সেদিন বাসার দোরগোড়াতে দাঁড়িয়ে আমি দেখলাম আকাশ জুড়ে গোলাপী মেঘ। কিন্তু তখন ছিলো বেশ রাত। রাতের আকাশ থাকবে কালো। পিটপিট করবে তারা-নক্ষত্র। কিন্তু কি করে জানি পরিষ্কার আকাশে দেখতে পেলাম গোলাপী মেঘ। জানিয়ে দিতে চাইলাম সবাইকে। কেউ বিশ্বাস করতে চাইলো না।
বিশ্বাস করার কথাও আসলে না। আমাদের শহর হলো সাদা-কালো শহর। এখানে এসব হবার প্রশ্নই আসে না। আমার খুব মন খারাপ হলো। এত চমতকার জিনিস কেউ না দেখে কিনা পরের দিন অফিস যাবার জন্য ঘুমোতে যাচ্ছে। বিচ্ছিরি জীবনের উপরে রাগ হয়ে আমিও ঘুমোতে গেলাম। কারণ দিন শেষে আমিও এই সাদা-কালো শহরকেই ভালোবাসি।
পরের দিন তীব্র আলোতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। জানালা খুলে দেখলাম অবিশ্বাস্য দৃশ্য। ঝিরিঝিরি করে হাওয়াই মিঠাই পড়ছে আকাশ থেকে। গোলাপী আলোতে ভরে আছে চারপাশ। বাড়ির পাশে, রাস্তার পাশে, পার্কে এখানে সেখানে হাওয়াই মিঠাই। চমতকার এই ফেনোমেনোনে সবাই হতবিহবল। সাংবাদিক রাও নিশ্চয়ই কোথাও ঘোরাফেরা করছে বোধ হয়। বিজ্ঞানীরাও আনন্দে এগুলা নিশ্চয়ই সংগ্রহ করছে।
শহরে বহুদিন পর একদিন ছুটি ও পেলো সবাই। আমরা সবাই এই চিটচিটে হাওয়াই মিঠাই নিয়ে ছুটলাম, বাসায় এনে রাখলাম, একে ওকে ছুড়ে মারলাম। কিছুক্ষন পর পর ই সেগুলো মিলিয়ে যাচ্ছিলো আবার জায়গা করে নিচ্ছিলো নতুন হাওয়াই মিঠাই।
চমৎকার দিনটি ও কি করে জানি শেষ হয়ে গেলো। কিন্তু রেশ রয়ে গেলো বহুদিন। আমরা সাদা-কালো জীবনে চলে যেতে লাগলাম। বিজ্ঞানীদের রিসার্চ বা সাংবাদিক দের প্রতিবেদন ও চললো। তবে বহু বছর পর ও সেই শহরের মানুষেরা বলে বেড়ালো একদিন সকালে উঠে তারা দেখেছিলো যে শহরের ছোট নদীটাও সেদিন গোলাপী হয়ে গিয়েছিলো।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৪৫