মাতার কাছে কান্নাকাটি করে যদি বাঁচাইতে পারে; সঙ্গে যথেষ্ট ভেটও নেওয়া হইছে মুখ বন্দ করতে
:: উলফার পাঁচজনকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বাবরকে দূষলেন গোলাম রসুলও
দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের সময় ঘটনাস্থলে থাকা অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের মত তৎকালীন হাবিলদার গোলাম রসুলও জানিয়েছেন, অস্ত্র আটকের সময় ঘটনাস্থল থেকে আটক করা পাঁচ উলফা সদস্যকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের নির্দেশে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।
তিনি আরো জানান, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা উলফা নেতা আবুল হোসেন পরিচয়দানকারী এনএসআই কর্মকর্তা মেজর লিয়াকত হোসেন ও চোরাচালানি হাফিজুর রহমান তাদের জানিয়েছিলেন, অস্ত্র ও গোলাবারুদ খালাসের বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সব সংস্থা অবহিত আছে। বুধবার চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় চট্টগ্রামের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মুজিবুর রহমানের আদালতে দ্বিতীয় দফা সাক্ষ্য দেয়ার সময় নগরীর বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন হাবিলদার গোলাম রসুল এসব কথা বলেন। বুধবার দুপুর পৌনে ১টা থেকে মাঝে এক ঘণ্টার বিরতি দিয়ে বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গোলাম রসুলকে সংক্ষিপ্ত জেরা করেন আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহেদুর রহমান। এরপর আদালতের কার্যক্রম আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মূলতবি করা হয়। বুধবার দুপুর পৌনে ১টায় সাক্ষ্যগ্রহণের শুরুতে গোলাম রসুল বলেন, দঘটনার দিন রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে আমি ফাঁড়িতে বসা অবস্থায় একটি টেলিফোন পাই। টেলিফোনের ওপ্রান্ত থেকে অজ্ঞাত লোক আমাকে বলেন, হাবিলদার সাহেব, ক্রেনের সাহায্যে সিইউএফএল জেটিতে বিপুল পরিমাণ মালামাল খালাস হচ্ছে। আমি বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সার্জেন্ট আলাউদ্দিনকে টেলিফোনে ঘটনাটি জানাই এবং তার মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিই। ঘটনাস্থলে গিয়ে মালামাল খালাসের বিষয়টি দেখতে পেয়ে শ্রমিকদের জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়, মেশিনারি পার্টস খালাস হচ্ছে।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে আমি, সার্জেন্ট আলাউদ্দিন এবং কয়লার ডিপো ফাঁড়ির সার্জেণ্ট হেলাল উদ্দিন মিলে মালামালের মালিককে খুঁজতে থাকি। এক পর্যাযে ৫-৭ জন লোক আমাদের দিকে এগিয়ে এসে একজন নিজেকে হাফিজ এবং অপর একজন নিজেকে উলফা নেতা আবুল হোসেন বলে পরিচয় দেন। আবুল হোসেন বলেন, আপনারা এখানে কেন এসেছেন, কি চান ? সার্জেন্ট আলাউদ্দিন বলেন, মালামাল আর কাগজপত্র দেখান। তখন হাফিজ বলেন, এ মালের কোন কাগজপত্র হয়না। এ মাল অস্ত্র ও গোলাবারুদ।
তিনি বলেন, হাফিজ ও আবুল এসময় আমাকে ভয়ভীতি দেখায়। বলেন, আপনারা এখানে কেন এসেছেন, আপনাদের চাকুরি থাকবে না। এ অস্ত্র ও গোরাবারূদের বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সব সংস্থা জানে। এসময় হাফিজ মোবাইলে কার সঙ্গে কথা বলে সেটি সার্জেণ্ট আলাউদ্দিনের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলেন, নে তোর বাপ এনএসআইদর ডিজিদর সঙ্গে কথা বল। কিন্তু সার্জেণ্ট আলাউদ্দিন মোবাইলে কথা না বলে সিএমপিদর ডিসি পোর্ট আবদুল্লাহ হেল বাকীর সঙ্গে কথা বলেন। আলাউদ্দিন ডিসি পোর্টকে হাফিজ ও আবুল হোসেনের হুমকির বিষয়টিও জানান। তিনি বলেন, এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে কর্ণফুলী থানার তৎকালীন ওসি আহাদুর রহমান আসলে আবুল হোসেন ও হাফিজ তাকে জানায়, অস্ত্র ও গোলাবারূদগুলো উলফার জন্য এসেছে। সরকারের উচ্চ মহলের সব সংস্থা এ বিষয়ে জানে। এরপর বিপুল সংখ্যক পুলিশ এসে জেটিঘাট ঘিরে ফেলে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে উলফা সদস্য সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করে বন্দর পাঁড়িতে পাঠাই। এসময় সেখানে প্রেন্ডস সিন্ডিকেটের লোকজনকে দেখতে পাই। আমি সেখানে দীন মোহাম্মদ, মহিলা মেম্বার মরিয়ম বেগম প্রকাশ বদনি, ট্রলার মালিক হাজী সোবহান ও জসীমকে দেখতে পাই।
