somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

টিস্যু
টিস্যু.. টিস্যু পেপার... প্রয়োজনের সময় সবাই তাকে বুক পকেটে আগলে রাখে..প্রয়োজন শেষে ছুড়ে ফেলে দেয়।তো তাতে কি রিসাইক্লিং এর যুগ তো !!! টিস্যুরা বারবার অন্যের প্রয়োজন মিটানোর তাগিদে ফিরে আসে।.....ব্যাতিক্রমতার নেশায় সত্যের পিছু ছোটাটা আমার একটা বাত

বাংলাদেশে ঈদ এলো যেভাবে.....!!

০৬ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে আনন্দের দিন ঈদ। বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারের ঈদুল ফিতর শোকাবহ ঈদ গুলোর মাঝে একটি।বাংলাদেশীরা শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যেতে জানে।আশা করি শ্রীগ্রই নারকীয় তান্ডবের হোতাদের মূলোৎপাটন করে জাতিকে নির্ভার করতে দায়ীত্বশীলরা সচেষ্ট হবে।

আনন্দ-উৎসব।শহর-গ্রাম সবখানেই শোকের মাঝেও উছলে পড়ছে ঈদের আনন্দ। ধনী-গরীব ভেদাভেদ নেই। মুসলিম-অমুসলিমে ও নেই বৈষম্য। দুনিয়ার সব মানুষের জন্য খুশির সংবাদ নিয়ে এসেছে ঈদুল ফিতর। প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত এভাবেই হাজির হতো ঈদ।

অতীতে এ অঞ্চলে মুসলমানদের ঈদুল ফিতর উদযাপন সম্পর্কে খুব বেশি পরিষ্কার তথ্য পাওয়া দুষ্কর।তবে ইতিহাসবিদদের মতে আমরা যে ঈদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি বা যে ঈদকে দেখি আমাদের একটি বড় উৎসব হিসেবে, তা প্রায় ষাট বছরের ঐতিহ্য।ইংরেজ শাসনামলে বাংলায় সবচেয়ে ধুমধামে উদযাপিত হতো ক্রিসমাস বা বড়দিন। এই উৎসবের জন্য ছুটি বরাদ্দও ছিল বেশি। কলকাতার বাইরে শহর, মফস্বল বা গ্রামের সাধারণ মানুষের সঙ্গে এ উৎসবের কোনো যোগসূত্র ছিল না। এরপর জমকালোভাবে উদযাপিত হতো দুর্গাপূজা। ঈদের থেকে পূজায় সরকারি ছুটি ছিল বেশি।



তখন মুসলমান চাকরিজীবীরা ঈদের ছুটি বাড়ানোর আবেদন করলেও এতে কাজ হয়নি। তা ছাড়া সেই সময় ঈদকে উৎসবে পরিণত করার মতো সামর্থ্যও গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ মুসলমানের ছিল না।মুসলমানদের প্রধান উৎসব হিসেব ঘটা করে ঈদ উদযাপন না হওয়ার আরেকটি কারণ ছিল বিশুদ্ধ ইসলাম সম্পর্কে তৎকালীন সাধারণ মানুষের অজ্ঞতা।

তবে বাংলার স্থায়ী মুসলমানদের তুলনায় বহিরাগত মুসলমানেরা বেশ উৎসাহ নিয়েই ঈদ উদযাপন করতেন। ইতিহাসবিদদের মতে এ ভারতের উত্তরাঞ্চল থেকে আগত মুঘলরা বাংলার সাধারণ মানুষের তুলনায় ইসলাম সম্পর্কে জানতেন বেশি। কিন্তু বিশুদ্ধ ধর্ম পালনে তাঁরা উৎসাহী ছিলেন না।ঈদ মানে খুশী। সুতরাং, রমজান থেকেই মোটামুটি তারা সচেষ্ট থাকতেন যতোটা পারা যায় আনন্দ উপভোগ করতে।

ইতিহাসবিদদের মতে ঢাকায় ঈদ উদযাপনের সবচেয়ে পুরোনো মুসলমানেরা সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদে শোভাযাত্রা করে ঈদগাহে যেতেন।ধনী ব্যক্তিরা মুক্ত মনে অর্থ ও উপহারসামগ্রী বিলিয়ে দিতেন।বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর প্রকাশিত পোস্টকার্ডে ঢাকার ঈদ উৎব মিছিলের দৃশ্য প্রায় ১৮২০ সালের যা এখনো জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।



