somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তেীহিদুল ইসলাম শওকত
এখানে কিছু লিখলে দু দিন পর পর এসে ইডিট করে পরিবর্তন করতে হয়। একজন জীবিত ব্যাক্তির সম্পর্কে স্থায়ী কিছু লেখা যায় না কারন সব কিছুই পরিবর্তনশীল তাই আমার সম্পর্কে এখন লেখার মত কিছু নেই।

আসাদ উদ্দিন ওয়াইসি কেন ভারতের রাজনীতিতে নতুন খেলোয়াড় (পর্ব-১)

১১ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারতের রাজনীতি নিয়ে যারা টুকটাক খবর রাখে তাদের কাছে নামটি বেশ পরিচিত হওয়ার কথা। কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি-আরএসএস এর যে স্বর্ণ-যুগ চলছে তার বিপরীতে উঠে এসেছে মুসলিম মুখ হিসেবে তেলেঙ্গানার ওয়াইসি ও তার দল অল-ইন্ডিয়া মুত্তাহিদুল মুসলিমিন বাঁ সংক্ষেপে মিম। বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে ভারতে যেই অর্থডক্স হিন্দুত্ববাদি রাজনীতির জাগরণ শুরু হয়েছিল তার ফলাফল ভারতের বর্তমান রাজনীতিতে বিজেপির একছত্র আধিপত্য।
বিজেপির এই উত্থানে ভারতে সেকুলার রাজনীতির ও যবানিকপাত ধরা যায়। বর্তমান ভারতে রাজনীতির ধরন দুটো হয়ে গেছে এক হচ্ছে, কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি অথবা সফট হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি করতে হবে টিকে থাকতে হলে। সেখানে সেকুলার কিংবা বাম পন্থার রাজনীতির ভোট বক্সে কোন ভোট নাই অথচ ভারত স্বাধীন হওয়ার পর কংগ্রেসের সেকুলার রাজনীতির প্রতিপক্ষ ছিল বামেরা। সেই বামেরা ভারতের রাজনীতি থেকে বিলীন হওয়ার পথে।



কিন্তু কংগ্রেসও আর তার সেই সেকুলার ভাবমূর্তি ধরে রাখতে পারছে না। বিপরিতে বিজেপির আগ্রাসী হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির বিপরীতে সফট হিন্দুত্বের পথে হাঁটতে হচ্ছে। ভারতের রাজনীতিতে কংগ্রেসের রিজার্ভ ভোট ব্যাংক হিসেবে কাজ করে এসেছে যেই মুসলিম ভারতীয়রা তারা হয়তো বিষয়টা আঁচ করতে পেরে কিছুটা দূরত্ব তৈরি করছে কংগ্রেসের সাথে বিভিন্ন রাজ্য। যেই কংগ্রেসকে মুসলিমরা স্বাধীনতার পর থেকে একক ভোট ব্যংক হিসেবে বার বার ভোট দিয়ে এসেছে বস্তুত কংগ্রেস মুসলিমদের জন্য কি করেছে সেটার মধ্য একটা বড় যতি চিহ্ন পরে যায়।

উদাহরণ হিসেবে আমাদের পাশের রাজ্য পশ্চিম বঙ্গের দিকে তাকালেই বিষয়টা আরও পরিষ্কার হয়ে যায়। ভারতের মধ্য অন্যতম সংখ্যালগু অধ্যুষিত রাজ্য হিসেবে আছে পশ্চিমবঙ্গ। আর এই পশ্চিম বঙ্গের একক মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে আছে মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, বশীরহাট, দুই ছব্বিশ পরগনার বেশ কিছু অঞ্চল। আর এই অঞ্চল গুলোই এখনো কংগ্রেসকে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতেতে টিকিয়ে রেখেছে অথচ পশিচম বঙ্গের সবচেয়ে অবহেলিত জেলা গুলোর মধ্য এই জেলা গুলোই প্রথম। যেখানে অন্য অঞ্চলে মাইলের মধ্য অনেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল পাওয়া গেলেও ওই অঞ্চল গুলোতে তা অনুপস্থিত।

এই দীর্ঘ অবহেলার পরেও মুসলিমরা দিন শেষে আবার কংগ্রেসকেই ভোট দিয়েছে শুধু মাত্র নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য। কিন্তু বিনিময়ে কংগ্রেস দিনে দিনে যেন রাজনীতিতে আরও এলেমেলো হয়ে যাচ্ছে। তারা যেন হিন্দুত্ববাদীদের দেয়া কংগ্রেস মানেই মুসলিম তোষণ এই কালিমা দুর করতে অভ্যস্ত, আর তাতেই তারা হাঁটছে সফট হিন্দুত্বতের পক্ষে। আরেকটি বিষয় যেই কংগ্রেস এত সেকুলার ছিল সেই কংগ্রেসিরাই দলে দলে কংগ্রেস ত্যাগ করে বিজেপিতে নাম লেখাচ্ছে আর মুসলিমদের দাগাচ্ছে সব কিছুর জন্য।

