somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাটা বাবা (গল্প)

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্রামের মধু মিয়ার বাড়িতে সকাল না হতেই এলাহি কাণ্ড। গ্রামের সবচাইতে বৃদ্ধা মেয়ে মানুষ রহিমা বুড়ি নাকি তার দীর্ঘ দিনের ব্যমো থেকে রাতারাতি আরোগ্য লাভ করেছে। দীর্ঘ দিন ধরেই নাকি সে বাতের অসুখে ভুগছিল। প্রায়ই মাঝরাতে সে অসুখের যাতনায় চিৎকার করে আশেপাশের মানুষদের ঘুম ভাঙ্গাতো। যখন সে চিৎকার শুরু করত, নিজেদের শব্দ দূষণ থেকে বাঁচাতে তার প্রতিবেশীরা নিজেদের ঘরের জানালা লাগিয়ে দিত। মায়েরা কেউ কেউ তাদের বাচ্চাদের ভয় দেখাত এই বলে, ‘তাড়াতাড়ি ভাত খা, রহিমা বুড়ি চিক্কইর দিল কিন্তু’। এমন জনপ্রিয় একজন রোগীর আরোগ্যে কী এমন আজব কাণ্ড ঘটে গেল যে, সে রাতারাতি আরোগ্য লাভ করল!

রহিমা বুড়ির এমন ঘটনার পর মধু মিয়ার বাড়িতে অনেক মানুষের ভিড়। গ্রামের মহিলাদেরই বেশি উৎসাহ। গ্রামের মহিলারা একে অপরে বলাবলি করছে, মধু মিয়ার বাড়িতে আশ্চর্য কিছু এসেছে। নইলে এমনটা ঘটবে কেন? নানা জনে নানা রকম মত দিচ্ছিল। কিন্তু ঘটনার আসল যে মানুষটি সে এখনো কিছুই বলেনি। রহিমা বুড়ি দীর্ঘক্ষণ ধরেই দুই হাঁটু উপর থুতনি ঠেকিয়ে বসে আছে। সেও বুঝি ভাবছে কি এমন জিনিস তার কাছে আসতে পারে যাতে তার দীর্ঘ দিনের অসুখ ভাল হয়ে গেল।

গতকাল সন্ধ্যে বেলায় রহিমা বুড়ি মিষ্টি নিয়ে মধু মিয়ার বাড়িতে গিয়েছিল। তার নাতি টানা দুইবার এস এস সি তে ফেল মেরে এই প্রথম পাশ করেছে। তাই এই মিষ্টি বিতরণ। দুরের আত্মীয় স্বজনদের কাছে মিষ্টি বিতরণ করতে রহিমা বুড়ির ছেলেই গিয়েছিল। আর বাড়ির আশেপাশের কাজটা সে একাই সামলাচ্ছিল। মধুমিয়ার বাড়িতে আসতে আসতে তার সন্ধ্যে হয়ে গেল। মধু মিয়ার স্ত্রীর সাথে একটু গল্প করতে গিয়েই রাত হয়ে গেল। তাই তাকে আর বাড়িতে ফিরে যেতে দেয়া হয়নি। মধু মিয়ার ছেলে মেয়েরাও তাকে ধরেছে গল্প শোনাতে হবে। নানাদিক বিবেচনা করে সে রাতে রহিমা বুড়িও আসার নাম করেনি। তারপর রাতে যে ঘটনা ঘটে গেল তার বর্ণনা রহিমা বুড়ির মুখেই শোনা যাক।

সবাই মনোযোগ দিল রহিমা বুড়ির দিকে। সে বলতে শুরু করল, “রাইতের বেলায় আমার ব্যারাম আরও বাইরা যাইতাছিল, আমি ভাবলাম বুয়ায় (মধু মিয়ার স্ত্রী) শখ কইরা আমারে ঘরে রাখল, আর আমি চিল্লাইয়া তাগো ঘুমাইতে দিমুনা তা কি হয়? সেই লাইগ্যা আমি খিইচ্চ্যা শুইয়া রইলাম। কিন্তু ঘুমতো আইতাছিল না। আমি নানা রকম ভাবতাছিলাম। মাঝ রাইতে মনে হইল ঘরে কেউ আসছে। খুব আস্তে আস্তে আমার চাইরপাশেই হাটতাছে। আমি ভয় পাইয়া গেলাম। চিক্ককইর দিতে চাইলাম, কিন্তু বাবায় ততক্ষণে আমার মুখে কুলুপ আইটা দিছে। আমি তখনো বুঝতে পারি নাই বাবায় আমার অসুখ সারতে দেখা দিছে। আমি আনধারের মধ্যে অনুভব করলাম চাটা বাবায় আমার পা চাইট্যা দিতাছে। আশি বছর আগে এই গ্রামে চাটা বাবায় আইছিল। হেইবার বহুত মানুষের বসন্ত হইছিল। আ’ চাটা বাবা শেষ পর্যন্ত তুমি আইলা!!”

চলবে......
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫১
৯টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×