজিবি ২৪০ মিলিয়ন সোভিয়েত নাগরিককে চব্বিশ ঘণ্টা চোখে চোখে রাখতে পারতো না। তাদের নির্ভর করতে হতো এজেন্ট আর অ্যানালিস্টদের উপর, আর প্রতিটি নাগরিকের পেছনে ফেউ লাগিয়ে দেয়াটা অসম্ভব ছিল তাদের পক্ষে। কিন্তু বর্তমানে সরকার চাইলেই গুপ্তচর নিয়োগ না করে সেন্সর আর শক্তিশালী অ্যালগরিদমের উপর নির্ভর করে তথ্য আদায় করতে পারে।
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে নামা যুদ্ধে অনেক সরকারই নতুন নতুন নজরদারির (সার্ভেইল্যান্স) হাতিয়ার ব্যবহার করছে। যার মধ্যে চীনের উদ্যোগ লক্ষ্যণীয়। তারা মানুষের স্মার্টফোন মনিটরিং করেছে, মিলিয়ন মিলিয়ন ফেস-রিকগনিশন ক্যামেরাকে কাজে লাগিয়েছে, তাদের বাধ্য করেছে শরীরের তাপমাত্রা আর শারীরিক অবস্থার হালনাগাদ তথ্য রিপোর্ট করতে। চীনা কর্তৃপক্ষ শুধু সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকেই চিহ্নিত করেনি, তারা সেসব ব্যক্তিদের চলাফেরাও ট্র্যাক করেছে, তাদের সাথে কারা কারা মিশেছে সেটাও খুঁজে বের করেছে। বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আক্রান্ত আশেপাশে রোগীর উপস্থিতি সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক করেছে।
এ ধরণের প্রযুক্তি কেবল পূর্ব এশিয়াতেই আছে তা নয়। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইজরাইল সিকিউরিটি এজেন্সিকে অনুমতি দিয়েছেন বিভিন্ন সার্ভেইল্যান্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে করোনা রোগী শনাক্ত করবার। এসব সার্ভেইল্যান্স প্রযুক্তি সাধারণত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়। ইজরায়েলের সংসদীয় সাবকমিটি প্রথমে এই অনুমোদনের বিরোধিতা করেছিল, নেতানিয়াহু সেসবে কর্ণপাত না করে সোজা ‘ইমার্জেন্সি ডিক্রি’ জারি করে অনুমতি দিয়ে দেন। আপনি হয়তো বলতে পারেন যে এসব তো পুরান গপ্পো। সাম্প্রতিক সময়ে দেশ-বিদেশে সরকার আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো তো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মানুষকে ট্র্যাক করে, মনিটর করে এমনকি চাইলে কৌশলে নিজেদের কাজেও ব্যবহার করে। তবে আমরা যদি সাবধান না হই, তাহলে এই করোনা মহামারী সার্ভেইল্যান্সের ইতিহাসে একটা বড় পদচিহ্ন রেখে যাবে। কারণ এতে গণহারে সার্ভেইল্যান্স প্রযুক্তির ব্যবহারকে দুধ-ভাত বানিয়ে ফেলা হবে, যেটা ঘটবে এমন অনেক দেশে যেখানে আগে এহেন নজরদারিকে প্রত্যাখ্যান জানানো হয়েছে। এছাড়াও আরেকটা ব্যাপার ঘটবে, সেটা হচ্ছে- যেখানে পূর্বে নজরদারি করা হতো ‘চামড়ার উপর’ সেখানে এখন নজরদারি করা হবে ‘চামড়ার নিচ’ পর্যন্ত। ব্যাখ্যা করে বললে- যখন আপনি স্মার্টফোনের স্ক্রিনে একটা লিঙ্কে টাচ করতেন, তখন সরকার জানতে চাইতো আপনি ঠিক কোন লিঙ্কে টাচ করছেন। এখন করোনার আগমনের পর থেকে সরকারের আগ্রহের জায়গাটা বদলে যাচ্ছে। তারা আপনার আঙ্গুলের তাপমাত্রা, চামড়ার নিচে রক্তচাপের মাত্রাও জানতে চাইবে।

জরুরী অবস্থার পুডিং