এই যখন অবস্থ তখনই ভারতে মুসলিমরা নিজেদের অনেক একা মনা শুরু করেছে। তারা বিজেপি-আরএসএস এর সাম্প্রাদায়িক দানবতা থেকে বাচতে নতুন ত্রাণ কর্তা খুঁজতে হন্য। কংগ্রেসকে আর তারা তাদের রাজনৈতিক ত্রাণ কর্তা ভাবতে অনেক কষ্ট হচ্ছে তাই তারা রাজ্য ভিত্তিক যেই সেকুলার দল গুলো উঠে এসেছে তাকেই ভোট দেয়া শুরু করেছে। এর ফলাফল দেখতে পাই মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য গুলোতে।তার বাস্তব উদাহরণ হতে পারে উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টি, বিহারে লালুর দল আরজেডি বা জেডিউ, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস, আর যেখানে রাজ্য ভিত্তিক শক্তিশালী দল পাচ্ছেনা সেখানে ঘুরেফিরে আবার কংগ্রেসকেই ভোট দিচ্ছে।
কিন্তু রাজ্য ভিত্তিক দল গুলোও যেন বিজেপি -আর এসএসের সাথে ভোট ইঞ্জিনিয়ারিং পেরে উঠতে পারছে তাই তারাও সফট হিন্দুত্ব কার্ড খেলা শুরু করেছে। তাদের হাতেও তেমন কিছু করার থাকেনা কারন বিজেপি-আরএসএস রাজনীতিতে কে এমন যায়গায় নিয়ে এসেছে যেখানে উন্নায়ন, সুশান, শিক্ষা বাদ দিয়ে ইস্যু হিসেবে নিয়ে এসেছে মুসলিম তোষণ, লাভ জিহাদ, গরু জবাই, মন্দির, পাকিস্থান, কাশ্মীর, মুসলিম হটাও, নাগরিকত্ব।

ধর্মের বড়ি খাইয়ে বিজেপিও বেশ সফলও বলা চলে, নাহয় যোগী আদিত্যনাথের মত উগ্র মুসলিম বিদ্বেষী রেকর্ড সংখ্যক ভোট পেয়ে উত্তর প্রদেশের মত প্রায় ২০% মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য মুখ্য মন্ত্রী হয় কিভাবে?
আর বিজেপি-আরএসএস ও নিজেদের ফিল্ডে নিয়ে এসে সেকুলার দল গুলোকে খেলানোয় তারাও খেই হারিয়ে এখন হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির পথে হাটতে হচ্ছে।
হতাশাগ্রস্থ ও দিকভ্রান্ত মুসলিমরাও তাই এখন নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় শেষ কামড় হিসেবে ওয়াইসি, বদরদ্দিন আজমলদের মধ্যই নিজেদের ভবিষ্যৎ দেখা শুরু করেছে। আর এই অবস্থা দেখেই কংগ্রেস আরও হযবরল। তাই তাদের নিশানা এখন বিজেপি থেকে বেশি ওয়াইসিদের দিকে অথচ যখন মুসলিমরা বিনা শর্তে বছরের পর বছর তাদের ভোট দিয়ে এসেছিল তখন মুসলিমদের উন্নায়নে এবং তাদের মুল স্রোতে মেশাতে কি করেছে সেটাই প্রশ্ন বিদ্ধ।
সেই তুলনায় কেরালায় বামেদের নেতৃত্ব মুসলিমরা নিজেদের যেখানে নিয়ে গেছে তা বাকি দলগুলোর কাছে উদাহরণ হয়ে থাকার কথা। আর বাস্তবতা হচ্ছে কেরালায় বিজেপি তার রাজনৈতিক দাঁতই ফেলতেই পারেনি কারন যেখানে উন্নয়ন সুশান আছে সেখানে এদের বড়ি কেউ খায় না। (চলবে......)

লেখাটি পুর্বে প্রকাশিত আমার ব্যাক্তিগত ব্লগেঃ https://sotly.me/51F

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৬
১০টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড্রাকুলা

লিখেছেন সুদীপ কুমার, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১২

কোন একদিন তাদের মুখোশ খুলে যায়
বেরিয়ে আসে দানবীয় কপোট মুখায়ব।

অতীতে তারা ছিল আমাদের স্বপ্ন পুরুষ
তাদের দেশ ছিল স্বপ্নের দেশ।
তাদেরকে দেখলেই আমরা ভক্তিতে নুয়ে পড়তাম
ঠিক যেন তাদের চাকর,
অবশ্য আমাদের মেরুদন্ড তখনও... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×