নিম্নোক্ত ঘটনা দুটি (প্রথমটি সত্য, দ্বিতীয়টি ভবিষ্যতই বলিয়া দিবে) পর্যবেক্ষনের ব্লগারদের অনুরোধ জানানো যাইতেছে
ঘটনা-১ (সাল ২০০৯, স্থান সোনার বাংলাদেশ): মোবাইল চুরির অপরাধে বাবা-চাচার হাতে চোখ হারাইতে হইয়াছে ছেলেকে।
বাপ-চাচারা যেমন এই সমাজের, তেমনি চক্ষু হারানো ছেলেটাও (খবরটা আমার এখনও পড়িবার সুযোগ হয় নাই)। ঐ বাপ-চাচারাও একদিন কারও ছেলেই ছিল, কিন্তু ভাগ্যবশত ঐ সময় তাহারা এমন কিছু চুরি করিবার সুযোগ পান নাই যে ধরা খাইলে তাহাদের চক্ষু হারাইতে হইত! মাত্র কয়েক মাস পূর্বে আরও মারাত্মক রকমের ঘটনা ঘটিয়াছিল যেখানে মা-বোনের হাতে মাদকাসক্ত ছেলেকে মরিতে হইয়াছিলো।
কারনটা মনে হয় প্রয়োজনাতিরিক্ত প্রয়োজন। পূর্বে মানুষের প্রয়োজন অনেক কম ছিলো (দুই/তিনটা মৌলিক চাহিদা মাত্র)। কিন্তু এখন পাঁচটি মৌলিক চাহিদার পরও আরো অনেক গুলো যৌগিক চাহিদা (স্ট্যাটাস, মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট, গাড়ী, জায়গা মত বাড়ী, পার্টি, মাদক, বোতল,....) মেটানোর প্রচন্ড আকাঙ্খা গজানোয় তুচ্ছ কারনেই হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হওয়ায় এইসব অমানবিক ঘটনার সূত্রপাত।
ঘটনা-২ (সাল ২০২১, স্থান ডিজিটাল বাংলাদেশ): কোনো আর্থিক কারন ছাড়াই শুধুমাত্র ব্লগিয় বিরোধের জের ধরে কতিপয় পুরান ব্লগারদের হাতে একমাত্র প্যালটপসহ দুই হস্তের দশখানা আঙ্গুল হারাইতে হইলো সোজা-সরল এক নতুন ব্লগারকে।
কারনটা বোধহয় প্রয়োজনাতিরিক্ত ব্লগিং। পূর্বে এই খ্যাপাদের মাতৃভাষায় ব্লগিং-এর সুযোগ না থাকায় (সেই সূত্রে লোকাল গালি/খিস্তিরও সুযোগ না থাকা) এসব বিরোধ মনস্তাত্তিক পর্যায়ে ও পরাবাস্তবে থাকিয়া যাইত। এতে কিছু ব্লগারের মতিভ্রম হওয়া ছাড়া রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো ক্ষতি সাধন হইতো না।
কিন্তু এখন সামুতে কতিপয় ব্লগার (বা টিম) বিভিন্ন নিকের আড়ালে থাকিয়া অন্য কোনো ব্লগার (বা টিমের) বিরুদ্ধে মত পার্থক্যজনিত অথবা ব্যাপক কূটনৈতিক প্রতিভা প্রমাণের জন্য বিভিন্ন এংগেল থেকে ক্রমাগত পোস্ট/মন্তব্যের কারনে পারস্পরিক বিরোধের শুরু হয়। কখনও কখনও আদর্শিক বা জাতীয় ইস্যুতে, এমনকি সেলিব্রেটি বল্টুজীবিদের কান্ডকারখানা নিয়াও এই বিরোধকে পরাবাস্তব সংঘাতে পরিনত করে। অধুনা কতিপয় পুরান ব্লগারদের নিয়া গঠিত অদৃশ্য কিছু টিমের মধ্যে ব্যাপক যোগসাজসের মাধ্যমে (আমরা কি ইহা দিগকে কু ব্লগার বা সংক্ষেপে "ক্লগার" বলিতে পারি যা শুনিতে কিছুটা "কুলাঙ্গার"-এর মত হয়?) তুলনামূলক সহজ সরল (বিশেষত নতুন) ব্লগারদের বিভ্রান্ত করে এ ধরনের সংঘাত তৈরির অপচেষ্টার প্রমান পাওয়া যাইতেছে। সংঘাতের এক পর্যায়ে কিছু অসহায় ও আন্ডারক্লাস ব্লগারদের ব্যক্তিগত আক্রমন (গালিগালাজ/খিস্তি) পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটায়। অনিবার্য পরিনতি হিসেবে পারস্পরিক পরিচয় ফাঁস হওয়ার মধ্য দিয়ে সংঘাত বাস্তবতায় নেমে আসে এবং এরূপ অমানবিক ঘটনার জন্ম দেয়।
ঘটনা পর্যবেক্ষনে আমার মনে হইতেছে আমরা আগের মানসিকতাতেই রয়েগেছি, পরিবর্তন বলিতে এককালের মোবাইল চুরির জায়গায় ব্লগিয় বিরোধ আসিয়াছে। ব্লগার ভাইদের নিকট আমার প্রশ্ন হইলো এইসব চরম অমানবিক ও অসহিষ্ণু ঘটনা কি ঘটিতেই থাকিবে, এই গুলো থাকিয়া আমাদের কি কোনই নিস্তার নাই?
আমরা কি এইসব ব্লগারদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও অধিকার রক্ষায় "ব্লগাধিকার" নামক একখানা গ্রুপে এই বিষয়ে পোস্ট ও সেই সূত্রে মন্তব্য প্রদান করিতে পারি না?
বি: দ্র: গত কয়েকদিন বিভিন্ন পোস্ট পড়িয়া আমার নিজের মস্তিকের পরিমান নিয়া ব্যাপক সন্দেহের উদ্রেক হওয়ায় পোস্টটিকে ব্যক্তিগতভাবে না লইয়া সামগ্রিক দৃষ্টি কোণ থেকে দেখিবার অনুরোধ জানানো হইল। ব্যক্তিগতভাবে আমার উদার মানসিকতার জন্য ও মন্তব্য গুলিকে পরিচ্ছন্ন রাখিবার উদ্দেশ্যে অসহায় ও আন্ডারক্লাস ব্লগারদের জন্য চোরাই মাইনাস দেয়া জায়েজ করা হইল।
click here পোস্টের কিন্চ্ঞিত ছায়া (উপাচ্ছায়া?) অবলম্বনে আমার এই পোস্ট