এই কি আমাদের সেই আশরাফুল, যার দুর্দান্ত খেলা দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকতাম আমরা ষোলকোটি বাঙালি। যে কিনা বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের অত্যন্ত দুঃসময়ে হাল ধরে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল অনেক দূর। দর্শকভরা গ্যালারি থেকে একটাই নাম উচ্চারিত হয়েছে বারবার “আশরাফুল” কি করল এটা !!! বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিল স্পট ফিক্সিং এ জড়িত একটা দেশ হিসেবে। ছিঃ সবাই আজ আঙ্গুল তুলে দেখাবে, ঐ দ্যাখো বাংলাদেশ ক্রিকেটটিম- স্পট ফিক্সিং করে এরা। এই লজ্জা, এই অপবাদ কি করে ঘুচাবে ষোলকোটি মানুষ???
কিসের অভাব ছিল আশরাফুলের?? একটার পর একটা বাজে ইনিংস খেলার পরও আমরা ষোলকোটি ছিলাম তার সাথে, উৎসাহ-উদ্দীপনা জুগিয়েছি প্রতিটা সময়। প্রতিদানে কি পেলাম আমরা?? একটা জ্বলন্ত অপবাদ, নষ্ট ঘৃণা !!! ছোটবেলায় এক কথায় প্রকাশে পরেছিলাম “ উপকারির উপকার স্বীকার করে না যে- অকৃতজ্ঞ।” চিনলাম এই অকৃতজ্ঞটাকে।বাংলাদেশের মানুষ ক্রিকেটপ্রেমী এটা বারবার ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বলার কিছু নেই। কি করিনি আমারা এই হারামজাদাদের জন্য??? রাতের পর রাত লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কিনেছি, গ্যালারি থেকে গলা ফাটিয়ে স্লোগান দিয়েছি। পাশে থেকেছি সবসময়। পরাজিত হয়ে আসলে ভারতের জনগণের মত এদেরকে মেরে ফেলতে চাইনি। প্রতিদানে কি দিলো এরা আমাদেরকে??
কি মনে করিস তোদের কান্না দেখে আমাদের সহানুভুতি জাগবে?? অসম্ভব। তোরা তো আমাদের আবেগটা দেখলিনা। আমরা কেন দেখব?? ষোলকোটি মানুষ চোখেরজলে ভেসেছে, আবেগাপ্লুত হয়েছে বারবার। মনে পড়ে, এশিয়া কাপের কথা?? ফাইনালে হেড়ে যাওয়ায় কেঁদেছিল সারা বাংলাদেশ। কি মুল্য দিলি ঐ চোখেরজলের, ঐ আবেগের, ঐ ভালবাসার !!! সবকিছু পদদলিত হয়েছে এই একটিমাত্র কলঙ্কের কাছে।
কিসের অভাব ছিল তোদের?? বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে এ-গ্রেড সম্মানী, বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি?? সবই দেওয়া হয়েছিল তোদের। সেলিব্রেটি খেতাবও পেয়েছিলি। ঐ হারামজাদা তোদের এই সেলিব্রেটি বানিয়েছে কারা- এই আমরা। তোদের এই সম্মানী কোথা থেকে আসে- এই আমাদের কাছথেকে। তোদেরকে মাথায় তুলে রাখা হয় তার মানে এই নয় যে, মাথা ভরে প্রসাব করে দিবি। না, কোনোমতেই তোদের পক্ষ নিয়ে কিছু লিখতে পারলাম না। অপরাধী যেই হোক, তার শাস্তি বাধ্যতামূলক। কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা না করলে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের সর্বাঙ্গে। বংশবৃদ্ধি করবে।
এরপরেও কিছু বলদ আশরাফুলের পক্ষ নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে দেখলাম। আরে আজব, আমাদের আবেগ নিয়ে যারা ব্যাবসা করে তাদের জন্য আবার কিসের সহানুভূতি ভাই। পাগলে কামড়াইছে নাকি?? এই সহানুভূতিটুকু আশরাফুলকে দেখালে অন্যরাও তো এর সুযোগ নেবে বারবার। মনে করবে আমাদের বলদ দর্শকেরা তো আছেই, আন্দোলন করে ঠিকই আবার খেলার সুযোগ করে দেবে। সুতরাং এখনই আসল সময়, ভাইরাস বংশবিস্তার করার আগেই প্রতিষেধক দেওয়ার।
সর্বোপরি আশরাফুলের কৃতিত্বকে আমি অস্বীকার করছি না কখনোই। সবাইকে শুধু একটা কথাই মনে করিয়ে দিতে চাই “দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য।”

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