নজরদারি নিয়ে কথা বলতে গেলে আমরা যেসব সমস্যার মুখোমুখি হই তার একটা হচ্ছে আমরা কেউই জানি না ঠিক কীভাবে আমার উপর নজরদারি করা হচ্ছে, ভবিষ্যতেই বা এটি কী রূপ ধারণ করতে পারে। সার্ভেইল্যান্স প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে হু হু করে, দশ বছর আগেও যা সাইন্স ফিকশন মনে হতো তা এখন বাসি খবরে পরিণত হয়েছে। আচ্ছা, কল্পনা করুন তো- এক দেশের সরকার নির্দেশ দিয়েছে দেশের প্রতিটি নাগরিক হাতে একটা বায়োমেট্রিক ব্রেসলেট পরবে। ব্রেসলেটটা চব্বিশ ঘণ্টাই শরীরের তাপমাত্রা আর হার্ট-রেট মনিটর করবে। প্রাপ্ত সমস্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করবে সরকারি অ্যালগরিদম। আপনি বোঝার আগেই অ্যালগরিদম বুঝে ফেলবে আপনি অসুস্থ কি না। তারা এও জানবে আপনি কোথায় কোথায় ছিলেন, কার কার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করেছেন। ইনফেকশন ছড়ানো একদম কমিয়ে আনা সম্ভব হবে এতে, এমনকি পুরোদমে নির্মূল করাও অসম্ভব হবে না। কয়েকদিনের মাথায় মহামারী ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম হবে এই সিস্টেম। শুনতে খুব ভাল লাগছে, তাই না?
এর বিপজ্জনক দিকটা হচ্ছে, এতে ভয়ঙ্কর একটা সার্ভেইল্যান্স সিস্টেমকে বৈধতা দিয়ে দেয়া হবে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়- ধরুন আমি সিএনএন-এর লিঙ্কে ক্লিক না করে করলাম ফক্স নিউজে। এতে আপনি আমার রাজনৈতিক মতাদর্শ, এমনকি আমার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কেও একটা আবছা ধারণা পাবেন। কিন্তু আপনি যদি মনিটর করতে পারেন যে কোনো ভিডিও দেখার পর আমার শরীরের তাপমাত্রা কততে উন্নীত বা অবনীত হয়েছে, রক্তচাপ কত, হৃদস্পন্দন মিনিটে কতবার হচ্ছে- তাহলে বুঝে ফেলবেন আমি কী ঘটলে হাসি, কাঁদি অথবা কী ঘটলে রেগে যাই। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে- রাগ, আনন্দ, বিরক্তি, ভালোবাসা হচ্ছে জ্বর-কাশির মতোই শারীরিক ব্যাপার। যে প্রযুক্তি আমার কাশি চিহ্নিত করতে পারে সেটা আমার হাসিও বুঝতে পারবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আর সরকার যদি আমাদের বায়োমেট্রিক ডেটা নিয়ে কাজ শুরু করে; তাহলে আমরা নিজেদের সম্পর্কে যতটুকু জানি- তার চেয়ে অনেক বেশি ওরাই জানবে। তারা কেবল আমাদের আবেগ সম্পর্কে পূর্বানুমানই করতে পারবে তা না, বরং সেসবকে নিজেদের লাভে ব্যবহারও করবে। আমাদের কাছে যা চাইবে, তাই বিক্রি করতে পারবে; হোক সেটা কোনো পণ্য কিংবা জ্বলজ্যান্ত রাজনীতিবিদ। বায়োমেট্রিক মনিটরিং-এর সাথে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা’র ডেটা হ্যাকিং কৌশলকে তুলনা দিলে দ্বিতীয়টিকে মনে হবে প্রস্তর যুগের প্রযুক্তি। কল্পনা করুন- ২০৩০ সালের উত্তর কোরিয়া। যেখানে প্রত্যেক নাগরিককেই বায়োমেট্রিক ব্রেসলেট পরে থাকতে হয় সর্বদা। আপনি ধরুন এই মাত্র মহান নেতার একটা ভাষণ শুনেছেন, আর সাথে সাথে ব্রেসলেটটা আপনার শরীরে রাগের লক্ষণ চিহ্নিত করে ফেলল- তাহলেই সেরেছে! আপনার খবর আছে।
অবশ্য চাইলে আপনি জরুরী অবস্থায় বায়োমেট্রিক সার্ভেইল্যান্স সাময়িক ভাবে ব্যবহার করতে পারেন। দুর্যোগ কেটে গেলে স্যার্ভেইল্যান্সও বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু অনেক সময় দেখা গেছে, বহু সাময়িক ব্যবস্থাই স্থায়ী রূপ ধারণ করেছে। কারণ জরুরী অবস্থা জারি করার মতো বিপদ প্রতিনিয়ত উঁকি-ঝুঁকি দিয়ে যাচ্ছে চারপাশে। আমার মাতৃভূমি ইজরায়েলের কথাই বলা যায় উদাহরণ হিসেবে। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময় জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছিল এদেশে। সেই সময় সাময়িক ভাবে প্রেসের উপর সেন্সরশিপ আরোপ করা হয়েছিল, বিশেষ আদেশের মাধ্যমে ভূমি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল পুডিং বানানোর উদ্দেশ্যে (মজা করছি না কিন্তু)। স্বাধীনতা যুদ্ধ খতম হয়েছে বহু আগেই, কিন্তু ইজরায়েল জরুরী অবস্থা কোনোদিনই তুলে নেয়নি, ১৯৪৮ সালে প্রণোয়ন করা অনেক অস্থায়ী ব্যবস্থাই বাতিল ঘোষণা করেনি (অবশ্য দয়া করে ২০১১ সালে পুডিং-সংক্রান্ত আদেশ তুলে নেয়া হয়েছে)। যখন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী সংখ্যা শূন্যতে নেমে আসবে, তখন কিছু তথ্য-খেকো সরকার চাইবে বায়োমেট্রিক সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম বজায় রাখতে। দেশ দ্বিতীয় বারের মতো করোনায় আক্রান্ত হতে পারে বলে তারা অজুহাত দেখাবে, কিংবা বললে মধ্য-আফ্রিকায় নয়া রূপে ইবোলা দেখা দিচ্ছে কিংবা…যাই হোক, বুঝতেই পারছেন। কী আর বলব!
বেশ কিছুদিন ধরেই আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা নিয়ে যুদ্ধ হচ্ছে রীতিমত। আর এই করোনা ভাইরাস সঙ্কট এই যুদ্ধে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা পালন করবে। কারণ আপনি যখন মানুষকে বলবেন চিকিৎসা সেবা আর গোপনীয়তা- এই দুইয়ের মাঝে যে কোনো একটা বেছে নিতে, মানুষ কিন্তু চিকিৎসা-ই বেছে নেবে।

সাবান পুলিশ
মানুষকে গোপনীয়তা আর চিকিৎসা সেবার মাঝে বেছে নিতে বলাটাই হচ্ছে সমস্যার মূল কারণ। কারণ এটা আদতে ধাপ্পাবাজি ছাড়া আর কিছুই না। আমরা গোপনীয়তা এবং চিকিৎসা সেবা; দুই-ই উপভোগ করতে পারি, এবং তা পারা উচিতও। আমরা চাইলে নিজেদের স্বাস্থ্য রক্ষাও করতে পারি আবার করোনা মহামারীকে ঠেকাতে পারি। আর এর জন্য গণহারে সার্ভেইল্যান্স ব্যবস্থা আরোপ করার প্রয়োজন নেই, বরং নাগরিকদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে এই বিপদকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান আর সিঙ্গাপুর মহামারী প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে বেশকিছু দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই দেশগুলো ট্র্যাকিং অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহার করলেও প্রধানত নির্ভর করেছে সঠিক রিপোর্টিং আর নাগরিকদের স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণের উপর। যেখানে দেশের মানুষের হাতের নাগালেই প্রয়োজনীয় ও সঠিক তথ্য ছিল।
কেন্দ্রীয় মনিটরিং ব্যবস্থা আর কঠোর শাস্তি মানুষকে আইন মানানোর একমাত্র উপায় না। যখন জনসাধারণকে খুঁটিনাটি তথ্য দেয়া হবে, আর মানুষ কর্তৃপক্ষের কথার উপর আস্থা রাখবে তখন তারা আপনা থেকেই সঠিক কাজটা করা শুরু করবে। এ জন্য হুমকি-ধামকির কোনো প্রয়োজন নেই। অজ্ঞ আর জোর-জবরদস্তির শিকার নাগরিকের চাইতে স্বেচ্ছায় প্রণোদিত আর জ্ঞানী নাগরিক অনেক বেশি শক্তিশালী এবং কার্যকর।
সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কথাই চিন্তা করে দেখুন না! মানবজাতির স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে এটি অন্যতম বড় একটি অর্জন বলা যায়। এই ছোট্ট কাজটাই প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ প্রাণ বাঁচিয়ে দিচ্ছে। আমরা এখন এই হাত ধোয়াকে নিত্ত-নৈমিত্তিক কাজ ভাবলেও এই মাত্র সেদিন- ঊনবিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানীরা সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার গুরুত্ব উপলব্ধি করেছেন। আগে খোদ ডাক্তার-নার্সরাই একটা অপারেশনের পর আরেকটা অপারেশনে হাত দিতেন কোনো ধোয়া-ধুয়ি ছাড়াই। আজকে বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষ নিজেদের হাত ধুচ্ছে, এরা কিন্তু কোনো পুলিশের ভয়ে ধুচ্ছে না। ধুচ্ছে কারণ তারা প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে অবহিত আছে। আমি সাবান দিয়ে হাত ধুই কারণ আমি ভাইরাস আর ব্যাক্টেরিয়া সম্পর্কে ধারণা রাখি, বুঝি যে এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণীগুলোই যত রোগ-বালাইয়ের কারণ, আর এও জানি যে সাবান এগুলোকে মেরে ফেলে।
কিন্তু এই পারস্পরিক সহযোগিতা আর বাধ্য নাগরিক তৈরি জন্য সবার আগে দরকার বিশ্বাস। মানুষকে বিজ্ঞানে বিশ্বাস করতে হবে, কর্তৃপক্ষের উপর, মিডিয়ার উপর বিশ্বাস করতে হবে। বিগত বছরগুলোতে দায়িত্বজ্ঞানহীন রাজনীতিবিদরা বিজ্ঞান, কর্তৃপক্ষ আর মিডিয়ার উপর জনগণের বিশ্বাস নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। আর এখন সেই একই দায়িত্বজ্ঞান বিবর্জিত রাজনীতিবিদরাই একচ্ছত্র কর্তৃত্বের রাস্তা বেছে নিতে আগ্রহী হয়ে উঠবে, বলবে- জনগণ সবসময় ঠিক কাজ করবে এমনটা ভাবা বোকামি। সাধারণত বহু বছর ধরে চলে আসা অবিশ্বাস নিমেষেই মিটিয়ে ফেলা যায় না। কিন্তু এখন সাধারণ কোনো সময় না, বিপদের মুখে মনও দ্রুত পরিবর্তিত হয়। আপনার ভাই-বোনের সাথে বহুদিনের জমানো ঝগড়া-ঝাঁটি থাকতে পারে, কিন্তু কোনো বিপদ-আপদ দেখা দিলে লক্ষ্য করবেন কোত্থেকে যেন একে অপরের প্রতি বিশ্বাস চলে আসে, একটা সৌহার্দ্যভাব বিরাজ করতে শুরু করে। একে অন্যকে সাহায্য করবার জন্য ছুটে আসেন। এখনো সময় আছে, সার্ভেইল্যান্সের রাজত্ব শুরু না করে বিজ্ঞান, কর্তৃপক্ষ আর মিডিয়ার উপর মানুষের ভগ্ন বিশ্বাসকে ফিরিয়ে আনা যায়। আর নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার তো করতেই হবে, কিন্তু এই প্রযুক্তি গুলো যেন জনগণের অধিকারকে খর্ব না করে, তাদের ক্ষমতা যেন কেড়ে না নেয়। আমার শরীরের তাপমাত্রা আর রক্তচাপ মনিটর করুক- আমার আপত্তি নেই। কিন্তু সেই তথ্য যেন সর্বর্সেবা একটা সরকার গড়ে তোলার কাজে ব্যবহার করা না হয়। বরং এই তথ্যের সাহায্য নিয়ে যেন আমি আরও নিখুঁত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি- এমন সুযোগ তৈরি করে দেয়া হয়, সেই সাথে সরকারকেও তাদের গৃহীত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে দায়ী করার রাস্তা খোলা রাখতে হবে।
আমি যদি নিজের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ২৪ ঘণ্টাই অবহিত থাকি, তাহলে বুঝতে পারব যে আমি অন্য কারো স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠছি কি না। এও বুঝতে পারব কোন অভ্যাস কী রকম প্রভাব ফেলছে আমার শরীরে। আর যদি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য তথ্য ভাণ্ডার আমার হাতেই থাকে তবে বিচার করতে পারব যে সরকার আসলেই আমাকে সত্যি কথা জানাচ্ছে কি না, মহামারী ঠেকাতে আদৌ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না। মানুষ যখনই সার্ভেইল্যান্স বা নজরদারি নিয়ে কথা বলবে, মনে রাখবেন যে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কেবল সরকারই ব্যক্তির উপর নজরদারি করতে পারছে- তা কিন্তু না। একই সময়ে প্রতিটি ব্যক্তিও কিন্তু সরকারকে মনিটর করতে পারছে।
করোনা ভাইরাসকে বলা যায় নাগরিকত্বের এক অগ্নিপরীক্ষা। আগামী দিনগুলোতে আমাদের কোনো স্বার্থপর রাজনীতিবিদকে না, বরং বৈজ্ঞানিক তথ্যকে বিশ্বাস করতে হবে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কথায় ভরসা করতে হবে। যদি আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হই, তাহলে দেখা যাবে স্বাস্থ্য রক্ষার দোহাই দিয়ে অমূল্য স্বাধীনতাটুকু জলাঞ্জলি দিয়ে ফেলেছি।

আমাদের প্রয়োজন বৈশ্বিক পরিকল্পনার
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হচ্ছে জাতীয়ভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়া বনাম বৈশ্বিক সংহতি- এই দুইয়ের মাঝে বেছে নেয়া। মহামারী এবং মহামারীর ফলে উদ্ভূত অর্থনৈতিক সঙ্কট- উভয়ই বৈশ্বিক সমস্যা। এর সমাধান আনয়ন সম্ভব একমাত্র বিশ্বব্যাপী পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে।
ভাইরাসকে হারাতে চাইলে সবার আগে বৈশ্বিকভাবে তথ্য বিনিময় করা অত্যাবশ্যক। ভাইরাসের তুলনায় মানবজাতি এই একটা দিক দিয়ে এগিয়ে আছে। চীনের করোনা ভাইরাস আমেরিকার ভাইরাসের সাথে টিপস চালাচালি করতে পারবে না। কিন্তু চীন চাইলেই আমেরিকাকে করোনা সম্পর্কে ধারণা প্রদান ও মোকাবেলায় অনেক কিছু শেখাতে পারে। সকাল বেলা মিলানে বসে এক ডাক্তার যে জিনিস আবিষ্কার করবে সেটা সন্ধ্যা নাগাদ তেহরানে প্রাণ বাঁচাবে। যুক্তরাজ্যের সরকার নীতিমালা প্রণয়ন নিয়ে গড়িমসি করে সময় নষ্ট না করে কোরিয়ানদের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারে। যারা কিনা মাসখানেক আগে একই অবস্থায় পড়েছিল। কিন্তু এসব ঘটতে হলে বৈশ্বিক সহযোগিতার মনোভাব আর একে অপরের প্রতি বিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে।
দেশগুলোর এখন উচিত মুক্তভাবে তথ্য আদান-প্রদান করা, একে অন্যকে পরামর্শ গ্রহণ ও প্রদান করা। আর পরস্পরের কাছ থেকে তারা যেসব তথ্য আর অভ্যন্তরীন জ্ঞান পাচ্ছে সেসবকেও বিশ্বাস করবার মতো সামর্থ্য থাকতে হবে। বিভিন্ন মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট; যার মধ্যে টেস্টিং কিট, রেসপিরেটরি মেশিন উল্লেখযোগ্য, উৎপাদন ও বিতরণের জন্য বৈশ্বিক প্রচেষ্টার প্রয়োজন। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রপাতি উৎপাদন ও মজুদ না করে বিশ্বব্যাপী পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে উৎপাদনের গতি আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব, এতে জীবন রক্ষাকারী যন্ত্র ন্যায্যভাবে বণ্টনও করা যাবে। যুদ্ধকালীন সময়ে যেভাবে বিভিন্ন দেশ বড় বড় শিল্পখাতগুলোকে ‘জাতীয়করণ’ করে, তেমনি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে জরুরী প্রোডাকশন লাইনকে ‘মানবিকরণ’ করতে হবে। অল্পকিছু করোনা ভাইরাস কেস আছে, এমন ধনী দেশ গুলোর উচিত হবে গরীব দেশগুলোতে; যেখানে করোনা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, সেখানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দিয়ে