somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাকিনী part5

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বুড়ির বাসা থেকে বের হয়ে হেঁটে হেঁটে দুজনে বড় রাস্তায় আসলাম। গুমগুম করে মেঘ ডাকছে। হিলহিলে ঠান্ডা বাতাস। যেকোনো সময় ঝেঁপে বৃষ্টি আসবে। মন্ময় বাবু কোথায় থাকেন জানি না। এখান থেকেই আলাদা হয়ে যাওয়া ভালো। উনি আবারও রিকশা করে বাসায় পৌঁছে দেবেন, ভাবাই অন্যায়। বললাম,
‘বাবু, আমাকে একটু নিউ মার্কেটের দিকে যেতে হবে। তবে আর একবার আপনার সাথে দেখা করতে চাই। আপনার সময় হবে তো?’
‘সময় করে একদিন আসেন। এ হপ্তা ব্যস্ত আছি। আগামী শনিবার আসতে পারেন। ফোন করে আসলে ভালো হয়। দোকানের ফোন নম্বর আছে না আপনার কাছে?’
‘আজ্ঞে আছে। দোকান থেকে যে রশিদ দিয়েছিলেন, তার ওপর লেখা আছে।’
‘গুড। দেখা হবে, কেমন?’
অন্ধকারে হারিয়ে গেলেন মন্ময়। কিছুক্ষণ পর বৃষ্টির বড় বড় ফোঁটা পড়তে লাগল। ছোট একটি রেস্টুরেন্টে ঢুকে চা, কচুড়ির অর্ডার দিলাম। রেস্টুরেন্টের নাম ঘোষ মিষ্টান্ন ভান্ডার। ঢুকতেই বাঁ হাতে ভাঁটের আগুনে বাবলার খড়ি পুড়ছে। গাঁট পোড়ার পটপট শব্দ পেলাম। এক ইঞ্চি পুরু স্টিলের প্রকাণ্ড তাওয়ায় মোগলায় পরটা, নরমাল পরটা, কিমা পুরি ভাজা হচ্ছে। পাশে কেরোসিনের পাম্প কুকারে কড়াইয়ের ডোবা তেলে কচুড়ি, শিঙাড়া, ডালপুরি, রেগুলার পুরি ফুটছে। এগুলোর সাথে ফ্রি আমড়া, জলপাইয়ের চাটনি। ঘন দুধের ধোঁয়া ওঠা চা। বাইরে ঝুম বৃষ্টি। রেস্টুরেন্টের টিনের চালে ঝমঝমাঝম। চমৎকার পরিবেশ। মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে। বৃষ্টি ধরে এল দুঘণ্টা পর। এর মধ্যে কচুড়ি, শিঙাড়া, পুরি, দুই খুরি চাটনি, তিন কাপ চা, তিনটা ৫৫৫ সিগারেট শেষ করেছি। বাসায় ফিরতে হবে। মা দুশ্চিন্তা করবে। শেখ মুজিব হত্যার পর হিন্দুরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছে। আসল অবস্থা সেরকম না মোটেও। বনের বাঘের চেয়ে মনের বাঘই খাচ্ছে বেশি। মাইনরিটি সারা জীবনই নিজেদের অনিরাপদ ভাবে।


