একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার (কসাই কাদের) ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এটিই মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের প্রথম রায়।
প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার এ রায় দেন।
বেঞ্চের অন্যান্য বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
* ট্রাইব্যুনালে ৪ নং অভিযোগ প্রমাণীত না হলেও আপিল বিভাগে প্রমাণীত হয়।
* অন্যান্য অভিযোগের রায় গুলো বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ তবে,
* ৬ নং অভিযোগে (স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে ২৬ মার্চ মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে হজরত আলী লস্করের স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা এবং এক মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আপিল বিভাগ সেই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছে এই জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে (কসাই কাদের) ফাঁসির আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের বেঞ্চে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এই রায় হয়েছে। চারজন বিচারপতি মৃত্যুদন্ডের পক্ষে, একজন বিচারপতি যাবজ্জীবন সাজার পক্ষে রায় দেন।)
মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী কসাই কাদেরের আপিলের রায় আগামীকাল।
রায়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াঃ-
রায় কার্যকর হলেই চুড়ান্ত বিজয়- গণজাগরণ মঞ্চ।
* কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে- সেক্টর কমান্ডার্স।
* জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে- আওয়ামী লীগ।
*এ রায় বাংলাদেশের ইতিহাসের নজিরবিহীন - কাদের মোল্লার আইনজীবী।
* আপিল বিভাগের রায়ে গোটা জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে- মাহবুব আলম হানিফ।
* বিচারিক কার্যক্রম শেষে আমা করা যায় ৪৫ দিনের মধ্যে রায় কার্যকর হবে-মাহবুব আলম হানিফ।
* বিশেষ আইনে কাদের মোল্লার বিচার হওয়ায় রায়ের পর আসামিপক্ষের পুনর্বিবেচনার আবেদনের সুযোগ নেই। তবে ভুল স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ আছে- আইনমন্ত্রী।
* ইতিহাসে এটি নজিরবিহীন ভুল রায়-কাদের মোল্লার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
* পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর ৩০ দিনের মধ্যে পুনর্বিবেচনার আবেদন- কাদের মোল্লার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
* এটিই চুড়ান্ত রায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ্যাক্ট ১৯৭৩ অনুযায়ী পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই- অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
সাড়ে পাঁচ মাস শুনানির পর মঙ্গলবার আসামি পক্ষের আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়ে প্রসিকিউশনের আপিল আবেদন গ্রহণ করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
* কসাই কাদেরের ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে বুধ ও বৃহস্পতিবার ৪৮ ঘন্টা হরতাল ডেকেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-এর রায় উপেক্ষা করে।
গণজাগরণ মঞ্চের আজকের কর্মসূচীঃ-
আজ বিকাল ৪ টায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর থেকে গণজাগরণ মঞ্চের বিজয় মিছিল।
* সাধারণ জনগণকে হরতাল প্রত্যাখানের আহ্বান জানিয়ে, আগামী কাল (১৮-০৯-১৩ খ্রিঃ) রোজঃ বুধবার সকাল ১১ টায় গণজাগরণ মঞ্চের হরতাল বিরোধী মিছিল।
* জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে আগামী শুক্রবার বিকাল ৪ টায় সমাবেশ শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর গণজাগরণ মঞ্চে।
এ রায়ের খবরে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে উল্লাস প্রকাশ করে গণজাগরণ মঞ্চ।
‘মিরপুরের কসাই কাদের’ নামে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে পরিচিতি পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর এই নেতাকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি/১৩খ্রিঃ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি/১৩ খ্রিঃ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ কাদের মোল্লাকে(কসাই কাদের) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। এরায়ের প্রতিক্রিয়ার সারাদেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। সেই বিক্ষোভ থেকে সৃষ্টি হয় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর “গণজাগরণ মঞ্চ”। শাহবাগ প্রজন্ম চত্বকে সমর্থন জানিয়ে সারাদেশে গণজাগরণ মঞ্চ তৈরী হয়। অন্যদিকে রায়ে ক্ষুব্ধ জামায়াতে ইসলামী হরতাল ডাকে, ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ শুরু করে সারাদেশে ব্যাপী।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে করে প্রসিকিউশন বিভাগ আপিল করে। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন কাদের মোল্লাও।
