চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও ফাস্ট ফুডের দোকানে মরা মুরগির সুস্বাদু স্যূপ!!! সরবরাহ চক্রের কেউ কেউ এখন কোটিপতি।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
মরা মুরগির মাংস নরম তাই এ মাংস দিয়ে স্যুপ তৈরি করা হয়। ফাস্ট ফুডে মুরগির তৈরি সব খাবারে এই মরা মুরগি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চায়নিজ রেস্টুরেন্ট, ফাস্ট ফুড ও রাস্তার পাশে কিংবা পাড়া- মহল্লার খাবার হোটেলে মরা মুরগির চাহিদা বেশি। এছাড়া এক শ্রেণীর নামি- দামি হোটেলেও মরা মুরগি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। রাজধানীসহ দেশের জেলা শহরে একটি চক্র চায়নিজ রেস্টুরেন্ট, ফাস্টফুডের দোকান ও খাবার হোটেলে নিয়মিত মরা মুরগি সরবরাহ করছে। আড়ত থেকে প্রতিটি মরা মুরগি সংগ্রহ করা হয় ১০ থেকে ২০ টাকায়। এগুলোই হোটেল রেস্টুরেন্টে বিক্রি করা হয় দেড়শ’ থেকে দুশ’ টাকায়। মরা মুরগি বিকিকিনি করে চক্রের কেউ কেউ এখন কোটিপতি। তারা পুরনো ব্যবসা ছেড়ে এখন অন্য ব্যবসা করছেন।
কারণ হিসেবে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, অধিক মুনাফার লোভে ঐসব হোটেল মালিকরা কিংবা মালিকদের অজ্ঞাতে ম্যানেজাররা মরা মুরগি ক্রয় করে থাকে।
গতকাল সোমবার ভোরে র্যাবের মোবাইল কোর্ট তেজগাঁও রেলগেট সংলগ্ন মুরগি আড়তে অভিযান চালিয়ে ১০২টি মরা মুরগিসহ দেলোয়ার হোসেন দেলু (৪২) ও রেশমা বেগম ওরফে কালী নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে। তারা মোবাইল কোর্টের কাছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। মোবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার পাশা দেলোয়ার হোসেন দেলুকে দুই বছর ও রেশমা বেগম কালীকে দেড় বছরের দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন। দেলুর বাড়ি নোয়াখালী আর কালীর বাড়ি ফরিদপুর। মোবাইল কোর্টকে তারা জানায়, শুধু রাজধানীতেই নয়, এ ব্যবসা অন্য মহানগর ও জেলা শহরেও দেদারসে চলছে। কাওরান বাজার এলাকায় ছয় জনের একটি দল যারা আড়ত থেকে মরা মুরগি সংগ্রহ করে রেস্টুরেন্ট, খাবার হোটেল ও বিভিন্ন খাদ্য উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করে। তারা আরো জানায়, প্রত্যেকটি মুরগির আড়ত এলাকায় মরা মুরগি বেচাকেনার একটি চক্র রয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ১৫ জুন র্যাব -৩ কাপ্তান বাজার আড়ত থেকে এক বস্তা মরা মুরগিসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তিনি মরা মুরগি বেচাকেনার কিছু তথ্য দেন।
দেলু ও কালী জানায়, রাজধানীর কাওরান বাজার রেলগেট, কাপ্তান বাজার ও ফকিরাপুলে তিনটি বড় মুরগির আড়ত রয়েছে। এরমধ্যে কাওরান বাজার রেলগেট মুরগির আড়ত সবচেয়ে বড়। এখানে প্রতি রাতে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকযোগে দেড় থেকে দুই লাখ মুরগি আসে। ভোরের মধ্যে আড়ত মুরগিতে ভরে যায়। এরমধ্যে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার মুরগি মারা যায়। গরম বেশি পড়লে মরা মুরগির সংখ্যা দ্বিগুণ হয়। ব্রয়লার মুরগি হিটস্ট্রোকে এবং চাপে পড়ে বেশি মারা যায় বলে জানান আড়ত মালিকরা। একেকটি মরা মুরগির জন্য ১০ থেকে ২০ টাকা দিতে হয়। আবার কোনো কোনো আড়ত মালিককে টাকা দিতে হয় না। অনেক সময় দোকানদাররা মরা মুরগি বেচতে না চাইলে সংঘবদ্ধ চক্রটি তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীকে পাঠিয়ে দেয়। ভয় পেয়ে আড়ত মালিকরা এতে বাধা দেয় না। মরা মুরগির পাখা পশম ছিলার জন্য আড়তের পাশে ছোট ছোট ঘর রয়েছে। সেখানে মরা মুরগি ছিলার কাজ শেষে বস্তাবন্দী করা হয়। কোন কোন মরা মুরগি দুর্গন্ধ হলে সেগুলোর মধ্যে লেবুর রস দিয়ে দুর্গন্ধমুক্ত করা হয় বলে তারা জানায়।
হোটেলে সরবরাহ করে আরেক গ্রুপ : প্রথম গ্রুপ মরা মুরগি সংগ্রহ করে তা ছিলে বস্তাবন্দী করে দ্বিতীয় গ্রুপের কাছে বিক্রি করে। দ্বিতীয় গ্রুপ এ জন্য প্রথম গ্রুপকে একেকটি মুরগির জন্য দেয় ৪০- ৫০ টাকা। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের একেকটি মুরগি রেস্টুরেন্টে বিক্রি হয় দেড়শ’ থেকে দুশ’ টাকা।
‘মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর’ : কিডনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট কিডনি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশীদ ইত্তেফাককে বলেন, মুরগি সাধারণত বার্ড ফ্লু কিংবা কোন ভাইরাসজনিত কারণে মারা যায়। মোট কথা মরা মুরগি খেলে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশংকা শতভাগ। পরবর্তীতে লিভার ও কিডনি রোগে আক্রান্ত কিংবা কিডনি অকেজো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মরা মুরগিতে নানা ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থাকে। এগুলো মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন একই মত পোষণ করে বলেন, এগুলো শিশুদের বেশি ঝুঁকির মধ্যে ফেলে। গর্ভবতী মায়েরাও একারণে ঝুঁকিতে পড়তে পারেন বলে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সার জানান।
সূত্রঃ এখানে
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?
আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন
গরমান্ত দুপুরের আলাপ
মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন
রাজীব নূর কোথায়?
আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=
©কাজী ফাতেমা ছবি
মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।
হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।
ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন