somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাটা বাবা (২য় পর্ব)

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্রামের সবচেয়ে প্রবীণ মানুষটির মুখ দিয়ে আশ্চর্য এই ঘটনাটির বর্ননা শুনে উপস্থিত সকলে অবাক না হয়ে পারলনা। ছেলে, বুড়ো প্রায় সকলেই তার সাথে এক মত। কারণ গ্রামে আশি বছর আগে যে চাটা বাবা এসেছিলেন তা প্রকট সত্য। তিনি বিনে পয়সায় রাত বিরাতে গ্রামের বসন্তে আক্রান্ত রোগীদের চেটে দিতেন। অনেকে নাকি জানতই না চাটা বাবা কখন এসেছে। চাটা বাবার চিকিৎসাতেই নাকি অনেকে ভাল হয়েছিল। যখন গ্রাম থেকে বসন্ত পালালো, চাটা বাবা কোথায় যে গায়েব হলেন তা আর কেউ জানতে পারেনি। সেই চাটা বাবা আবার গ্রামে এসেছেন রোগ বালাই দূর করতে। আর সেই যুগের চাটা বাবার প্রতক্ষ্য সাক্ষী রহিমা বুড়ি নিজেই আজ সাক্ষীরূপে। বিশ্বাস না করে কি উপায় আছে!

রহিমা বুড়ির আরোগ্য লাভের দুই দিন পর, মধু মিয়ার বাড়িটির নাম আশেপাশের পনের বিশ গ্রাম ছড়িয়ে পড়ল। অনেকেই আরোগ্য লাভের উদ্দেশ্যে মধু মিয়ার বাড়ির সামনে ভিড় করতে লাগল। কিন্তু মধু মিয়া নির্বিকার। সে নতুন ধান্দা পেয়েছে, বিনে পয়সাতে চাটা বাবাকে সে বিকাবে না। এমনিতেই মধু মিয়ার মুখে মধুর অভাব নেই। তার কথাতেই লোকেরা অনেক কিছুই করতে প্রস্তুত। তার উপড়ে তার শ্যলক এসে জুটেছে। সে রীতিমত ঘোষণা দিয়ে বেড়াচ্ছে যে, “রহিমা বুড়ি মিষ্টি নিয়ে আসাতেই চাটা বাবা তার চিকিৎসা করেছেন। নইলে এ চিকিৎসা হত না”। মানুষের এত কিছু ভাববার সময় ছিলনা। তারা প্রায় সকলেই চাটা বাবাকে এক নজর দেখতে চায়। কিন্তু মধু মিয়া চিকিৎসার উদ্দেশ্য ছাড়া কাউকেই ঘরে ঢুকতে দেবেনা। কিন্তু উপস্থিত সকলেই চাটা বাবাকে দেখতে পাগল প্রায়। মধু মিয়া সে সুযোগকেই কাজে লাগাল। সে নতুন ফন্দি করল, যে যত বেশী টাকা দিতে রাজি সে তত আগে চাটা বাবার সানিধ্য লাভ করবে।

প্রথম দিন সৈভাগ্যবান হলেন দূর গ্রাম থেকে আসা এক চেয়ারম্যান সাহেবের বৃদ্ধা মা। সেই প্রথমে চাটা বাবার সান্নিধ্যে যাবার সুযোগ পেলেন। ঘরে ঢুকবার আগেই মধু মিয়ার স্ত্রী গারো তরল জাতীয় কিছু দিয়ে পা ধুয়ে দিলেন।

বুড়ী ঘোরের মধ্যে ছিল। সে এর ভাল মন্দ কিছুই বুঝতে পাড়লনা। সে এগুলো কে নিয়ম কানুন মনে করল। যথারীতি রাত হলে, তাকে একটা ঘরে নিয়ে যাওয়া হল। বেশ পরিপাটি বিছানায় ঘুমানোর ব্যবস্থা করা হল। রাত বড়লে বাতি নিভিয়ে দেয়া হল। এখানেই গোল বাধল। বৃদ্ধা বাতি না জ্বালিয়ে ঘুমুতে পারেনা। এটা নাকি তার বদঅভ্যাস। কিন্তু মধুমিয়ার স্ত্রী কিছুতেই তা মানলো না। সে বরং সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতে লাগল, "চাটা বাবা পবিত্র মানুষ, তিনি অন্যের সাথে দেখা দেন না "।

যেমন কথা তেমনই হল। রাত বাড়তে থাকলো। বৃদ্ধার ভয় উতসাহ দুটোই বাড়তে লাগল। কিন্তু এই বয়সে দুই কিলো পথের ভ্রমন ক্লান্তি তাকে ঘুমের ঘোরে নিয়ে গেল।

গভীর রাতে খুব বাজে একটা দুর্গন্ধে বৃদ্ধার ঘুম কিছুটা ভেংগে গেল। সে ঘুম ঘুম চোখে প্রথমে একটু ভয় পেল। একটু পরেই সে টের পেল, কেউ তার পা চাটছে। নিশ্চই চাটা বাবা চলে এসেছেন। কিন্তু তার শরীর থেকে এমন বিশ্রী দুর্গন্ধ বেরুচ্ছে কেন? যাই হউক বাবার মস্ত বড় জিহ্বার চাটুনি মন্দ লাগছিল না। তার দাড়ির আলতো ঘর্ষনে বেশ সুরসুড়িও হচ্ছিল। তবে কি সে তার ব্যামো থেকে আরোগ্যলাভ করছে?

চলবে...........
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৮
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×