somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈশ্বর কণা (প্রথম পর্ব)।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বর্তমানে পৃথিবীতে পদার্থবিদ এবং জ্যোর্তিপদার্থবিদরা অনবরত একটি বিষেশ কনার খোজ করে চলছেন সেই কনাটির নাম ঈশ্বর কনা (God Particle)।যারা এই সর্ম্পকে কিছুটা খোজ খবর রাখেন তারা নিশ্চয়ই ঈশ্বর কনা সর্ম্পকে শুনেছেন।এই মহাজগতের শুরু এবং শেষ সর্ম্পকে বিভিন্ন রহস্যময়তা খোলসা করার ব্যাপারে এই কনার বিশেষ অবদান আছে,বলে অনেকেই মনে করেন। ঈশ্বর কনার কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসে হিগস কনার বিষয়,কারন হিগস কনাকেই ঈশ্বর কনা বলা হয়।



কেন হিগস কনাকেই ঈশ্বর কনা বলা হয়? হিগস বোসনের পিটার হিগস এই ধরনের একটি কণার অস্তিত্ব প্রস্তাব করেন,এর সাথে যুক্ত আরো ছয়জন পদার্থবিদ হিগসের নাম এর সাথে যুক্ত করেন। ঈশ্বর কনা পদার্থ বিজ্ঞানের পরিভাষায় নেই। নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী লীয়ন লেজরময়ন তার ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত বই “The god Particle if the universe is the Answer,what is the Question? তে হিগস কনাকে ঈশ্বর কনা বলে উল্লেখ্য করায় সাধারনের ভাষায় এই নামকরন স্থান পেয়ে গেছে।



হিগস কনাকে বিজ্ঞানে হিগস বোসন বলেই উল্লেখ করা হয়,কারন হিগস কনা একটি বোসন কনা।
মৌলিক কণা দুই প্রকারের ১- বোসন ২- ফার্মিওন। বোসন কণার স্পিন বা কৌনিক ভরবেগ পূর্নসংখ্যা (intger),আর ফার্মিওনের স্পিন অর্ধপূর্ন (Half lnteger)।পূর্নসংখ্যার স্পিনের কণারা যে পরিসংখ্যান বা ব্যাপন মেনে চলে তাকে বোস পরিসংখ্যান বলে।



আর অর্ধপূর্ন স্পিনের কণারা যে পরিসংক্যান বা ব্যাপন মেনে চলে তাকে ফার্মী পরিসংখ্যান বলা হয়।বোস পরিসংখ্যানের ধারনা প্রথম দিয়েছিলেন বাংগালী পদার্থবিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বোস।বোস নামকরন সেই কারনে তার নামেই হয়েছিল।



হিগস বোসন বিষয়টি কি? একটা কথা স্পস্ট বলে রাখি।এটা শুনে অনেকে হতাশ হতে পারেন।এই তথ্য প্রকৃত অর্থে বোঝা সাধারন মানূষের পক্ষে খুব কঠিন।আমি কঠিন এই লেখা কেন লিখলাম?কারন এই তথ্য যতটা সহজ করে লেখা যায় আমি সেই চেস্টা করেছি, যাতে কিছুটা হলেও যেন মানূষ বুঝতে পারে।হিগস বোসন হলো কোয়ান্টাম ক্ষেত্র তত্ত্বের (Quantum Fild Theory) একটি বিষয়। বিজ্ঞানের ভাষা ব্যাবহার না করে এটা বোঝা বেশ কঠিন।এর সবচেয়ে ভালো ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য ১৯৯৩ সালে যুক্তরাজ্যে সরকারের বিজ্ঞান মন্ত্রী উইলিয়াম ওয়াল্ডার গ্রেভ বিজ্ঞানীদের প্রতি একটি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।



তিনি বলেন যে কে সবচেয়ে ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন এই হিগস বোসন কণা নিয়ে।লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ডেভিড মিলার এই হিগস বোসন কণার সবচেয়ে ভালো ব্যাখ্যা দেন।তিনি বলেন মনে করা যাক,মার্গারেট থ্যাচার রক্ষনশীল দলীয় কর্মিদের এক পার্টিতে যোগ দিতে গেছেন,তখন দেখা যাবে তার সমর্থকরা তার চারিদিকে জটলা পাকিয়ে একটি গোলাকার আবরন তৈরী করেছেন।যার কারনে থ্যাচারের এগিয়ে যেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে,যা অন্যান্য সদস্যের বেলায় হচ্ছে না।হালকা পাতলা মানূষের চেয়ে একজন অধিক ওজনের মানূষের যেমন নড়াচড়ায় কস্ট হয়।



থ্যাচারের অবস্থাও ঠিক তেমনি হয়েছে,তার ওজন তার চারপাশে দলা পাকানো ভক্তদের কারনে বেড়ে গেছে বলে মনে হবে।হিগস বোসনও হচ্ছে ঐ রক্ষনশীল কর্মীদের মত।যার কারনে ভরহীন কণা ভর অর্জন করে।আবার থ্যাচারের চেয়ে কম জনপ্রিয় কেউ দি ঐ জায়গায় তাহলে তার চারপাশে কমভক্ত জটলা করত।ফলে সেই কম জনপ্রিয় ব্যাক্তির ভর থ্যাচারের চেয়ে কম মনে হবে।একই ভাবে মৌলিক কণার সবগুলিই হিগস ক্ষেত্রের সাথে ক্রিয়া করে সমান ভর লাভ করে না।



জনপ্রিতার মতই সবার ভর এক হয় না। বলাই বাহুল্য এটা একটি স্থুল উপমা সঠিক বিচারে।এবার বৈজ্ঞানিকভাবে হিগস বোসন প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা জানার চেস্টা করা যাক।হিগস বোসন হলো পদার্থবিজ্ঞানের প্রমিত মডেল,যে সব মৌ্লিক কনার উপর ভিত্তি করে গঠিত তার অন্যতম এবং একমাত্র অসনাক্ত বা অজানা কণা। জানা কণাগুলো হল ইলেক্ট্রন,কোর্য়াক,লেপ্টন ইত্যাদি।প্রমিত মডেল বর্তমানে পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে সফল তত্ত্ব যার সাহায্যে প্রকৃতির চারটি বলের স্বরুপ ব্যাখ্যা করা যায়।



যে বলের সাহায্যে এই মহাজগতের তাবৎ পদার্থ বা বস্তু গঠিত হয় মৌলিক কণাগুলির সাহায্যে।প্রমিত মডেল অনুযায়ী হিগস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভরহীন কণিকাগুলি ভর অর্জন করে।সব বোসন কণাই কোন না কোন ফিল্ড বা ক্ষেত্রের সাথে সংশিস্ট।হিগস বোসন যে ক্ষেত্রের সাথে সংশিস্ট সেটাকে বলা হয় হিগস ক্ষেত্র।



ক্ষেত্র জিনিসটা কি?যেমন পৃথিবীর চৌম্ভক ক্ষেত্র বিরাজ করে পৃথিবীর সব স্থান জুড়ে যেমন সব জায়গা জুড়ে তড়িৎ- চৌম্ভক ক্ষেত্র বিরাজ করে পৃথিবীর সব স্থানে।ঠিক তেমনি সব বোসন কণার ক্ষেত্র বিরাজ করে সব স্থান জুড়ে,তবে হিগস বোসনের ক্ষেত্র খুব উচ্চশক্তিতে বিরাজ করে।যদি শক্তির মাত্রা কমে যায় তবে হিগস ক্ষেত্র উবে যায় অদৃশ্য হয়ে যায়।

চলবে.......।
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×