দাদখানি চাল, মসুরের ডাল, চিনিপাতা দই
দুটো পাকা বেল, সরিষার তেল, ডিমভরা কই
পথে হেঁটে চলে, মনে মনে বলে, যদি হয় ভুল
ভুল যদি হয়, মা তবে নিশ্চয়, ছিঁড়ে দেবে চুল!
বাসার সবার ছোট হওয়ার কারনে আমার সম্পত্তির ভাগটা সবসময়ই একটু উপরের দিকে । আপু-ভাইয়াদের পুরানো গল্পের বই, কমিকস, খেলনা আর কত কি উত্তরাধিকার সূত্রে কিছুদিন পর আমার হয়ে যেত। আমার ভাইয়ের আলমারি সাজানো ছিলো এ ধরনের নানান জিনিসে ভরা, কিন্তু সেগুলা সে আমাকে সহজে দিতে চাইতনা। চাচা চৌধুরির কমিকসগুলো রীতিমত যক্ষের ধনের মত পলিথিনে গিট দিয়ে বেঁধে রাখত । আলমারির একদম উপরের থাকে নানান রকমের ক্যাসেট ছিলো। একটা ক্যাসেটে হলুদ মার্ক ছিলো। হলুদ মার্ক দেখেই বুঝতে পারতাম ঐটা দাঁতাখানি চালের ক্যাসেট। আমি আর আপু মিলে অনেক সাধাসাধির পর ভাইয়া ক্যাসেট টা আমাদেরকে কিছুক্ষনের জন্য শুনতে দিত। তাও ঠিকমত শোনা যেতনা, পুরানো দিনের ক্যাসেট তো, মাঝে মধ্যেই ফিতা আটকে যেত। তারপরও আমাদের ধৈর্য্য আর আগ্রহে কোনভাবেই ভাটা পড়ত না।
একসময় ভাইয়া ইউনিভার্সিটিতে উঠে গেল। বাসা ছেড়ে তাই চলে গেল। আলমারির রাজত্ব সব হাতের মুঠোয় পেয়ে গেলাম। মাঝে মাঝে আলমারি লক করে রাখত। কিন্তু এমনই সেই লকের সিস্টেম, ভোঁতা চাকু ঢুকিয়ে একটা ঘুরানি দিলেই খুলে যেত। ততদিনে তো আমি বড় হয়ে গেছি, তাই কমিকসে না যেয়ে টিপু সুলতান, মোল্লা নাসির উদ্দিনের বিরাট মোটা বইসহ আরো অনেক গল্পের বই বের করে পড়তাম। এরপর আপুও যখন বড় হয়ে গেল, তখন ওর ছোটবেলার ব্যাঙ্গ ডাকলো কেনর মত ক্যাসেট গুলো সব আমাকে দিয়ে গেল। কিন্তু আমি তখন ক্লাস সিক্স কি সেভেনে উঠে গেছি, এখন এসব সম্পত্তি দিয়ে আমি কি করব। মাঝে মাঝে বাজিয়ে শুনতাম। আর এখন যেসব গান শুনি, তাতে আপু বলে "তোর চয়েস পুরা বুড়া মানুষের মতন"!
অনেকদিন পর দাঁতখানি চাল গানটার কথা মনে পড়ল। অনেক সার্চ দিয়েও নেটে পেলাম না। কি যে মজার একটা গান!
দাদখানি ডাল, মসুরের চাল, চিনিপাতা কই
দুটো পাকা তেল, সরিষার বেল, ডিমভরা দই
*** সরোয়ার মুজিব এডিসন ভাইয়া অন্তরা চৌধুরির গানের লিন্ক দিয়েছেন। "তেলের শিশি ভাঙ্গলো বলে", "ও সোনা ব্যাঙ" এর মতন গান গুলো প্রায় ৫-৬ বছর পর আবারো শুনলাম! ধন্যবাদ সরোয়ার ভাইকে। Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:৪২