ছ’দিন বাদে ফোন করলাম মন্ময় চৌধুরীকে। পরদিন শনিবার। বিকেলের দিকে দোকানে যেতে বললেন। দোকানে গিয়ে দেখি কাউন্টারে বুড়ো ম্যানেজার বসে আছে আমাকে সাহেবের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। পুরো দোকান খালি। শনিবার আধবেলা, রবিবার পুরো দিন ছুটি। অফিসে বসে আছেন মন্ময়। তন্ময় হয়ে তাকিয়ে আছেন বালা দুটোর দিকে। আমাকে ইশারায় বসতে বললেন। ম্যানেজারকে বললেন চলে যেতে। শুরু করলেন মন্ময় বাবু :
‘সঞ্জয় বাবু, কোনো প্রশ্ন করবেন না। শুধু শুনে যান। আশা করি আপনার সব কৌতূহল মিটে যাবে। এই বালা দুটো অনেক দিন আগেকার। লক্ষণ সেনের আমলের। সেনেরা দক্ষিণ ভারতের লোক, জানেন তো? এঁরা ছিলেন গোঁড়া হিন্দু। সেনেরা বাংলাদেশে আসার আগে এই দেশ শাসন করত পালরা। তখন এখানকার বেশির ভাগ লোকই ছিল বৌদ্ধ। হিন্দুদের ভেতরও জাতপাত তেমন ছিল না বললেই চলে। থাকলেও তেমনভাবে কেউ মানত না। সেনেরা এসে সবকিছু পাল্টে দিল। বিহার বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সব বন্ধ হয়ে গেল। শুরু হলো বৌদ্ধ নিপীড়ন। পরে বখতিয়ার খলজির আমলে এই বৌদ্ধরাই দলে দলে মুসলমান হয়। এই জন্যই হিন্দুরা বাঙালি মুসলমানদের বলে নেড়ের জাত। বৌদ্ধরা মাথাটাতা কামিয়ে ন্যাড়া হয়ে থাকত বলেই এই বিশেষণ। সেনেরা বাঙালিদের বিদেশে যাওয়াও বন্ধ করে দেয়। ব্রাহ্মণরা ঘোষণা করে, কোনো বাঙালি বিদেশে গেলে জাতিচ্যুত হবে। বাঙালি জাতি কুয়োর ব্যাঙ হয়ে ঘরে বসে থাকল। দিন-দুনিয়ার খবর আর রইল না কিছু তার কাছে।

‘লক্ষ্মণ সেনের ঝোঁক ছিল তান্ত্রিকতার দিকে। লক্ষ্মী নারায়ণ নামের এক কাপালিক ছিল তার গুরু । এই বালা দুটোর মুখগুলো দেখেন। দুটো ছাগির মুখ। অথচ সাধারণ বালাতে ব্যবহার হয় হাতি অথবা মাছের মুখ। মুখগুলোতে প্যাঁচ লাগানো। দু’আঙুলে ধরে ঘোরালেই খোলে। আমি খুলেছি ওগুলো। ভেতরে সাদা সিল্কের ওপর ব্রাহ্মী লিপিতে হাকিনী বশীকরণ মন্ত্র লেখা। তন্ত্রসাধনায় বসলে সাধকের আসনের চারপাশে সে নকশা আঁকতে হবে, সেটাও দেওয়া আছে এখানে। এগুলোকে ইংরেজিতে বলে অ্যামুলেট। নকশার ভেতরের ঘরগুলোর একটাতে লেখা ‘নাদেস সুরাদেস ম্যানিনার’। প্রাচীন ব্যাবলনীয় ভাষা। এ মন্ত্র ভারতীয় নয়। এটা ব্যাবলনীয়। প্রথম খিষ্টধর্ম, এরপর ইসলামের যখন প্রসার হলো, সেই সময় অনেক প্রেতসাধক ইরাক এবং সিরিয়া থেকে ভারতে চলে আসে। তন্ত্রমন্ত্র এখানে সারা জীবনই আছে। নরবলি, শবসাধনা এসব কাজে কোনো বাধানিষেধ নেই। লাকুম দ্বীনুকুম। যার যার ধর্ম তার তার কাছে। ব্যাবিলনে তান্ত্রিকেরা বেড়ে উঠেছিল রাজানুকূল্য পেয়ে। ভারতেও সেটা পেতে তাদের খুব বেশি অসুবিধা হয়নি।

‘বখতিয়ার খলজি বাংলা দখল করে নিলে লক্ষ্মণ সেন পালিয়ে গেল পূর্ব বাংলার রাজধানী বিক্রমপুরে। সাথে লক্ষ্মী নারায়ণ। মনে প্রতিহিংসার আগুন। হারানো রাজ্য কীভাবে ফিরে পাবে রাত-দিন সেই ভাবনা। দৌর্দণ্ডপ্রতাপ বখতিয়ার আর তার মুসলমান সৈন্যরা এক মূর্তিমান বিভীষিকা। চিন্তা বাড়ে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে হতাশা। বাঙালি সেনদের দুঃশাসনে নিষ্পেষিত। গণ সমর্থন দুরাশা। লোকবল, অর্থবল, মনোবল কোনোটাই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রান্তিকালে এগিয়ে এল কাপালিক লক্ষ্মী নারায়ণ। বখতিয়ার বিনাশ হবে হাকিনীর হাতে। জ্বরাসূরের বিকট মূর্তির সামনে জোড়া মোষ বলি হলো। লক্ষ্মী নারায়ণের ইচ্ছে ছিল কুমারী উৎসর্গ করার। লক্ষ্মণ রাজি হননি। দেশের অবস্থা ভালো না। কুমারী, অকুমারী, বিবাহিতা সবারই বাবা-মা থাকে। এ নিয়ে ভেজাল হলে বিক্রমপুর ছেড়ে মিয়ানমারে গিয়ে উঠতে হবে। পুবে এখন শুধু ওই রাজ্যই নিরাপদ। বখতিয়ারের এখতিয়ার মগের মুল্লুকে নেই। আয়োজন সম্পন্ন হলো বটে, তবে সমস্যা একটা রয়েই গেল। শবসাধনা করে হাকিনী ডেকে এনে বখতিয়ার বধ করতে হলে বখতিয়ারের কাছাকাছি থাকতে হবে। হাকিনীর কাছে রামও যা, রাবণও তা-ই। সে থাকে চির অন্ধকারের রাজ্যে। বখতিয়ারকে হাকিনী চেনে না। তাকে চিনিয়ে দিতে হবে। লক্ষ্মণ সেন পালিয়ে আসার সময় বখতিয়ার ছিল নদিয়ায়। এখন কোথায় আছে কে জানে? মুসলমান যোদ্ধারা নাকি ঘোড়ার পিঠ থেকে নামেই না। খাওয়া, ঘুম, নামাজ, যা-কিছু সব ওখানেই। বখতিয়ার ঘোড়ার পিঠেই থাকে দিনের অর্ধেক সময়। ভেবেচিন্তে এক বুদ্ধি বের করল লক্ষ্মী নারায়ণ। তার দুজন সাগরেদকে পাঠাল এই কাজে। শুরু হলো ‘মিশন বখতিয়ার’।

‘বাসমতি চাল পুড়িয়ে বানানো কয়লার সাথে ঘোড়ার রক্ত আর গর্ভবতী নারীর প্রস্রাব মিশিয়ে তৈরি কালিতে সাদা সিল্কের ওপর হাকিনী জাগানো মন্ত্র লিখে কাপড়টা দুটুকরো করে লক্ষ্মী। এই দুটো বালার ভেতর টুকরো দুটো ভরে সাগরেদ দুজনের হাতে একটা করে পরিয়ে দেয়। দুই সাগরেদ শুম্ভ ও নিশুম্ভ নদিয়ায় এসে জানতে পারে বখতিয়ার রংপুর অভিযানে। ওখান থেকে পায়ে হেঁটে রংপুর রওনা হলো তারা। দুদিন পর পদ্মা পার হয়ে বরেন্দ্র বা রাজশাহী পৌঁছাল। তখন চৈত্র মাস। রাজশাহীতে কলেরা-বসন্তে গ্রামকে গ্রাম উজাড় হচ্ছে। কলেরার মহামারি চলছে, এমন এক গ্রামে সন্ধের মুখোমুখি ঢুকল দুজনে। দেখতে পেল তিন রাস্তার মাথায় ফাঁকা উঁচু ঢিবির মতো হাট বসার জায়গা। এর পাশেই প্রকাণ্ড বটগাছতলায় ধূপধুনো জ্বালিয়ে ওলাওঠা দেবীর পুজো হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে কিছুক্ষণ পরপরই কাঁচা বাঁশের খাটিয়ায় বলহরি হরিবল করতে করতে শশ্মানে যাচ্ছে লাশ। শুম্ভ ও নিশুম্ভ ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর। মহামারি লেগেছে এমন গ্রামে জল পর্যন্ত খাওয়া নিষেধ। অথচ সাগরেদদের অবস্থা এত খারাপ যে কিছু না খেলে কলেরা-বসন্তে না-ও যদি মরে, ক্ষুধা-তৃষ্ণায় অবশ্যই মারা যাবে। হাটের কাছে এক ময়রার দোকান দেখতে পায় তারা। সেখানে দই, চিড়ে, খাগড়াই খেয়ে প্রাণ বাঁচাল। শুয়ে পড়ল বটতলায়। শেষরাতে নিশুম্ভের পেট নেমে গেল। এশিয়াটিক কলেরা বড় মারাত্মক ছিল। কাউকে ধরলে চব্বিশ ঘণ্টার ভেতরে যমালয়ে পাঠিয়ে দিত। পরদিন বিকেলে নিশুম্ভ ওলাওঠা দেবীর পায়ের কাছে মরে পড়ে থাকল।