তিনি বলেন, দঘটনাস্থল থেকে বন্দর ফাঁড়িতে ফিরে আমি আটক করা পাঁচজনকে দেখতে না পেয়ে আলাউদ্দিনকে জিজ্ঞেস করি। তিনি বলেন, পুলিশ কমিশনার ও ডিসি পোর্ট সাহেবের পরামর্শক্রমে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সাহেবের নির্দেশে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পরবর্তীতে এ ঘটনার যখন তদন্ত হচ্ছিল তখন জানতে পারি, ঘটনাস্থলে উলফা নেতা পরিচয়দানকারী ব্যক্তি হচ্ছেন এনএসআই কর্মকর্তা মেজর লিয়াকত। সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত কক্ষে উপস্থিত অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, হাফিজুর রহমান, দীন মোহাম্মদ, হাজী আব্দুস সোবহান, মরিযম বেগম প্রকাশ বদনি এবং জসীমকে শনাক্ত করেন। এর আগে একই আদালতে সিএমপি’র বন্দর জোনের তৎকালীন উপ-পুলিশ কমিশনার আবদুল্লাহ হেল বাকী, সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহমুদুর রহমান, সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিন, সার্জেন্ট আলাউদ্দিন সাক্ষ্য দেয়ার সময় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের নির্দেশে পাঁচ উলফা সদস্যকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। এদিকে আসামিদের মধ্যে যারা আদালতে হাজির আছেন তারা হলেন, জামায়াত নেতা ও বিএনপি সরকারের শিল্পমন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র তৎকালীন মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম, প্রতিরা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই’র তৎকালীন পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন, উপ-পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, ফিল্ড অফিসার আকবর হোসেন খান, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা সিইউএফএল’র সাবেক এমডি মোহসীন তালুকদার, সিইউএফএল’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এনামুল হক, চোরাচালানি হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান ও ট্রলারমালিক দীন মোহাম্মদ। এ ছাড়া সম্পূরক চার্জশিটভুক্ত দুআসামি ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নূরুল আমিন বর্তমানে পলাতক আছেন। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) জেটিঘাটে দশ ট্রাক অস্ত্রের চালানটি ধরা পড়ে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকে প্রায় সাড়ে তিন বছর অধিকতর তদন্তের পর ২০১১ সালের ২৬ জুন সিআইডি আদালতে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ওই বছরের ১৫ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়। ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বিচার।
সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিলের পর এ মামলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক শিল্পসচিব ড. শোয়েব আহমেদ, গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএইফআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সাদিক হাসান রুমি, বিসিআইসি’র সাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ইমামুজ্জামান বীরবিক্রম, এনএসআই’র সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এনামুর রহমান চৌধুরী, ডিজিএফআ’র সাবেক ডিটাচমেন্ট কমান্ডার কর্নেল (অব.) একেএম রেজাউর রহমান, এনএসআই’র সাবেক সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলী এবং সিএমপি’র বন্দর জোনের তৎকালীন উপ-পুলিশ কমিশনার আবদুল্লাহ হেল বাকী, সাবেক ডিআইজি (এসবি) শামসুল ইসলাম, সাবেক ডিআইজি (সিআইডি) ফররুখ আহমেদ, সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহমুদুর রহমান, সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিন, সার্জেন্ট আলাউদ্দিন, গ্রীণওয়েজ ট্রান্সপোর্টের মালিক হাবিবুর রহমান, ম্যানেজার তসলিম মল্লিক, ট্রাক ভাড়া করার মধ্যস্থতাকারী শেখ আহমদ এবং হাবিলদার গোলাম রসুল সহ ১৬ জন ইতোমধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
আমি ভালো আছি
প্রিয় ব্লগার,
আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।
ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার। হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।
ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।
রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।
... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ
(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন
এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!
অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে
আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন