এক জীবনে হাজার জীবন যেনো পার করে চলেছি। সেই জীবন ঘুরেই যাচ্ছে একই রেললাইনে বারংবার বারংবার। ট্রেনের ঝিক ঝিক শব্দে যাত্রীরা ক্লান্ত। জানালার বাইরে ধুঁধুঁ মহাকাল। কিচ্ছুটি দেখা যায় না। ট্রেনের ভেতরে সবাই খুব ব্যস্ত আবার সবাই খুব একলা। মহাকালে কেউ যেনো নামতে চায় না, তাও নেমে যেতে হয়। হারিয়ে যাচ্ছে কতজন আমার সামনে মহাকালের স্টেশনে। আমি বাদামের খোসা ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেই জানালা দিয়ে। কোথায় জানি ভেসে চলে যায়। বহু বহু বহুদূর। এত ক্লান্ত লাগে আমার।
কিন্তু ট্রেনের বুঝি ক্লান্তি নেই। সে ঘুরেই চলেছে অনন্তকাল। এক দৃশ্য এক মানুষ এক মহাকাল জানালা দিয়ে আর কত দেখা যায়। কত মানুষ ঝাঁপ দিলো। দূরে হারিয়ে গেলো তারার ঝিলিক দিয়ে। আমার ঘুমোতে একদম ইচ্ছে করে না এখানে। যদি সবাই হারিয়ে যায়! কিন্তু ক্লান্তির পাখা আমাকে জড়িয়ে ফেলে অবশেষে। আমি ঘুমিয়ে যাই। ট্রেন চলতে থাকে অবিরাম তাও।
কত ঘুমিয়েছে তা কে জানে! আমার ঘুম ভাঙ্গে তখন দেখি মহাকালে সন্ধ্যা নেমেছে। চারপাশে কেউ নেই। "কেউ আছেন?" বলে চিৎকার ছুড়ে মারি চারপাশে। কেউ সাড়া দেয় না। কেউ না। ট্রেনের সব দরজা জানালা যেনো কবে থেকেই বন্ধ।
হঠাৎ মনে পড়ে ট্রেনের চালকের কথা। ট্রেন তো চলছে চালক নিশ্চয়ই আছে! আমি ছুটে চলি তার জন্য। কত বগির পর বগি আমি ছুটে পার হয়েছি তার নেই হিসেব। অবশেষে গন্তব্যস্থলে পৌছে আমি চালকের ঘরে প্রবেশ করি। কিন্তু এ কি!! কেউ যে নেই। ট্রেন যে একাই চলেছে। এখানে যে কেউ নেই। এই মহাকালের বদ্ধ ট্রেনের ভেতরেই আমি যেনো আঁটকা পড়ে যাই। হঠাত করে তখন খুব একা লাগে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ২:৫৬