‘বালাটা আস্তে করে তার হাত থেকে খুলে নিয়ে বিদেয় হলো শুম্ভ। রংপুরের রাস্তা ধরল। অন্তত তার কাছে তাই-ই মনে হলো। অন্ধকারে সারা রাত হেঁটে সকালে যেখানে পৌঁছাল, সে জায়গার চেয়ে কলেরা গ্রাম অনেক ভালো ছিল। ছোট এ গ্রামটির প্রায় সবাই ফাঁসুড়ে ডাকাত। বাইরে থেকে দেখে কিচ্ছু বোঝার উপায় নেই। দারা-পরিবার নিয়ে দিব্যি ঘর-সংসার করছে সবাই। সম্পন্ন গৃহস্থ। কিন্তু ভেতরে ভিন্ন চিত্র। নিরীহ, শ্রান্ত পথিকদের ভুলিয়ে-ভালিয়ে বাড়িতে এনে সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তাদেরকে মেরে ফেলাই এদের কাজ। এমনই এক ডাকাত ফ্যামিলির পাল্লায় পড়ে সে। দুদিন পর ডাকাতদের হাতে প্রাণ হারাল শুম্ভ। তবে মারা যাওয়ার আগে সব ঘটনা লিখে রেখে যায় সে। এ কাজে মন্ত্র লেখা সিল্কের কাগজটিই ব্যবহার করে। আমি ধারণা করছি, বালা দুটো ডাকাত তার স্ত্রী অথবা মেয়েকে দিয়েছিল। বাঙালি মায়েরা তাদের গয়না দিয়ে যান মেয়েকে বা ছেলের বৌকে। বংশপরম্পরায় একই গয়না হাতবদল হয়। পুরোনো গয়না ভেঙে নতুন গয়না বানানোর চল এখন যেমন আছে আগে তেমন ছিল না। ওতে খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি পড়ত।

‘সুলতানী আমলে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র অঞ্চলে আট রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প হয়েছিল। ব্যাপক ভূমিধসে তলিয়ে যায় অসংখ্য গ্রাম, গঞ্জ, নগরী। গৃহহীন হয়ে পড়ে লাখ লাখ লোক। এদের অনেকেই তখন দক্ষিণাঞ্চলে মাইগ্রেট করে। সম্ভবত সেই সময়ই এগুলোর তৎকালীন মালিক এই এলাকায় চলে আসে। পরে এখানে বর্গিদের উৎপাত শুরু হলে বালাগুলো খুল্লনা দেবীর মন্দিরে রেখে দেয় সে বা তার উত্তর পুরু ষ। পরে আর ফিরিয়ে নিতে পারেনি।

‘ব্রিটিশ আমলে খুলনায় ম্যাকপিস থ্যাকারে নামের এক ইংরেজ সাহেবের দোকান ছিল। স্যাবর অ্যান্ড ড্র্যাগুন নামের এই দোকানটির ব্রাঞ্চ ছিল কলকাতাতেও। মূল দোকান লন্ডনে। এই দোকানে ভালো ভালো সব অ্যান্টিক বিক্রি হতো। এই থ্যাকারে সাহেবকেই লোকেরা ডাকত ঠাকরে সাহেব বলে। থ্যাকারে জানতে পারে, খুল্লনা দেবীর মন্দির অনেক পুরোনো। প্রচুর অ্যান্টিক লুকানো আছে ওখানে। বুড়ির বাবার সাথে খাতির জমিয়ে অনেক জিনিস হাতিয়ে নেয় সে। অ্যান্টিক কেনার মতো লোক খুলনায় কেউই ছিল না। থ্যাকারের দোকানটি ছিল আসলে অ্যান্টিক কালেকশনের একটি আউটপোস্ট মাত্র। দালালেরা সরাসরি দোকানে গিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে কালেক্ট করা আর্টিফ্যাক্ট সাহেবের কাছে বিক্রি করত। যাহোক, বালাগুলো সাহেবের হাতে পড়লে সে বুঝে ফেলে, ওগুলোর মুখ খোলা যায়। মুখ খুলে একটি বালার ভেতর পায় মন্ত্রতন্ত্র লেখা সিল্ক, অন্যটিতে শুম্ভের লেখা কাহিনি। ধারণা করছি, কাদম্বিনী দেবীর বাবাকে ওগুলো দেখায় সে। জানতে চায়, কী লেখা আছে?

