somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরলোকঃ ভালোবাসা ডট কম

২৬ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবশেষে চাকরিটা পেয়েই গেলাম। তুমি জানতে পারলে খুশিই হতে। দারুন চাকরি। যমদূতের সহকারি পি এস। ইহকালে কোন ধর্ম বিশ্বাস না করায় স্বর্গ কিংবা নরক কোনটার কাঠগড়াতেই দাঁড়াতে হইনি আমাকে। ইহকালে তোমার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণতে গুণতে অধর্য্য লাগেনি কখনই। তার পরিপ্রেক্ষিতেই পরলোকে এসে এই চাকরির খোঁজ এবং শেষমেশ জয়েন করা। এর পিছনে সুনির্দিষ্ট কারণও আছে। যমদূতের সাথে সাথে থাকায় ইহলোক থেকে কে কখন কিভাবে পরলোকে আসছে তা জানা যায় ভালভাবেই। বুঝতে পারছ নিশ্চয়?? তোমার জন্য আবারও নিরবচ্ছিন্ন অপেক্ষা। এর শেষ কখনই হবে না আমার। এখানে এসেও তোমার খোঁজ রাখতাম নিয়মিত।


তবে হ্যা মন থেকে বলছি কখনই চাইনি তুমি তোমার সুখের সংসার, নাতি-নাতনি, পরিবার ছেঁড়ে চলে আসো তাড়াতাড়ি। কেননা ভালো লাগত যখন দেখতাম একটু নির্জনতা বা একাকীত্ব পেলেই আমাদের ভালোবাসার স্মৃতি কাঁদাত তোমায়। এখান থেকেই শিহরিত হতাম আমি তোমার অনুভুতিতে। কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম অমান্য করার সাধ্য কারো আছে নাকি!!! অনেক অনুনয় বিনয় করেও তোমার ইহলোকে থাকার স্থায়িত্বটা বাড়াতে পারলাম না একদিনও।


প্রতি মিনিটে প্রায় একলক্ষ লোক পাড়ি জমায় এই পরলোকে। সিরিয়াল অনুযায়ী তোমাকে খুঁজে পেতে বেশ কষ্ট হল আমার। যমদূতের সাথে লবিং থাকায় যদিও এতটা বেগ পেতে হইনি। অনেক অপেক্ষার পর এল সেই মহেন্দ্রক্ষন। তোমার সাথে যুগযুগ পর আবার সেই চোখাচোখি। কিন্তু একি!!! পুরাই স্তম্ভিত তুমি। যেন আশায় করনি আমাকে, এইভাবে দেখবে এখানেও। তোমার প্রথম প্রশ্ন—

: তুমি?
: হ্যা, আমি। চিনতে পেরেছ তাহলে।
: না চিনতে পারার তো কিছু নেই। কেমন আছো??
: ভালই আছি। তোমার অপেক্ষায় প্রহর গুণতে গুণতে সব সংখ্যা শেষ হয়ে গেছে।
: তুমি আর বদলালে না। আগের মতোই পাগলামিটা পিছু ছাড়েনি তোমার।
: কিই বা করব বল? ভালোবাসার পরিপূর্ণতাটা যে এখনও বাকি।

কথা শেষ হওয়ার আগেই কথার মোহআবেশ থেকে বেরিয়ে আসতে হল দুইজনকেই। কে যেন ডাকছে তোমায়। আরে হ্যা, এই তো তোমার সেই ইহকালের স্বামী, যার সাথে কাটিয়েছ জীবনের বেশ কিছু সময়। ইহলোকের ইঞ্জিনিয়ার এখানে এসে স্বর্গগামি ট্রেনের ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দিয়েছে। তোমায় ডাকছে। কেননা এই পরলোক জংশন থেকে স্বর্গের উদ্দেশ্যে শেষ ট্রেনটি ছেড়ে যাচ্ছে। আমাকে অবাক করে দিয়ে, আমার দিকে একবারের জন্যও না তাকিয়ে তুমি প্রাণপণে দৌড় দিলে ধীরে ধীরে গতি বাড়তে থাকা, সর্বপরি ট্রেনের দরজা দিয়ে হাত বাড়িয়ে থাকা তোমার স্বামীর দিকে। হতবিহবল আমি নিঃসঙ্গ দাড়িয়ে তাকিয়ে আছি তোমার চলে যাওয়া পথটির দিকে।


শেষ হইয়াও হইল না শেষ। মাঝপথে আমাকে চমকে দিয়ে হটাৎই থামলে তুমি। পিছনে তাকালে। আমি দেখলাম ভালবাসায় পরিপূর্ণ আবেগমাখা অসম্ভব সুন্দর তোমার চাঁদমুখটি। কি অপরূপ তুমি। চোখের কোণে চিকচিক করতে থাকা জল তোমার সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে সহস্রগুণ। কাছে এসে হাতটি ধরে আবেগজড়িত কণ্ঠে বললে “ ইহলোকে চেয়েছিলে আমার স্বত্বা হয়ে থাকতে, এখন পারবে তো থাকতে?? ভুলে যাবে না তো আর??”।


নির্বাক আমি। প্রচণ্ড আবেগে আলিঙ্গন করলাম তোমায়। শত বছরের আশা আকাঙ্ক্ষার ভালবাসা স্পর্শ করেছে আমায়। অনুভূতিটা অন্যরকম। চাকরি থেকে পাওয়া সম্মানি দিয়ে মেঘের উপর বানিয়েছি তোমার জন্য ছোট্ট স্বপ্নপুরি। নিয়ে যাব তোমায়। আজ কোন বাধায় রুখতে পারবে না। আজ ইহলোকের ভালোবাসা পরিপূর্ণতা পাবে পরলোকে, অনেকটা বছর অপেক্ষার পর। পাবেই, পেতেই হবে। কেননা আমি যে সবচেয়ে তোমাকেই বেশি ভালোবাসি।


০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×