সাহায্য করা। সেইসাথে বিশ্বাস রাখা যে, তারাও যদি সংক্রমিত হয় তাহলে অন্য দেশগুলো এগিয়ে আসবে তাদের সহায়তায়। চিকিৎসা সেবা দানকারী ব্যক্তিদের নিয়োগের সময়ও একই কথা মাথায় রাখতে পারি আমরা। যেসব দেশ এখনো করোনায় বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি তারা খারাপ অবস্থার মাঝে দিয়ে যাওয়া দেশগুলোতে মেডিক্যাল স্টাফ পাঠাতে পারে। এতে দরকারের সময় সাহায্যও করা হবে, মূল্যবান অভিজ্ঞতাও সঞ্চয় করা যাবে। আর যদি মহামারীর ফোকাস অন্যদিকে ঘুরেও যায়, তাহলে সাহায্যও বিপরীত দিক থেকে ধেয়ে আসবে।
অর্থনৈতিক দিকটা চিন্তা করলেও বৈশ্বিক সহযোগিতা একান্তই দরকার। অর্থনীতির বিশ্বব্যাপী প্রকৃতি ও সাপ্লাই-চেইনের কথা বললে, প্রতিটি সরকার যদি নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত থাকে অন্যদের কথা ভুলে, তাহলে এর ফলাফলে সৃষ্টি হবে বিশৃঙ্খলা ও তৈরি হবে আরও বড় কোনো সঙ্কট। আমাদের দরকার বৈশ্বিক কর্মপরিকল্পনা, আর সেটা খুব জলদি। আরেকটা ব্যাপারে বৈশ্বিক ভাবে সম্মতি আদায় করা প্রয়োজন, আর সেটা হচ্ছে ভ্রমণ। মাসের পর মাস ধরে আন্তর্জাতিক ভাবে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলে ফলাফলে আসবে শুধুই ভোগান্তি, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধও হবে বাধাগ্রস্ত। দেশগুলোর উচিত স্বল্প সংখ্যক ব্যক্তিবর্গকে বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেয়া, যেমন- বিজ্ঞানী, ডাক্তার, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী। ভ্রমণকারীদেরকে নিজ নিজ দেশ আগেভাগেই স্ক্রিনিং করে রাখবে- এই ব্যাপারে একটি বৈশ্বিক সম্মতি গৃহীত হলে কাজটা করা সম্ভব। আপনি যদি জানেন যে অমুক প্লেনে করে একদম বাছাই করা কিছু যাত্রী আসছে, তাহলে আপনি তাদের নিজের দেশে বিনা দ্বিধায় স্বাগতম জানাবেন।
দুর্ভাগ্যবশত, বর্তমানে কোনো দেশই এই কাজগুলো করে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন সমষ্টিগত ভাবে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়েছে। এদের কথা শোনাবার মতো কোনো গুরুজনও নেই। কেউ কেউ হয়তো আশা করেছিলেন যে বিশ্বের বাঘা বাঘা নেতারা একত্রিত হয়ে কোনো পরিকল্পনা তৈরি করবে। জি-৭ ভুক্ত দেশের নেতৃবৃন্দ কেবল এই সপ্তাহে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে আলোচনায় বসেছিলেন। তবে তাতেও তেমন কোনো পরিকল্পনার প্রসব ঘটেনি। পূর্ববর্তী বৈশ্বিক সঙ্কট- যেমন ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক বিপর্যয়, ২০১৪ সালের ইবোলা মহামারীর সময় যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বনেতার ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন নেতৃত্বকে থোড়াই কেয়ার করে। তারা পরিষ্কার ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন মানবজাতির ভবিষ্যৎ না, শুধুমাত্র আমেরিকার মহত্ত্ব নিয়ে মাথা ঘামায়। এমনকি তারা একদম নিকট মিত্রদেরও ত্যাগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে আমেরিকায় ভ্রমণ নিষিদ্ধ করল, তখন ইইউকে সামান্য নোটিশ দেবারও গরজ দেখায়নি- ইইউ এর সাথে কোনো প্রকার আলোচনা তো দূরের কথা। তারা সম্প্রতি