somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মে দিবসের গল্প

০১ লা মে, ২০১১ রাত ১২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একঃ
পান দোকানদার পুলাডা কিন্তু খারাপ না। কেমন রস দিয়া কথা কয়! কিন্তু অন্য দোকানদার গো মতো হা কইরা চাইয়া থাকে না। পুলাডারে একটু একটু ভালা লাইগা যাইতাছে। অহন কি করি কতো?
পাপিয়ার এই কথাটা শুনে রহিমার মুখের হাসি আর থামে না......। বুঝবার পারছি, সখি আমার ডুইবা মরার সখ জাগাইছে.....!
এদিকে পান দোকানদার হারিস আজ একটু মন মরা বসে আছে। সবাই তো ঢুইকা যাইতাছে। পাপিয়া কি আইজ ডিউটিতে আইব না!! তাইলে এত যত্ন কইরা যে দুই খিলি পান বানাইয়া সাজাইয়া রাখছে, তার কি হইব!! এদিক ওদিক তাকায় হারিস... কিন্তু কোন দেখা নাই। গার্মেন্টেসের গেইট বন্ধ হইয়া গেছে। হারিস পানের খিলি দুইটার দিকে তাকিয়ে থাকে করুনভাবে। কেমন যেন বুকের ভেতর একটা চাপ অনুভব করে। বুঝতে পারে সেই মরণ রোগটা এইবার বুঝি তারে খাইল! উদাস হয়ে আকাশের দিকে তাকায়... খুব সুন্দর একটা নীল জমিন আর তার বুকে বকের বুকের মতো সাদা মেঘ... প্রেম বুঝি একটা পান দোকানদারকেও ভাবুক বানিয়ে দেয়। অথচ হারিস কিন্তু এমন ছিল না। সবাই তারে একটু বদরাগী হিসাবেই জানতো। তার দোকানে পান, বিড়ি, সিগারেট আর চা পাওয়া যায়। কিন্তু তার হাতের পানের নাম ছড়িয়ে গেল সব গার্মেন্টসকর্মীর কাছে। সবাই বলত, পুলাডা খুব দেমাগী। আর সারাটা দিন খালি সস্তা গান বাজাইত। এমনই একটা দিন হারিস খুব মন দিয়া মমতাজের গান শুনতে ছিল। আর গানের সাথে সাথে চলতে কাষ্টমারের লাইগা চা বানানো। চায়ের কাপ আর চামচের ভালবাসায় খুব সুন্দর একটা শব্দ পাপিয়ার কানে যায়। সেই দিন ছিল পাপিয়ার প্রথম দিন। খুব সাহসী মেয়ে... তাই সরাসরি দোকানে চলে গেল। দোকানে কারো ছায়া টের পেলেও তেমন পাত্তা দিল না হারিস। প্রায় মিনিটখানেক পর নিরবতা ভাঙ্গে। হারিস নিচে তাকিয়েই জিজ্ঞেস করে, কি চাই?? কোন বাকি কিন্তু নাই। ডাইরেক্ট কইয়া ফালাও! এক কাপ চা, বলে একটা নতুন কন্ঠ শোনার সাথে সাথে হারিসের কি যেন হয়ে যায়। মাথা তুলে তাকিয়ে থাকে। মেয়েটি খুব শান্ত চোখে হারিসকে দেখে। গরীব মানুষ তো তাই এখানে কিন্তু ব্যবহার করা যাচ্ছে না, ‍".........তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ"। কিন্তু সর্বনাশ যা হবার হয়ে গেছে। হারিস চা না বানিয়ে এক খিলি পান এগিয়ে দেয়। মেয়েটি বলে, আমি তো চা চাইলাম! হারিস বলে, নতুন আইছেন তো.... তাই এইটা আমার পক্ষ থেইকা। নাম কি? মেয়েটি কোন উত্তর না দিয়ে কেমন যেনো একটা হাসি দিয়ে চলে যায়। পুরানো কাষ্টমার রহিমা বলে উঠে, কি হারিস মিয়া বাইজা গেলা নাকি?? হারিস কিছুই না বলে.... রহিমাকেও একটা পান দেয়।

দুইঃ
শালার ম্যানেজার একটা বজ্জাত। কেমনে চাইয়া থাকে! মনে হয় যেন, চোখ দিয়াই পুরা শরীরটা খাইয়া ফালাইব। আমারে জিগায়, বাড়িতে কে কে আছে? ঠিক মতো কাজ করুম তো! কোন ফাকিঝুকি দিমু না তো! আমি তো মনে করলাম ভালা মাইনসের মতো এইসব প্রশ্ন করতাছে। কিন্তু একটু পরে দেহি বেডায় আমার মাথায়-পিঠে হাত বুলাইতাছে। বাপের বয়সী বেডা, মনে করলাম নিজের পুলাপাইনের কথা মনে কইরা বুঝি এমন করতাছে। কিন্তু না, ঐ বেডায় আমার পিঠে ব্রেসিয়ারের পিনে আঙ্গুল দিয়া খুচা দিয়া খিকখিক কইরা হাইসা উঠল। পরে কয়, আইজকা তোমার ছুটি। কাইলকা কাজ শুরু কইরো। সব শুনে রহিমা একটা শ্বাস ফেলে বলে, আগে তো বাঁইচা থাকন লাগবো......! কাইলকা আমার লগে কামে যাইস.....

(চলবে)
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×