‘নানাভাই ধূনজীর ছিল ফিটন গাড়ি, পালকি, তাঞ্জাম এসব তৈরির কারখানা। কোম্পানি আমল থেকেই লাট সাহেবেরা পালকির ভক্ত হয়ে পড়ে। এত বেশি ভক্ত হয় যে অর্ডিন্যান্স জারি করে আমলারা ছাড়া ওগুলোতে কেউ চড়তে পারবে না। তবে ওই আইন কেউ মানেনি। আমলা-কামলা যে যেমন পারে, দেদারসে পালকি ব্যবহার করত। এখন যেমন ট্যাক্সি কোম্পানি আছে কলকাতায়, তেমন পালকি কোম্পানি ছিল। অসংখ্য বেহারা বেতন দিয়ে পুষত তারা। সবচেয়ে বড় পালকি কোম্পানির মালিকও ছিল আবার ধূনজীই। পাকা রাস্তাঘাট তৈরি হওয়ার পর ল্যান্ডো এবং ফিটন গাড়ির চাহিদা হয় ব্যাপক। ইংরেজ সাহেব, উঠতি জমিদার, স্থানীয় মহারাজারা ছিল ওগুলোর খদ্দের। থ্যাকারে ছিল নানাভাই ধূনজীর কমিশন এজেন্ট। ধূনজীর সাহায্যে অনেক অ্যান্টিকও কালেক্ট করত সে। দুজনে হয়ে ওঠে মানিকজোড়।

‘অ্যান্টিক ডিলার হওয়ায় রহস্যময় সব ব্যাপারে থ্যাকারের আগ্রহ ছিল অসীম। সিল্কের টুকরো দুটো পাওয়ার পর তন্ত্রমন্ত্রে আগ্রহী হয়ে ওঠে থ্যাকারে। কান টানলে মাথা আসে। ধূনজীও যোগ দিল এসে। ওদিকে মন্দির থেকে বহু জিনিস লোপাট করায় কাদম্বিনী দেবীর বাবার ওপর প্রধান সেবায়েতের সন্দেহ হয়। ওখান থেকে সরে পড়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়ে সে। ধূনজী নবাবি আমলের বড় একটি বাড়ি খুলনায় আগেই কিনেছিল। এ অঞ্চলে ভালো কাঠ সস্তা ছিল। তার কলকাতার কারখানার কাঁচামাল এই বাড়ি থেকে নদীপথে চালান হতো। ধূনজীকে বলে বাড়িটা কাদম্বিনী দেবীর বাবাকে পাইয়ে দেয় থ্যাকারে। উদ্দেশ্য, তাকে কাছাকাছি রাখা। আমার ধারণা, হাকিনী বশীকরণ ছাড়াও আর যেসব তন্ত্র বা পিশাচ-সাধনা আছে সেগুলোও তারা করেছে। টাকা আর ক্ষমতা লাভই ছিল তাদের সাধনার মূল লক্ষ্য।’
অনেকক্ষণ কথা বলে থামলেন মন্ময়।

‘কাদম্বিনী দেবীর কাছে এত দিন ওগুলো ছিল, অথচ একদিনও উনি খুলে দেখলেন না? আপনিই বা বুঝলেন কী করে যে ওগুলো খোলা যায়?’ জিজ্ঞেস করলাম আমি।
‘বিখ্যাত স্বর্ণকারের নিখুঁত কাজ। আগে থেকে জানা না থাকলে বোঝার উপায় নেই। এ পর্যন্ত কলকাতা থেকে গয়নার যত ক্যাটালগ বেরিয়েছে, তার সবই আছে আমার কালেকশনে। মজার ব্যাপার কী জানেন, এর ভেতরে থ্যাকারে সাহেবের নিজের ছাপানো একটা ক্যাটালগও আছে। হাতে পাওয়ার পর ক্যাটালগ বের করে মিলিয়ে দেখেছি ছবির সাথে আসল বালা দুটো। সব আইটেমের বিস্তারিত বিবরণ আছে বইটিতে। ইতিহাস, শৈলী, মূল্য, প্রাপ্তিস্থান এইসব আর কি। ওগুলো যে সেন আমলের ডিজাইন, সেটা থ্যাকারের বর্ণনা থেকেই পাওয়া। তবে এর পেছনের যে কাহিনি সেটা এর ভেতরের চিরকুট থেকে জেনেছি। বাকিটা নিজের হাইপোথেসিস। তবে সে সময়ের লেখা খুলনা গেজেটিয়ার এবং খুলনা মিউনিসিপ্যালিটির ফাইলপত্র ঘেঁটেও অনেক তথ্য পেয়েছি।’

আমার মনে হলো, মন্ময় চৌধুরী সবটুকু আমাকে এখনো বলেননি। জিজ্ঞেস করলাম,
‘আপনার আগ্রহ কী শুধু ওগুলোর ইতিহাস জানার ব্যাপারেই সীমিত?’
মন্ময় চৌধুরী আমার দিকে ঘুমঘুম চোখ তুলে তাকালেন। বললেন,
‘না, হাকিনীর ব্যাপারটি আমাকে খুব আকৃষ্ট করেছে। সবচেয়ে অদ্ভুত হলো, হাকিনী জাগানোর যে সাধনা সেটার বৈশিষ্ট্য। এই হাকিনীরা খুব নীচু স্তরের পিশাচ। এদের বুদ্ধিবৃত্তি পশুশ্রেণীর। তবে ক্ষমতা প্রচণ্ড। এদেরকে ডেথ অ্যাঞ্জেল বলতে পারেন। ডেকে এনে যার মৃত্যু চান, তাকে চিনিয়ে দেবেন। সেটারও প্রক্রিয়া আছে। তবে সমস্যা হলো, এরা প্রাণ না নিয়ে ফিরবে না। যার জন্য ডাকা, তাকে মারতে না পারলে যে ডেকেছে, তাকেই মেরে ফেলবে। হাকিনী জাগাতে হলে অশুচি যজ্ঞ করতে হয়। এই অশুচি যজ্ঞ হলো মৃতা কোনো যুবতীর সাথে যৌন সঙ্গম। যাকে পশ্চিমারা বলে নেক্রোফিলিয়া। নেক্রোফিলিয়া বহু প্রাচীন প্রথা। বার্মা এবং দক্ষিণ ভারতে এর ব্যাপক প্রচলন ছিল। ছিল পুরাকালে মিসরে ও ব্যাবিলনে। বার্মা এবং দক্ষিণ ভারতে কোনো অবিবাহিত তরু ণী মারা গেলে একজন পুরু ষকে সেই শবের সাথে বিয়ে দেওয়া হতো। পুরু ষটি তখন স্বামী হিসেবে যুবতীর লাশের সাথে সঙ্গম করত। মিসর মমির কারিগরদের ভেতর এই নেশা ছিল প্রবল। এ জন্য যুবতী মেয়েদের লাশ তাদের বাবা বা স্বামীরা দু-তিন দিন বাইরে ফেলে রেখে পচিয়ে এনে তারপর মমির কারিগরদের হাতে তুলে দিত। ইউরোপেও নেক্রোফিলিয়ার চর্চা ছিল। এ নিয়ে বহু গল্প-কাহিনি প্রচলিত আছে।’
‘আপনি এত কিছু জানলেন কীভাবে? দেখতেই পাচ্ছি, এর পেছনে সময়, শ্রম দুটোই ব্যয় করেছেন প্রচুর। কিন্তু এত সব করে লাভ কী?’
‘এই এক নেশা রে, ভাই। আমার এক কাকা ছিলেন তান্ত্রিক। ছেলেবেলায় তার পিছে পিছে ঘুরতাম। রাজ্যের যত অদ্ভুত জিনিসপত্রে কাকার ঘর ভর্তি ছিল। আমার যখন দশ বছর বয়স, তখন তিনি বিহারে যান। সেখানে এক দুর্গম এলাকায় মস্ত গুণীনের খোঁজ পান তিনি। এরপর নিজেই নিখোঁজ হন। আমার বয়স বাড়তে লাগল, সেই সাথে পৌনঃপুনিকভাবে বাড়তে লাগল নেশাও। সোনার কারবার আমাদের তিন পুরু ষের। প্রচুর বিষয়-সম্পদ। ব্যবসা চলছে কঠিন এক সিস্টেমের ভেতরে। কিছু না দেখলেও ওটা ঠিকই চলবে। আমি সময় কাটাই ভারতের উপজাতীয় গোত্রগুলোর উপাস্য দেবদেবী, তন্ত্রমন্ত্র বিষয়ে পড়াশুনো করে। প্রকৃত তান্ত্রিক আজকাল খুঁজে পাওয়া কঠিন। ঠিকমতো উপচার সাজিয়ে নৈবেদ্য দিলে এগুলো আসলেই কাজ করে কি না জানা যেত।’
‘আপনার তো এ ব্যাপারে প্রচুর পড়াশোনা। এইসব মাম্বোজাম্বো আসলেই বিশ্বাস করেন?’
‘দেখেন থিওরি এক জিনিস, প্র্যাকটিকাল আর এক। সব নিয়ম মেনে ট্রাই করলেই কেবল এর প্রায়োগিক ব্যাপারটি জানা যাবে।’