প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের আপিল শুনানি শেষে গত ২৩ জুলাই কাদের মোল্লার মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে সর্বোচ্চ আদালত। যুদ্ধাপরাধের কোনো মামলায় এটাই চূড়ান্ত রায়।
ট্রাইব্যুনাল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার সাড়ে ৫ মাসেরও বেশি সময় পর সুপ্রিম কোর্টে দুই পক্ষের আপিল শুনানি শেষ হয়।পরে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সমান সুযোগ রেখে ১৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) সংশোধন বিল, ২০১৩ জাতীয় সংসদে পাস হয়। আগে আইনে সরকারের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ ছিল না। গত ৩ মার্চ সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আর সাজা থেকে অব্যাহতি চেয়ে পরদিন আপিল করেন কাদের মোল্লা। গত ১ এপ্রিল থেকে শুনানি শুরু হয়। আসামি ও সরকার—উভয় পক্ষের দুটি আপিলের ওপর ৩৯ কার্যদিবস শুনানি শেষে ২৩ জুলাই আপিল বিভাগ রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। শুনানি শেষ হওয়ার ৫৪ দিনের মাথায় আজ চূড়ান্ত রায় ঘোষিত হলো।
সংখ্যাগরিষ্ঠতার রায়ঃ-
প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে । চারজন বিচারক মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে রায় দিলেও তাতে একজনের দ্বিমত ছিল বলে প্রকাশিত সংক্ষিপ্ত রায়ে দেখা যায়।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মোট ছয়টি অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে পাঁচটি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
যে একটি অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল বিচারিক আদালত, আপিলের রায়ে তাতে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে। অন্য যে চারটি অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের শাস্তিই বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
সংক্ষিপ্ত রায়ে দেখা যায়, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিল চলতে পারে বলে একমত হয়েছেন বেঞ্চের পাঁচ বিচারক। আপিল মঞ্জুর হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে।
আপিল বিভাগের এই বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে রয়েছেন বিচারপতি এস কে সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
রায়ে বলা হয়, ষষ্ঠ অভিযোগে ৪:১ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হল। মৃত্যু পর্যন্ত তাকে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
ষষ্ঠ অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ২৬ মার্চ কাদের মোল্লা তার সহযোগীদের নিয়ে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে হযরত আলী লস্করের বাসায় যান। সেখানে কাদের মোল্লার নির্দেশে লস্করের স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা করা হয়। এক মেয়ে হন ধর্ষণের শিকার।
চতুর্থ অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের দেয়া খালাসের রায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে বাতিল করে আপিল বিভাগ। ওই অপরাধে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর কাদের মোল্লা রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে কেরানীগঞ্জের ভাওয়াল খানবাড়ি এবং ঘাটারচরে শতাধিক গ্রামবাসীকে হত্যা করেন।
প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও পঞ্চম অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের দণ্ড বহালের পক্ষেও ৪:১ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আপিল বিভাগের রায় হয়।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল তার নির্দেশে মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
দ্বিতীয় অভিযোগ অনুযায়ী, ২৭ মার্চ কাদের মোল্লা সহযোগীদের নিয়ে কবি মেহেরুননিসা, তার মা এবং দুই ভাইকে তাদের মিরপুরের বাসায় গিয়ে হত্যা করেন।
কাদের মোল্লা তার সহযোগীদের নিয়ে একাত্তরের ২৯ মার্চ সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে আরামবাগ থেকে তুলে নিয়ে জল্লাদখানা পাম্পহাউসে নিয়ে জবাই করে হত্যা করেন বলে তৃতীয় অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়, তিনি একাত্তরের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে নিয়ে মিরপুরের আলোকদী গ্রামে যান এবং রাজাকার সদস্যদের নিয়ে গণহত্যা চালান। ওই ঘটনায় নিহত হন ৩৪৪ জনের বেশি।
প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অভিযোগে কাদের মোল্লার ১৫ বছর করে কারাদণ্ডের রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল। পঞ্চমটিতে হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়। এই দুটি দণ্ডই আপিল বিভাগ বহাল রেখেছে।
সাজার ক্ষেত্রে মতৈক্য না হলেও কাদের মোল্লার আপিল নাকচ হয়েছে সর্বসম্মতভাবে।
ট্রাইব্যুনালের রায়: ট্রাইব্যুনাল-২ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগের মধ্যে মিরপুরের আলুব্দী গ্রামে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ এবং হযরত আলী, তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা ও ধর্ষণের দায়ে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া পল্লব হত্যা, কবি মেহেরুননিসা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব হত্যার দায়ে তাঁকে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর ও ভাওয়াল খানবাড়ি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়। আপিল ও শুনানি: রায় ঘোষণার ২৭ দিনের মাথায় ছয় অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে দেওয়া সাজাকে অপর্যাপ্ত দাবি করে সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আপিল করে সরকার। পাশাপাশি একটি অভিযোগ থেকে তাঁকে দেওয়া খালাসের আদেশও বাতিলের আরজি জানানো হয়।অপর পক্ষে ট্রাইব্যুনালে দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ বাতিল ও সাজা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আপিল করেন কাদের মোল্লা।
ট্রাইব্যুনালের রায়: ট্রাইব্যুনাল-২ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগের মধ্যে মিরপুরের আলুব্দী গ্রামে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ এবং হযরত আলী, তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা ও ধর্ষণের দায়ে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া পল্লব হত্যা, কবি মেহেরুননিসা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব হত্যার দায়ে তাঁকে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর ও ভাওয়াল খানবাড়ি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়। আপিল ও শুনানি: রায় ঘোষণার ২৭ দিনের মাথায় ছয় অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে দেওয়া সাজাকে অপর্যাপ্ত দাবি করে সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আপিল করে সরকার। পাশাপাশি একটি অভিযোগ থেকে তাঁকে দেওয়া খালাসের আদেশও বাতিলের আরজি জানানো হয়।
অপর পক্ষে ট্রাইব্যুনালে দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ বাতিল ও সাজা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আপিল করেন কাদের মোল্লা।
দুটি প্রশ্ন ও অ্যামিকাস কিউরি: শুনানিতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ আইনগত প্রশ্ন ওঠায় জ্যেষ্ঠ সাত আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) মেনে মতামত নেন আদালত। অ্যামিকাস কিউরিরা হলেন টি এইচ খান, রফিক-উল হক, এম আমীর-উল ইসলাম, মাহমুদুল ইসলাম, রোকনউদ্দিন মাহমুদ, আজমালুল হোসেন কিউসি এবং এ এফ হাসান আরিফ।
প্রশ্ন দুটি হলো, দণ্ড ঘোষণার পর আইনে আনা সংশোধনী কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এর অধীনে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে কি না।
সংশোধনী কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে বলে মত দেন রফিক-উল হক, এম আমীর-উল ইসলাম, মাহমুদুল ইসলাম, রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও আজমালুল হোসেন কিউসি। প্রযোজ্য নয় বলে মত দেন টি এইচ খান এবং এ এফ হাসান আরিফ।
প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ প্রশ্নে রফিক-উল হকের মত, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় এবং ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন (কাস্টমারি ইন্টারন্যাশনাল ল) প্রয়োগের সুযোগ নেই।
এম আমীর-উল ইসলাম প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগের পক্ষে মত দেন। ১৯৭৩ সালের ট্রাইব্যুনাল আইনে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের প্রতিফলন রয়েছে বলে মত দেন রোকনউদ্দিন মাহমুদ।
মাহমুদুল ইসলাম বলেন, সাধারণভাবে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে না। একই ধরনের মত দিয়ে আজমালুল হোসেন বলেন, বিচারের ক্ষেত্রে এই আইনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইন সাংঘর্ষিক হলে দেশীয় আইনই প্রাধান্য পাবে।
টি এইচ খানের মত ছিল, প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে। তবে দেশীয় আইনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন সাংঘর্ষিক হলে সে ক্ষেত্রে দেশীয় আইন প্রাধান্য পাবে। প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে বলে মত দেন হাসান আরিফ।
তথ্য সূত্রঃ-
কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ-দৈনিক প্রথম আলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৫