somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওয়্যারউল্ফ (Werewolf) মিথ নাকি বাস্তব?

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওয়্যারউল্ফ বা লাইকানথ্রপি। সিনামা এবং গল্পের কারনে, এই নামটা আমাদের কাছে বেশ পরিচিত। কিন্তু কেন এরকম একটা ভয়ঙ্কর আর রহস্যময় চরিত্রের সৃষ্টি হয়েছে? ওয়্যারউল্ফ কি কোন মিথ না বাস্তব? প্রায় পাঁচ শতাব্দী ধরে এ প্রশ্ন মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছে। দেখা যাক, কতটা জানতে পারি আমরা ওয়্যারউল্ফ সম্পর্কে?

ওয়্যারউল্ফ কথাটার জন্ম ইউরোপে। মনে করা হয়, কিছু মানুষ বিভিন্ন অভিশাপের কারনে প্রতি পূর্ণিমার রাতে নেকড়ে-তে পরিণত হয়। পেটে তখন থাকে তার প্রচন্ড ক্ষুধা। সেই ক্ষুধা তখন সে নিবৃত করে মানুষের রক্ত আর মাংস ভক্ষন করে।



মানুষ কিভাবে ওয়্যারউল্ফে রূপান্তিত হয়: বিভিন্ন মতবাদ আছে এ নিয়ে। কোথাও প্রচলিত আছে, কোন মানুষ যদি পূর্ণিমার রাতে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে নেকড়ের চামড়ায় তৈরি বেল্ট পরিধান করে তাহলে সে ওয়্যারউল্ফে রূপান্তিত হয়।

আবার অন্য ধারনা মতে, কেউ যদি, নেকড়ের পায়ের ছোয়া লাগা বৃষ্টির পানি পান করে, তাহলে সে ওয়্যারউল্ফে রূপান্তিত হয়।

ফ্রান্স এবং জার্মানে বিশ্বাস করা হয়, কেউ যদি গরমের পূর্ণ চাঁদের রাতে (বুধ এবং শুক্রবার) ঘরের বাইরে ঘুমায় এবং চাঁদের আলো যদি সরাসরি তার মুখের উপর পড়ে তাহলে সে ওয়্যারউল্ফে রূপান্তিত হয়।



গ্রীক মিথলজিতে ওয়্যারউল্ফ: একবার দেবতা জিউস ছদ্দবেশে পৃথিবীতে ভ্রমন করতে আসেন। মেহমান হয়ে বেড়াতে যান তিনি আর্কাডিয়ান রাজা লাইকনের রাজ্যে। লাইকন তাকে ঠিকই চিনতে পারে। লাইকন জিউসকে মারার জন্য, খাবারে জিউসকে মানুষের মাংস পরিবেশন করে। জিউস লাইকনের ট্রিক ধরতে পারে এবং খাবার খেতে অস্বীকার করে। এরপর জিউস লাইকনের পুরো সাম্রাজ্য ধ্বংস করে ফেলে এবং লাইকন কে নেকড়েতে রুপান্তিত করে সারা জীবনের জন্য বন্দী করে রাখে। যতদূর সম্ভব, এই ঘটনা থেকেই গ্রীক শব্দ লাইকনথ্রপ কথাটার উদ্ভব যার ইংলিশ সমশব্দ ওয়্যারউল্ফ।



কাদের মধ্যে এই বিশ্বাস সবচেয়ে বেশী প্রচলিত: আগেই বলেছি, ওয়্যারউল্ফ কথাটার জন্ম ইউরোপে। এছাড়াও আমেরিকা, রাশিয়া, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, গ্রীস, জার্মান, এমনকি এশিয়ার কিছু দেশেও ওয়্যারউল্ফে বিশ্বাস করা হয়। তবে ওয়্যারউল্ফে সবচেয়ে বেশী বিশ্বাস করে রেড-ইন্ডিয়ানরা।



বিজ্ঞানের ভিত্তিতে ওয়্যারউল্ফ: কিছু কিছু বিজ্ঞনীদের মতে ওয়্যারউল্ফ বলে বাস্তবে কিছু নাই। তবে পনেরশো শতাব্দীর দিকে ইউরোপের কিছু অঞ্চলে এবং রেড ইন্ডিয়ান কিছু মানুষের মধ্যে একটা রোগ দেখা দেয়। এই রোগে মানুষের সারা শরীরে কুকুরের মতো লোম গাজাতো আর যার এই রোগ হতো, তার মেজাজ সবসময় খিঁচরে থাকতো। (অনেকটা জলাতন্ক রোগের মতো)। সে মাঝে মাঝে অন্যকে কামড়াতে যেত। কুসংস্কারীরা এই রোগ থেকেই ওয়্যারউল্ফের গল্প তৈরি করে।



ওয়্যারউল্ফে রূপান্তর: প্রচলিত মতে, যারা ওয়্যারউল্ফ, প্রতি পূর্ণিমার রাতে ঠিক বারোটার সময় তাদের দেহে ঘন লোম গজানো শুরু করে, নখ বড় বড় হয়ে যায়, চোখের রং হয়ে যায় হলুদ। আস্তে আস্তে তারা পরিনত হয় অর্ধেক মানূষ অর্ধেক নেকড়েতে। তারপর বের হয়ে যায় জঙ্গলে রক্তপানের নেশায়। এই ওয়্যারউল্ফ যদি অন্যকোন মানুষতে কামড়ে দেয় তাহলে সেও পরিণত হয় ওয়্যারউল্ফে। আবার কেউ যদি ওয়্যারউল্ফকে হত্যা করে তাহলে সেও পরিনত হয় ওয়্যারউল্ফে।



ওয়্যারউল্ফ কি সত্যি নাকি শুধুই মিথ: বিজ্ঞানীদের মতে ওয়্যারউল্ফ শুধুই এক ভয়ঙ্কর কল্পনা ছাড়া আর কিছুই না। কিন্তু এখনো পৃথিবীর হাজার হাজার জাতির কোটি কোটি মানুষ এখনো বিশ্বাস করে ওয়্যারউল্ফ নামক এই ভয়ঙ্কর কিংবদন্তিতে।


সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১১ দুপুর ১:৪৭
২১টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×