‘হাকিনী জাগানো মন্ত্র, প্রক্রিয়া সব তো হাতের কাছেই আছে। এই বিষয়টি দিয়েই সেই পরীক্ষা হতে পারে।’
‘সঞ্জয় বাবু, হাকিনী এক সর্বনাশা জিনিস। যদি সত্যিই তাকে জাগানো যায়, তাহলে সে তো প্রাণ না নিয়ে ফিরবে না। এ হচ্ছে আগে গেলে বাঘে খায়, পিছে গেলে খায় হায়েনা। পিশাচ সাধনা আর ঝুঁকি হলো পি’জ অ্যান্ড ক্যারট। হাকিনী সাধনায় যেসব উপচার লাগে তা জোগাড় করা যাবে। তিথি-নক্ষত্র দেখে যজ্ঞের কাল নির্ণয় করাও কঠিন না। কঠিন হলো শব সাধনার জন্য যুবতী নারীর টাটকা লাশ জোগাড় করা। তারচেয়ে কঠিন ওই লাশের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়া। ব্যাপারটি নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছি আমি। বের করার চেষ্টা করেছি এর বিকল্প। শয়তান হলো চূড়ান্ত অপবিত্র সত্তা। জুডিও-ক্রিশ্চান-ইসলামিক ট্রেডিশনে বলা হয়েছে, আজাজিল আদম হাওয়ার পতন ঘটিয়েছিল তাদের যৌনতাকে পুঁজি করে। ইহুদি-খ্রিষ্টান দু’ধর্মেই যৌনমিলন একটি অপবিত্র বিষয়। ক্যাথলিক পাদ্রিদের জন্য এই কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ধর্মগুলোতে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ যৌনমিলন দেহ ও মনকে পুরোপুরি কলুষিত করে। একটা উদাহরণ দেই। ইসলাম বলে, হজরত ইব্রাহিম তিনটি প্রধান একশ্বরবাদী ধর্মেরই আদি পিতা। ব্যাবিলনের বাদশা নমরু দ তাঁকে আগুনে পুড়িয়ে মারার ব্যবস্থা করেছিল। বিশাল আগুনের কুণ্ড জ্বালিয়ে তাঁকে তুলে তার ভেতর ফেলতে গেল নমরু দের লোকেরা। দেখা গেল, পয়গম্বর এত ভারী যে তাঁকে মাটি থেকে তোলাই সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাপার কী জানার জন্য নমরু দ তার পুরোহিত-গণকদের ডেকে পাঠাল। এরা যা বলল, তা এই রকম। খোদার ফেরেশতারা ইব্রাহিমকে ধরে আছে। একশো হাতি লাগিয়ে টানলেও তাঁকে মাটি থেকে ওঠানো যাবে না। উপায় কী? ফেরেশতাদের তাড়াতে হবে। গণকেরা নমরু দকে বুদ্ধি দিল জায়গাটিকে অপবিত্র করার। নমরু দ তখন উপস্থিত জনতাকে প্রকাশ্যে অবাধ যৌনমিলনের নির্দেশ দিল। ঘটনাস্থল অপবিত্র হলো। পালাল ফেরেশতার দল। ইব্রাহিমকে নিক্ষেপ করা হলো আগুনে। যেসব মেয়েরা ওই কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল, তারা নমরু দের কাছে পুরস্কার দাবি করে। সঙ্গমবাজ রতিক্লান্ত রমণীদের সহজে চেনার জন্য তাদের কপালে টিপ দেওয়া হয়। এ জন্য মুসলমান মেয়েদের কপালে টিপ দেওয়ার ব্যাপারে কিছুটা নিষেধাজ্ঞা আজও আছে।’
‘মন্ময় বাবু, আপনার পরিকল্পনাটা আসলে কী?’