মুঘলদের ঈদ পালনের ইতিহাস ঢাকা, সিলেটসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় শাহী ঈদগাহের ধ্বংসাবশেষ দেখে বোঝা যায়। রমজানের চাঁদ দেখার জন্য বিকেল থেকেই বড় কাটরা, আহসান মঞ্জিল, হুসেনী দালানের ছাদে ভিড় জমে যেত।চাঁদ দেখা মাত্রই চারদিক হতে মোবারকবাদ, পরস্পর সালাম বিনিময় এবং গোলাবাজি ও তোপধ্বনি দেয়া হত। মুঘলদের একটি ঈদগাহ আছে ধানমন্ডির আবাসিক এলাকায়। বাংলার সুবাদার শাহ সুজার আমলে তাঁর আমাত্য মীর আবুল কাসেম ১৬৪০ সালে ওই ঈদগাহটি নির্মাণ করেছিলেন। সুবাদার, নাজিম ও অন্যান্য মুঘল কর্মকর্তারা সেখানে নামাজ পড়তেন। ইংরেজ আমলে ঈদগাহটি ছিল জরাজীর্ণ ও জঙ্গলাকীর্ণ। উনিশ শতকের শেষের দিকে শহরের মুসলমানরা ওই ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়তেন। আর সেখানে একটি মেলার আয়োজন করা হতো।

ঈদের মেলা হতো চকবাজারে এবং রমনা ময়দানে। বাঁশের তৈরি ডালা আসত নানা রকমের। কাঠের খেলনা, ময়দা এবং ছানার খাবারের দোকান বসতো। কাবলীর নাচ হতো বিকেল বেলা।

সেই সময়ে একটা নতুন কাপড়ের জন্য ছোট ছেলেমেয়েরা অপেক্ষায় পুরো বছর ধরে । ভাবত সেই কাপড় কীভাবে রাখবে, যাতে ভাঁজ নষ্ট না হয়, অমলিন না হয়, তা নিয়ে কত ভাবনা ছিল। যত্নের সঙ্গে জামা-জুতো পরতো। কুচবিহারে ঈদের নামাজ হতো। মুসলমানদের সঙ্গে কোলাকুলি করার জন্য দল বেঁধে হিন্দুরা ঈদের মাঠে আসত। ঈদের সেমাই ছিল খেতো। ঈদের মেলাতে ভেদাভেদ ভূলে সব ধর্মের লোকজন আসত।



সময়ের আবর্তনে ঈদের বাণিজ্যিকায়ন হয়ে গেছে।ঈদকে ঘিরে এখন একটি অর্থনীতি তৈরি হয়েছে। ফ্যাশন তৈরি হয়েছে। টেলিভিশনে ঈদ নিয়ে সাত দিনব্যাপী অনুষ্ঠান হচ্ছে। এমনকি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গেও ঈদ যুক্ত হয়েছে।প্রাচীন সম্প্রীতির ঢলেও অনেক ভাটা পড়েছে।সবখানের মত যান্ত্রিকতার ছোয়া ঈদে পালনেও পড়েছে।আগে ঈদের নামাজ শেষে বাবা-মাকে সালাম করে সালামী আদায় করত,ছেলেমেয়েরা দল বেধে নিকটবর্তী প্রত্যেক বাড়ীতে অনাহূত দাওয়াত খেতে বেড়িয়ে পড়ত।ঈদের পরদিন থেকেই পরিবার সহ নিকট আত্বীয়দের বাড়ী বেড়াতে যাবার ধুম পড়ে যেত।এখন আর এগুলো ওতটা দেখা যায় না।সব ছাপিয়ে এখনো বাংলাদেশ ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সম্প্রীতির উৎসব।

ঈদের খুশী গুলশান ট্রাজেডী ও সাম্প্রতিক সকল নারকীয় ঘটনার শোকের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ধর্মীয় অসাম্প্রদায়িকতার বেড়াজাল ছিন্ন করে রাজনৈতিকতার ঐকতানে সবার জীবনে শান্তির সুবাতাস বয়ে আনুক।

সবাইকে ঈদ মোবারক.........................



সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×