এক নম্বর কার্পাস তুলার বালিশে মাথাটা ছটফট করে নাড়ছেন গাইসিদ্ধ ইসলাম। খুব সম্ভবত বেটা লেভেলে আছেন তিনি এখন।
সাড়ে সাত কিলো রাস্তার দুধারে বৃক্ষ রোপন করেছেন, ইট ফেলেছেন ৩০ হাজার। যদিও বন বিভাগের নিয়ম ছিলো প্রতি তিন ফিট অন্তর চারা লাগাতে হবে; কিন্তু ম্যানেজার কুতুব কে দিয়ে........।
যাই হোক, তিনি সদয় এবং ভাল লোক। জনগণের খেদমত করেন।
কিন্তু কি কারণে ঘুমের মধ্যে ছটফট করছেন সেটা বলা মুস্কিল।
সোনাই বরাবরই খুঁচিয়ে দেখার আদমী। দুগন্ধ ঠেকানোর জন্য ছোট সাইজের দুটো কড়ই গাছ নাকে গুঁজে, টুপ করে মগজে ঢুকে গেল সোনাই, গাইসিদ্ধ সাহেবের বিপুল সাইজের ডান কান দিয়ে।
===============================
মগজদৃশ্যঃ
দ্রুতগতির ছবির মত সোনাই যা দেখলো সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের এক মাথা থেকে শুরু করে আরেক মাথা পর্যন্ত্ সব গাইয়ের দুধ দোহন করছেন গাইসিদ্ধ। এখন তিনি সিডনী অপেরার সামনে। বিশাল এক গাই অপেরা হাউসের বর্তুলাকার অংশে হেলান দিয়ে আছে। গাই'কে খোঁচানো হচ্ছে। সে ঊঠলে পরেই তিনি ওলান ধরে ঝুলে পড়বেন এবং দোহন করবেন। এই গাই দোহন হলেই সত্যিকারের গাইসিদ্ধ হবেন
তিনি। কিন্তু ওলানের সাইজ দেখে, কিঞ্চিৎ ভীত গাইসিদ্ধ ইসলাম।
ঠিক এসময়টাতেই তিনি ছটফট করছিলেন ঘুমের মধ্যে।
সকালে নাস্তার টেবিলে বসে, তার দেশদোহন কোম্পানীর ম্যানেজারের সাথে শতকরা হিসাব করছেন গাইসিদ্ধ। ইলেকশনের খরচ ছয় কোটি টাকা। বাজারে তার মাল বেশী চলে বাচ্চাদের দুধের কৌটো, এর পরেই আছে মাঝারী সাইজের (মধ্যবিত্তের চায়ের দুধ) গুঁড়ো দুধের কোটো। গত চার বছরের বিক্রি দেখে অফিসে গিয়ে ঠিক করতে হবে, কোনটার দাম কত বাড়াবেন। প্রতি ইলেকশনের পরই দাম বাড়ান, ইলেকশনে রেজাল্ট যাই হোক না কেন।
মনটা একটু ফুরফুরে হয়ে গেল, এবার দিল খুলে ইলেকশনবাজী করতে পারবেন গাইসিদ্ধ ইসলাম। খরচ নিয়ে চিন্তা নেই। লাগে টাকা দেবে, দেশদোহন।
* দেশের প্রধান এবং মূল দুগ্ধ আমদানীকারক প্রতিবার ইলেকশনে খাড়ান, হারেন এবং ইলেকশনের পর দাম বাড়ান গুঁড়ো দুধের। এই দাম বৃদ্ধি সরাসরি গুঁড়ো দুধের ভোক্তার ঘাড়ে পড়ে। গাইসিদ্ধ ইসলামের স্বপ্নটা বাস্তব হলে মন্দ হতো না। সোনাই এবং আমি দুজনেই স্বপ্ন দেখি দোহনের মধ্য দিয়েই এসব দোহনবাজদের মোলাকাতের।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০০৭ সকাল ৭:৫৮