‘বলছি রে ভাই, একটু ধের্য ধরেন। মন্ত্র-তন্ত্র, পিশাচ সাধনাÑএসব বিষয়ে সঠিক সূত্র খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। শব সাধনার কথাই ধরি। প্রায় সব বর্ণনায় আছে, ডোম চাঁড়ালের কুমারী মেয়ে যার অপঘাতে মৃত্যু হয়েছে, সেই রকম একটি উলঙ্গ লাশের ওপর অমাবস্যার রাতে বসে সাধনা করতে হবে। লাশের বয়স তিন দিনের বেশি হওয়া চলবে না। ভেবে দেখেন, ডোম-চাঁড়ালের মেয়েদের প্রায় সবারই বিয়ে হয় যখন তারা কিশোরী। তার ওপর তাকে মরতে হবে অপঘাতে। সবচেয়ে কঠিন শর্ত হলো, এই মৃত্যুটাও হতে হবে অমাবস্যা রাতের কাছাকাছি সময়ে। সাত দিন আগে-পিছেও যদি হয় তাহলেও সমস্যা। লাশে পচন ধরবে। ফরমালিন, বরফ, হিমঘরÑএইসব সামগ্রী কাপালিক, তান্ত্রিকদের কল্পনাতেও ছিল না। তবে এ ক্ষেত্রে আমার বিশ্বাস, ঠিকমতো সবকিছু করলে ফল ফলবে। এটা প্রামাণ্য দলিল। অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝতে পারছি। তবে প্রশ্ন একটা থেকেই যায়। হাকিনী ডেকে এনে তাকে দিয়ে করবটা কী? আমি অজাতশত্রু । তবে আপনার কথা আলাদা। মোটা মোসলেমের ওপর আপনি যদি প্রতিশোধ নিতে চান তাহলে . . .।’
‘লাশের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার বিকল্পটির কথা কিন্তু এখনো বলেননি।’
‘বলেছি। আপনি খেয়াল করেননি। আমাদের হয় কোনো জায়গা অশুচি করতে হবে, অথবা এমন জায়গা খুঁজে বের করতে হবে, যেখানে শুচি বলে কিছু নেই। অশুচি অনেকভাবেই হতে পারে। তবে এরমধ্যে যৌন ব্যাপার মুখ্য হতে হবে।’
‘পতিতালয় ছাড়া এমন জায়গা আর কোথায় পাওয়া যাবে?’
“ধারণা সঠিক। তবে আশপাশের এলাকায় করা যাবে না। লোকে চিনে ফেলবে। দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে পদ্মার চরে নতুন পাড়া হয়েছে। জমজমাট ব্যবসা। পাড়ার মাঝখানে একটা কামরা ভাড়া নেওয়া যেতে পারে। সাধনার সব উপচার এখান থেকে রেডি করে নিয়ে গেলে এক রাতেই কাজ সারা সম্ভব। হাকিনী সাধনায় নক্ষত্র-তিথি কোনো বিষয়ই নয়। পূর্ণিমা ছাড়া যেকোনো রাতেই হতে পারে। তবে আষাঢ় মাসের দিকে হলে উত্তম। আপনি ভেবে দেখেন, সাধনায় বসতে চান কি না। খরচপত্র, ব্যবস্থা সব আমার দায়িত্ব।’
‘মোটা মোসলেমকে চিনিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটি কীভাবে হবে?’
‘ওর একটা ফুল-সাইজ ছবি আমাকে এনে দেন। তারপর কী
করতে হবে, বলে দেব।’

(চলবে)

প্রথম প্রকাশ-রহস্যপত্রিকা নভেম্বর ২০১০

any feedbacks are welcome at

http://www.facebook.com/muhammad.toimoor
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:৪১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×