জার্মানিকেও কলঙ্কিত করেছে, যুক্তরাষ্ট্র জার্মানির একটা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিকে ১ বিলিয়ন ডলার অফার করে কোভিড-১৯ এর একটা নতুন ওষুধের একচেটিয়া স্বত্ব কিনে নেবার জন্য। এখন যদি বর্তমান প্রশাসন ভাল মানুষির রাস্তা ধরে পরিকল্পনা তৈরি করেও, খুব কম দেশই তাদের সাথে থাকবে। কারণ যে নেতা দায়িত্ব গ্রহণ করতে জানে না, নিজের ভুল স্বীকার করে না, সব কাজের বাহবা একাই কুড়াতে চায় আর দোষ চাপায় অন্যের ঘাড়ে- এমন নেতাকে কে-ই বা অনুসরণ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেলে যাওয়া শূন্যস্থান যদি অন্য কোনো দেশ পূরণ না করে, তাহলে শুধু মহামারী ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে না, বরং এই ধারা সামনের বছরগুলোতেও আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে বিষাক্ত করে তুলবে।
তবে প্রতিটি সঙ্কট এক একটি সম্ভাবনাও বটে। আশা করা যায়, এই মহামারী আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে বৈশ্বিক অনৈক্যকে, যা গোটা মানবজাতিকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে। মনুষ্যজাতির সময় হয়েছে সিদ্ধান্ত নেবার। আমরা কি অনৈক্যের পথেই হাঁটতে থাকব, নাকি বৈশ্বিক সংহতির রাস্তা বেছে নেব? যদি অনৈক্যকেই বেছে নিই, তবে বর্তমান মহামারীকে প্রলম্বিতই করা হবে না, বরং ভবিষ্যতে এর থেকেও ভয়াবহ কোনো দুর্যোগ ধেয়ে আসবার দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। আর যদি বৈশ্বিক সংহতিকে গ্রহণ করি, তবে এটা শুধু করোনার বিরুদ্ধেই বিজয় বলে প্রচারিত হবে না, ভবিষ্যৎ সব মহামারী আর একুশ শতকে মানবজাতি অন্য যেসব সঙ্কটের মুখোমুখি হতে পারে তার বিরুদ্ধেও বিজয় হবে।

লেখক পরিচিতিঃ
ইউভাল নোয়াহ হারিরি একজন ইজরায়েলি ইতিহাসবিদ, হিব্রু ইউনিভার্সিটি অফ জেরুজালেমের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। তিনি বেশ কয়েকটি বেস্ট সেলার বইয়ের রচয়িতাও বটে। তার লেখা বইগুলো হচ্ছে- স্যাপিয়েন্সঃ অ্যা ব্রিফ হিস্টোরি অফ হিউম্যান কাইন্ড (২০১৪), হোমো ডিউসঃ অ্যা ব্রিফ হিস্টোরি অফ টুমরো (২০১৬), টুয়েন্টি লেসনস ফর দ্য টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি (২০১৮)।
তিনি ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত উপরে উল্লিখিত আর্টিকেলে তুলে ধরেছেন করোনা পরবর্তী পৃথিবীর চিত্র। যেখানে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন মহামারী-পরবর্তীতে উন্নত বিশ্বের সরকারের আচরণ কেমন হতে পারে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কী প্রভাব ফেলতে পারে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ক্ষেত্রে, সেই সাথে দেখিয়েছেন কীভাবে আমরা একত্রে মোকাবেলা করতে পারি এই করোনা সঙ্কটকে।



আর্টিকেলে প্রকাশিত ছবিগুলো ইতালির পরিত্যক্ত রাস্তায় বসানো ওয়েবক্যাম দিয়ে তোলা। যা তোলার ও প্রচার করবার কৃতিত্ব গ্রাজিয়ানো প্যানফিলি’র। তিনি পেশায় একজন ফটোগ্রাফার, বর্তমানে তিনিও গৃহবন্দী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।


অনুবাদঃ পোস্টদাতা
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:০৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×